ব্রেকিং:
জঙ্গিপুর পুলিশ জেলার উদ্যোগে মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের সংবর্ধনা সভা। ন্যাশনাল প্রেসিডেন্ট এমকে ফাইজির গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে সামশেরগঞ্জে পথসভা SDPI এর ফের সামশেরগঞ্জের হাউস নগর ১২ নম্বর জাতীয় সড়কে পথদুর্ঘটনা, অল্পের জন্য রক্ষা গাড়িচালকের জামাইবাবুর হাতে ধর্ষিতা নাবালিকা

সোমবার   ০৭ জুলাই ২০২৫   আষাঢ় ২৩ ১৪৩২   ১১ মুহররম ১৪৪৭

সর্বশেষ:
জামাইবাবুর হাতে ধর্ষিতা নাবালিকা

মেয়েটির কান্নার আওয়াজ শুনে পাশে কে দাঁড়াবে

হক নাসরিন বানু

প্রকাশিত: ৩০ মার্চ ২০১৯ ০৭ ০৭ ৪৫   আপডেট: ৩০ মার্চ ২০১৯ ০৭ ০৭ ৪৫

বেঁচে থাকাটাই যখন এখন একটা জীবন সংগ্রামের ছবি, সেখানে এক ভিখারিনীর মৃতদেহের পাশে থাকার মানবিক ছবিটা কতটা অমূল্য, তা একবার দেখিয়ে দিল মালদা শহরেরই একটি সংগঠন, অবসরের জীবনশিখা৷ সম্বলহীন এক ভিখারিনীর শেষকৃত্য মেটাতে এগিয়ে এলেন এই সংগঠনের সদস্যরা৷ মূল উদ্যোগ নেন কূণাল মুখার্জি৷ মালদা মেডিকেলের মর্গের সামনে তাঁকে জাপটে ধরে মৃতার বোনের আকূল কান্না আরও একবার মনে করিয়ে দল, মানুষ আছে মানুষেই৷ 

 মৃতার নাম দেবি দে৷ বয়স ৪৫৷ ছোটোতেই বাবা-মায়ের হাত ধরে তাঁরা দক্ষিণবঙ্গ থেকে চলে এসেছিলেন মালদায়৷ তাঁরা দুই বোন, এক ভাই৷ একমাত্র ভাই প্রায় ১৫ বছর আগে এক ভয়াবহ বাস দুর্ঘটনায় মারা যান৷ তার আগেই মারা গিয়েছিলেন বাবা-মা৷ ছোটো বোন পপিকে কোলেপিঠে মানুষ করেছিলেন দেবিদেবী৷ চেয়েচিন্তে, ভিক্ষে করে দিন গুজরান করতেন৷ যা উপার্জন করতেন, তার বেশিরভাগটা বাড়ি ভাড়া দিতেই চলে যেত৷ তাঁরা মালদা শহর সংলগ্ন মহেশপুর বাগানপাড়ায় জনৈক রতন সাহার বাড়িতে ভাড়া থাকতেন৷ বেশ কিছুদিনধরে দেবিদেবীর পায়ে একটি ক্ষত হয়েছিল৷ রক্তে শর্করা থাকায় সেই ক্ষত সারছিল না৷ সেই অবস্থাতেও ভিক্ষে করে দিন কাটাতে হচ্ছিল তাঁকে৷ বোন পপিদেবী বলেন, ছোটোতে বাবা-মা মারা যাওয়ার পর দিদিই ছিলেন তাঁর অভিভাবক৷ বুধবার তিনি বিকেল ৪টে নাগাদ দিদিকে ডাক্তার দেখিয়ে নিয়ে আসেন তিনি৷ ডাক্তার তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরামর্শ দেন৷ কিন্তু দিদি হাসপাতালে ভর্তি হতে চাননি৷ ঘরের দরজার সামনে বসে পড়েন দিদি৷ জল খেতে চান৷ জল খাওয়ার পরেই কথা বন্ধ হয়ে যায় তাঁর৷ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন এবং দিদির মৃতদেহের ময়নাতদন্তের নির্দেশ দেন৷ দিদি চলে যাওয়ার পর তিনি কীভাবে বেঁচে থাকবেন, বুঝতে পারছেন না৷ এই অবস্থায় অবসরের জীবনশিখাই তাঁর শেষ সম্বল৷ 

 অবসরের জীবনশিখার অন্যতম সদস্য, আইনজীবী সুদীপ্ত গাঙ্গুলি এপ্রসঙ্গে বলেন, দুই বোন ভিক্ষে করেই জীবন অতিবাহিত করতেন৷ দু'দিন আগে দেবি দে হাসপাতালে মারা যান৷ তাঁর সৎকার করার মতো লোকবল কিংবা অর্থ, কোনোটাই ছিল না৷ পপিদেবীর পাশে এলাকার কেউ এগিয়েও আসেনি৷ তাঁরা বিষয়টি সম্পর্কে জানতে পেরেই পপিদেবীর বাড়িতে ছুটে যান৷ আজ তাঁরা দেবিদেবীর ময়নাতদন্ত করিয়েছেন৷ একই সঙ্গে তাঁর মৃতদেহ সৎকারের সমস্ত ব্যবস্থা করেছেন৷ শহরবাসীর কাছে তাঁদের আবেদন, সবাই যেন পপিদেবীকে বাঁচার রসদ দিতে তাঁর পাশে এসে দাঁড়ান৷

Puspaprovat Patrika
এই বিভাগের আরো খবর