ব্রেকিং:
আরজি কর মেডিকেলে ২০০ কোটির দুরনীতি, একাধিক প্রভাবশালীর জোগ থাকার সম্ভাবনা নলপুরে বেলাইন সেকান্দ্রাবাদ-শালিমার এক্সপ্রেস চলতি মাসেই ২০ ডিগ্রির নীচে তাপমাত্রা, রয়েছে নিম্নচাপের সম্ভাবনাও আগ্রা- লখনউ এক্সপ্রেসওয়েতে দুর্ঘটনায় ৫ জনের মৃত্যু রায়গঞ্জের কুলিকে শিশুর প্রাণ বাচিয়ে ডুবে মৃত্যু তরুণের গাজোলে মাটি খুড়তে গিয়ে উদ্ধার ১৬টি রুপার মুদ্রা

শনিবার   ১৬ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১ ১৪৩১   ১৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

সর্বশেষ:
মুর্শিদাবাদের সুতিতে শুট আউট। CSK-তে যাচ্ছেন ঋষভ? সামনে এল বড় খবর

রথযাত্রার আসল ইতিকথা

পুষ্পপ্রভাত ডেক্স

প্রকাশিত: ২৮ জুন ২০১৯ ২৩ ১১ ৩৪  

রথযাত্রার আসল ইতিকথা
 


 জগন্নাথ শব্দটির ব্যুৎপত্তিগত অর্থ “জগৎ” বা বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের প্রভু”। “জগন্নাথ” কথাটি তৎপুরুষ সমাস। এটি “জগৎ” ও “নাথ” শব্দের সংমিশ্রণ গঠিত। যেমন “জগৎ” (যার মূল ধাতু “গম্”, অর্থাৎ “যা কিছু চলে”) এবং (“নাথ” অর্থাৎ, প্রভু বা আশ্রয়) শব্দটির সংমিশ্রণে গঠিত। সুতরাং “জগন্নাথ” অর্থ “যিনি এই বিশ্বব্রহ্মান্ডের আশ্রয় চলমান জগতের আশ্রয়দাতা অর্থাৎ প্রভু”। প্রতি বছর আষাঢ় মাসের শুক্ল পক্ষের ২য়া তিথিতে জগন্নাথদেবকে বিষ্ণুরর অবতার রূপে পূজা করা হয়। তাঁকে এককবাবে পূজা করার সময় দধিবামনও বলা হয়। তবে জগন্নাথদেবকে নির্দিষ্ট কোন সম্প্রদায়ের বা মতানুসারীদের সঙ্গে যুক্ত করা যায় না। বৈষ্ণব, শৈব, শাক্ত, গানপত্য এবং সৌর- সকল শাখার অনুসারীরাই জগন্নাথদেবকে পূজা করেন। ষোড়শ শতাব্দীতে শ্রী তুলসীদাস পুরীতে এসে জগন্নাথদেবকে রঘুথান (রাম) রূপে পূজা করেছিলেন শ্রীচৈতন্যদেব মহাপ্রভুর সময় তাঁকে (জগন্নাথদেবকে) শ্রীকৃষ্ণের সঙ্গে যুক্ত করে পূজা করা হয়। এছাড়াও জগন্নাথকে তান্ত্রিক ক্রিয়ার সার মনে করা হয়। শৈব ও শাক্তরা জগন্নাথদেবকে দেবী বিমলার ভৈরব অর্থাৎ শিব মনে করেন। ভক্তরা বিশ্বাস করে, তাদের ইচ্ছা পূরণ হেতু জগন্নাথদেব যেকোনো দেবতার রূপ ধারণ করেন।
 এমনকি জগন্নাথ মন্দিরের পূজারিরাও শাক্ত সম্প্রদায়ভুক্ত। যদিও এই মন্দিরে বৈষ্ণব সম্প্রদায়ের প্রভাবই সবচেয়ে বেশি।
ভাগবত পুরাণে আছে, ঋষি মার্কণ্ডেয় পুরুষোত্তম জগন্নাথ ও শিবের একত্ব প্রমাণ করেন।
 মহারাষ্ট্রের গণপতি ভট্ট হাতিবেশের সময় জগন্নাথকে গণেশ রূপে পূজা করেছিলেন।
ওড়িয়া ভাষায় “জগন্নাথ” নাম থেকে উৎপন্ন “জগা” বা “জগবন্ধু” শব্দদুটিরও প্রচলন লক্ষ্য করা হয়। এছাড়া জগন্নাথের মূর্তির গড়ন অনুসারে তাঁর “কাল্য”
(অর্থাৎ, “কালো দেবতা” বা “কালের দেবতা”), “দারুব্রহ্ম” (অর্থাৎ, কাষ্ঠরূপী ব্রহ্ম), “দারুদেবতা” (অর্থাৎ, কাঠের দেবতা),
“চকাক্ষী”, “চকাদোলা বা “চকানয়ন” (অর্থাৎ, যে দেবতার চোখ গোলাকার) নামও প্রচলিত।
জগন্নাথের সবচেয়ে বিখ্যাত উৎসব রথযাত্রা। এই উৎসবের সময় বলভদ্র, জগন্নাথদেব ও সুভদ্রার বিগ্রহ মূল মন্দিরের গভর্গৃহ থেকে বের করে এনে কাঠে নির্মিত হয়। এই বিগ্রহের চোখ দুটো বড় বড় ও গোলাকার। হাত অসম্পূর্ণ এবং বিগ্রহের কোন পা দেখা যায় না।
কোনো কোনো গবেষক, জগন্নাথকে মূলত আদিবাসী দেবতা মনে করেন। ওড়িশার আদিম আদিবাসী সরভরা ছিল বৃক্ষ-উপাসক। তারা তাদের দেবতাকে বলত “জগনাত”। সম্ভবত, এই শব্দটি থেকে “জগন্নাথ” শব্দটি এসেছে।
পুরাণে আছে, বিষ্ণুর নৃসিংহ অবতার কাঠের স্তম্ভ ভেঙে বেরিয়েছিলেন। তাই জগন্নাথকে দারুব্রহ্ম রূপে নৃসিংহ স্তোত্র পাঠ করে পূজা করা হয়। জগন্নাথকে এককভাবে পূজা করার সময় বলা হয় “দধিবামন”। প্রতি বছর ভাদ্র মাসে জগন্নাথকে বিষ্ণুর বামন অবতারের বেশে পূজা করা হয়।
বার্ষিক রথযাত্রার সময়ও জগন্নাথকে বামন রূপে পূজা করা হয়। ষোড়শ শতাব্দীতে তুলসীদাস পুরীতে এসে জগন্নাথকে রঘুনাথ (রাম) রূপে পূজা করেছিলেন।
চৈতন্যদেব মহাপ্রভুর সময় থেকে জগন্নাথকে কৃষ্ণের সঙ্গে যুক্ত করা হয়। প্রচলিত বিশ্বাস অনুসারে, জগন্নাথ দায়িত্বশীল পুত্রের মতো তাঁর সকল মানব অবতারের বাবা-মায়ের বাৎসরিক শ্রাদ্ধকার্য করে থাকেন।
জগন্নাথদেবর পূজা পদ্ধতিও অন্যান্য দেবদেবীর পূজা পদ্ধতি থেকে আলাদা।
জগন্নাথদেবর প্রণাম মন্ত্রঃ-
ওঁ জগন্নাথায় নমঃ।
নিলাচলনবাসায় নিত্যায় পরমাত্ননে ।
বলভদ্র সুভদ্রাভ্যাং জগন্নাথায় তে নমঃ ।
[অষ্ট শঙ্করাচাযের জগন্নাথ অষ্টকম্]
 

রথযাত্রা উৎসবটি Gundicha যাত্রা, Ghosa যাত্রা, Navadina যাত্র নামেও সমধিক পরিচিত। জগন্নাথদেবর সৃষ্টিসম্বন্ধীয় তত্ত্বের অংশ হিসেবে প্রতি বছর আষাঢ় মাসে শুক্ল পক্ষের ২য়া তিথিতে এই উৎসবটি পালন করা হয়।
কঠোপনিষদে বলা হয়েছেঃ-
আত্মানং রথিনং বিদ্ধি শরীরং রথমেব তু ।
বুদ্ধিং তু সারথিং বিদ্ধি মন: প্রগ্রহমের চ ।।
 

এই দেহই রথ আর আত্মা দেহরূপ রথের রথী। আর ঈশ্বর থাকেন অন্তরে। রথ যাত্রর রূপক অর্থ কিন্তু এমনই।
 
রথযাত্রা উৎসব শুরু হলো কিভাবে?
বৈষ্ণবীয় দর্শন মতে, একদা দ্বারকায় মহিষীগণ রোহিনী মাতাকে জিজ্ঞাসা করলেন, ভগবান শ্রীকৃষ্ণকে এত সেবা করার পরও তিনি যেন শ্রীদাম-সুদাম, কখনও মা যশোদা-নন্দ বা কখনও ব্রজবাসীগণ বলতে মুর্ছা যান।

Puspaprovat Patrika
এই বিভাগের আরো খবর