ব্রেকিং:
আরজি কর মেডিকেলে ২০০ কোটির দুরনীতি, একাধিক প্রভাবশালীর জোগ থাকার সম্ভাবনা নলপুরে বেলাইন সেকান্দ্রাবাদ-শালিমার এক্সপ্রেস চলতি মাসেই ২০ ডিগ্রির নীচে তাপমাত্রা, রয়েছে নিম্নচাপের সম্ভাবনাও আগ্রা- লখনউ এক্সপ্রেসওয়েতে দুর্ঘটনায় ৫ জনের মৃত্যু রায়গঞ্জের কুলিকে শিশুর প্রাণ বাচিয়ে ডুবে মৃত্যু তরুণের গাজোলে মাটি খুড়তে গিয়ে উদ্ধার ১৬টি রুপার মুদ্রা

রোববার   ১৭ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ২ ১৪৩১   ১৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

সর্বশেষ:
মুর্শিদাবাদের সুতিতে শুট আউট। CSK-তে যাচ্ছেন ঋষভ? সামনে এল বড় খবর

সন্ধ্যায় কাঙ্ক্ষিত সংলাপ

জাগরণ রিপোর্ট 

প্রকাশিত: ১ নভেম্বর ২০১৮ ১৭ ০৫ ৫৬  

 

সবার চোখ এখন গণভবনের দিকে। আর মাত্র কয়েক ঘণ্টার পর শুরু হতে যাচ্ছে কাঙ্ক্ষিত সেই সংলাপ। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজসহ সারা দেশের সাধারণ মানুষের মধ্যে এখন এ নিয়েই চলছে জোর আলোচনা। 

আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টায় গণভবনে এ সংলাপে অংশ নেবেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এবং নবগঠিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতারা। সরকারি দলের পক্ষে নেতৃত্ব দেবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার সঙ্গে থাকবেন আওয়ামী লীগ ও ১৪ দলীয় জোটের আরও ২২ নেতা। অপর পক্ষে থাকছেন ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষস্থানীয় ২১ জন। 
সংলাপ চেয়ে ঐক্যফ্রন্টের চিঠি এবং প্রধানমন্ত্রী দ্রুত সাড়া দেয়ার পর কয়েক দিন ধরেই বিষয়টি আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। 
আওয়ামী লীগের উচ্চপর্যায়ের একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিএনপিসহ জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচনে আসবে বলে তাদের ধারণা। তাই ছোটখাটো কিছু বিষয়ে ছাড় দিলেও নির্বাচনি তফসিল ঘোষণার আগে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ, নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার গঠন বা সংসদ ভেঙে দেয়ার মতো দাবি মানার সম্ভাবনা নেই।
তবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতারা একটা ন্যূনতম সমঝোতা চেষ্টার অংশ হিসেবে সংলাপকে অর্থবহ করতে চান। এই মনোভাবের বিষয়টা দেশবাসীকেও তারা দেখাতে চান। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেছেন, ‘আমরা সংলাপে বিশ্বাস করি। দেশের স্বার্থে, জাতির স্বার্থে সংলাপ হোক। সংলাপের মধ্যদিয়ে ঐকমত্যের মাধ্যমে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাব।’
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখে সংলাপ বা নির্বাচন- কোনোটাই ফলপ্রসূ হবে না। খালেদা জিয়ার মুক্তি না হলে নির্বাচনও অর্থবহ হবে না।

সংসদ ভেঙে দেয়ায় জোর দেবে ঐক্যফ্রন্ট
জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতারা বলছেন, সাত দফা দাবি নিয়েই তারা সংলাপে আলোচনা করবেন। দাবি মেনে নিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানাবেন তারা। তবে ঐক্যফ্রন্টের সূত্র বলছে, নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার প্রশ্নে সংবিধান সংশোধনে সরকারি দল রাজি না হলে তারা তফসিলের আগে সংসদ ভেঙে দেয়ার দাবির প্রতি জোর দেবেন। সে ক্ষেত্রে সংবিধান সংশোধনের বিষয় নেই। এটা প্রধানমন্ত্রীর এখতিয়ার। আর এটা মেনে নিলে নির্বাচনকালীন সরকারের মন্ত্রিসভা গঠনের বিষয়ে বিকল্প প্রস্তাব দেবেন। তা হলো- মন্ত্রিসভার ১০ শতাংশ সদস্য যেহেতু টেকনোক্র্যাট কোটা থেকে নেওয়ার বিধান আছে, সেখানে ঐক্যফ্রন্ট থেকে নেওয়ার প্রস্তাব থাকবে।

ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ পর্যায়ের এক নেতা বলেন, সংসদ ভেঙে দেয়ার দাবি মেনে নিলে এবং মন্ত্রিসভায় ১০ শতাংশ ঐক্যফ্রন্টকে দেওয়া হলে সবার জন্য সমান সুযোগের অনেকটাই এসে যাবে। 

তবে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, সরকার সংবিধানসম্মত আলোচনার জন্য সংলাপ ডেকেছে। প্রয়োজনে সংবিধান সংশোধন করতে হবে। সাত দফার প্রতিটি সংবিধান মেনেই নিষ্পত্তি সম্ভব।

সরকারি জোটের যারা থাকছেন
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকারি জোটের পক্ষে সংলাপে আওয়ামী লীগ ও ১৪ দলের ২২ জন নেতা অংশ নেবেন। এর মধ্যে প্রধানমন্ত্রী ছাড়া আওয়ামী লীগের ১৭ জন। তারা হলেন- ওবায়দুল কাদের, আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, মোহাম্মদ নাসিম, কাজী জাফর উল্যাহ, আব্দুর রাজ্জাক, রমেশ চন্দ্র সেন, আবদুল মতিন খসরু, মাহবুব উল আলম হানিফ, দীপু মনি, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, আবদুস সোবহান গোলাপ, হাছান মাহমুদ ও শ ম রেজাউল করিম। 

১৪ দলের শরিকদের মধ্যে থাকছেন- ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাসদের একাংশের সভাপতি হাসানুল হক ইনু, জাসদের আরেক অংশের কার্যকরী সভাপতি মইন উদ্দীন খান বাদল ও সাম্যবাদী দলের দিলীপ বড়ুয়া।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের যারা সংলাপে অংশ নেবেন
জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির সদস্য ও গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মোহসীন মন্টু স্বাক্ষরিত ১৬ সদস্যের প্রতিনিধি দলের তালিকা মঙ্গলবার রাতে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়। এতে বলা হয়েছে প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন ড. কামাল হোসেন। তবে বৃহস্পতবিার বিকালে তা বাড়িয়ে ২১ জন নির্ধারণ করা হয় বলে জানান গণফোরামের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাক আহমেদ। সংলাপে অংশ নিতে ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের মধ্যে থাকছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, ড. মঈন খান ও গয়েশ^র চন্দ্র রায়; গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসীন মন্টু, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার সদস্য সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ, গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী, জেএসডির সহ-সভাপতি তানিয়া রব, নাগরিক ঐক্যের উপদেষ্টা এস এম আকরাম হোসেন, গণস্বাস্থ্যর প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার সদস্য সচিব আ ব ম মোস্তফা আমিন, জেএসডির সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক রতন, গণফোরামের প্রেসিডিয়াম সদস্য জগলুল হায়দার আফ্রিক, মোদাব্বির খান, আ ও ম সফিক উল্লাহ।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ৭ দফা

১. অবাধ, সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের লক্ষ্যে সরকারের পদত্যাগ, জাতীয় সংসদ বাতিল, আলোচনা করে নিরপেক্ষ সরকার গঠন এবং খালেদা জিয়াসহ সকল রাজবন্দিদের মুক্তি ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার।
২. গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিদের সমন্বয়ে নির্বাচন কমিশনের পুনর্গঠন ও নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার না করার নিশ্চয়তা প্রদান।
৩. বাক, ব্যক্তি, সংবাদপত্র, টেলিভিশন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও সকল রাজনৈতিক দলের সভা-সমাবেশের স্বাধীনতা এবং নির্বাচনের লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা।
৪. কোটা সংস্কার আন্দোলন ও নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন, সাংবাদিকদের আন্দোলন এবং সামাজিক গণমাধ্যমে স্বাধীন মত প্রকাশের অভিযোগে দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহার ও গ্রেপ্তারকৃতদের মুক্তির নিশ্চয়তা দেয়া। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ সকল কালো আইন বাতিল করা।
৫. নির্বাচনের ১০ দিন আগে থেকে নির্বাচনের পর সরকার গঠন পর্যন্ত বিচারিক ক্ষমতাসহ সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে হবে এবং আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিয়োজিত ও নিয়ন্ত্রণের পূর্ণ ক্ষমতা নির্বাচন কমিশনের ওপর ন্যস্ত করা।
৬. নির্বাচনে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক নিয়োগের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা এবং সম্পূর্ণ নির্বাচন প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণে ভোট কেন্দ্র, পোলিং বুথ, ভোট গণনাস্থল ও কন্ট্রোল রুমে তাদের প্রবেশের ওপর ওপর কোনো ধরনের বিধি-নিষেধ আরোপ না করা এবং নির্বাচনকালীন সময়ে গণমাধ্যমকর্মীদের উপর যে কোনো ধরনের নিয়ন্ত্রণ বন্ধ করা।
৭. তফসিল ঘোষণার তারিখ থেকে নির্বাচনের চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশিত না হওয়া পর্যন্ত চলমান সব রাজনৈতিক মামলা স্থগিত রাখা এবং নতুন কোনো মামলা না দেওয়ার নিশ্চয়তা দেয়া।

Puspaprovat Patrika
এই বিভাগের আরো খবর