ব্রেকিং:
ন্যাশনাল প্রেসিডেন্ট এমকে ফাইজির গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে সামশেরগঞ্জে পথসভা SDPI এর ফের সামশেরগঞ্জের হাউস নগর ১২ নম্বর জাতীয় সড়কে পথদুর্ঘটনা, অল্পের জন্য রক্ষা গাড়িচালকের জামাইবাবুর হাতে ধর্ষিতা নাবালিকা

রোববার   ০৯ মার্চ ২০২৫   ফাল্গুন ২৫ ১৪৩১   ০৯ রমজান ১৪৪৬

সর্বশেষ:
জামাইবাবুর হাতে ধর্ষিতা নাবালিকা

মৌলবী গড়ার নয়, মানুষ গড়ার ভাষা উর্দূ

খগেন্দ্রনাথ অধিকারী

প্রকাশিত: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০৯ ০৯ ৫৭  

মৌলবী গড়ার নয়, মানুষ গড়ার ভাষা উর্দূ
খগেন্দ্রনাথ অধিকারী

যখন আমি ছাত্র ছিলাম, তখন গ্রীক চিন্তাবিদ "Aristotle"-এর উপর আমার খুব রাগ হোত। সে আজ থেকে প্রায় ষাট বছর আগের কথা। রাষ্ট্র বিজ্ঞানের অনার্স ক্লাসে ষাট ও সত্তর দশকের গোধূলি লগ্নে আমার স্যারেরা এরিষ্টটলের"Politics" গ্রন্থ পড়াতে পড়াতে বলতেন যে এই গ্রীক চিন্তাবিদ গণতন্ত্রকে "নিকৃষ্টতম শাসন ব্যবস্থা" বলে চিহ্নিত করেছেন। তাঁর মতে গণতন্ত্র হোল "অজ্ঞ, অশিক্ষিত, ও মুর্খ" দের শাসন ব্যবস্থা। তরতাজা সেই তারুণ্যের দিনগুলিতে "Aristotle" এর এই বক্তব্যকে খুবই প্রতিক্রিয়াশীল বলে মনে হয়েছিল এবং হতো। কিন্তু আজ যখন জীবন সূর্য্য অস্তাচলে, তখন ব্যালট বাক্সের সন্তান রাজনৈতিক প্রশাসক--প্রশাসিকাদের (কেউ মুখ্যমন্ত্রী, কেউ উপ-মুখ্যমন্ত্রী) মুখনিসৃত "অমৃতবাণী" শুনে মনে হয় যে এই প্রাজ্ঞ গ্রীক চিন্তাবিদ ঠিক কথাই বলেছিলেন ,কারণ, তা না হলে কেউ কি ভোটে জিতে রাজ্যপটে বসে সরস্বতী পূজোর অঞ্জলি মন্ত্র, কিংবা মীর্জা গালিবের লেখা বা রবীন্দ্রনাথ, নজরুলের কবিতা নিলর্জ্জের মতো ভুলভাল আওড়িয়ে চলে? সব লাজ লজ্জার মাথা খেয়ে উত্তর প্রদেশের এক জন রাজনৈতিক প্রশাসক তো বলেই দিয়েছেন অন্ধ মুসলিম বিদ্বেষে কলূর বলদের মতো চোখে ঠুলি বেঁধে যে "উর্দূ হোল মৌলবী বানানোর ভাষা"। গৈরিক পতাকাধারী এই নেতার বলিহারী কাণ্ডজ্ঞান! এঁরা সমাজ, সভ্যতা, সংস্কৃতি, ইতিহাস, কিছুই জানেন না। এঁরা ভারতবর্ষকে জানেন না। এঁরা অশোক--আকবর--দারাশিকো--বিবেকানন্দ--রবীন্দ্রনাথকে জানেন না। তাই এইসব দায়িত্বজ্ঞানহীন উক্তি করে এঁরা দেশ ও দেশবাসীর সর্ব্বোনাশ করছেন। 
সভ্যতা ও সংস্কৃতির বাস্তবতা হোল এই যে ভাষা কোন ধর্মগুরু বা ধর্মীয় পরিচয় যুক্ত লোককে তৈরী করে না, কি পুরোহিত, কি পাদ্রী, কি "মৌলবী", কাউকেই তৈরী করে না। ভাষা হোল স্বচ্ছতোয়া নদীর মতো। এ হোল কপোতাক্ষ, এ হোল গঙ্গা, এ হোল নীল, এ হোল জর্ডান, এ হোল তাইগ্রিস, এ হোল ইউফ্রেটিস, এ হোল রাইন, এ হোল ভল্গা, এ হোল বৈতরিণী, এ হোল ডন, এ হোল কাবেরী, এ হোল ফল্গু। এদের কারোর জলই ধর্মীয় উন্মাদনা সৃষ্টিকারী দানব তৈরী করে না, করে মানব। বাংলা ভাষা বিবেকানন্দ--নজরুল--রবীন্দ্রনাথ--জসিমউদ্দিন--সুকান্ত--সুভাষকে তৈরী করেছে। ঠিক তেমনিভাবে উর্দূ ভাষা মুন্সী প্রেমচাঁদ, মীর্জা গালিব, মৌলানা আবুল কালাম আজাদ প্রমুখদের তৈরী করেছে। মহামতি দারাশিকো প্রমুখ পণ্ডিতরা উর্দূ ভাষায় মূল্যবান গ্রন্থ রচনা করেছেন। মুন্সী প্রেমচাঁদ তো মৌলবী বা মুসলিম কোনটিই ছিলেন না। তিনি ছিলেন হিন্দু ব্রাহ্মণ। তাঁর অমর সৃষ্টির অনেকগুলি উর্দূ ভাষায় লেখা। সম্রাট দারাশিকো ফারসিতে রামায়ণ অনুবাদ করেন এবং তাঁর রামায়ণের শুরু "বিসমিল্লাহ" কথাটি দিয়ে। আরব দুনিয়ায় উর্দূ ও আরবিতে রামায়ণ মহাভারতকে ঢালাওভাবে অনুবাদ করা হয়েছে। সর্ব্বোপরি প্রখ্যাত বাগ্মী ও সাংসদ অধ্যাপক হীরেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় যখন ইংরাজী বাংলা ও উর্দূতে ভারতের লোকসভায় বক্তৃতা করতেন তখন নেহেরু থেকে শুরু করে মৌলানা আবুল কালাম আজাদ , সবাই নীরব হয়ে সেই ভাষণ শুনতেন।
সুতরাং যিনি বা যাঁরা  উর্দূকে "মৌলবী" বানানোর ভাষা বলছেন তাঁরা ইতিহাসের লজ্জা। আসলে এই ভাষা-আন্দোলন পক্ষকালে আমাদের মনে রাখতে হবে যে মাতৃভাষার প্রতি মমত্ববোধ বিশ্বের সর্ব্বদেশের, সর্ব্বকালের মানুষের থাকে। তবে এখানে মনে রাখতে হবে যে ভাষাগত প্রশ্ন নিয়ে দুইটি দৃষ্টিকোণ আছে: একটি হোল একত্ববাদী দৃষ্টিকোণ, অন্যটি হোল বহুত্ববাদী দৃষ্টিকোণ। একত্ববাদী দৃষ্টিকোণ ভাষাগত উদারতার উপর তথা সহনশীলতার উপর জোর দেয়। উদাহরণ হিসাবে বলা যায় যে ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন (যার শহীদ হলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে বরকত, সালাম, প্রমুখ) নিয়ে চর্চা করতে গিয়ে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে অনেকে এটিকে উর্দূ বিরোধী আন্দোলন হিসাবে কার্যতঃ দাঁড় করান পশ্চিম পাকিস্থানের বাহুবলী শাসকবর্গের উর্দূ চাপানোর প্রচেষ্টার নিন্দা করতে গিয়ে। এই প্রসঙ্গে মনে রাখতে হবে যে পাক গণপরিষদে পূর্ব্ব পাকিস্থান থেকে নির্বাচিত সভ্য ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত বহুত্ববাদী দৃষ্টিকোণে উর্দূকে একটি সমৃদ্ধশালী ভাষা হিসাবে সম্মান জানিয়েই বলেন যে অবিভক্ত পাকিস্থানে সংখ্যা গরিষ্ঠের ভাষা যেহেতু বাংলা, সেই হেতু বাংলাকেই গোটা পাকিস্থানের রাষ্ট্রভাষা করা হোক এবং এর পাশাপাশি উর্দূ, বালুচি, সিন্ধ্রী প্রমুখ আঞ্চলিক বা প্রাদেশিক ভাষাগুলির পূর্ণাঙ্গীন বিকাশের উপর জোর দেওয়া হোক। ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের প্রস্তাবকে স্বাগত জানান, সীমান্ত গান্ধী খান আব্দুল গফুর খানের পুত্র, NAP বা ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির-নেতা ওয়ালি খান, পাকিস্থানের বিশিষ্ট কবি ও চিন্তাবিদ ফয়েজ আহম্মদ ফয়েজ প্রমুখ।কিন্তু পশ্চিম পাকিস্থানের শাসক গোষ্ঠী এসব পরামর্শে কান দিলেন না। ভাষাগত একাত্ববাদের ভাবনা তাঁদেরকে চেপে বসলো।
ফলে যা হবার তাই হয়েছে। ১৯৫২ সালের পূর্ব্বপাকিস্থানের ভাষা আন্দোলন শেষ হোল ১৯৭১ সালের বাংলাদেশের জাতীয় মুক্তি আন্দোলনের মধ্য দিয়ে। প্রকাশ থাকে যে ভাষাগত প্রশ্ন নিয়ে শুধু পূর্ব্ব পাকিস্থানেই নয়। পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে বিভিন্ন সময়ে আন্দোলন হয়েছে ও হচ্ছে। ভারতবর্ষের বুকে বাংলা ভাষার প্রশ্নে সিংভূম, কাছাড় প্রমুখস্থানে ভাষাগত আন্দোলন হয়েছে এবং সকল ভাষার মর্যাদা রক্ষার ও ভাষাগত স্বাতন্ত্র্য রক্ষার ও তার পূর্ণ বিকাশের সুযোগ নিয়ে সোচ্চার দাবী উঠেছে। আমাদের দেশ ভারতবর্ষের সংবিধানের ২৯ ও ৩০ নং ধারায় প্রত্যেক ভাষার স্বাতন্ত্র্য রক্ষার ও পূর্ণ বিকাশের অধিকার স্বীকৃতি লাভ করেছে। সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের "Ecosoc"-এর শাখা সংগঠন UNESCO প্রতিটি, ভাষাভাষী মানুষের ভাষাগত স্বাতন্ত্র্য রক্ষার উপর জোর দিয়েছে এবং ২১শে ফেব্রুয়ারীকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসাবে স্বীকৃতি দিয়েছে। বলা বাহুল্য যে বিশ্বশান্তি তথা বিশ্ব মৈত্রী রক্ষার এটি একটি বলিষ্ঠ পদক্ষেপ। 
কিন্তু, এসব সত্ত্বেও দুর্ভাগ্যের বিষয় হোল যে কিছু দায়িত্বজ্ঞানহীন রাজনৈতিক ফেরিওয়ালা অত্যন্ত নীচ ও হীনভাবে ভাষাগত প্রশ্নটিকে উপস্থাপন করছেন। তাঁরা নিজ মাতৃভাষাকে সম্মান জানাতে গিয়ে অন্যের মাতৃভাষাকে অবমাননা করছেন। এটা অন্যায়। এক জন বাঙালী হিসাবে বোলবো যে এই ভাষার সম্মান রক্ষায় পূর্ব্বোল্লিখিত শহীদরাসহ আসাম, ঝাড়খণ্ড ইত্যাদি স্থানে বহু মানুষ শহীদ হয়েছেন। এইসব শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর সর্ব্বোৎকৃষ্ট পথ হোল বাংলা ভাষাসহ সকল ভাষার প্রতি সমানভাবে শ্রদ্ধাশীল থাকা। নিজের মাতৃভাষাকে সম্মান জানাতে গিয়ে অন্যের মাতৃভাষাকে অবজ্ঞা করা মানুষের মতো কাজ নয়, পশুর মতো কাজ। এই পাশবিকতার বিরুদ্ধে লড়তে গিয়ে, আপন মাতৃভাষার সম্মান রাখার পাশাপাশি অন্যের মাতৃভাষাকে অবজ্ঞা করার প্রবণতাকে রুখতে গিয়ে অনেক মহান মানুষকে বহু লাঞ্ছনা সহ্য করতে হয়েছে। পাক উর্দূ কবি ফয়েজ আহম্মদ ফয়েজ, উর্দূভাষী পাক বামপন্থী রাজনীতিবিদ ওয়ালিখান প্রমুখ মানুষরা আপন মাতৃভাষা উর্দূর প্রতি শ্রদ্ধা রেখেও অবিভক্ত পাকিস্থানের রাষ্ট্রভাষা হিসাবে বাংলাকে স্বীকৃতি দেবার জন্য মহম্মদ আলি জিন্না থেকে শুরু করে ইস্কান্দার মীর্জা, লিয়াকৎ আলি খান, সবার কাছেই দাবী রাখেন, কারণ বাংলা ভাষীরাই অবিভক্ত পাকিস্থানে ছিলেন সংখ্যা গরিষ্ঠ। তাঁরা উর্দূসহ অন্যান্য ভাষাগুলিকে মর্যাদাপূর্ণভাবে বিকাশের দিকে নজর দিতে আহ্বান করেন।
কিন্তু, উর্দূভাষাগত সংকীর্ণতাবাদ উল্লিখিত শাসকদের এমনই গিলে ফেলে যে এই অপরাধের জন্য এঁদেরকে "হিন্দুস্থানের দালাল" অপবাদ দিয়ে যথেষ্ঠ হেনাস্থা করার ব্যবস্থা করা হয়। অপর দিকে পাকগণপরিষদের ভিতরে ও বাইরে যিনি বাংলা ভাষাকে পাকিস্থানের রাষ্ট্রভাষা করার জন্য আপোষহীনভাবে লড়েছেন, তিনি অর্থাৎ ধীরেন্দ্র নাথ দত্ত কিন্তু উর্দূ সম্পর্কে কোন অসম্মান তো দূরে থাক, যথেষ্ঠ শ্রদ্ধাশীল ছিলেন এই সুসমৃদ্ধ ভাষার প্রতি। উগ্র মুসলিম মৌলবাদে অন্ধ হয়ে বাংলাকে যেমন লিয়াকৎ আলি--ইস্কান্দার মীর্জারা "কাফের এর ভাষা" বলে আখ্যাত করেছিলেন, ঠিক তেমনি কিছু লোক  হিন্দু মৌলবাদে অন্ধ হয়ে উর্দূকে "মৌলবী বানানোর ভাষা" বলে আখ্যাত করছেন ।ধিক শত ধিক এঁদেরকে ।কোন ভাষা কোন ধর্মগুরু বানানোর যন্ত্র নয়, এসব বানানোর হাতিয়ার আলাদা। কেউ কেউ আবার উর্দূ ভাষা ইকবালের মাতৃভাষা হওয়ায়, ইকবাল বিরোধীতা থেকে উর্দূ বিরোধীতার পথে হাঁটেন। বাস্তবিকই তো দেশ ভাগের জন্য তিনি অর্থাৎ ধীরেন্দ্র নাথ দত্ত, জিন্না ও ইকবালকে সমভাবে ঘৃণা করতেন যেমন ঘৃণা করতেন মৌলানা আবুল কালাম আজাদ এঁদেরকে ও আম্বেদকরকে ।কারণ "পাকিস্থান" নামটি ইকবালের দেওয়া। আর ১৯৩২ সালের যে লণ্ডন বৈঠকে গান্ধিজী ভারতের পূর্ণ স্বাধীনতার দাবী তোলেন, সেই বৈঠক ভেস্তে যায় আম্বেদকর ও জিন্নার জাতপাতভিত্তিক ও ধর্ম ভিত্তিক সংরক্ষণের দাবী তোলার জন্য তথাকথিত অনুন্নত সম্প্রদায় ও মুসলিমদের স্বার্থে। এঁদের এই প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ও গান্ধীজীর "সর্ব্বোদয়" বা সবার কল্যাণের পক্ষে ছিলেন আজাদ, খান আব্দুল গফুর খান, ডঃ রাধাকৃষ্ণান, ভি. ভি. গিরি, প্রমুখরা এবং ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির নেতারা। 
কিন্তু কোন ভাষা তো কারোর পৈত্রিক সম্পত্তি নয়। ভাষা হোল নদী। সেখানে পাপী ও পূণ্যাত্মা সবাই স্নান করে। এর জন্য তো নদীর কিছু করার নেই। ইকবাল দেশ ভাগের জন্য অবশ্যই দায়ী। কিন্তু বাংলা ভাগের জন্য তো বাংলাভাষী শ্যামাপ্রসাদ কিংবা ভারত বিভক্তির জন্য মারাঠি ভাষী সাভারকারও দায়ী। তাহলে কি বাংলা ভাষা, বা মারাঠি ভাষা অচ্ছূৎ হয়ে যাবে? মোট কথা উদার, ধর্মনিরপেক্ষ ও মানবিক দৃষ্টিতে সবাইকে ভাষাগত প্রশ্নকে বিবেচনা করতে হবে এবং সমাজতান্ত্রিক অসমাজতান্ত্রিক নির্বিশেষে আমেরিকা, সুইজারল্যাণ্ড, কানাডা, অষ্ট্রেলিয়া, সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন, ভারতবর্ষ প্রমুখ বহুভাষাভাষী মানুষের বাসস্থান বৃহৎ যুক্তরাষ্ট্রগুলিতে যেভাবে একাধারে সংখ্যাগুরু--ভাষাভাষী মানুষদের ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা করে অন্যান্য ছোট-বড়--মাঝারি সব ভাষার উপযুক্ত সম্মান ও বিকাশের ব্যবস্থা করা হয়েছে বা হয়েছিল, সেই মডেল "বিশ্বের সর্বত্র চালু হওয়া বিশ্বশান্তি, মৈত্রী ও নিরাপত্তার জন্য একান্ত জরুরী। এই প্রসঙ্গেই বলতে চাই যে "হিন্দী, হিন্দু, হিন্দুস্থান" ধ্বনির আওয়াজকারী ভারতের বর্তমান শাসক দল বি. জে. পি. জোর করে হিন্দী ভাষাকে অহীন্দিভাষীদের উপর চাপাতে চেষ্টা করছে। এটা তারা আগুন নিয়ে খেলছে। তাদের মনে রাখা দরকার যে হিন্দী অবশ্যই একটি শ্রদ্ধাস্পদ সমৃদ্ধ ভাষা। কিন্তু এটা নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠের ভাষা নয়, আপেক্ষিক সংখ্যাগরিষ্ঠের ভাষা। ষাট শতাংশের মত ভারতবাসী বিভিন্ন অ-হিন্দী ভাষায় কথা বলেন। তাদের ভাষাগত ভাবাবেগের দিকে লক্ষ্য রেখে, এবং ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিয়ে আমাদের দেশের শাসক গোষ্ঠী ভাষা প্রশ্নে একত্ববাদী-আধিপত্যবাদী পথ ছেড়ে, বহুত্ববাদের পথকেই সম্মান করুন--এটাই সময়ের দাবী। 

      
লেখক পরিচিতি
অধ্যাপক খগেন্দ্রনাথ অধিকারী রাষ্ট্রীয় বিদ্যাসরস্বতী পুরস্কার ও এশিয়া প্যাসিফিক পুরস্কার সহ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বহু পুরস্কার প্রাপ্ত একজন খ্যাতনামা শিক্ষাবিদ। ইনি কোলকাতার সাউথ সিটি (দিবা) কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ।
ঠিকানা-শরনিয়ার বাগান
পোষ্ট-টাকী, পিন-৭৪৩৪২৯
পশ্চিমবঙ্গ, ভারত

*লেখকের কাছ থেকে মোঃ ইজাজ আহামেদ - এর দ্বারা সংগ্রহ করা হয়েছে*

Puspaprovat Patrika
এই বিভাগের আরো খবর