ব্রেকিং:
আরজি কর মেডিকেলে ২০০ কোটির দুরনীতি, একাধিক প্রভাবশালীর জোগ থাকার সম্ভাবনা নলপুরে বেলাইন সেকান্দ্রাবাদ-শালিমার এক্সপ্রেস চলতি মাসেই ২০ ডিগ্রির নীচে তাপমাত্রা, রয়েছে নিম্নচাপের সম্ভাবনাও আগ্রা- লখনউ এক্সপ্রেসওয়েতে দুর্ঘটনায় ৫ জনের মৃত্যু রায়গঞ্জের কুলিকে শিশুর প্রাণ বাচিয়ে ডুবে মৃত্যু তরুণের গাজোলে মাটি খুড়তে গিয়ে উদ্ধার ১৬টি রুপার মুদ্রা

বৃহস্পতিবার   ১৪ নভেম্বর ২০২৪   কার্তিক ৩০ ১৪৩১   ১৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

সর্বশেষ:
মুর্শিদাবাদের সুতিতে শুট আউট। CSK-তে যাচ্ছেন ঋষভ? সামনে এল বড় খবর

সামসি কলেজের প্রাক্তন অধ্যাপক মোহাম্মদ সোলায়মানকে শেষ শ্রদ্ধা

সরিফুল ইসলাম

প্রকাশিত: ১২ মার্চ ২০১৯ ১৭ ০৫ ০৮  

হরিশ্চন্দ্রপুর, ১১ মার্চ : মঙ্গলবার সকালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করলেন সামসি কলেজের প্রাক্তন অধ্যাপক মোহাম্মদ সোলায়মান।
 অসংখ্য গুনগ্রাহী, স্ত্রী, চার ছেলে ও দুই মেয়ে ও নাতি-নাতনিকে রেখে পরলোক গমন করলেন সামসি কলেজের প্রাক্তন অধ্যাপক মোহাম্মদ সোলায়মান। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে আটটায় তার মৃত্যুর সঙ্গে শেষ হল একটি অধ্যায়ের। সামসি কলেজ এর জন্মলগ্ন থেকে এই মানুষটি হাজার হাজার ছাত্র-ছাত্রীকে জ্ঞান বিতরণ করেছেন। ৭৫ বছর বয়সে তাঁর প্রয়াণে শোকস্তব্ধ অসংখ্য ছাত্র-ছাত্রী, পরিবার-পরিজন ও অনুরাগীরা। সোলায়মান সাহেব এর পথ চলা বেশ কঠিন ছিল। তিনি দারিদ্র, কুসংস্কার,অশিক্ষা সহ সব প্রতিকূলতাকে জয় করে নিজেকে এক অন্য উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছিলেন। মালদার রতুয়া-১ ব্লকের কারবোনা গ্রামে ১৯৪৪ সালের ১ ডিসেম্বর  সাধারণ দরিদ্র পরিবারে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। পিতা আমির উদ্দিন ও মাতা সুরাতুন নেশা ছিলেন স্বাক্ষর। তবু সন্তানের শিক্ষার জন্য তারা প্রচুর কষ্ট করেছেন।  সমস্ত প্রতিকূলতাকে জয় করে সোলাইমান সাহেব কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আরবি বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছিলেন। তারপরে ১৯৬৮ সালে সামসি কলেজের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই কাজে যোগ দেন।   অধ্যাপক সোলায়মান সাহেব ১৯৯৯ সালে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অফ আন্ডার গ্রাজুয়েট স্টাডিজের চেয়ারম্যান এবং মডারেটর নিযুক্ত হন।  দীর্ঘ ৩৪ বছর নিরবিচ্ছিন্নভাবে অধ্যাপনা করার পরে ২০০৪ সালের ৩০ শে নভেম্বর সামসি কলেজের অধ্যাপক পদ থেকে অবসর গ্রহণ করেন তিনি। এরপরেও বিভাগে কোন শিক্ষক না থাকায় অতিথি অধ্যাপক হিসেবে তিনি নিজের কাজ চালিয়ে যান আরো দুই বছর। এরপর সেই কাজ করার পরে স্বেচ্ছায় অবসর নিয়ে মতিগঞ্জে অবস্থিত মাহাদুত তাওহীদ নামে একটি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অবৈতনিক অধ্যক্ষ হিসাবে কাজে যোগ দেন। সেখানে কিছুদিন কাজ করার পরে শারীরিক অসুস্থতার কারণে সবকিছু ছেড়ে তিনি লেখালেখির জগতে নিজেকে আত্মনিয়োগ করেছিলেন।
তার লেখা "কাশাসুল কোরআন" ও "নবীগণের সর্দার" বই দুটি বেশ জনপ্রিয়। আরবি ভাষা ও সাহিত্যে তার পাণ্ডিত্যের পরিচয় মিলেছে অপ্রকাশিত দুটি গ্রন্থের মাধ্যমে। তিনি মেশকাত শরীফের বাংলা অনুবাদ ও টীকাটিপ্পনী সমেত দুটি গ্রন্থ  রচনা করেছেন। ৬ খন্ডে বিভক্ত এই গ্রন্থটির নাম "তরজমাতুন ও তাসরীহুন লিল মিশকাতিল মাসাবীহ ফিল লোগাতীল বাঙ্গালীয়া"। অপর গ্রন্থটি হলো "তরজমাতুন ওয়া তসরীহুন লিস সহিহিল বোখারী ফি মারআতে লোগাতীল বাঙ্গালীয়া"। উক্ত গ্রন্থ দুটি সহি বুখারির রেফারেন্স বা ব্যাখ্যা সম্বলিত দলিল। গ্রন্থ দুটি এখনো প্রকাশিত না হওয়ায় নেজামিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক শিক্ষিকা,  ছাত্রছাত্রী ও গবেষকদের বঞ্চিত হতে হচ্ছে। কলেজের আরবি বিভাগীয় বর্তমান প্রধান অধ্যাপক ওয়ালিউল্লাহ জানিয়েছেন, তিনি চেষ্টা করবেন যাতে বই দুটি প্রকাশ করা সম্ভব হয়।  সোলাইমান সাহেবের মৃত্যুসংবাদ শুনে অধ্যাপক অধ্যাপিকারা শোকজ্ঞাপন করে কলেজ ছুটি দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ তাপস বর্মন। মঙ্গলবার বিকেলে নিজ বাসভবনের নিকটে হাজার হাজার মানুষের জানাজার পরে তাকে কবরস্থ করা হয়।

Puspaprovat Patrika
এই বিভাগের আরো খবর