ব্রেকিং:
মুর্শিদাবাদের ফরাক্কার বেওয়া-২ পঞ্চায়েতের নিশিন্দ্রা গ্রামে ভোটার তালিকা ভুয়ো ভোটার। জঙ্গিপুর পুলিশ জেলার উদ্যোগে মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের সংবর্ধনা সভা। ন্যাশনাল প্রেসিডেন্ট এমকে ফাইজির গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে সামশেরগঞ্জে পথসভা SDPI এর ফের সামশেরগঞ্জের হাউস নগর ১২ নম্বর জাতীয় সড়কে পথদুর্ঘটনা, অল্পের জন্য রক্ষা গাড়িচালকের জামাইবাবুর হাতে ধর্ষিতা নাবালিকা

সোমবার   ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫   ভাদ্র ৩১ ১৪৩২   ২২ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

সর্বশেষ:
জামাইবাবুর হাতে ধর্ষিতা নাবালিকা

করহার বাড়ালে ধ্বংস হবে গ্রামীণ কুটিরশিল্প,“৪০% জিএসটির বিরুদ্ধে সর্বদলীয় মঞ্চ, অরঙ্গাবাদে সরব শ্রমিক-নেতৃত্ব

প্রকাশিত: ২৮ আগস্ট ২০২৫ ০৮ ০৮ ০৪   আপডেট: ২৮ আগস্ট ২০২৫ ০৮ ০৮ ০৪

সফিকুল ইসলাম ,সফিক, অরঙ্গাবাদ, মুর্শিদাবাদ: বিড়ি শিল্পে প্রস্তাবিত ৪০% জিএসটি (GST) চালুর বিরুদ্ধে অরঙ্গাবাদ বিড়ি মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে বুধবার বিকেল ৪টায় অরঙ্গাবাদ বিড়ি শ্রমিক অ্যাসোসিয়েশন হলে এক প্রতিবাদী সভার আয়োজন করা হয়। সভায় বক্তারা অভিযোগ করেন, কেন্দ্রীয় সরকার প্রস্তাবিত জিএসটি হার পুনর্গঠন পরিকল্পনার আওতায় তামাকজাত দ্রব্যকে “সিন গুডস” হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করে বিড়ির উপর করহার ২৮% থেকে বাড়িয়ে ৪০% করতে চাইছে। এর ফলে দেশের অন্যতম বৃহৎ গ্রামীণ কুটিরশিল্প বিড়ি শিল্প ধ্বংসের মুখে পড়বে। বর্তমানে এই শিল্পের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত আছেন প্রায় ৮০ লক্ষ শ্রমিক, যাদের অধিকাংশই নারী, তফশিলি জাতি ও উপজাতি সম্প্রদায়ের অন্তর্গত। পাশাপাশি তেন্দু পাতা সংগ্রাহক, ক্ষুদ্র চাষি, ছোট দোকানদার ও পরিবহন শ্রমিকসহ কোটি কোটি মানুষ এই শিল্পের উপর নির্ভরশীল। এই সভায় বক্তারা জানান, বিড়ি শিল্পকে সিগারেট শিল্পের সঙ্গে এক কাতারে ফেলা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। যেমন গাড়ির ইঞ্জিন ক্ষমতার ভিত্তিতে ভিন্ন ভিন্ন করহার ধার্য হয়, তেমনি সিগারেট ও বিড়ির ক্ষেত্রেও আলাদা করহার থাকা উচিত। আগরবাতি (৫%) ও দেশলাই (১২%)-এর মতো বিড়িকেও ১৮% হারে আনা যৌক্তিক বলে মত প্রকাশ করেন তারা। বিড়ি শিল্প প্রতিনিধিদের দাবি, উচ্চ করহার সংগঠিত শিল্পকে দুর্বল করে তুলছে এবং অননুমোদিত উৎপাদকদের উৎসাহিত করছে কর ফাঁকিতে। এর ফলে সরকার যেমন রাজস্ব হারাচ্ছে, তেমনি শ্রমিকদের শোষণও বাড়ছে। যদি করহার ১৮% করা হয়, তবে সংগঠিত শিল্প টিকে থাকবে, শ্রমিকরা প্রাপ্য মজুরি ও সুবিধা পাবেন, এবং সরকারি রাজস্বও বৃদ্ধি পাবে।সভায় সাংসদ খলিলুর রহমান বলেন, “কেন্দ্র সরকার বারবার বিড়ি শিল্পকে আঘাত করছে। যদি এই ৪০% জিএসটি চাপানো হয় তবে আমরা বৃহত্তর আন্দোলনে নামতে বাধ্য হব। কংগ্রেস সাংসদ ঈশা খাঁন চৌধুরী জানান, “যেভাবে বাংলার গ্রামীণ শিল্পকে বঞ্চিত করা হচ্ছে তা একেবারেই অগ্রহণযোগ্য। কোটি কোটি শ্রমিকের কর্মসংস্থান কেড়ে নিতে চাইছে কেন্দ্র। এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আমরা সংসদ থেকে রাস্তায় আন্দোলন করব। INTUC নেতা মইদুল ইসলাম বলেন, “২৮% থেকে করহার ৪০% হলে লক্ষ লক্ষ বিড়ি শ্রমিক কাজ হারাবেন। মুর্শিদাবাদ ও মালদা জেলার মতো এলাকায় এর ভয়াবহ প্রভাব পড়বে।শামশেরগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক আমিরুল ইসলাম কেন্দ্রীয় সরকারের নীতির কড়া সমালোচনা করে বলেন, “বিজেপি সরকার আসার পর থেকে ছোট ব্যবসা ও শিল্পকে ধ্বংস করছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারবার এর বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। এবার পার্লামেন্ট থেকে শুরু করে রাস্তায় আন্দোলন নেমে পড়ব। অরঙ্গাবাদ বিড়ি মার্চেনট অ্যাসোসিয়েশনের শীর্ষ নেতৃত্ব রাজকুমার জয়েন জানান, সভায় সর্বসম্মতভাবে সিদ্ধান্ত হয় যে, চড়াও হারে এই জিএসটির কর বাতিল করতে হবে, এবং মুখ্যমন্ত্রী এবং কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী একাধিক মিনিস্ট্রি অফিসের আমাদের সমস্যার কথা জানানো হবে। যদি কেন্দ্রীয় সরকার প্রস্তাবিত ৪০% জিএসটি কার্যকর করে তবে অরঙ্গাবাদ বিড়ি মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশন ও শ্রমিক সংগঠনগুলো যৌথভাবে রাজপথে নামবে।আজকের সভায় সকল উপস্থিত নেতৃত্ববৃন্দগণ এবং বিড়ি মালিকদের কাছে আমার আশ্বাস রয়েছে তারা আমাদের সহযোগিতা করবে। উল্লেখ্য যে,বক্তাদের বক্তব্যে উঠে আসে, কেন্দ্র সরকার একদিকে কর্মসংস্থান তৈরির কথা বলছে, অন্যদিকে বিড়ি শিল্পের মতো গ্রামীণ কুটিরশিল্পকে ধ্বংসের পথে ঠেলে দিচ্ছে। ফলে লাখ লাখ শ্রমিক কর্মহীন হয়ে পড়বে, যা বাংলার অর্থনীতি ও সামাজিক কাঠামোর জন্য ভয়াবহ সংকট তৈরি করবে বলে আশঙ্কা করছে। ৪০% করের হার কমিয়ে দ্রুত এর সমাধান করতে হবে। উক্ত সভায় উপস্থিত ছিলেন জঙ্গিপুরের তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ খলিলুর রহমান, দক্ষিণ মালদার কংগ্রেস সাংসদ ঈশা খাঁন চৌধুরী, শামশেরগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক আমিরুল ইসলাম, সুতির বিধায়ক ঈমানি বিশ্বাস, জঙ্গিপুর সাংগঠনিক জেলা INTTUC সভাপতি ও শিল্পপতি নিপুণ বিশ্বাস, INTUC নেতা মইদুল ইসলাম, CITU জেলা সম্পাদক মহাঃ আজাদ, UTC জেলা সম্পাদক নিজামুদ্দিন আহমেদ সহ বিভিন্ন বিড়ি কোম্পানির প্রতিনিধি ও শ্রমিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

Puspaprovat Patrika
এই বিভাগের আরো খবর