ব্রেকিং:
আরজি কর মেডিকেলে ২০০ কোটির দুরনীতি, একাধিক প্রভাবশালীর জোগ থাকার সম্ভাবনা নলপুরে বেলাইন সেকান্দ্রাবাদ-শালিমার এক্সপ্রেস চলতি মাসেই ২০ ডিগ্রির নীচে তাপমাত্রা, রয়েছে নিম্নচাপের সম্ভাবনাও আগ্রা- লখনউ এক্সপ্রেসওয়েতে দুর্ঘটনায় ৫ জনের মৃত্যু রায়গঞ্জের কুলিকে শিশুর প্রাণ বাচিয়ে ডুবে মৃত্যু তরুণের গাজোলে মাটি খুড়তে গিয়ে উদ্ধার ১৬টি রুপার মুদ্রা

মঙ্গলবার   ২৬ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১১ ১৪৩১   ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

সর্বশেষ:
মুর্শিদাবাদের সুতিতে শুট আউট। CSK-তে যাচ্ছেন ঋষভ? সামনে এল বড় খবর

কবিতা - চলে যাবো



               চলে যাবো
            হামিদুল ইসলাম
               
নিজেকে ছুড়ে দিলাম সেখানেই
যেখানে তোমার রাগ ক্ষোভ ঘৃণা অভিমান
জমে জমে পাহাড় হয়ে আছে 

জানি আমাকে তুমি পছন্দ করো না এখন
বারবার আমাকে এড়িয়ে যাও
দূরে ছুড়ে ফেলে দাও
ঘৃণায় মুখ ঘুরিয়ে নাও ঠিক অত্রির মতো

আমি দিব্যি টের পাচ্ছি সব
আমার বুকে ছুরিকাঘাত। রক্তাক্ত আমি
হাঁ এটাই আমি চাই
মৃত্যু চাই। মৃত্যু কুরে কুরে খেয়ে নিক আমায়
কারণ এভাবে বেঁচে থেকে কী লাভ বলো

তুমি দূরে সরে যাচ্ছো
যাও। সরে যাও
চিরতরে সরে যাও। আমার বুকে ফিরে আসুক মৃত্যুর শূন্যতা

যেতে হবে
তাই চলে যাবো
কবরে পচে পচে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবো
আমার জন্যে মন টাটালেও আমাকে ভুলে যেয়ো আজন্মের মতো


পরিচিতি:
কবির জন্ম পঞ্চাশের দশকের মাঝামাঝি সময়ে। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার কুমারগঞ্জ ব্লকের অন্তর্গত ভোঁওর গ্রামে। চরম  দারিদ্রের মধ্যে তাঁর বেড়ে ওঠা। ছাত্রাবস্থায় বহু নিরন্ন দিন কাটিয়ে আসার সাক্ষী তিনি। দশমের ছাত্র থাকাকালীন স্কুল ম্যাগাজিনে তাঁর প্রথম কবিতা প্রকাশিত হয়। এরপর বহু পত্র পত্রিকার সংগে তাঁর যোগযোগ। সে সব পত্রিকায় তাঁর বহু বিভিন্ন স্বাদের লেখা প্রকাশিত হয়। এখনো সমান গতিতে তাঁর কলম চলছে। তাঁর লেখা কাব্যগ্রন্থের সংখ্যা ১৩ টি। ১০০টির উপর যৌথ কাব্য সংকলন। ই-কাব্য সংখ্যা ৪টি। আছে নাটক ও অপ্রকাশিত উপন্যাস।
লেখালেখি চলছে। চলবে আমৃত্যু।

০৯:১১ এএম, ২৬ জুন ২০২৪ বুধবার

ভারতীয় রাজনীতিতে পরিবারতন্ত্র ও পরিবারহীনতা

ভারতীয় রাজনীতিতে পরিবারতন্ত্র ও পরিবারহীনতা 
মজিবুর রহমান, প্রধানশিক্ষক, কাবিলপুর হাইস্কুল 

       বিশ্বজুড়ে রাষ্ট্র পরিচালনায় রাজতন্ত্র ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। অষ্টাদশ শতাব্দীতে ব্রিটিশ শাসনের সূচনার মধ্য দিয়ে ভারতে রাজতন্ত্রের অবসান ঘটে। তবে স্বাধীন ভারতে কংগ্রেসের হাত ধরে রাজনীতিতে পরিবারতন্ত্রের উত্থান ঘটতে দেখা যায়। বিগত সাড়ে সাত দশকে পরিবারতন্ত্র বেড়েছে বৈ কমেনি।যা একসময় ছিল একান্তই কংগ্রেসী ব্যাপার তা এখন বহু সংখ্যক দলের মধ্যে সঞ্চারিত হয়েছে। বেশ কয়েকটি রাজ্যে পরিবারতন্ত্র রাজনীতিতে নিয়ন্ত্রকের ভূমিকা পালন করছে। পরিবারতন্ত্রের পাশাপাশি পরিবারকে পরিহার করে শুধুমাত্র ব্যক্তিগত স্তরেই রাজনীতিকে সীমাবদ্ধ রাখার একটা উল্লেখযোগ্য দিকও রয়েছে। এক্ষেত্রে রাজনৈতিক ব্যক্তিটির রাজনীতির সঙ্গে তাঁর বৌ-বাচ্চাদের কোনো সম্পর্ক নেই।
        রাজনৈতিক মতাদর্শের সাথে পরিবারকে একদমই না জড়িয়ে দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতি করার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হলেন কমিউনিস্ট নেতা জ্যোতি বসু (১৯১৪-২০১০)। জ্যোতি বসুর পিতা চাননি তাঁর ব্যারিস্টার পুত্র আইনজীবী না হয়ে বামপন্থী রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হোন। চল্লিশের দশকে অবিভক্ত বাংলা তথা ভারতে বামপন্থী রাজনীতির কোনো ভবিষ্যৎ ছিল না। কিন্তু মার্ক্সবাদী ভাবনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে ব্যক্তিগত সুখ স্বাচ্ছন্দ্যের কথা চিন্তা না করে জ্যোতি বসু কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে যুক্ত হন। পরবর্তীকালে সাড়ে তেইশ বছর পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এবং দেশের একজন অগ্ৰগণ্য কমিউনিস্ট নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করেন। কিন্তু তাঁর রাজনৈতিক দর্শনের সাথে তাঁর সন্তানের কোনো সম্পর্ক থাকতে দেখা যায়নি। 'সর্বহারার নেতা' জ্যোতি বসুর পুত্র চন্দন বসু (১৯৫২-) শিল্পপতি হয়েছেন। পিতা 'নাস্তিক' হলেও পুত্র ভীষণ ঈশ্বর বিশ্বাসী, কালী ভক্ত।তাই তিনি আড়াই কেজি ওজনের সোনার খাঁড়া প্রণামী দেন। আরেক কমিউনিস্ট মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের (১৯৪৪-) সন্তানকেও কোনদিন রাজনৈতিক মঞ্চে অবস্থান করতে দেখা যায়নি। অনিল বিশ্বাস একজন দক্ষ সংগঠক ছিলেন। সিপিআই(এম)-এর রাজ্য সম্পাদক ও মুখপত্র গণশক্তির সম্পাদক হিসেবে অনিল বিশ্বাসের (১৯৪৪-২০০৬) অবদানের কথা আজও পার্টির অভ্যন্তরে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করা হয়। তাঁকে মাঝেমধ্যেই তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো মমতা ব্যানার্জি সম্পর্কে অত্যন্ত কড়া মন্তব্য করতে শোনা গেছে। কিন্তু অনিল-তনয়া অধ্যাপক অজন্তা বিশ্বাস তৃণমূলের মুখপত্রে মমতা ব্যানার্জির প্রশংসা লিখতে দ্বিধাবোধ করেননি। অবশ্য এর পরিণতিতে তাঁর সঙ্গে সিপিএমের সম্পর্ক শেষ হয়ে গেছে।
        ভারতীয় রাজনীতিতে পরিবারতন্ত্রের উদ্ভব হয়েছে নেহরু-গান্ধী পরিবার থেকে। এলাহাবাদের প্রখ্যাত আইনজীবী মতিলাল নেহরু (১৮৬১-১৯৩১) ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের একজন বিশিষ্ট নেতা ছিলেন। তিনি ১৯১৯ ও ১৯২৮ সালে কংগ্রেসের সভাপতি নির্বাচিত হন। পুত্র জওহরলাল (১৮৮৯-১৯৬৪) ও কন্যা বিজয়লক্ষ্মী (১৯০০-১৯৯০) প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশোনা শেষ করে রাজনীতিতে যোগ দেন। ১৯২৯ সালে কংগ্রেস সভাপতির পদে জওহরলাল মতিলালের স্থলাভিসিক্ত হন। পরে স্বাধীন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন এবং আমৃত্যু ওই পদে বহাল থাকেন। বিজয়লক্ষ্মী পণ্ডিত গণপরিষদের সদস্য ছিলেন। তিনি সোভিয়েত ইউনিয়ন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, আয়ারল্যান্ড ও স্পেনে ভারতের রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। রাষ্ট্রসঙ্ঘে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করেন। মহারাষ্ট্রের রাজ্যপাল ও লোকসভার সদস্য ছিলেন। জওহরলাল নেহরুর পত্নী কমলা নেহরুও (১৮৯৯-১৯৩৬) স্বাধীনতা আন্দোলনে অংশগ্রহণ করে কারাবাস ভোগ করেন। জওহরলাল ও কমলার কন্যা ইন্দিরা প্রিয়দর্শিনী (১৯১৭-১৯৮৪) ১৯৪২ সালে ফিরোজ গান্ধীর (১৯১২-১৯৬০) সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়ে স্বামীর পদবী গ্ৰহণ করেন। ফিরোজ গান্ধীও রাজনীতি করতেন, স্বাধীনতা আন্দোলনে অংশগ্রহণ করে কারাবাস ভোগ করেন এবং ১৯৫২ ও '৫৭ সালে লোকসভার সাংসদ নির্বাচিত হন। এই রকম একটা গৃহ পরিবেশের মধ্যে বেড়ে ওঠা ইন্দিরা অন্য কোনো পেশায় নিয়োজিত না হয়ে রাজনীতিতে চলে আসেন। ১৯৫৯ সালে তিনি ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের সভানেত্রী নির্বাচিত হন। ১৯৬৪ সালে জওহরলাল নেহরুর জীবনাবসানের অব্যবহিত পরেই তাঁকে রাজ্যসভার সাংসদ পদ প্রদান করা হয় এবং তিনি লালবাহাদুর শাস্ত্রীর মন্ত্রিসভায় তথ্য ও সম্প্রচার দপ্তরের মন্ত্রী নিযুক্ত হন। পরে পনের বছর (২৪.১.৬৬-২৪.৩.৭৭ ও ৯.৩.৮০-৩১.১০.৮৪) প্রধানমন্ত্রীর পদ অলংকৃত করেন। ফিরোজ-ইন্দিরার দুই পুত্র রাজীব (১৯৪৪-১৯৯১) ও সঞ্জয়ও (১৯৪৬-১৯৮০) পারিবারিক ঐতিহ্য বজায় রেখে রাজনীতিতে যোগ দেন। প্রথমে আসেন সঞ্জয় গান্ধী। তিনি ১৯৮০ সালের লোকসভা নির্বাচনে আমেথি কেন্দ্র থেকে সাংসদ নির্বাচিত হন।ওই বছর ২৩শে জুন কপ্টার দুর্ঘটনায় সঞ্জয়ের মৃত্যু হলে ইন্দিরা গান্ধী তাঁর রাজনৈতিক উত্তরসূরি হিসেবে রাজীব গান্ধীকে নিয়ে আসেন। রাজনীতিতে যোগদানের আগে তিনি ইন্ডিয়ান এয়ারলাইন্সের বিমানচালক ছিলেন। ১৯৮১ সালে ফেব্রুয়ারি মাসে আমেথি কেন্দ্র থেকে উপনির্বাচনে জয়লাভ করে সাংসদ হন। ১৯৮৪ সালের ৩১শে অক্টোবর ইন্দিরা গান্ধী নিহত হলে রাজীব গান্ধী ৪০ বছর বয়সে ৩ বছরের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা নিয়ে দেশের প্রধানমন্ত্রীর কার্যভার গ্রহণ করেন। ওই বছরই ডিসেম্বর মাসে অনুষ্ঠিত লোকসভা নির্বাচনে তাঁর নেতৃত্বে কংগ্রেস রেকর্ড সংখ্যক ৪১১টি আসনে জয়লাভ করে এবং প্রত্যাশিতভাবেই প্রধানমন্ত্রীর পদে তিনি পুনর্নির্বাচিত হন। ১৯৮৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে তাঁর দল সরকার গঠন করতে ব্যর্থ হয় এবং ১৯৯১ সালের ২১শে মে লোকসভা নির্বাচনের প্রচার চলাকালীন তামিলনাড়ুর শ্রীপেরামবুদুরে বোমা বিস্ফোরণে তিনি নিহত হন। রাজীব গান্ধীর নিহত হবার পর কিছুদিনের জন্য ভারতীয় রাজনীতিতে নেহরু-গান্ধী পরিবারের কোনো প্রতিনিধি ছিল না। ১৯৯৮ সালে রাজীবের ইতালীয় পত্নী সোনিয়া গান্ধী (১৯৪৬-) কংগ্রেসের সভানেত্রী রূপে রাজনীতিতে পদার্পণ করেন। তিনি ১৯৯৯ সাল থেকে সাংসদ রয়েছেন।রাজীব-সোনিয়ার পুত্র রাহুল গান্ধীও (১৯৭০-) কংগ্রেসের একজন অতি গুরুত্বপূর্ণ নেতা। তিনি ২০০৪ সাল থেকে লোকসভার সাংসদ আছেন। তাঁর বোন প্রিয়ঙ্কা গান্ধীও (১৯৭২-) এখন লোকসভার সদস্য হওয়ার পথে। সঞ্জয় গান্ধীর স্ত্রী মানেকা গান্ধী (১৯৫৬-) একাধিকবার সাংসদ ও মন্ত্রী হয়েছেন। পুত্র বরুণ গান্ধী (১৯৮০-) ২০০৯ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত লোকসভার সাংসদ ছিলেন। তাঁরা মা-ছেলে অবশ্য কংগ্রেস নয়, বিজেপি করেন। কংগ্রেস কোনদিনই নেহরু-গান্ধী পরিবারের প্রভাব কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করেনি। দু'একজন নেতা চেষ্টা করলেও সফল হননি, হয়তো দল ছেড়ে চলে গেছেন অথবা আলাদা দল গঠন করেছেন। কিন্তু ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস জওহরলাল নেহরুর উত্তর পুরুষদের নিয়ন্ত্রণেই থেকেছে। 
      ১৯৪৯ সালে স্থাপিত দ্রাবিড় মুনেত্র কাজগম (ডিএমকে)-এর ১৯৬৯ সাল থেকে আমৃত্যু সভাপতি ছিলেন এম করুণানিধি (১৯২৪-২০১৮)। করুণানিধি পাঁচ দফায় কুড়ি বছর তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পুত্র এম কে স্ট্যালিন (১৯৫৩-) ও কন্যা কানিমোঝি (১৯৬৮-) পিতার রাজনৈতিক উত্তরাধিকার বহন করছেন।কানিমোঝি দুবার করে রাজ্যসভা ও লোকসভার সাংসদ নির্বাচিত হয়েছেন। ১৮তম লোকসভায় তিনি ডিএমকে-র দলনেত্রী।করুণানিধির জীবনাবসানের পর দলের সভাপতি হন স্ট্যালিন। চেন্নাইয়ের মেয়র, বাবার মন্ত্রিসভায় মন্ত্রী, উপমুখ্যমন্ত্রী, বিধানসভার বিরোধী দলনেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করার পর ২০২১-এর মে মাস থেকে মুখ্যমন্ত্রী রয়েছেন। তাঁর পুত্র উদয়নিধি স্ট্যালিন (১৯৭৭-) চলচ্চিত্রের জগৎ ছেড়ে রাজনীতিতে প্রবেশ করেছেন এবং ২০২২-এর ডিসেম্বরে থেকে পিতার মন্ত্রিসভায় যুব কল্যাণ ও ক্রীড়া উন্নয়ন দপ্তরের মন্ত্রী নিযুক্ত হয়েছেন।
       বালাসাহেব ঠাকরে (১৯২৬-২০১২) ১৯৬৬ সালে মহারাষ্ট্রকেন্দ্রিক রাজনৈতিক দল শিবসেনা গঠন করেন। তিনি অবশ্য কখনও বিধায়ক অথবা সাংসদ হননি। তিনি 'কিং মেকার' হিসেবে 'রিমোট কন্ট্রোল' চালাতে পছন্দ করতেন। তাঁর ছেলে উদ্ধব ঠাকরে (১৯৬০-) ২০১৯-এর নভেম্বর থেকে ২০২২-এর জুন পর্যন্ত মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। সেই মন্ত্রিসভার সদস্য ছিলেন তাঁর পুত্র আদিত্য ঠাকরে (১৯৯০-)। 
      জনতা দলের নেতা মুলায়ম সিং যাদব (১৯৩৯-২০২২) ১৯৯২ সালে সমাজবাদী পার্টি গঠন করেন। তিনি তিন দফায় সাত বছর উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী ও দুই দফায় দুই বছর দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ছিলেন। ২০০০ সালে লোকসভার সাংসদ নির্বাচিত হওয়ার মধ্য দিয়ে তাঁর পুত্র অখিলেশ যাদবের (১৯৭৩-) রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শুরু হয়। তিনি ২০১২-'১৭ উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। বর্তমানে সমাজবাদী পার্টির সর্বভারতীয় সভাপতি। অখিলেশের স্ত্রী ডিম্পল যাদব (১৯৭৮-) একাধিকবার সাংসদ নির্বাচিত হয়েছেন।
     জনতা দলের নেতা লালু প্রসাদ যাদব (১৯৪৮-) ১৯৯৭ সালে রাষ্ট্রীয় জনতা দল গঠন করেন। ওই সময়ে আইনি জটিলতার কারণে লালু প্রসাদকে বিহারের মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ার ছাড়তে হয়। তখন তিনি তাঁর ৯ সন্তানের জননী রাবড়ি দেবীকে (১৯৫৫-) ওই পদে বসিয়ে দেন। রাবড়ি দেবী ২০০৫ সাল পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। এখন তাঁদের পুত্র তেজস্বী যাদব (১৯৮৯-) আরজেডি-র সভাপতি ও বিধায়ক। ২০২২-এর আগস্ট থেকে ২০২৪-এর জানুয়ারি পর্যন্ত তিনি উপ-মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন।
     মমতা ব্যানার্জি (১৯৫৫) ১৯৮৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের টিকিটে সাংসদ নির্বাচিত হন। ১৯৯৮ সালে তিনি তৃণমূল কংগ্রেস গঠন করেন। ২০১১ সাল থেকে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী রয়েছেন। তাঁর ভাইপো অভিষেক ব্যানার্জি (১৯৮৭-) ২০১৪ সাল থেকে লোকসভার সাংসদ রয়েছেন। ২০২১ সাল থেকে দলের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তৃণমূল কংগ্রেস পিসির 'নেতৃত্বে' ও ভাইপোর 'সেনাপতিত্বে' এগিয়ে চলেছে।
     রাজনীতি একটি বহুমাত্রিক বৃহৎ বিষয়। এখানে বিভিন্ন ধরনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সাধন করার সুযোগ থাকে। রাজনীতি 'দেশোদ্ধার' করার একটি শক্তিশালী মাধ্যম। নেতাকর্মীরা 'ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়ান।' কিছু পেতে নয়, বরং কিছু দিতেই রাজনীতিতে আসার কথা। সম্প্রতি এই ভাবনায় উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন এসেছে। রাজনীতি জনসেবা করার নেশা থেকে ব্যক্তিস্বার্থ চরিতার্থ করার পেশা হয়ে উঠছে। এখন রাজনীতিতে অর্থ, ক্ষমতা, প্রচার সবকিছুই প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যাচ্ছে। রাজনীতি সকল চাকরির সেরা চাকরিতে অথবা সকল ব্যবসার সেরা ব্যবসাতে পরিণত হচ্ছে। স্বাভাবিকভাবেই রাজনীতির মোহ কাটিয়ে ওঠা কঠিন হয়ে পড়ছে। তাই রাজনীতিতে পরিবারতন্ত্র জাঁকিয়ে বসতে দেখা যাচ্ছে।

১১:৩৫ এএম, ২৫ জুন ২০২৪ মঙ্গলবার

শাসকের সঙ্গে সংঘাত ও বিচারালয়ের বাড়াবাড়ি

শাসকের সঙ্গে সংঘাত ও বিচারালয়ের বাড়াবাড়ি

মজিবুর রহমান

 

     পশ্চিমবঙ্গে শাসকের সঙ্গে আদালতের সংঘাত লেগেছে। অন্তত তিন বছর ধরে এই লড়াই জোরকদমে চলছে। প্রশাসনিক হেডকোয়ার্টার নবান্ন আর কলকাতা হাইকোর্টের কাজিয়া সুপ্রিম কোর্টে গিয়ে জমা পড়ছে। দুশ্চিন্তা ও দুর্ভাবনার শিকার হচ্ছে রাজ্যের লাখ লাখ সাধারণ মানুষ। সামাজিক অস্থিরতা সৃষ্টি হচ্ছে।সাংঘাতিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শিক্ষার মতো খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি ক্ষেত্র। এই পরিস্থিতির জন্য সরকার ও আদালত উভয়েরই দায় রয়েছে। কেউই সমস্যার সমাধানে আন্তরিক নয়। বরং সমস্যাকে জটিল থেকে জটিলতর ও দীর্ঘমেয়াদি করা হয়। এখানে তিনটি বিচারবিভাগীয় নির্দেশ ও সেগুলোর অভিঘাত নিয়ে সংক্ষেপে আলোচনা করা হল।

      বিগত কয়েক বছরে রাজ্যের সরকারি বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী নিয়োগ প্রক্রিয়ায় নানান ধরনের নিয়ম ভঙ্গের ঘটনা ঘটেছে। অজ্ঞতাবশত বা অনিচ্ছাকৃত ভুল নয় , বেশ পরিকল্পনা করে নিয়োগ প্রক্রিয়ার বিভিন্ন স্তরে বিভ্রাট ঘটানো হয়েছে। স্বজন পোষণ ও বিশাল অঙ্কের আর্থিক লেনদেন হয়েছে।পুরো ঘটনাটা একটা প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এই দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন সাংসদ, বিধায়ক, মন্ত্রী, সরকারি আধিকারিক ও শাসক দলের নেতাকর্মীরা। গত দুই বছরে ২৫-৩০ জনকে ধরা হয়েছে। ২০১৬ সালের স্কুল সার্ভিস কমিশনের প্যানেলে উত্তরপত্র তথা অপটিক্যাল মার্ক রেকগনিশন (ও এম আর) শীট বিকৃতি, সিরিয়াল ব্রেক, প্যানেলের বাইরে থেকে নিয়োগ, সুপার নিউমেরিক পোস্ট সৃষ্টি সহ বেশ কয়েক রকমের অনিয়মের সন্ধান পাওয়া গেছে। ওই প্যানেল থেকে ২৬ হাজার শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী নিযুক্ত হন। তদন্তের স্বার্থে সকলের নথিপত্রের হার্ডকপি জেলায় জেলায় ডিআই অফিসে অথবা কলকাতায় মধ্যশিক্ষা পর্ষদের অফিসে জমা করা হয়। ফোনের মাধ্যমেও তথ্য প্রদান করা হয়। সবকিছু যাচাই করে দেখা যায়, নিয়ম ভঙ্গ করে নিয়োগপত্র পাওয়া শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীর সংখ্যা আট হাজারের কম আর নিয়ম মেনে নিযুক্ত হয়েছেন আঠারো হাজারের বেশি। অর্থাৎ বৈধ শিক্ষকের সংখ্যা অবৈধ শিক্ষকের থেকে অনেকটাই বেশি। কাঁকড় বেছে ফেলার পর খাদ্য শস্য ভক্ষণ করাই সাধারণ নিয়ম। জমি থেকে আগাছা পরিষ্কার করে আমরা সবাই ফসল রক্ষা করি। আগাছার সাথে ফসল কেটে ফেলি না। কিন্তু কলকাতা উচ্চ আদালতের ডিভিশন বেঞ্চ নিয়োগ মামলার রায় দিতে গিয়ে আগাছার সাথে ফসলও কেটে ফেলার নিদান দিয়েছে।কাঁকড় না বেছে সমস্ত শস্য কণা ডাস্টবিনে ফেলার ফতোয়া জারি করেছে। ২০১৬ সালের শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের সব প্যানেল বাতিল। 'ঢাকি সমেত বিসর্জন'।সকলের চাকরি ক্যানসেলড। এটা কোনো বিচার হল? ন্যায়বিচারের কোনো উপাদান কি এই রায়ের মধ্যে রয়েছে? বৈধ ও অবৈধ ভাবে নিযুক্ত উভয়েরই এক পরিণতি! মুড়ি-মিছরির এক দর! ডিভিশন বেঞ্চ সাফাই দিয়েছ, বারবার বলা সত্ত্বেও নাকি নিয়োগ প্রক্রিয়ার দুই প্রধান সংস্থা স্কুল সার্ভিস কমিশন ও মধ্যশিক্ষা পর্ষদ আদালতের কাছে বৈধ ও অবৈধ কর্মপ্রার্থীদের তালিকা জমা দেয়নি।তাই আসল ও নকলকে আলাদা করা যায়নি।কিন্তু প্রশ্ন হল, কমিশন ও পর্ষদ ঠিকমতো দায়িত্ব পালন করেনি বলে বৈধ চাকরিজীবীরা বরখাস্ত হয়ে যাবেন? যারা আদালতের সঙ্গে সহযোগিতা করেনি আদালত তাদের শাস্তি দিক। তাদের বাধ্য করুক প্রয়োজনীয় তথ্য সরবরাহ করতে। কমিশন ও পর্ষদের দু'চারজন আধিকারিককে বাগে আনতে না পেরে হাজার হাজার চাকরিজীবীকে ব্যতিব্যস্ত করার কোনো মানে হয়? আজকের দিনে একটা সরকারি চাকরি পাওয়া 'ভগবানের সাক্ষাৎ' পাওয়ার সমান! অথচ বৈধভাবে অর্জন করা চাকরিকে কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। ২০১৬ সালের প্যানেলে এমন অনেকেই আছেন যাঁরা ২০১১ সালের প্যানেলের চাকরি ছেড়ে এসেছেন। মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশনের প্যানেল থেকে পাওয়া চাকরি ছেড়ে এসেছেন।অন্য কোনো পেশার চাকরি ছেড়ে এসেছেন। অর্থাৎ এঁরা একাধিকবার সফলভাবে যোগ্যতার প্রমাণ দিয়ে চাকরি করছিলেন।আদালত কোনো বাছবিচার না করে সকলকেই বাতিল করে দিল। ভেবে দেখা হল না, একটি চাকরি একটি নিম্নবিত্ত অথবা মধ্যবিত্ত পরিবারের জন্য কত গুরুত্বপূর্ণ! চাকরি করার সুবাদে ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিয়ে বহুজন গাড়ি বাড়ি করেছেন। বেতন থেকে ঋণের কিস্তি মেটানো হয়। হঠাৎ বেতন বন্ধ হলে তাঁরা কিভাবে ঋণ পরিশোধ করবেন? সুদ সহ বেতন ফেরতের নির্দেশ আরও মারাত্মক।ক'জন এই নির্দেশ পালন করতে পারবেন, সন্দেহ আছে। অনেকেই ভিটেমাটি ছেড়ে পালাবেন। আত্মহননের পথ বেছে নিতে বাধ্য হবেন। একসঙ্গে এতজন শিক্ষক চাকরিচ্যুত হলে স্কুলগুলোর অবস্থা কী হবে কেউ কি ভেবে দেখেছে? এখন রাজ্যের অধিকাংশ স্কুলে শিক্ষার্থীর তুলনায় শিক্ষকের সংখ্যা অনেক কম। স্কুল ফান্ড থেকে যৎসামান্য পারিশ্রমিকের বিনিময়ে চুক্তিভিত্তিক অস্থায়ী শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী নিয়োগ করে জোড়াতালি দিয়ে চলছে। এই মুহূর্তে অনেক স্কুলে ২০১৬ সালের প্যানেলের শিক্ষকই বেশি। একসঙ্গে অর্ধেক শিক্ষক বিদায় নিলে স্কুলগুলো চলবে কী করে! নতুন নিয়োগের ব্যাপারে কোর্টের কোনো কড়া নির্দেশনা নেই, শুধু বাতিলের বেলায় বড় বড় বক্তব্য! সরকারি স্কুল ছেড়ে মেধাবী ও আর্থিক সঙ্গতি সম্পন্ন পরিবারের ছেলেমেয়েরা সব প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানে চলে যাচ্ছে। শিক্ষার বেসরকারিকরণ ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যেই কি কোনো বৃহত্তর ষড়যন্ত্র চলছে?

       মুর্শিদাবাদ জেলার একটি হাইস্কুলের একজন প্রধানশিক্ষক স্কুল সার্ভিস কমিশনের সুপারিশ পত্র ও মধ্যশিক্ষা পর্ষদের নিয়োগপত্র জাল করে তাঁর ছেলেকে নিজের স্কুলেই চাকরিতে ঢোকান। কোর্টের নির্দেশে সিআইডি তদন্ত করে। অভিযুক্ত পিতা-পুত্র ও দুজন শিক্ষা আধিকারিক কারাবাস ভোগ করেন। এসব ২০২২-২৩ সালের ঘটনা।এই নিয়োগ কেলেঙ্কারির প্রেক্ষাপটে এবছর মে মাসের দ্বিতীয়ার্ধে রাজ্যের সমস্ত হাইস্কুলের সকল শিক্ষক-শিক্ষিকার নিয়োগ সংক্রান্ত তথ্য পোর্টালে আপলোড করার নির্দেশ দেওয়া হয়। হার্ডকপি ডিআই অফিসে জমা করতে বলা হয়। নথিপত্রে শিক্ষকদের সেল্ফ অ্যাটেসটেড করতে বলা হয়।এই কাজ করার জন্য স্কুলগুলো এক সপ্তাহের মতো সময় পায়। তখন রাজ্যে গরমের ছুটি ও লোকসভা নির্বাচন চলছিল।গ্ৰীষ্মাবকাশে অনেকেই চিকিৎসা করাতে অথবা ঘুরতে ভিন রাজ্যে বা বিদেশে যান।একটা পুরনো ঘটনায় দীর্ঘাবকাশের মধ্যে এমন জরুরি ভিত্তিতে নথিপত্র চাওয়ার কোনো যুক্তি থাকতে পারে না। এই ধরনের আকস্মিক নির্দেশে অফিস আদালতের স্বেচ্ছাচারী মানসিকতাই প্রকাশ পায়।পশ্চিমবঙ্গে এখন দশ হাজার হাইস্কুলে দেড় লাখ শিক্ষক আছেন। মাত্র একজন শিক্ষকের নিয়োগের ক্ষেত্রে গুরুতর জালিয়াতির অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে।কারা এর সঙ্গে জড়িত তাও জানা গেছে।আইন অনুযায়ী তাদের যত কড়া শাস্তি দেওয়া যায় দেওয়া হোক। কিন্তু একটা স্কুলের একজন শিক্ষকের অপরাধের জন্য রাজ্যের হাজার হাজার স্কুলের লক্ষাধিক শিক্ষককে তদন্তের আওতায় টেনে আনার কোনো মানে হয়? একটা বিচ্ছিন্ন ঘটনার জন্য এখন সবাইকেই সন্দেহ করতে হবে? বিড়ম্বনায় ফেলতে হবে? বিশ-ত্রিশ বছর চাকরি করার পর আবার নথিপত্র দেখাতে হবে? মশা মারতে কামান দাগা হচ্ছে!

       গত ২২শে মে কলকাতা হাইকোর্টের একটি ডিভিশন বেঞ্চ ২০১০ সালের পর থেকে রাজ্য সরকারের প্রদান করা সমস্ত ওবিসি সার্টিফিকেট বাতিল বলে রায় দিয়েছে। ২০১১ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত বর্তমান রাজ্য সরকারের আমলে প্রায় পাঁচ লক্ষ ওবিসি সার্টিফিকেট ইস্যু করা হয়েছে। হাইকোর্ট এগুলোকে বাতিল ঘোষণা করেছে। ইতিমধ্যে এই সার্টিফিকেট ব্যবহার করে যে সুবিধা ভোগ করা হয়েছে তার ওপর কোনো নেতিবাচক প্রভাব না পড়লেও পরবর্তীতে অনুরূপ ছাড় আর পাওয়া যাবে না। রায়ে বলা হয়েছে, ১৯৯৩ সালের অনগ্ৰসর শ্রেণী কমিশন আইন অনুযায়ী ওবিসি'র তালিকা তৈরি করতে হবে। ঘটনা হল, ১৯৯৩ সালের আইন অনুযায়ী ২০০৯ সালে কিছু জনগোষ্ঠীকে ওবিসি হিসেবে চিহ্নিত করা হয় এবং তাদের জন্য শিক্ষা ও চাকরিতে সংরক্ষণ চালু করা হয়।এই জনগোষ্ঠীর অধিকাংশই ছিল মুসলমান। ২০১২ সালে আরেকটি আইন তৈরি করে অন্যান্য অনগ্ৰসর শ্রেণীর তালিকায় আরও কিছু জনগোষ্ঠীকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।এদেরও অধিকাংশই মুসলমান। ওবিসি'র তালিকায় ধাপে ধাপে জনগোষ্ঠী সংযোজন একটি স্বাভাবিক ঘটনা।ওবিসি'র তালিকায় জনগোষ্ঠীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও ওবিসি'র জন্য সংরক্ষণ কিন্তু বাড়েনি। সংরক্ষণের হার বাড়েনি বলে ওবিসি'র সুবিধাভোগীদের মধ্যে শুধুমাত্র প্রতিযোগিতা তীব্রতর হয়েছে।বিষয়টি এভাবে দেখা যেতে পারে: একটি ওবিসি সংরক্ষিত পদের জন্য ২০১২ সালের আগে হয়ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সুযোগ পেত পাঁচটি জনগোষ্ঠী, এখন পায় সাতটি। এছাড়া এর আর কোনো তাৎপর্য নেই। আদালত ২০১০ সালের পরের সমস্ত ওবিসি শংসাপত্র বাতিল করলেও ২০১২ সালের যে আইনের ভিত্তিতে শংসাপত্রগুলো প্রদান করা হয়েছিল সেই আইনকে কিন্তু বাতিল করা হয়নি। ২০১২ সালের আইন যদি অসাংবিধানিক না হয় তবে সেই আইন অনুযায়ী ইস্যু করা সার্টিফিকেট কেন বাতিল হবে? ২০১২ সালের আইন যদি বেআইনি না হয় তবে ১৯৯৩ সালের আইনকে কেন ভিত্তিভূমি ধরতে হবে? একই বিষয়ে যদি একাধিক আইন থাকে তবে তো সর্বশেষ আইনকেই অগ্ৰাধিকার দেওয়ার কথা।এক খোঁচাতেই পাঁচ লাখ মানুষের সার্টিফিকেট ক্যানসেল করে দেওয়া হল। কিন্তু ভেবে দেখা হল কি ওই সার্টিফিকেট পেতে কী পরিমাণ কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে? কত সাপোর্টিং ডকুমেন্ট সংগ্ৰহ করতে হয়েছে? হঠাৎ করে এত সংখ্যক সার্টিফিকেট বাতিল হওয়ার ফলে অনেক সমস্যা দেখা দিতে পারে। চাকরিতে যে 'হান্ড্রেড পয়েন্ট রোস্টার' অনুসরণ করা হয় তাতে ওবিসি'র জন্য সতের শতাংশ সংরক্ষণ থাকে।বিগত বারো-চোদ্দো বছরের সমস্ত সার্টিফিকেট বাতিল হবার ফলে সংরক্ষিত আসনে প্রয়োজনীয় সংখ্যক কর্মপ্রার্থী পাওয়া কঠিন হবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ওবিসি শিক্ষার্থীদের জন্য সংরক্ষিত আসন কোনভাবেই পূরণ হবে না। ওবিসি'দের জন্য যে ছাত্র বৃত্তি রয়েছে তাতে কেউ আবেদনকারী হতে পারবে না। তফসিলি জাতি ও তফসিলি জনজাতির সঙ্গে অন্যান্য অনগ্ৰসর শ্রেণীর আর্থ-সামাজিক পশ্চাৎপদতার দিক থেকে বিশেষ পার্থক্য নেই। ফারাক যেটুকু আছে তা ধর্মীয় পরিচয়ে। এস সি-এস টি'রা অধিকাংশই হিন্দু আর ওবিসি'রা অধিকাংশই মুসলমান।দুর্ভাগ্যবশত, স্বাধীনতার সাড়ে সাত দশক পরে ধর্মনিরপেক্ষ ভারতের অঙ্গরাজ্য পশ্চিমবঙ্গে মানুষের ধর্মীয় পরিচয়কে প্রাধান্য দিয়ে ওবিসি সার্টিফিকেট বাতিল করছে বিচারালয়। বিচারের বাণী কি বৈষম্যমূলক হয়ে যাচ্ছে না? আদালত সাধারণ মানুষের ভরসার জায়গা।সেই জায়গা থেকেই বারবার ধাক্কা খেয়ে মানুষ আজ বিভ্রান্ত, বিপন্ন।

১১:৩৩ এএম, ২৫ জুন ২০২৪ মঙ্গলবার

Poem - I Miss You My Love 

 

I Miss You My Love 

Mohamed Rahal ( Algeria)

 

All the longing and you're far away 

Is it enough to improve me?

My tears are shedding longing to see you

I sleep with a ghost next to me 

it does not let me 

How do I feel when you are so far from me? 

Baby my eyes never sleep 

Strange and what good is my longing?

I would love to see you, but how???

 

Why I loved you unforgettable love 

I hear every whisper of you 

love and touch 

but how .

Why did you agree to stay away from me? 

Is this my reward for falling in love with you?

 

My love comes back that I can't 

 I held on to your love, like a baby, come back

 

১১:১৪ এএম, ২৫ জুন ২০২৪ মঙ্গলবার

ভারতীয় সংবিধানের ৩০ নং ধারা ও ধর্মনিরপেক্ষ আমরা

ভারতীয় সংবিধানের ৩০ নং ধারা ও ধর্মনিরপেক্ষ আমরা

খগেন্দ্রনাথ অধিকারী

 

 আজ থেকে পৌনে একশ বছর আগে ১৯৩৩ সালের জার্মান সংসদের নির্বাচনে এদেশের নরেন্দ্র মোদীর বি. জে. পি পার্টির মত হিটলারের নাৎসী পার্টি নিরুঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেলেও একক গরিষ্ঠতা পান এবং তার ভিত্তিতে, জোর জবরদস্তি করে ও ভয় ভীতি দেখিয়ে ১৯৩৫ সালে ১৫ই সেপ্টেম্বর ন্যুরেমবার্গ আইন পাশ করেন। এই আইনের উদ্দেশ্য ছিল উগ্র ইহুদি বিদ্বেষ ছড়িয়ে ইহুদিদেরকে জার্মানী থেকে নিশ্চিহ্ন করা এবং আর্য রক্তের বিশুদ্ধতার নামে উগ্র জার্মান আধিপত্যবাদ প্রতিষ্ঠা করা। ঠিক একই কায়দায় নরেন্দ্র মোদী ও তাঁর নিরঙ্কুশ সংখ্যা গরিষ্ঠতাহীন বি. জে. পি পার্টি ২০২৪ এর লোকসভা নির্বাচনের পরে উগ্র হিন্দু মৌলবাদের ধ্বজা উড়িয়ে অশোক--আকবর--দারাশিকো--বিবেকানন্দ--রবীন্দ্রনাথের দেশে বহুত্ববাদী সংস্কৃতির আদর্শকে পদদলিত করে মুসলিম--খৃশ্চান--বৌদ্ধ--জৈন নির্বিশেষে সংখ্যালঘু মানুষদেরকে নিশ্চিহ্ন করার তথা ভারতকে একটি হিন্দু রাষ্ট্রে পরিণত করার চক্রান্তে লিপ্ত আছে। এঁদের আওয়াজ হোল হিন্দী--হিন্দু--হিন্দুস্থান। অর্থাৎ এদেশের রাষ্ট্রভাষা হবে হিন্দি, এদেশের জাতি হবে হিন্দু, এদেশের নাম হবে হিন্দুস্থান।

এই লক্ষ্যকে মাথায় রেখে দেশজুড়ে বি. জে. পি উল্লিখিত ৩০ নং ধারাকে কেন্দ্র করে সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প ছড়াচ্ছে। উল্লেখ্য যে ১৯৭৬ সালে ৪২ তম সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে ভারতবর্ষকে সংবিধানের প্রস্তাবনায় একটি ধর্মনিরপেক্ষ বা "Secular" দেশ হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু এই সংবিধান সংশোধনের বহু আগে থেকেই, অর্থাৎ ১৯৫০ সালের ২৬শে জানুয়ারী সংবিধান চালুর মুহূর্ত থেকেই ভারতবর্ষ হোল একটি ধর্মনিরপেক্ষ দেশ। প্রকাশ থাকে যে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নে ভারতের প্রথম রাষ্ট্রদূত ছিলেন ডঃ রাধাকৃষ্ণান, যিনি ছিলেন কমরেড যোসেফ স্ট্যালিনের খুবই গুণগ্রাহী। তিনি দেখেছিলেন যে সাম্রাজ্যবাদী দুনিয়া যতই কুৎসা করুক যে কমিউনিস্টরা ধর্ম মানে না, বাস্তবে ১৯৩৬ সালের স্ট্যালিন সংবিধানে সকল মানুষের ধর্মাচরণের অধিকারকে স্বীকৃতি জানানো হয়েছিল। বিশেষ কোন ধর্মকে আলাদা ধর্ম হিসাবে স্বীকার করা হয়নি। তবে ধর্মাচরণের অধিকারের পাশাপাশি সেখানে ধর্মের বিরুদ্ধে প্রচারের অধিকারও স্বীকৃত হয়। এই সংবিধানের ১২৪ নং ধারার ভাষায় "In order to ensure to citizens freedom of conscince, the church in the u.s.s.r is separated from the state, and the school from the church. Freedom of riligious worship and freedom of antireligious propaganda is recognized for all the citizens."

আমাদের দেশের সংবিধানে ধর্মাচরণের বিরুদ্ধে প্রচারের অধিকার স্বীকৃত হয়নি। তার মূল কারণ হোল আমাদের দেশের বহুত্ববাদী সংস্কৃতির সুর হোল অধ্যাত্মবাদ, ভোগবাদ বা বস্তুতান্ত্রিকতাবাদ নয়। চার্বাকের মত ভোগবাদী দার্শনিক যার মূল কথা ছিল "যাবৎ জীবেৎ সুখম্‌ জীবেৎ, ঋনং কৃত্বা ঘৃতম পিবেৎ," -- জন্মালেও, এটা ছিল আমাদের সংস্কৃতির মূল সুরের একটি ব্যতিক্রম মাত্র: আসল সুর হোল আধ্যাত্মবাদ। এই সুরের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে আমাদের সংবিধানের মধ্যে ২৫, ২৬ ও ৩০ নং ধারায় ধর্মাচরণের অধিকার স্বীকৃত হয়েছে। প্রকাশ থাকে যে দেশ যখন সাভারকার--শ্যামাপ্রসাদের মত হিন্দু মৌলবাদীদের ও মহম্মদ আলি জিন্না--ইকবাল প্রমুখ মুসলিম মৌলবাদীদের বিষাক্ত ভাবনা ও ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের চক্রান্তের ককটেলে বিভক্ত হোল, তখন হিন্দু মৌলবাদীরা দাবী তোলেন যে ভারতকে বিভক্ত করে মুসলিম রাষ্ট্র পাকিস্থান হয়েছে, অতএব অবশিষ্ট ভারত হবে হিন্দুস্থান। কিন্তু মহাত্মা গান্ধীসহ খণ্ডিত ভারতের শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষরা ও জাতীয় কংগ্রেস এবং ভারতের কমিউনিস্ট পার্টিসহ সকল বামপন্থী ও গণতান্ত্রিক দলগুলি ভারতের ধর্মনিরপেক্ষ ঐতিহ্যকে বজায় রাখার উপর জোর দেন। ফলে এই ঐতিহ্যের আদর্শকে প্রতিধ্বনিত করে আমাদের সংবিধানের উল্লিখিত ধারাগুলির মধ্যে জাতি ধর্ম নির্বিশেষে সকল মানুষের ধর্মচরণের অধিকার স্বীকৃত হয়েছে। ২৫ নং ধারায় বলা হয়েছে-- " . . . all persons are equally entitled to freedom of conscience and the right freely to profess, practise, and propagate religion." ২৬ নং ধারায় বলা হয়েছে-- " . . . every religious denomination or any section therof shall have the right.

(a) to establish and maintain institutions for religious and chartable purposes;

(b) to manage its own affairs in matters of religion. 

অর্থাৎ প্রত্যেক ধর্মীয় গোষ্ঠীর লোকরা ধর্মীয় ও দাতব্যগত কারণে তাদের নিজস্ব প্রতিষ্ঠান স্থাপন ও পরিচালন করতে পারবে। এই বিষয়ে সবার সমান অধিকার। এখানে কোন বৈষম্যের অবকাশ নেই।

মনে রাখা দরকার যে একটি ধর্মীয় রাষ্ট্র যেমন সাবেক হিন্দুরাষ্ট্র নেপালে, কিংবা বর্তমান ইসলামী রাষ্ট্র ইরাণ, ইরাক কিংবা আফগানিস্থানে, বা বৌদ্ধ ধর্মীয় রাষ্ট্র মায়ানমারে, অন্য ধর্মের লোকরা নির্ম্মমভাবে নির্যাতিত হয়। হিন্দু ধর্মের পবিত্রতা রক্ষার নামে কাঠমাণ্ডুতে নেপালী রাজতন্ত্রের আমলে সংখ্যালঘুদের উপর যে বর্বরতা হয়েছে, কিংবা আফগানিস্থানে শরিয়তী শাসনের নামে তালিবান আমলে সংখ্যালঘু হিন্দু--বৌদ্ধ--খৃশ্চানদের উপর যে পাশবিকতা হয়েছে এবং এখনো হচ্ছে, সেখানকার বামিয়ানে হিন্দু ও বৌদ্ধ সংস্কৃতির নিদর্শনগুলিকে যেভাবে ধূলিস্যাৎ করা হয়েছে, তা সভ্যতার লজ্জা। একইভাবে ইরাণে শিয়া মৌলবাদ ও ইরাকে সুন্নী মৌলবাদ ইসলামের নামে ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের উপর যে তাণ্ডব চালিয়ে যাচ্ছে তা অকল্পনীয়। অহিংসার বাণীর প্রচারক বুদ্ধদেবের নাম ভাঙিয়ে সুচির সরকারের মদতে মানায়মারে বৌদ্ধ মৌলবাদীরা কেবল মুসলিম হবার অপরাধে রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুদেরকে নারী--শিশু--যুবা--বৃদ্ধ--বৃদ্ধা নির্বিশেষে, যেভাবে রক্তের বন্যায় ভাসিয়ে দিচ্ছে, সে নৃশংসতার বর্ণনা রক্ত--মাংস--হাড়কে হিম করে। বস্তুতঃপক্ষে, এইসব কারণেই প্যালেস্টাইন মুক্তি আন্দোলনের মহানায়ক, PLO প্রধান ইয়াসের আরাফৎ বলেছিলেন তাঁর মৃত্যুর কিছু আগে, "শরিয়তের নামেই হোক, আর বাইবেলের নামেই হোক, ধর্মীয় রাষ্ট্র মানেই হোল শয়তানদের দোজোক।" আরাফতের মূল্যায়ন সর্বাংশে সত্য। কোন ধর্মীয় রাষ্ট্রে ধর্ম বা ঈশ্বরের কোন ঠাঁই নেই। সেখানে আছে বা থাকে শুধু পাশবিকতা, নৃশংসতা, অকল্পনীয় বর্বরতা। ধর্মনিরপেক্ষ তথা বহুত্ববাদী সংস্কৃতির দেশেই কেবলমাত্র সকল মানুষ মৈত্রী ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে সকল মানুষ নিজ নিজ ধর্ম ও সংস্কৃতিকে রক্ষা করে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করতে পারে।

তাই ইতিহাস প্রমাণ করে যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানবতাবাদী রাষ্ট্র নায়করা দেশের সংবিধানের মধ্যে ধর্মনিরপেক্ষতার আদর্শকে প্রাধান্য দিয়েছিলেন। দ্বিতীয় মহাযুদ্ধোত্তর পরিস্থিতিতে ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রপতি সুকর্ণো, ঘানার নত্রুমা, শ্রীলঙ্কার বন্দরনায়েক, কঙ্গোর লুমুম্বা, চিলির রাষ্ট্রপতি সালভাদোর আলেন্দে, আফগানিস্থানে বারবাক কারমাল ও ডঃ নজিবুল্লাহ, মিশরের রাষ্ট্রপতি আব্দেল নাসের, সবাই সংবিধানের মধ্যে ধর্মনিরপেক্ষতার আদর্শকে স্থান দিয়েছিলেন। উল্লেখ্য যে "Muslim Brotherhood" বলে একটি উগ্র মুসলিম মৌলবাদী সংগঠন, সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী নাসেরের জাতশত্রু মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের মদতে গুলি করে আলেকজান্দ্রিয়ায় এক সভায় নাসেরকে হত্যা করার অপচেষ্টা করে। গুলিটি লক্ষ্যভ্রষ্ট হওয়ায় অল্পের জন্য নাসের বেঁচে যান। অতি সাম্প্রতিক কালে দক্ষিণ আফ্রিকার সংবিধানে রাষ্ট্র নায়ক নেলসন ম্যাণ্ডেলা ধর্ম নিরপেক্ষতার আদর্শকে স্বীকৃতি দেন।

আমাদের দেশ ভারতবর্ষের সংবিধানের মধ্যেও উল্লিখিত ধারাগুলির মাধ্যমে ধর্মনিরপেক্ষতার আদর্শ স্বীকৃত হয়েছে। শুধু তাই নয়। ধর্মগত, ভাষাগত, জনগোষ্ঠীগত সংখ্যালঘুরা যাতে সংখ্যাগুরুদের চাপে, আত্মবিকাশে বিঘ্নিত না হয়, তার জন্য বিশেষ সুরক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আমাদের দেশের সংবিধানের ৩০ নং ধারায় বলা হয়েছে-- "All minorities, whether based on religion or language, shall have the right to establish and administer educational institutions of their choice." অর্থাৎ ধর্ম ভিত্তিক বা ভাষা ভিত্তিক সংখ্যালঘুরা তাদের অভিরুচি অনুযায়ী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থাপন ও পরিচালনা করতে পারবে।

উগ্র হিন্দু মৌলবাদীরা এই ৩০নং ধারাটির বিকৃত ব্যাখ্যা দিয়ে বলছে যে এই ধারার অস্তিত্ব হিন্দুদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতার সামিল। তারা এই ধারার অপলোপ চায়। তাদের যুক্তি যে এই ধারা বলে মুসলিম, খৃশ্চান, বৌদ্ধ, জৈন প্রমুখ সংখ্যালঘুরা তাদের পছন্দমত, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপন ও পরিচালনা করে তাদের ধর্মীয় শিক্ষা সেখানে দিতে পারে। কিন্তু হিন্দুদের সেই সুযোগ নেই। এই বৈষম্য কেন থাকবে? এর অবলুপ্তি দরকার। এই বিকৃত প্রচারের দ্বারা তারা সাধারণ হিন্দু--ভাই বোনদেরকে বিভ্রান্ত করছে। সংবিধানের মধ্যে পূর্বোক্ত ২৫ ও ২৬ নং ধারার তো যথাক্রমে প্রত্যেকের স্বাধীনভাবে ধর্মাচরণের অধিকার ও প্রত্যেক ধর্মীয় সম্প্রদায়ের পছন্দমত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও দাতব্য প্রতিষ্ঠান খোলার অধিকার দেওয়া আছে। কাজেই অকারণে ৩০ নং ধারা নিয়ে অপপ্রচার করে সংখ্যাগুরু হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ জনের সাথে, সংখ্যালঘু মুসলিম, খৃশ্চান প্রমুখ সম্প্রদায়ের মানুষদের এক মানসিক দূরত্ব তৈরী করা হচ্ছে। এর পরিণাম হবে ভয়ংকর। গোটা দেশটা তাসের ঘরের মত ভেঙ্গে পড়বে। এটা আমরা, এদেশের শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষরা কিছুতেই হতে দিতে পারি না। এই অপচেষ্টাকে আমরা রুখবোই রুখবো--এ আমাদের দৃঢ় অঙ্গীকার।

আসলে ইংরাজীতে "Preotective Discrimination" বা সুরক্ষা মূলক বৈষম্য বলে একটি কথা আছে। সমাজের দুর্বল অংশের মানুষদের জন্য এই পদক্ষেপ নিতে হয়। বিশ্বের বহুদেশে এর নজির আছে। ১৯৩৬ সালের সোভিয়েত সংবিধানে অর্থাৎ স্টালিন সংবিধানে কিংবা ১৯৭৭ সালের ব্রেজনেড সংবিধানে এটা ছিল, সুইজারল্যাণ্ডে বিভিন্ন ক্যান্টনে এই ব্যবস্থা আছে, নাসেরের আমলে মিশরের রাষ্ট্রবাবস্থায় খৃশ্চান, ইহুদি ও অন্যান্য সংখ্যা লঘুদের জন্য এই সুরক্ষামূলক বৈষম্যের ব্যবস্থা ছিল। যে শ্বেতাঙ্গ বর্ণবাদী শাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করে লেনসন ম্যাণ্ডেলা দক্ষিণ আফ্রিকায় শ্বেতাঙ্গ বর্ণ বৈষম্যবাদী শাসনের অবসান ঘটিয়েছিলেন, সেই দক্ষিণ আফ্রিকায় যাতে সংখ্যালঘু শ্বেতাঙ্গরা সংখ্যাগুরু কৃষ্ণাঙ্গদের শাসনে কোন বৈষম্যের শিকার না হন, তার জন্য সংখ্যালঘু শ্বেততাকারদের সুরক্ষার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা ম্যাণ্ডেলা প্রশাসন গ্রহণ করেন। দাসত্ব প্রথা অবলোপের পর মার্কিন রাষ্ট্রপতি আব্রাহাম লিঙ্কন উদ্যোগ নিয়েছিলেন বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে বর্ণগত সংখ্যালঘুদের স্বার্থে সুরক্ষামূলক বৈষম্যবাদী পদক্ষেপ চালু করতে। কিন্তু, তার আগে তিনি খুন হন দাসপ্রভুদের চক্রান্তে। 

বিগত শতাব্দীর ত্রিশের দশকে বিশ্বব্যাপী মন্দার প্রেক্ষাপটে মার্কিন রাষ্ট্রপতি রুজভেল্ট "New Deal" কর্মসূচীর মাধ্যমে সমাজের দূর্বল অংশের মানুষকে কিছু বিশেষ সুরক্ষা দিতে চেয়েছিলেন। এর জন্য তাঁকে মার্কিন সুপ্রীমকোর্টের সঙ্গে অনেক লড়তে হয়েছিল। আমাদের দেশে ১৯৩২ সালে, আইন অমান্য আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে লণ্ডনে গোল টেবিল বৈঠকে মহাত্মা গান্ধী ভারতের জন্য পূর্ণ স্বাধীনতার দাবী তুলতে গিয়ে জিন্না ও আম্বেদকরের কাছে সমর্থন চেয়ে এ ব্যাপারে আবেদন করেন। কিন্তু জিন্না শর্ত দেন যে গান্ধীজী মুসলিমদের জন্য বিশেষ সুযোগ সুবিধার দাবী মানলে তবে তিনি এই প্রস্তাবকে সমর্থন করবেন; আম্বেদকর একই সুরে শর্ত দেন অনুন্নত জাতিগুলির জন্য বিশেষ সুবিধার দাবী গান্ধীজী মানলে তবে তাঁকে সমর্থন। জাতীয় কংগ্রেসের মধ্যে মৌলানা আবুল কালাম আজাদ থেকে শুরু করে ডঃ রাধাকৃষ্ণান কেউই এক দাবীকে মানার পক্ষে ছিলেন না। তাঁদের সবার মত ছিল জাতি ধর্ম নির্বিশেষে সবার কল্যাণ। গান্ধীজীরও অভিমত ছিল তাই। তিনি বলেন "সর্বোদয়" অর্থাৎ সবার মঙ্গল সাধনই তাঁর লক্ষ্য -- কোন বিশেষ সম্প্রদায়ের নয়। ফলে গোলটেবিল বৈঠক ভেস্তে গেল।

গণপরিষদে যখন আমাদের সংবিধান রচিত হচ্ছিল, তখন এই "Preotective Discrimination"-এর প্রসঙ্গটি ওঠে। গণপরিষদের একমাত্র কমিউনিস্ট সভ্য কমরেড সোমনাথ লাহিড়ী খুব জোরের সঙ্গে ৩০ নং ধারার সংযোজনকে সংবিধানে অন্তর্ভুক্তির উপর জোর দেন সমস্ত ধর্মগত ও ভাষাগত সংখ্যালঘুদের স্বার্থে। সেই সঙ্গে শিক্ষা--চাকুরি ইত্যাদি ক্ষেত্রে সংরক্ষণের প্রশ্নে আম্বেদকর নির্দেশিত জাতপাত ভিত্তিক ব্যবস্থা (Caste based reservation) র পরিবর্তে অর্থনৈতিক ভিত্তিক সংরক্ষণের কথা বলেন। তাঁর এই দ্বিতীয় প্রস্তাব গৃহীত হয়নি। দেশের শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষরা জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে অর্থনৈতিক ভিত্তিক সংরক্ষণের জন্য লড়ছেন। সে লড়াই যে অচিরেই জয়যুক্ত হবে, এ আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস। আর উল্লিখিত ৩০ নং ধারাকে সংবিধান থেকে খারিজ করে দিয়ে আমাদের দেশের ধর্ম-নিরপেক্ষতার ঐতিহ্যকে বিপন্ন করার যে ধূর্ত গৈরিকী অপপ্রয়াস, তাকে ব্যর্থ করে দিয়ে অশোক--আকবর--দারাশিকো--বিবেকানন্দ--রবীন্দ্রনাথের-নজরুলের উত্তরসূরীরা যে আমাদের দেশের বহুত্ববাদী পরম্পরাকে রক্ষা করবেনই করবেন, সে বিষয়ে আমরা নিযুত নিশ্চয়। 

 

      

 

লেখক পরিচিতি

অধ্যাপক খগেন্দ্রনাথ অধিকারী রাষ্ট্রীয় বিদ্যাসরস্বতী পুরস্কার ও এশিয়া প্যাসিফিক পুরস্কার সহ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বহু পুরস্কার প্রাপ্ত একজন খ্যাতনামা শিক্ষাবিদ। ইনি কোলকাতার সাউথ সিটি (দিবা) কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ।

ঠিকানা-শরনিয়ার বাগান

পোষ্ট-টাকী, পিন-৭৪৩৪২৯

পশ্চিমবঙ্গ, ভারত

 

১১:১০ এএম, ২৫ জুন ২০২৪ মঙ্গলবার

Poems

Three Expressions

Muhammad Shanazar 

 

The world goes on, but sans guardians,

They are busy in trades of gold and silk,

And he-cats, a group of five, at present

Has been employed to watch milk.

 

Here I relate expressions 

Of the three dying kids in Palestine,

A dying child said to the cameraman, 

“I shall complain to God, 

Your world is unguarded, insecure, 

None spoke a word on my death.”

 

The other said looking up, 

“O! God, send your angel 

To pick me away to the heaven, 

So that I may have enough food and water, 

I am dying but hungry and thirsty.”

 

A little injured girl with a least hope of life, 

While running said to the journalist, 

“Don’t make my movie, I am but without Hijaab.”

 

Throughout my life I preached for peace,

Now I am confirmed, I am but helpless,

The authority lies with bullies and beasts, 

They safeguard only their own interests,

But in the name of faith and religion

And they have changed the world into a prison.

 

I foresee, we shall have to face for our silence,

God is going to avenge this all,

He will either shake the earth,

Or unleash the army of waves 

That will drag us down with the fiery weapons,

Or he will madden some baldheaded leader, 

To push the button, then all will be astonished,

For the heinous crime of killing the kids

Will never go scot-free and unpunished.

 

 

 

 How Ended 2023 

 Muhammad Shanazar 

 

I remember, 

It was the last eve of December, 

The red sun was about to descend. 

Just in front of the hovel, 

There sat five giant-sized human beings, 

Around a penta-dimension table. 

The plain around them was wide extended, 

With dry withering sedge.

 

Upon the table they kept 

Large bottles of champagne, 

As big as jars made of porcelain, 

There they placed beside a rope like objects 

They grew out of their legs, 

Might be a yard and half in length, 

As thick as a rope that we use to haul and tow, 

A ship or an engine when out of order, 

They all had round knots on the end. 

 

When the five giants were busy in chit-chat, 

Red clouds appeared in the sky, 

Harsh wind began to blow, 

It didn't waft along dried leaves or dust, 

But skulls and limbs of the human beings. 

The giants in panic took bottles in one hand 

And in the other they managed their ropes, 

On the crooked arms.

 

They all went into the hovel, 

It hardly could adjust the five,

Their rope like objects remained outside, 

The red clouds encroached 

They began to pour down rain of blood, 

Redness of the sun mixed and mingled 

Into the redness of clouds, 

The whole sky, even the universe, 

Seemed all red red.

 

A man taller and bigger than the giants, 

Sturdy with big muscles, 

Resembling some ancient executioner, 

Appeared and stood in front of the hovel, 

He had an axe hung on his left shoulder,

And in the right hand he had a boulder.

 

He addressed them, 

"Gentlemen! Manage your Vetoes inside the hovel, 

Out of rain, else I shall cut them in twain, 

And then you all will be free of your gadgets." 

In the meanwhile the sun descended, 

And two thousand twenty three ended.

 

 

The Skull of Cain 

Muhammad Shanazar

In a dream, I dreamt a skull, 

It roved street to street,

And stopped in front of me where I stood 

It was freshly skinned, 

From inside it was a hollow bin, 

When it spoke, only its jaws moved,

It uttered wise things, rather the wisest, 

But most of them were unintelligible to me, 

I bent and peeped into and found, 

Neither any tongue nor brain, 

The whole thing 

Imparted me nothing but pain.

 

It said, 

“I am the inventor of the ways,

How a man murders a man,

The whole credit goes to me,

Whether one is killed in a family conflict,

Or on the battle plain, 

I am the skull of Cain.”

Then it went away and spoke no more,

Perhaps its voice submerged in the roar.

 

The Skull of Victory

(Written in the background of war between Israel and Palestine)

Muhammad Shanazar

 

In the morn, in the eve,

At night, at the sunny hours of noon,

Boom, boom, boom.

 

The dead bodies of men and women,

Cadavers of kids,

Shredded flesh of life,

Bones of hopes,

The injured carrying the injured,

Coffins of peace 

Being shouldered by the processions,

Mad dogs of horror roving in the streets,

Flying adders in the airs,

Myriad streaks of smokes,

Mushrooms rising up to the sky,

Debris of the future,

Cages of pain wrapped in cries,

Stench of the burning innocence,

The uniformed men of military,

Carrying the gadgets of bloodshed,

Callousness whispering into the ears of silence,

An encroaching anaconda of the final catastrophe,

The wealth of hunger,

Are gifts of the United Nations.

 

The world ever moved on but sans patronage,

All he-cats were assigned to guard,

The bowl of milk taken out

From breasts of the step mother, 

Now the Five Major sit with adjoining heads,

They rake up ashes with the poker of Veto,

And search for the skull of victory.

 

 

 

A Whisper from the Abyss

Muhammad Shanazar

 

You may find opportunities to do good deeds,

They are scattered around us,

Sometime petty and sometime great,

But we all prefer to do the heroic ones,

And ignore the actions of small importance.

 

I was cutting the heads of sunflower crop,

And thought to have rest in the cool shade of palai,

Just a hundred yards away,

I saw a man sitting on the edge of a farm,

He let loose three cows to graze,

He watched them lest they should go astray,

Besides, the cattle's presence

In front of the shepherd consoles his eyes.

 

Sometimes he got up to put them close,

As he walked, I noticed he was a lame person,

He might have had polio in his childhood,

He was attending his cows in the hot sun,

It was almost twelve o'clock, and the day of June.

 

In the cool shade of palai,

I thought to have a drink, I had a bottle with me,

It was ice but then melted into cold water,

As soon as I placed it on my lips,

A thought like flashing came to my mind,

The shepherd might been thirsty too,

He had nothing with himself

And his village was two and a half mile away.

 

I held the bottle under my arm and went to him,

I offered him the drink but first he shook his head,

As if he was shy a little,

Hesitant or suspicious on my intent,

He was wearing white turban of the faded cloth,

He also had a small axe with a long haft,

He took the bottle impatiently,

Pressed it between both of the knees,

While he opened the lid, I noticed,

His both arms shivering

Because of weakness or some malady.

 

Then he placed the bottle on his lips

And just in a few seconds,

He gulped down water more than half of the bottle,

Then tightening the lid he returned it to me,

He raised his right hand and made a gesture of gratitude,

Then I knew he was dumb too.

 

I came back in the shade of palai,

I had some spiritual satisfaction and felicity,

I began to wonder on my past life,

I didn't have such a deed in my scroll of actions,

Someone from the abyss of my heart whispered to me, "There may be some heroic deeds,

But no greater than offering water, to some thirsty soul,

It is even greater than moving on foot,

From one to another pole."

 

 

Consternation

Muhammad Shanazar

 

Just today, early in the morn,

I visited my sunflower farm,

Several newly bloomed flowers welcomed me,

All were facing to the East,

Looking in the sky with yellow faces,

As some time we see in the lab of NASA,

The scientists look in consternation,

To the same direction, unmoved, with fixed eyes,

On finding some new discovery,

Or horrific danger encroaching the Earth,

In the same manner,

All sunflowers looked in the sky,

To the same direction, unmoved, with fixed eyes,

But the Sun was behind the clouds.

 

 

A Cracked Dome of Mirror

(In memory of my aunt Suryya who died on 17 Jan. 2023)

Muhammad Shanazar

 

Memories, 

Of the spent years are crumbs of time,

Now I sit and collect the shards,

Some seem pleasant and some poignant,

Life in the end seems 

Nothing but a cracked dome of mirrors,

Each emits its own reflection.

 

Oh! My aunt,

My heart weeps and wail for you,

Though the sensible call it stupidity,

My heart and mind are not convinced,

That you are gone,

I feel, you just played hide and seek 

As you had had in my early days, 

My mother bore me and you brought me up,

Even when I am in sixties 

And had a sojourn at the village,

You played a triple role,

Of mother, of friend and of guard.

  

There is a lot to remember 

But memories are muddled, 

I have lost myself in maze of recollections,

Only I remember 

The last days that I spent with you,

And when I worked 

To remove debris of the old house,

And I had to push a hand cart to throw out stones,

At each third turn 

You had to offer a glass of milk,

And whenever I departed to come back,

You stood still 

Like a statute on the edge of farm,

Till my figure vanished you remained there.

 

I feel myself lucky 

That you breathed last in my arms,

It took a moment, 

Life flew to the valley of death,

Ah! They both have difference 

Of the pause of breath.

 

 

 

Biography of Pakistani eminent poet Muhammad Shanazar

 

Muhammad Shanazar, an Internationally renowned Pakistani eminent poet and translator, was born on November 25, 1960, at Saib, a village of Tehsil Gujar Khan in District Rawalpindi, Pakistan. In his childhood he did different kinds of work, he farmed the land, grazed cattle, cut grass, sold vegetables, and cut wood for fuel. But at the same time he took keen interest in education. He holds Masters Degrees in English Literature and Political Science from University of the Punjab. Having done masters in literature, he started his career as constable in Police Department and served there for three years. He then joined as a lecturer in Higher Education Department, Govt. of the Punjab. Education and hardworking demeanour have taken him to the heights of success. He has dedicated his life to education and literature. He worked there for 34 years and just recently got retirement as an Associate Professor of English Language and Literature. In addition to teaching, he concentrated literature and in a short time he emerged as a poet and translator. Several world academies bestowed upon him honourary Ph.Ds. He met two severe shocks his life, his father was murdered in 1990 and his mother died in a road accident in 1996. 

 

 

 

 

 

 

 

Muhammad Shanazar writes poetry against war, the pieces his literary work have been published in various national and international newspapers and magazines all over the world. Moreover, his many poems have included in various international anthologies as a co-author. His published and books are: Gems, The Cold Stars, The Dance of Darkness, Cries in the Wilderness, Voyages and Visions and published books are The Black Roses, The Scent of Love, Bells of The Bygone Days, Chillies and Aftermath which will be published soon in near future. His translated books are: The Alien Eyes, Wrist in the Clutches of Death, A Tempest in Silence, Sugar Coated, Symphony and Other Poems, Snowy Sunlight, The Coin of Death, A Garland of Poems, Withering Dreams, Down the Blue Streams, Hot Springs, A Saga of Love, The Crop of Stars and Khairi Mourat. 

 

Muhammad Shanazar the recipient of more than 250 awards, honours and titles, these have been bestowed by various literary and peace loving organizations around the world in recognition of his literary excellence and commitments. A few are like: Universal Inspirational Poet, World Icon of Peace, 1st Four Stars Ambassador in the World, Extraordinary Ambassador for Gratis Culture, World Laureate in Literature-2017, Pride of the Globe, The World Best Poet-2017, Ambassador of Humanity, Ambassador De Literature, Global Literature Guardian Award-2018, World Icon of Literature, World Ambassador of Literature, Living Legend of 21st Century, Mentor of World literature, HIS EXCELLENCY Yasser Arafat Peace Award-2019, Order of Shakespeare Medal-2021, Abu Nasr Ibn Muhammad Al-Farabi Award, Paragon of Hope, Hall of Honor-2020, World Peace Grand Award, Kairat Parman Medal, Cesar Vallejo Award-2020 The Legend Poet of the Millennium etc. 

 

Muhammad Shanazar is involved with famous organizations in different countries of the world like IHRO and Amnesty International. He is a lifelong member of the IPTRC of China, the International Writers' Association of the United States, Senator of the Parliament of World Literature, Dean, Poetry Critic, and an Evaluator of the Academy of Literature Excellence and Wisdom of Motivational Strips. He is the Secretary General of the World Institute for Peace Nigeria, the Second Secretary General of the World Union of Poets, and the First Vice President of the World Nation Writers Union, Kazakhstan. He had the honour to deliver inaugural address on ‘Education and our Future Needs’ to The World Knowledge Summit 2021, held in Mexico, on 18th August 2021, he also had the honour to address on peace, the military leadership of Bolivia on 27th August 2021, in which he spoke in favour of ‘Global Federation of World’s Nations’. Currently, he is leading a retired but an active life.

 

   

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

১১:০৮ এএম, ২৫ জুন ২০২৪ মঙ্গলবার

Poem - Drought

Drought

Jean Eureka

 

The prairie became desert,

Were the decisions,

Those that are taken,

Those that are forgotten,

Were the wars,

Pain and greed.

Of green cloaks,

Now marked with cracks.

The meadow was deserted,

Were the indecisions,

Those that are released, the memories,

It was half peace, false joy,

The feigned detachment.

 Of blue cloaks,

Deep cracks.

The lush meadow turned into a desert,

The sky no longer watered the mantles,

Afraid of hypocrisy.

And despite everything,

I can still see the light through the cracks.

Irreversible betrayal,

Irreversible death.

Your impact,

My impact,

Our impact..

Let's not look for blame, if there is no time for solutions.

Does it matter? Did it matter?

The earth resists,

Humanity... wake up!

The prairie became desert,

Arid, hot and inhospitable.

And we are still here.

 

MEXICAN ACADEMIC, architect, poet and writer, JEANETTE ESMERALDA TIBURCIO MÁRQUEZ, graduated from UNAM and studied Pedagogy, has numerous books published in the genres of poetry and narrative. SHE IS THE WOMAN WHO CHAIRS THE UNACCC CENTRAL AND SOUTH AMERICA. RECTOR OF THE UNIVERSITY OF NATIONS FOR THE QUALITY OF EDUCATION. FOUNDING PRESIDENT OF A MIL MENTES POR MEXICO INTERNATIONAL, EXECUTIVE PRESIDENT OF THE GLOBAL LEADERS ALLIANCE AND THE WORLD ACADEMY OF YOUTH IN LITERATURE, HISTORY, ART AND CULTURE, PRODUCER OF CABINA 11 GLOBAL CHAIN, Deputy Executive President of the WORLD ACADEMY OF LITERATURE, HISTORY, ART AND CULTURE, she is the International Coordinator of Mil Mentes por México of the International Festival of Women in Letters of the National Academy of History and Geography of the UNAM, ambassador of La Fenêtre of Paris, of the Indian Academy of Ethics , of the universal Peace Circle of Switzerland and France and Peace ambassador of the Paccis nuntiis movement.

০৫:৫৬ পিএম, ২৪ জুন ২০২৪ সোমবার

কবিতা - একটা তুমি

 

একটা তুমি

 ফারহানা আহাসান

একটা গল্প ছুঁয়ে দিলে

তোমার কলমের আঁচড়ে,

কোন এক বিকেলের আকাশে

উড়ে চলে যায় ভালোবাসার গাঙচিল

তুমি শুধু আমার মনের মাঝারে।

ক্ষণে ক্ষণে তেমায় কল্পনাতে রাখি

কিছু কিছু স্বপ্ন বুনেছি এক প্রহরের রৌদ্রমাখা হৃদয়ে

চারিদিকে কী সুন্দর ফুলের ছোঁয়া

তুমি আমার কড়ারী

হেঁটে হেঁটে বহুদূর প্রিয়সী।

যখনই দেখি কোন খামখেয়ালীতে

ঐ দুটি চোখ যেন চেয়ে রয় মাতালে

শুধু শুধু সুবাসের আবদারে

আমি চাই শুধু তুমিটাকে পাশে।

অদ্ভুত সব চারিদিক

পুরো বছর যেন কাঁশফুলের আবেশে

একটা তুমি আছো পুরো জীবন মাঝে।

 

 

কবি পরিচিতি:

ফারহানা আহাসান (FARHANA AHASAN)

ফারহানা আহাসান একজন কবি এবং লেখক। 

জন্ম- ১৬ সেপ্টেম্বর। বাবা- মরহুম নাজমুল আহসান, মা- ফরহাদ জাহান। তিন বোন ও এক ভাই। স্বামী- মেজর মোহাম্মদ আশরাফুল আলম (রিটায়ার্ড)। এক ছেলে মোহাম্মদ ফাইয়াদ আলম ও এক মেয়ে আরিশা আলম। 

     শৈশব ও কৈশোর কেটেছে ঢাকায়। বাবার চাকরির সুবাদে বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের থাকর সুযোগ হয়েছে। বর্তমানে ঢাকায় বসবাস করছেন পরিবারের সাথে। বিবিএ করেছেন UODA (University of Development Alternative)(2010)। পাশাপাশি কম্পিউটারের উপর প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। DISM (Diploma In Information System Management) 2005, and Graphics 3D Max (2005)। 

 

  তিনি অবসর কাটান লেখালেখি ও আবৃত্তি চর্চা করে। প্রিয় রং সাদা ও আকশী। শখ করে আবৃত্তি চর্চা করেন, ডিজিটাল বিষয়ক চর্চা রাখেন ও আলোকচিত্র ধারণ করা। তিনি বর্তমানে পেশায় একজন গৃহিণী। তবে আজীবন লেখালেখি করে কাটাতে চান।

০৩:৫৯ পিএম, ২৪ জুন ২০২৪ সোমবার

সৃষ্টিসুধা সাহিত্য পত্রিকা আয়োজিত সংকলন প্রকাশ ও গুণীজন সম্বর্ধনা

সৃষ্টিসুধা সাহিত্য পত্রিকা আয়োজিত 'অমর কথা' সংকলন প্রকাশ ও গুণীজন সম্বর্ধনা 

 

মোঃ ইজাজ আহামেদ 

 

কলকাতা, ২৩শে জুন ২০২৪: গতকাল ২৩শে জুন রবিবার শিয়ালদহের কৃষ্ণপদ মেমোরিয়াল হলে মহাসমারোহে অনুষ্ঠিত হলো সৃষ্টিসুধা সাহিত্য পত্রিকা আয়োজিত "অমর কথা" যৌথ সংকলন প্রকাশ ও গুণীজন সম্বর্ধনা। উপস্থিত ছিলেন 

অনুষ্ঠানের আয়োজক ও সংকলনের সম্পাদক দীপঙ্কর বর্মন, সহ সম্পাদক মোঃ মুরসালিন হক। এই সংকলনে কলম ধরেছেন মোঃ ইজাজ আহামেদ, আবদুস সালাম, ইমদাদুল ইসলাম, আব্দুল মালেক, প্রণব শিকদার, উমর ফারুক, দেবাশীষ ব্যানার্জী, গার্গী সরকার, মল্লিকা চক্রবর্তী, দেবাশীষ সেনগুপ্ত, সুবল চন্দ্র দাস, রাফিকুজ্জামান খান, সংকলনের সম্পাদক ও সহ সম্পাদক সহ ১০৩ জন কবি। অনুষ্ঠানের যুগ্ম সভাপতির আসন অলংকৃত করেন যথাক্রমে বিশিষ্ট কবি ও সাহিত্যিকদের প্রোজ্জ্বল রায় চৌধুরী ও দীনবন্ধু ঘোষ মহাশয়। সঞ্চালকের ভূমিকায় ছিলেন বিশিষ্ট সাংবাদিক লুতুব আলী। বিশেষ অতিথি ছিলেন সাহিত্যিক সুকুমার পয়রা, বিশিষ্ট অতিথিবর্গরা ছিলেন কবি ও অভিননেতা দেবাশীষ ব্যানার্জি, বাতায়ন পত্রিকার সম্পাদক বরুণ ব্যানার্জি, কবি অর্পিতা কামিল্যা। উপস্থিত ছিলেন কবি ও প্রাবন্ধিক মফিজুল ইসলাম,কবি রাফিকুজ্জামান খাঁন, কবি রাখি পাইক, কবি প্রণব শিকদার, কবি সুবীর দাস, কবি সুব্রত পৈড়া, কবি প্রীতি সরদার, কবি অশোক মন্ডল, কবি ইন্দ্রাণী চৌধুরী, কবি সমীর কুমার ভৌমিক, কবি অরুনিমা চ্যাটার্জি,কবি মল্লিকা চক্রবর্তী, কবি স্বপন পাইক সহ আরও বহু বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ। এদিন কবিদের সন্মাননা প্রদান করা হয়। কবিদের কবিতা পাঠ ও বক্তব্যে সভা বেশ মুখরিত হয়ে ওঠে।

০৩:৫৭ পিএম, ২৪ জুন ২০২৪ সোমবার

নবাবের শহরে পলাশী দিবস উপলক্ষে সাহিত্য সম্মেলন ও গুণীজন সংবর্ধনা

মুর্শিদাবাদ, ২৩শে জুন: আজ রবিবার ২৩শে জুন পলাশী দিবস উপলক্ষে নবারুণ পত্রিকা আয়োজিত বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজউদ্দৌলাকে সন্মান জানাতে নবাব সিরাজউদ্দৌলা সংখ্যা প্রকাশ, সাহিত্য সম্মেলন ও গুণীজন সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত হল মুর্শিদাবাদ জেলার ঐতিহাসিক ওয়াসেফ মঞ্জিলের সামনে হাওয়া মহলে। অনুষ্ঠানের সভাপতি ছিলেন মুর্শিদাবাদের নবাব সৈয়দ রেজা আলী মির্জা। প্রধান অতিথির আসন অলংকৃত করেন শিক্ষাবিদ খলিলুর রহমান। অতিথি ছিলেন সাংবাদিক অপূর্ব কুমার সেন, কবি মোঃ ইজাজ আহামেদ, অরবিন্দ সরকার, শিল্পী সুশান্ত বিশ্বাস। উপস্থিত ছিলেন পত্রিকার সম্পাদক সৈয়দ শীষমহাম্মদ, সহ সম্পাদক হামিম হোসেন মণ্ডল, সভাপতি সহিদুল ইসলাম বিশ্বাস, কবি হান্নান বিশ্বাস, কবি আব্দুল মালেক, কবি উমর ফারুক, কবি অরবিন্দ, কবি আমেদ আলী, কবি ও সাংবাদিক আবিদ আলি, কবি একলাচ মন্ডল, কবি কাকলী বিশ্বাস সরকার, কবি নূরজাহান বেগম, কবি লুৎফা মণ্ডল মীর, কবি বিধান চন্দ্র বিশ্বাস, সহিত্যিক মুকুল মিয়া, কবি সাহাজামাল, কবি রেক্সনা পারভীন প্রমুখ কবি ও সাহিত্যিকগণ। এদিন নবাব সিরাজউদ্দৌলা স্মৃতি সম্মাননা ২০২৪ প্রদান করা হয় সৈয়দ নবাব রেজা আলী মির্জাকে (সমাজ ও সংস্কৃতি ব্যক্তিত্ব), অপূর্ব কুমার সেনকে (রাজ্য স্তরের প্রবীণ সাংবাদিক), অনল আবেদীনকে (রাজ্য স্তরের সাংবাদিক) খলিলুর রহমানকে (বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ)। উপস্থিত কবি-লেখকগণ স্বরচিত কবিতা পাঠ ও বক্তব্যে সম্মেলন মুখরিত হয়ে উঠে।

০৯:০০ পিএম, ২৩ জুন ২০২৪ রোববার

নবাবের শহরে পলাশী দিবস উপলক্ষে সাহিত্য সম্মেলন ও গুণীজন সংবর্ধনা

মুর্শিদাবাদ, ২৩শে জুন: আজ রবিবার ২৩শে জুন পলাশী দিবস উপলক্ষে নবারুণ পত্রিকা আয়োজিত বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজউদ্দৌলাকে সন্মান জানাতে নবাব সিরাজউদ্দৌলা সংখ্যা প্রকাশ, সাহিত্য সম্মেলন ও গুণীজন সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত হল মুর্শিদাবাদ জেলার ঐতিহাসিক ওয়াসেফ মঞ্জিলের সামনে হাওয়া মহলে। অনুষ্ঠানের সভাপতি ছিলেন মুর্শিদাবাদের নবাব সৈয়দ রেজা আলী মির্জা। প্রধান অতিথির আসন অলংকৃত করেন শিক্ষাবিদ খলিলুর রহমান। অতিথি ছিলেন সাংবাদিক অপূর্ব কুমার সেন, কবি মোঃ ইজাজ আহামেদ, অরবিন্দ সরকার, শিল্পী সুশান্ত বিশ্বাস। উপস্থিত ছিলেন পত্রিকার সম্পাদক সৈয়দ শীষমহাম্মদ, সহ সম্পাদক হামিম হোসেন মণ্ডল, সভাপতি সহিদুল ইসলাম বিশ্বাস, কবি হান্নান বিশ্বাস, কবি আব্দুল মালেক, কবি উমর ফারুক, কবি অরবিন্দ, কবি আমেদ আলী, কবি ও সাংবাদিক আবিদ আলি, কবি একলাচ মন্ডল, কবি কাকলী বিশ্বাস সরকার, কবি নূরজাহান বেগম, কবি লুৎফা মণ্ডল মীর, কবি বিধান চন্দ্র বিশ্বাস, সহিত্যিক মুকুল মিয়া, কবি সাহাজামাল, কবি রেক্সনা পারভীন প্রমুখ কবি ও সাহিত্যিকগণ। এদিন নবাব সিরাজউদ্দৌলা স্মৃতি সম্মাননা ২০২৪ প্রদান করা হয় সৈয়দ নবাব রেজা আলী মির্জাকে (সমাজ ও সংস্কৃতি ব্যক্তিত্ব), অপূর্ব কুমার সেনকে (রাজ্য স্তরের প্রবীণ সাংবাদিক), অনল আবেদীনকে (রাজ্য স্তরের সাংবাদিক) খলিলুর রহমানকে (বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ)। উপস্থিত কবি-লেখকগণ স্বরচিত কবিতা পাঠ ও বক্তব্যে সম্মেলন মুখরিত হয়ে উঠে।

০৯:০০ পিএম, ২৩ জুন ২০২৪ রোববার

কবিতা - লাজুক লজ্জা

 

লাজুক লজ্জা  

মোঃ রহমত আলী

খালিশপুর, খুলনা, বাংলাদেশ

 

পেটে আছে তার বহুত ভুখ,

খোলে-না তো সে লাজে মুখ।

বোঝে যদি কেউ দেখে রূপ,

পুছে তাকে ওহে কেন চুপ।

লজ্জায় চোখ ভরা জল,

সংকোচবোধ তবে কিছু বল।

আকাশের পানে মুখ তুলে,

দুহাত পেতে মাগে দয়ার ভিখ।

পাতে না তো লাজে হাত,

জনে-জনের দুয়ারে আর।

কেউ যদি খুঁজে তাকে,

দেয় তুলে হাতে তবে -তা নেয়।

 

মুখে আছে তার সুখ-সুখ,

ক্ষুধায় জিকির খোদার খুব-খুব,

পেটে বাঁধিলো লাজুক পাথর,

লজ্জায় লজ্জিত হয়ে খুদ।

কেউ কিছু দিয়ে যায়,

তো কেউ দিতে-দিতে দুঃখ,

সুখ যে আবার নিয়ে যায়।

নাজুক হাত পেতে কি আশায়,

লাজুক মুখ যার চুপ রয়।

দারিদ্রের ছাপ পোশাকে তার,

মুখে মৃদু আনন্দের-উল্লাস,

চায় না খুলে তো মুখ ফুটে খোরাক !

 

 

 

 

 

০১:৫৩ পিএম, ২২ জুন ২০২৪ শনিবার

মানবাধিকার দিবসের গুরুত্ব



মানবাধিকার দিবসের গুরুত্ব
                        
      মনিরুজ্জামান (বিটু)

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় মানবিক বিপর্যয় চরম আকার ধারণ করে।  প্রায় ৬০ লক্ষ ইহুদীকে হিটলারের নাৎসি জার্মান বাহিনী  নৃশংসভাবে হত্যা করে । এই যুদ্ধেই আমেরিকা  প্রথম, জাপানের হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে দু দুটো পারমাণবিক বোমা নিক্ষেপ করে । পাঁচ থেকে ছয় কোটি মানুষ এই যুদ্ধে প্রাণ হারায়। যুদ্ধ পরবর্তী সময়ও এই ধারা অব্যাহত থাকে। দুর্বলের ওপর সবলের অত্যাচার ক্রমেই প্রসারিত হতে থাকে । গোটা বিশ্বব্যাপী যাতে মানবাধিকার কোনভাবে  লঙ্ঘিত না হয় সেই সংকল্প নিয়ে ফ্রান্সের প্যারিসের প্যালেস দ্য শ্যালোটে, এলিয়ানর রুজভেল্টের সভাপতিত্বে, জাতিসংঘের একটি কমিটি, একটি খসড়া সনদ তৈরি করে, যেটি আন্তর্জাতিক দলিল হিসেবে বিবেচিত হয় এবং প্রত্যেক মানুষের মানবাধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্য নিয়ে, এই সনদ ঘোষিত হয়। সার্বজনীন মানুষের অধিকারকে অক্ষুন্ন রাখতে, ১৯৪৮ সাল থেকে রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ পরিষদ থেকে, ১০ই ডিসেম্বর দিনটি মানবাধিকার দিবস হিসেবে পালন করার কথা বলা হয়।
১৯৫০ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয় যে, প্রতিবছর এই দিনটি বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে উদযাপন করা হবে এবং জাতিসংঘের  সদস্য ভুক্ত দেশ সহ আগ্রহী সংস্থাগুলোকে এই দিনটি তাদের মত করে, উদযাপন করার আহ্বান জানান। সেই থেকে অদ্যবধি প্রতি বছর ১০ই ডিসেম্বর ' বিশ্ব মানবাধিকার দিবস'  বিভিন্ন সভা সমাবেশ ,সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং বিভিন্ন ধরনের তথ্যচিত্র কিংবা চলচ্চিত্র প্রদর্শনের  মধ্য দিয়ে, সারা পৃথিবীতে এই দিনটি সাড়ম্বরে উদযাপন করা হয়। ঐতিহ্য গত ভাবে ১০ ডিসেম্বর কে কেন্দ্র করে প্রতি ৫ বছর অন্তর " জাতিসংঘের মানবাধিকার ক্ষেত্র পুরস্কার"  প্রদান করা হয় । এছাড়াও নোবেল শান্তি পুরস্কার প্রদান কার্যক্রমও ওই দিনেই অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে।

মানব পরিবারের সকল সদস্যের জন্য সার্বজনীন সহজাত  অহস্তান্তর যোগ্য এবং অলঙ্ঘনীয় অধিকার ই হল মানবাধিকার ।মানবাধিকার প্রতিটি মানুষের এক ধরনের অধিকার ,যেটা তার জন্মগত ও অবিচ্ছেদ্য অধিকার ।
মানবাধিকার জাতি ,ধর্ম ,বর্ণ ,লিঙ্গ, বিশ্বাস ,শিক্ষাগত যোগ্যতা- নির্বিশেষে সবার জন্য সমান । মানবাধিকার সনদে মোট ৩০ টি মানব অধিকার বিষয়ক প্রবন্ধ রয়েছে। এবং বিশ্বের প্রায় ৫৩০টি ভাষায় এটি অনূদিত হয়েছে ।প্রতিটি প্রবন্ধে মানুষের মৌলিক অধিকার এবং মৌলিক স্বাধীনতা বিষয়ে, বিস্তারিত আলোকপাত করা হয়েছে।প্রতিটি মানুষ জন্মগতভাবেই এসব অধিকার লাভ করে ।একজন মানুষের বেঁচে থাকা এবং সমাজের নিজের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য মানবাধিকার অপরিহার্য।
বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপটে মানবাধিকার একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বিষয়টি উপলব্ধি করেই গোটা বিশ্বের বিভিন্ন দেশ মানবাধিকার নিয়ে কমিশন তৈরি করেছে। কমিশনের কাজ কোথাও কোনোভাবে মানুষের অধিকার ক্ষুন্ন হল কিনা সেটা দেখা এবং তার প্রতিকারের জন্য সচেষ্ট থাকা।
মানবাধিকার হলো মানুষের মৌলিক অধিকার । অন্ন, বস্ত্র , বাসস্থান  ছাড়াও কয়েকটি  গুরুত্বপূর্ণ মানুষের অধিকার হলো  -- জীবন জীবিকা, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক , সাংস্কৃতিক , ধর্মীয় , শিক্ষা ও স্বাস্থ্যে , ন্যায্য বিচার, স্বাধীনভাবে চিন্তা ভাবনা, বাক স্বাধীনতার এবং অন্যায়ের বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করে প্রতিবাদ করার অধিকার,  রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার অপব্যবহার থেকে, ব্যক্তিদের রক্ষা করার জন্য এই অধিকার গুলি অপরিহার্য ।
মূলত দুটি কারণে এগুলোকে মৌলিক অধিকার বলা হয়ে থাকে প্রথমত এই অধিকার গুলি সংবিধানের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে,  যা  কোনভাবে লঙ্ঘন করা যায় না । দ্বিতীয়ত এই অধিকার লঙ্ঘন করলে একজন ব্যক্তি আইনের আদালতে যেতে পারেন। মানবাধিকারের ধারণা মানুষকে ক্ষমতায়ন করে এবং তাদের বলে যে তারা সমাজ থেকে মর্যাদা পাওয়ার যোগ্য।

১৯৯৩ সালে  ভারতীয় সংসদ কর্তৃক মানবাধিকার সুরক্ষা আইন পাশ হয়। ১২ ই অক্টোবর ১৯৯৩ এ রাষ্ট্রপতির বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে তা প্রতিষ্ঠিত হয়।২৯শে সেপ্টেম্বরে এটি কার্যকর করা হয়। অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রঙ্গ নাথ মিশ্র এর প্রথম চেয়ারপার্সন ছিলেন।  সারা দেশব্যাপী মানবাধিকার লঙ্ঘনের ক্রমবর্ধমান ঘটনাগুলোকে মোকাবেলা করার জন্য এবং ন্যায় বিচার ও প্রতিকার করার জন্যই ,এই প্লাটফর্মটি প্রতিষ্ঠিত হয় ।  সাধারণত সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি  এই কমিশনের সভাপতি হিসেবে থাকে এবং অন্যান্য আরো চারজন বিচারপতি নিয়ে কমিশন গঠিত হয় । এই কমিশনের মুখ্য কাজ হল ,ভারতের যেকোনো প্রান্তে যেকোনো ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাকে অনুসন্ধান করা, বিশ্লেষণ করা এবং তার প্রতিকার কল্পে সরকারের কাছে সুপারিশ করা। নাগরিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে এই কমিশনের সদস্যদের সরকারি যেকোনো সংস্থা, দপ্তর  ও প্রতিষ্ঠানে পরিদর্শন করার অবাধ অধিকার রয়েছে। এছাড়াও এই কমিশন যেকোনো ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘন মোকাবেলা করা ও ক্ষতিগ্রস্তদের ন্যায় বিচার নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করে থাকে ।যেমন পুলিশের বর্বরতার মোকাবেলা করা ।প্রান্তিক গোষ্ঠী যেমন দলিত ,উপজাতি সম্প্রদায়, নারী ও  শিশুদের অধিকারের জন্য সক্রিয়ভাবে ওকালতি করা ।এছাড়াও মানব পাচারের বিরুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করে থাকে। আন্তর্জাতিক বিচারালয় ছাড়াও বিভিন্ন দেশে এই কমিশনের নিজস্ব আদালত রয়েছে। এছাড়াও যে কোন রাজ্য প্রয়োজনে যেকোনো জেলার দায়রা আদালতকে মানবাধিকার আদালত বলে ঘোষণা করতে পারে । এই আদালতে একজন সরকারি উকিল নিযুক্ত করা হয় এবং যেকোনো বিচার কাজ দ্রুত নিষ্পত্তি করার ব্যবস্থা করা হয়।

গোটা বিশ্ব দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ভয়ঙ্কর রূপ পরিগ্রহ করেছিল । কয়েক কোটি মানুষ সেই ভয়ংকর যুদ্ধে মারা গিয়েছিল । বিশ্বের মানুষের শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখার উদ্দেশ্যে ১৯৪৫ সালে জাতিসংঘ নামক একটি আন্তর্জাতিক সংস্থা তৈরি করা হয়েছিল । যার সদর দপ্তর নিউ ইয়র্ক শহরে অবস্থিত। জাতিসংঘের বর্তমান মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। ১৯৪৬ সালের ১১ ডিসেম্বর জাতিসংঘ ইউনিসেফ নামক একটি আন্তর্জাতিক শাখা সংগঠন তৈরি করেন ,যার মূল লক্ষ্য উদ্দেশ্য ছিল শিশু, মায়েদের উন্নতি ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত কর্মকান্ড পরিচালনা করা।  UNICEF তাদের কল্যানমুখী কাজের জন্য ১৯৬৫ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কারে ভূষিত হয়। মানুষের মৌলিক অধিকার সুনিশ্চিত করার লক্ষ্যে জাতিসংঘ ১৯৪৮ সালে ১০ ডিসেম্বর ইউনিভার্সাল ডিক্লারেশন অফ হিউম্যান রাইটস (UDHR)বা মানব অধিকারের সার্বজনীন ঘোষণাপত্র প্রকাশ করে ।
জাতিসংঘ সহ এসব আন্তর্জাতিক সংস্থা গুলো মানুষের কল্যাণার্থে গঠন করা হয়েছিল এবং সেই ভাবে তারা তাদের কার্যধারা অব্যাহত রেখেছে ।প্রশ্ন উঠছে ,বিশ্বের মানুষ কি শান্তি ও নিরাপত্তা পেয়েছে ?শিশু এবং মায়েদের  আর্তনাদ কি বন্ধ হয়েছে  ?মানুষ কি তার মৌলিক অধিকার সবটাই পেয়েছে ? আজও পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটে চলেছে। রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ চলছে। ইজরায়েল ফিলিস্তিন যুদ্ধ চলছে। মেঘের আড়ালে গুরুদেব আমেরিকা প্রত্যক্ষ পরোক্ষভাবে যুদ্ধ পরিচালনা করছেন। কিছুদিন আগেই মায়ানমারের বার্মীজ সেনারা  সেখানকার মুসলিমদের গণহত্যা করেছে । প্রাণ বাঁচাতে অনেকে বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছে। ইজরাইল তার আধুনিক সমরাস্ত্র দিয়ে ফিলিস্তিনিদের ,আবাল বৃদ্ধা বণিতা কে নির্মমভাবে হত্যা করছে । রাশিয়া ও একই পদাঙ্ক অনুসরণ করে ইউক্রেনীয় বাসীদের উপর নির্মমভাবে  হত্যা করছে । শক্তিশালী দেশের অন্যায় অত্যাচারের বিরুদ্ধে এইসব আন্তর্জাতিক সংস্থা গুলো কতটা অসহায়, কতটা দুর্বল ,সেটা বারবার প্রমাণিত। তা  না হলে জাতিসংঘের মহাসচিব কে ইজরাইলের প্রেসিডেন্ট বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বলতে পারেন ? "যুদ্ধ বন্ধের কোন প্রশ্নই উঠে না।" তা সত্ত্বেও জাতিসংঘ ইজরায়েলের বিরুদ্ধে কোন কঠোর পদক্ষেপ নিতে সক্ষম হয় নাই, বরং নিন্দা প্রস্তাব গ্রহণ করে দায়িত্ব সম্পন্ন করেছেন।

বর্তমান সময়ে ভারত সহ তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোতে এবং এশিয়া উপমহাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর অন্যতম কারণগুলো হলো -ধর্মীয় সংকীর্ণতা, জাতপাতের বিভেদ শিক্ষার অনগ্রসরতা, এছাড়া দারিদ্রতা, ক্রমবর্ধমান বেকারি, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাব। তা সত্ত্বেও আমরা আশাবাদী মানুষ একদিন বুঝবে, "সবার উপরে মানুষ সত্য / ‌তাহার উপরে নাই " । মানুষ যেদিন মানুষের অধিকার বোধে জাগ্রত হবে, মানবাধিকারের গুরুত্ব উপলব্ধি করতে পারবে, সেদিন মানবাধিকার দিবস উদযাপন সার্থক হবে ।

০৮:৪৮ এএম, ২২ জুন ২০২৪ শনিবার

মানব সেবার মূর্ত প্রতীক স্বামী বিবেকানন্দ

মানব সেবার মূর্ত প্রতীক স্বামী বিবেকানন্দ

 

         মনিরুজ্জামান বিটু

 

প্রাতঃ স্মরণীয় ক্ষণজন্মা মহাপুরুষ স্বামী বিবেকানন্দের আজ ১৬২ তম জন্ম দিবস। তিনি ছিলেন মানব সেবার মূর্ত প্রতীক। তার মহত্ত্বে ভরা ব্যক্তিত্ব গোটা ভারতবর্ষের কাছে আজও চির স্মরণীয়।

কুসংস্কার মুক্ত, চির চঞ্চল, দুরন্তপনা সর্বোপরি মুক্তচিন্তার অধিকারী, এই ছেলেটির জন্ম হয়েছিল ১২ই জানুয়ারি, ১৮৬৩ সালে কলকাতার সিমুলিয়ার দত্ত পরিবারে। বাবার নাম ছিল বিশ্বনাথ দত্ত। মাতা ভুবনেশ্বরী দেবী। তার প্রকৃত নাম ছিল নরেন্দ্রনাথ দত্ত । শিব ভক্ত মা তার নাম রেখেছিল বীরেশ্বর । তাই তাকে বিলে বলে ডাকা হতো।

প্রচন্ড মেধাবী এই ছাত্র বর্তমান স্কটিশ চার্চ কলেজ থেকে সাফল্যের সঙ্গে বি এ পাস করেন।ছাত্রবস্তাতেই নরেন্দ্রনাথ দর্শন শাস্ত্রে প্রগাঢ় জ্ঞান অর্জন করেন। পাশ্চাত্য দর্শন নিয়ে তিনি গভীরভাবে গবেষণা করতে গিয়ে একটা সময় নাস্তিক হয়ে যান ।। অবশেষে তিনি ব্রহ্মবন্ধু কেশবচন্দ্র সেন এর দ্বারস্থ হন ।সেখানে ব্রহ্ম ধর্মের প্রতি তার অনুরাগ জন্মায়। ১৮৮১ সালে তিনি রামকৃষ্ণদেবের সান্নিধ্যে আসেন । সেখানে তিনি তার যাবতীয় প্রশ্নের উত্তর পেলেন এবং জীবনের স্বরূপ উপলব্ধি করলেন।

শ্রীরামকৃষ্ণ বলতেন," জীব সেবায় শিব সেবা", সেটা তিনি উপলব্ধি করলেন । গুরুর কথার রেস ধরে স্বামীজি বললেন " সবার উপরে মানুষ সত্য তাহার উপরে নাই" সর্বশ্রেষ্ঠ জীব হচ্ছে মানুষ। তাই মানুষের সেবার মধ্য দিয়ে ঈশ্বরকে পাওয়া সম্ভব। তিনি বলেন--" বহুরূপে সম্মুখে তোমা ছাড়ি, কোথা খুঁজেছে ঈশ্বর , জীবে প্রেম করে যেই জন, সেই জন সেবিছে ঈশ্বর" ।

 

১৮৮৬ খ্রিস্টাব্দের ১৬ ই আগস্ট ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত হয়ে শ্রী রামকৃষ্ণের মহাপ্রয়ান ঘটে । ঐ বছরই তিনি বরানগরে রামকৃষ্ণ মঠ প্রতিষ্ঠিত করেন । ১৮৮৭ সালে ১০ জন গুরু ভাইকে নিয়ে তিনি সন্ন্যাস নেন ।তার নাম হয় স্বামী বিবিদিষানন্দ । ১৮৯২ সালে স্বামী বিবেকানন্দ একজন পরিব্রাজক হিসেবে গোটা ভারতবর্ষ পরিভ্রমণ করেন। ভারতবর্ষের আর্তপীড়িত মানুষদের জন্য ব্যথায় তার মন ভরে ওঠে। তিনি দৃঢ় সংকল্প গ্রহণ করেন ভারতবাসির অশিক্ষা ,কুসংস্কার ,দুঃখ- দুর্দশা, নিদারুণ দারিদ্রতা মোচনই হবে তার জীবনের একমাত্র ব্রত।

 

১৮৯৩ সালে দক্ষিণ ভারতের খেতড়ির মহা রাজার আর্থিক সাহায্যে আমেরিকার শিকাগো বিশ্বধর্ম সম্মেলনে যোগ দেওয়ার উদ্দেশ্যে পাড়ি দেন এবং সেখানে তিনি মাত্র পাঁচ মিনিট বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ পান,। তার নাম হয় স্বামী বিবেকানন্দ। Sisters and brothers of America বলে তিনি বক্তব্য শুরু করেন। করতালিতে চারদিক মুখরিত হয়ে ওঠে। তিনি বেদান্ত দর্শনের মধ্য দিয়ে মানব ধর্মের বাণী সম্মোহিত করে বিশ্ববাসীকে মুগ্ধ করেন । সুদীর্ঘ চার বছর বিশ্বের বিভিন্ন দেশ পরিভ্রমণ করে ১৮৯৭ সালে তিনি ফিরে আসেন। এবং মানব সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করার উদ্দেশ্যে ১৮৯৭ সালে তৈরি করলেন 'রামকৃষ্ণ মিশন 'এবং ১৮৯৯ সালে বেলুড়ে 'বেলুড় মঠ 'তৈরি করেন।

 

তার স্বপ্ন ছিল শ্রেণীবৈষম্যহীন, বর্ণবিদ্বেষহীন, কুসংস্কারমুক্ত, সাম্প্রদায়িকতা ধর্মান্ধতা ও জাত পাতের ঊর্ধ্বে উঠে এক সুন্দর ভারতবর্ষ গঠন করা । তিনি এমন এক কল্যাণকর ভারতবর্ষের স্বপ্ন দেখেছিলেন যেখানে মেথর -মুচি -চন্ডাল-শূদ্র-ব্রাহ্মণের মধ্যে কোন ভেদাভেদ থাকবে না। যেখানে হিন্দু-মুসলমান- খ্রিস্টান বৌদ্ধ- জৈনের কোন ভেদাভেদ থাকবে না। যেখানে শোষণ ,নির্যাতন থাকবে না। শুধু থাকবে ভ্রাতৃত্ববোধ সাম্য আর মৈত্রীর স্বর্গ। ভারতবর্ষের মূল মন্ত্র বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্য। এটাকে বাস্তবায়িত করার জন্য তিনি যুব সমাজকে আহবান করেছেন ।তাই তার জন্ম দিবস টি জাতীয় "যুব দিবস" হিসেবে পালন করা হয় ।

 

তার ধর্ম ছিল মানব সেবা ।মানব সেবার মধ্য দিয়ে ঈশ্বরকে অনুসন্ধান করতেন। আচারসর্বস্ব যুক্তিহীন বুদ্ধিহীন কুসংস্কারাচ্ছন্ন ধর্মকে তিনি কোন দিনই স্বীকার করেননি । তাঁর ধর্ম ছিল বিজ্ঞানসম্মত এবং যুক্তিবাদী। ধর্মব্যবসায়ীদের তিনি প্রচন্ড ঘৃণা করতেন। সে পুরোহিত হোক বা রাজনৈতিক নেতা হোক। যারা ধর্ম নিয়ে ব্যবসা করেন, ধর্মের নামে রাজনীতি করেন, ধর্মের বিষ ছড়িয়ে মানুষকে হত্যা করতে দ্বিধা করেন না তাদেরকে তিনি পবিত্রতা ও আধ্যাত্মিকতা বিলুপ্ত ও মস্তিষ্ক বিকারগ্রস্ত লোক বলে আখ্যায়িত করেন । তিনি বলেন -"মানুষকে হত্যা করে ধর্মকে রক্ষা করা চাইতে ধর্মকে হত্যা করে মানুষকে রক্ষা করা বেশি পুণ্যের কাজ" । তাই বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ফ্রান্সের দার্শনিক পন্ডিত রোমা রোলাকে বলেছিলেন-- If you want to know India,read Vivekananda অর্থাৎ যদি তুমি ভারতকে জানতে চাও তবে বিবেকানন্দকে পড়ো।

 

প্রকৃত ধার্মিক ব্যক্তি কখনোই ধর্মের নামে মানুষকে হত্যা করার নিদান দিতে পারে না। অথচ বর্তমান সময়ে অনেক গৈরিক বসন পরিহিত সন্ন্যাসী ধর্মের নামে মানুষকে হত্যা করার নিদান দিচ্ছে । ধর্মীয় পোশাক পড়ে যারা জল্লাদের ভূমিকা পালন করে তারা মানুষ নয় পিশাচ ,নরকের কীট ।

সমাজ সচেতন প্রগতিশীল ধর্ম প্রচারক হিসেবে স্বামীজীর নিম্নবর্গের মানুষ, মূলত শূদ্রদের প্রতি উচ্চ বর্ণের মানুষের অত্যাচারের ঘটনা তার দৃষ্টি এড়িয়ে যায়নি,। অতীব ক্ষোভের সঙ্গে তিনি বলেছিলেন --" যে দেশে দশ -বিশ লাখ সাধু, আর ক্রোর দশেক ব্রাহ্মণ, ওই গরিবদের রক্ত চুষে খায় ,আর তাদের উন্নতির কোনও চেষ্টা করে না, সে কি দেশ না নরক? তিনি আরো প্রশ্ন করেছেন " কখনো কি কোন যুগে দেখেছেন ,কোন অভিজাত সম্প্রদায় পুরোহিত ও ধর্মধবজিগণ দীন- দুঃখীর জন্য চিন্তা করেছে"? তিনি শূদ্রের আধিপত্য কে গুরুত্ব দিয়ে ,তাদেরকে জাগ্রত হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।

পরাধীন ভারত কে শৃংখল মুক্ত করতে এবং দেশ গঠনে যুবশক্তির জাগরণকে তিনি অগ্রাধিকার দিয়েছিলেন। তিনি তরুণ দলকে খেলাধুলার মধ্য দিয়ে আত্মশক্তিতে বলিয়ান এবং সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন। গীতা পাঠ অপেক্ষা ফুটবল খেলা কে তিনি বেশি গুরুত্ব দিয়েছিলেন।তিনি বলতেন -"গীতা পাঠের চেয়েও ফুটবল খেললে তোমরা স্বর্গের আরো কাছে পৌঁছাবে"।

তার ধর্ম দর্শন আধ্যাত্মিকতা সমস্তটাই মানুষ কেন্দ্রিক ছিল। তিনি নির্দ্বিধায় বলতেন -"খালি পেটে ধর্ম হয় না"

। জনৈক ব্যক্তির সঙ্গে কথা প্রসঙ্গে তিনি বলেন --" ফেলে দে তোর শাস্ত্র -ফাস্ত্র গঙ্গাজলে। দেশের লোকগুলোকে আগে অন্ন সংস্থান করবার উপায় শিখিয়ে দে, তারপর ভাগবত পড়ে শোনাস।

 

একবার গো-রক্ষক সমিতির কয়েকজন স্বামী বিবেকানন্দের কাছে অর্থ সাহায্যের জন্য গেলে স্বামীজী জানতে চান মধ্য ভারতের দুর্ভিক্ষ কবলিত অসহায় মানুষদের জন্য তোমরা কি করেছো? তারা জানান তাদের সমিতি কেবলমাত্র গো -মাতাদের রক্ষা করার জন্যই স্থাপিত হয়েছে। তারা আরো জানান যে , শাস্ত্রে গরুকে মাতা বলা হয়েছে। স্বামীজি উত্তর দেন--' বুঝেছি তা না হলে এমন সব কৃতি সন্তান কে প্রসব করবে?'তারা স্বামীজির এই ব্যঙ্গ বিদ্রূপাত্মক কথা বুঝতে না পেরে আবার অর্থ সাহায্যের জন্য প্রার্থনা করেন । তিনি বলেন যে সমিতি মানুষের প্রতি সহানুভূতিশীল নয়, মানুষের দুঃখ দুর্দশার পাশে থাকে না ।সেই সমিতিকে তিনি কোন পয়সা দিতে পারবে না।

স্বামীজি ম্যান মেকিং রিলিজিয়নে বিশ্বাসী ছিলেন, যে ধর্ম মানুষকে প্রকৃত মানুষ রূপে গড়ে তুলতে সক্ষম। যে ধর্ম মানুষকে কল্যাণকর কাজে উদ্বুদ্ধ করে ।সে ধর্মে তিনি বিশ্বাস করতেন ।যে ধর্ম মানুষকে পশু প্রবৃত্তি শিক্ষা দেয় সেই ধর্মে তিনি বিশ্বাস করতেন না।

কলকাতা একবার প্লেগ রোগ দেখা দিয়েছিল ।সেই সময় স্বামীজি ভগিনী নিবেদিতা কে সঙ্গে নিয়ে নিজের জীবন বাজি রেখে প্লেগ রোগাক্রান্ত মুমূর্ষ মানুষদের সেবায় নিয়ে নিজেকে নিয়োজিত করেছিলেন। যেকোনো প্রতিকূল পরিস্থিতিতে তিনি মানুষের পাশে থাকতেন সে মহামারি , দুর্ভিক্ষ খরা বন্যা সর্ববস্থায় ।

 

তার মূল্যবান দার্শনিক চিন্তাভাবনার কথা তার গ্রন্থগুলোতে দৃষ্টিগোচর হয় ।তিনি বেশ কয়েকটি গ্রন্থ রচনা করেছেন যেমন পরিব্রাজক ,প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য, ভাববার কথা, বর্তমান ভারত এছাড়াও কর্মযোগ, জ্ঞানযোগ, ভক্তিযোগ ইত্যাদি।

১৯০২ সালে ৪ জুলাই স্বামী বিবেকানন্দ প্রয়াত হন ।কিন্তু তার স্বপ্নকে আজও সফলভাবে বহন করে চলেছে রামকৃষ্ণ মিশন এবং রামকৃষ্ণ মঠ । স্কুল- কলেজ পাঠাগার নির্মাণ, হাসপাতাল স্থাপন ,অনাথ আশ্রম, ঔষধালয় স্থাপন, দারিদ্র পীড়িত মানুষের উন্নয়ন এবং বন্যা- খরা ও দুর্ভিক্ষ পড়িত মানুষের সেবায় নিরন্তন কাজ করে চলেছে স্বামী বিবেকানন্দের রামকৃষ্ণ মিশন। স্বামীজীর ধর্মীয় দর্শন আমাদের মনে করিয়ে দেয়, ধর্মের জন্য মানুষ নয়, মানুষের জন্য ধর্ম। তার ধর্মীয় দর্শন, উদার ধর্মভাবনা, যে মানবতার আদর্শ ,জীবন দর্শন ও প্রদর্শিত পথ বিশ্ববাসীর জন্য পাথেয় হয়ে থাকবে। 

০৫:৫৬ পিএম, ২১ জুন ২০২৪ শুক্রবার

শাসকের সঙ্গে সংঘাত ও বিচারালয়ের বাড়াবাড়ি

শাসকের সঙ্গে সংঘাত ও বিচারালয়ের বাড়াবাড়ি
মজিবুর রহমান

     পশ্চিমবঙ্গে শাসকের সঙ্গে আদালতের সংঘাত লেগেছে। অন্তত তিন বছর ধরে এই লড়াই জোরকদমে চলছে। প্রশাসনিক হেডকোয়ার্টার নবান্ন আর কলকাতা হাইকোর্টের কাজিয়া সুপ্রিম কোর্টে গিয়ে জমা পড়ছে। দুশ্চিন্তা ও দুর্ভাবনার শিকার হচ্ছে রাজ্যের লাখ লাখ সাধারণ মানুষ। সামাজিক অস্থিরতা সৃষ্টি হচ্ছে।সাংঘাতিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শিক্ষার মতো খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি ক্ষেত্র। এই পরিস্থিতির জন্য সরকার ও আদালত উভয়েরই দায় রয়েছে। কেউই সমস্যার সমাধানে আন্তরিক নয়। বরং সমস্যাকে জটিল থেকে জটিলতর ও দীর্ঘমেয়াদি করা হয়। এখানে তিনটি বিচারবিভাগীয় নির্দেশ ও সেগুলোর অভিঘাত নিয়ে সংক্ষেপে আলোচনা করা হল।
      বিগত কয়েক বছরে রাজ্যের সরকারি বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী নিয়োগ প্রক্রিয়ায় নানান ধরনের নিয়ম ভঙ্গের ঘটনা ঘটেছে। অজ্ঞতাবশত বা অনিচ্ছাকৃত ভুল নয় , বেশ পরিকল্পনা করে নিয়োগ প্রক্রিয়ার বিভিন্ন স্তরে বিভ্রাট ঘটানো হয়েছে। স্বজন পোষণ ও বিশাল অঙ্কের আর্থিক লেনদেন হয়েছে।পুরো ঘটনাটা একটা প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এই দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন সাংসদ, বিধায়ক, মন্ত্রী, সরকারি আধিকারিক ও শাসক দলের নেতাকর্মীরা। গত দুই বছরে ২৫-৩০ জনকে ধরা হয়েছে। ২০১৬ সালের স্কুল সার্ভিস কমিশনের প্যানেলে উত্তরপত্র তথা অপটিক্যাল মার্ক রেকগনিশন (ও এম আর) শীট বিকৃতি, সিরিয়াল ব্রেক, প্যানেলের বাইরে থেকে নিয়োগ, সুপার নিউমেরিক পোস্ট সৃষ্টি সহ বেশ কয়েক রকমের অনিয়মের সন্ধান পাওয়া গেছে। ওই প্যানেল থেকে ২৬ হাজার শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী নিযুক্ত হন। তদন্তের স্বার্থে সকলের নথিপত্রের হার্ডকপি জেলায় জেলায় ডিআই অফিসে অথবা কলকাতায় মধ্যশিক্ষা পর্ষদের অফিসে জমা করা হয়। ফোনের মাধ্যমেও তথ্য প্রদান করা হয়। সবকিছু যাচাই করে দেখা যায়, নিয়ম ভঙ্গ করে নিয়োগপত্র পাওয়া শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীর সংখ্যা আট হাজারের কম আর নিয়ম মেনে নিযুক্ত হয়েছেন আঠারো হাজারের বেশি। অর্থাৎ বৈধ শিক্ষকের সংখ্যা অবৈধ শিক্ষকের থেকে অনেকটাই বেশি। কাঁকড় বেছে ফেলার পর খাদ্য শস্য ভক্ষণ করাই সাধারণ নিয়ম। জমি থেকে আগাছা পরিষ্কার করে আমরা সবাই ফসল রক্ষা করি। আগাছার সাথে ফসল কেটে ফেলি না। কিন্তু কলকাতা উচ্চ আদালতের ডিভিশন বেঞ্চ নিয়োগ মামলার রায় দিতে গিয়ে আগাছার সাথে ফসলও কেটে ফেলার নিদান দিয়েছে।কাঁকড় না বেছে সমস্ত শস্য কণা ডাস্টবিনে ফেলার ফতোয়া জারি করেছে। ২০১৬ সালের শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের সব প্যানেল বাতিল। 'ঢাকি সমেত বিসর্জন'।সকলের চাকরি ক্যানসেলড। এটা কোনো বিচার হল? ন্যায়বিচারের কোনো উপাদান কি এই রায়ের মধ্যে রয়েছে? বৈধ ও অবৈধ ভাবে নিযুক্ত উভয়েরই এক পরিণতি! মুড়ি-মিছরির এক দর! ডিভিশন বেঞ্চ সাফাই দিয়েছ, বারবার বলা সত্ত্বেও নাকি নিয়োগ প্রক্রিয়ার দুই প্রধান সংস্থা স্কুল সার্ভিস কমিশন ও মধ্যশিক্ষা পর্ষদ আদালতের কাছে বৈধ ও অবৈধ কর্মপ্রার্থীদের তালিকা জমা দেয়নি।তাই আসল ও নকলকে আলাদা করা যায়নি।কিন্তু প্রশ্ন হল, কমিশন ও পর্ষদ ঠিকমতো দায়িত্ব পালন করেনি বলে বৈধ চাকরিজীবীরা বরখাস্ত হয়ে যাবেন? যারা আদালতের সঙ্গে সহযোগিতা করেনি আদালত তাদের শাস্তি দিক। তাদের বাধ্য করুক প্রয়োজনীয় তথ্য সরবরাহ করতে। কমিশন ও পর্ষদের দু'চারজন আধিকারিককে বাগে আনতে না পেরে হাজার হাজার চাকরিজীবীকে ব্যতিব্যস্ত করার কোনো মানে হয়? আজকের দিনে একটা সরকারি চাকরি পাওয়া 'ভগবানের সাক্ষাৎ' পাওয়ার সমান! অথচ বৈধভাবে অর্জন করা চাকরিকে কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। ২০১৬ সালের প্যানেলে এমন অনেকেই আছেন যাঁরা ২০১১ সালের প্যানেলের চাকরি ছেড়ে এসেছেন। মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশনের প্যানেল থেকে পাওয়া চাকরি ছেড়ে এসেছেন।অন্য কোনো পেশার চাকরি ছেড়ে এসেছেন। অর্থাৎ এঁরা একাধিকবার সফলভাবে যোগ্যতার প্রমাণ দিয়ে চাকরি করছিলেন।আদালত কোনো বাছবিচার না করে সকলকেই বাতিল করে দিল। ভেবে দেখা হল না, একটি চাকরি একটি নিম্নবিত্ত অথবা মধ্যবিত্ত পরিবারের জন্য কত গুরুত্বপূর্ণ! চাকরি করার সুবাদে ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিয়ে বহুজন গাড়ি বাড়ি করেছেন। বেতন থেকে ঋণের কিস্তি মেটানো হয়। হঠাৎ বেতন বন্ধ হলে তাঁরা কিভাবে ঋণ পরিশোধ করবেন? সুদ সহ বেতন ফেরতের নির্দেশ আরও মারাত্মক।ক'জন এই নির্দেশ পালন করতে পারবেন, সন্দেহ আছে। অনেকেই ভিটেমাটি ছেড়ে পালাবেন। আত্মহননের পথ বেছে নিতে বাধ্য হবেন। একসঙ্গে এতজন শিক্ষক চাকরিচ্যুত হলে স্কুলগুলোর অবস্থা কী হবে কেউ কি ভেবে দেখেছে? এখন রাজ্যের অধিকাংশ স্কুলে শিক্ষার্থীর তুলনায় শিক্ষকের সংখ্যা অনেক কম। স্কুল ফান্ড থেকে যৎসামান্য পারিশ্রমিকের বিনিময়ে চুক্তিভিত্তিক অস্থায়ী শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী নিয়োগ করে জোড়াতালি দিয়ে চলছে। এই মুহূর্তে অনেক স্কুলে ২০১৬ সালের প্যানেলের শিক্ষকই বেশি। একসঙ্গে অর্ধেক শিক্ষক বিদায় নিলে স্কুলগুলো চলবে কী করে! নতুন নিয়োগের ব্যাপারে কোর্টের কোনো কড়া নির্দেশনা নেই, শুধু বাতিলের বেলায় বড় বড় বক্তব্য! সরকারি স্কুল ছেড়ে মেধাবী ও আর্থিক সঙ্গতি সম্পন্ন পরিবারের ছেলেমেয়েরা সব প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানে চলে যাচ্ছে। শিক্ষার বেসরকারিকরণ ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যেই কি কোনো বৃহত্তর ষড়যন্ত্র চলছে?
       মুর্শিদাবাদ জেলার একটি হাইস্কুলের একজন প্রধানশিক্ষক স্কুল সার্ভিস কমিশনের সুপারিশ পত্র ও মধ্যশিক্ষা পর্ষদের নিয়োগপত্র জাল করে তাঁর ছেলেকে নিজের স্কুলেই চাকরিতে ঢোকান। কোর্টের নির্দেশে সিআইডি তদন্ত করে। অভিযুক্ত পিতা-পুত্র ও দুজন শিক্ষা আধিকারিক কারাবাস ভোগ করেন। এসব ২০২২-২৩ সালের ঘটনা।এই নিয়োগ কেলেঙ্কারির প্রেক্ষাপটে এবছর মে মাসের দ্বিতীয়ার্ধে রাজ্যের সমস্ত হাইস্কুলের সকল শিক্ষক-শিক্ষিকার নিয়োগ সংক্রান্ত তথ্য পোর্টালে আপলোড করার নির্দেশ দেওয়া হয়। হার্ডকপি ডিআই অফিসে জমা করতে বলা হয়। নথিপত্রে শিক্ষকদের সেল্ফ অ্যাটেসটেড করতে বলা হয়।এই কাজ করার জন্য স্কুলগুলো এক সপ্তাহের মতো সময় পায়। তখন রাজ্যে গরমের ছুটি ও লোকসভা নির্বাচন চলছিল।গ্ৰীষ্মাবকাশে অনেকেই চিকিৎসা করাতে অথবা ঘুরতে ভিন রাজ্যে বা বিদেশে যান।একটা পুরনো ঘটনায় দীর্ঘাবকাশের মধ্যে এমন জরুরি ভিত্তিতে নথিপত্র চাওয়ার কোনো যুক্তি থাকতে পারে না। এই ধরনের আকস্মিক নির্দেশে অফিস আদালতের স্বেচ্ছাচারী মানসিকতাই প্রকাশ পায়।পশ্চিমবঙ্গে এখন দশ হাজার হাইস্কুলে দেড় লাখ শিক্ষক আছেন। মাত্র একজন শিক্ষকের নিয়োগের ক্ষেত্রে গুরুতর জালিয়াতির অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে।কারা এর সঙ্গে জড়িত তাও জানা গেছে।আইন অনুযায়ী তাদের যত কড়া শাস্তি দেওয়া যায় দেওয়া হোক। কিন্তু একটা স্কুলের একজন শিক্ষকের অপরাধের জন্য রাজ্যের হাজার হাজার স্কুলের লক্ষাধিক শিক্ষককে তদন্তের আওতায় টেনে আনার কোনো মানে হয়? একটা বিচ্ছিন্ন ঘটনার জন্য এখন সবাইকেই সন্দেহ করতে হবে? বিড়ম্বনায় ফেলতে হবে? বিশ-ত্রিশ বছর চাকরি করার পর আবার নথিপত্র দেখাতে হবে? মশা মারতে কামান দাগা হচ্ছে!
       গত ২২শে মে কলকাতা হাইকোর্টের একটি ডিভিশন বেঞ্চ ২০১০ সালের পর থেকে রাজ্য সরকারের প্রদান করা সমস্ত ওবিসি সার্টিফিকেট বাতিল বলে রায় দিয়েছে। ২০১১ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত বর্তমান রাজ্য সরকারের আমলে প্রায় পাঁচ লক্ষ ওবিসি সার্টিফিকেট ইস্যু করা হয়েছে। হাইকোর্ট এগুলোকে বাতিল ঘোষণা করেছে। ইতিমধ্যে এই সার্টিফিকেট ব্যবহার করে যে সুবিধা ভোগ করা হয়েছে তার ওপর কোনো নেতিবাচক প্রভাব না পড়লেও পরবর্তীতে অনুরূপ ছাড় আর পাওয়া যাবে না। রায়ে বলা হয়েছে, ১৯৯৩ সালের অনগ্ৰসর শ্রেণী কমিশন আইন অনুযায়ী ওবিসি'র তালিকা তৈরি করতে হবে। ঘটনা হল, ১৯৯৩ সালের আইন অনুযায়ী ২০০৯ সালে কিছু জনগোষ্ঠীকে ওবিসি হিসেবে চিহ্নিত করা হয় এবং তাদের জন্য শিক্ষা ও চাকরিতে সংরক্ষণ চালু করা হয়।এই জনগোষ্ঠীর অধিকাংশই ছিল মুসলমান। ২০১২ সালে আরেকটি আইন তৈরি করে অন্যান্য অনগ্ৰসর শ্রেণীর তালিকায় আরও কিছু জনগোষ্ঠীকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।এদেরও অধিকাংশই মুসলমান। ওবিসি'র তালিকায় ধাপে ধাপে জনগোষ্ঠী সংযোজন একটি স্বাভাবিক ঘটনা।ওবিসি'র তালিকায় জনগোষ্ঠীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও ওবিসি'র জন্য সংরক্ষণ কিন্তু বাড়েনি। সংরক্ষণের হার বাড়েনি বলে ওবিসি'র সুবিধাভোগীদের মধ্যে শুধুমাত্র প্রতিযোগিতা তীব্রতর হয়েছে।বিষয়টি এভাবে দেখা যেতে পারে: একটি ওবিসি সংরক্ষিত পদের জন্য ২০১২ সালের আগে হয়ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সুযোগ পেত পাঁচটি জনগোষ্ঠী, এখন পায় সাতটি। এছাড়া এর আর কোনো তাৎপর্য নেই। আদালত ২০১০ সালের পরের সমস্ত ওবিসি শংসাপত্র বাতিল করলেও ২০১২ সালের যে আইনের ভিত্তিতে শংসাপত্রগুলো প্রদান করা হয়েছিল সেই আইনকে কিন্তু বাতিল করা হয়নি। ২০১২ সালের আইন যদি অসাংবিধানিক না হয় তবে সেই আইন অনুযায়ী ইস্যু করা সার্টিফিকেট কেন বাতিল হবে? ২০১২ সালের আইন যদি বেআইনি না হয় তবে ১৯৯৩ সালের আইনকে কেন ভিত্তিভূমি ধরতে হবে? একই বিষয়ে যদি একাধিক আইন থাকে তবে তো সর্বশেষ আইনকেই অগ্ৰাধিকার দেওয়ার কথা।এক খোঁচাতেই পাঁচ লাখ মানুষের সার্টিফিকেট ক্যানসেল করে দেওয়া হল। কিন্তু ভেবে দেখা হল কি ওই সার্টিফিকেট পেতে কী পরিমাণ কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে? কত সাপোর্টিং ডকুমেন্ট সংগ্ৰহ করতে হয়েছে? হঠাৎ করে এত সংখ্যক সার্টিফিকেট বাতিল হওয়ার ফলে অনেক সমস্যা দেখা দিতে পারে। চাকরিতে যে 'হান্ড্রেড পয়েন্ট রোস্টার' অনুসরণ করা হয় তাতে ওবিসি'র জন্য সতের শতাংশ সংরক্ষণ থাকে।বিগত বারো-চোদ্দো বছরের সমস্ত সার্টিফিকেট বাতিল হবার ফলে সংরক্ষিত আসনে প্রয়োজনীয় সংখ্যক কর্মপ্রার্থী পাওয়া কঠিন হবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ওবিসি শিক্ষার্থীদের জন্য সংরক্ষিত আসন কোনভাবেই পূরণ হবে না। ওবিসি'দের জন্য যে ছাত্র বৃত্তি রয়েছে তাতে কেউ আবেদনকারী হতে পারবে না। তফসিলি জাতি ও তফসিলি জনজাতির সঙ্গে অন্যান্য অনগ্ৰসর শ্রেণীর আর্থ-সামাজিক পশ্চাৎপদতার দিক থেকে বিশেষ পার্থক্য নেই। ফারাক যেটুকু আছে তা ধর্মীয় পরিচয়ে। এস সি-এস টি'রা অধিকাংশই হিন্দু আর ওবিসি'রা অধিকাংশই মুসলমান।দুর্ভাগ্যবশত, স্বাধীনতার সাড়ে সাত দশক পরে ধর্মনিরপেক্ষ ভারতের অঙ্গরাজ্য পশ্চিমবঙ্গে মানুষের ধর্মীয় পরিচয়কে প্রাধান্য দিয়ে ওবিসি সার্টিফিকেট বাতিল করছে বিচারালয়। বিচারের বাণী কি বৈষম্যমূলক হয়ে যাচ্ছে না? আদালত সাধারণ মানুষের ভরসার জায়গা।সেই জায়গা থেকেই বারবার ধাক্কা খেয়ে মানুষ আজ বিভ্রান্ত, বিপন্ন।

০৭:৫১ এএম, ২১ জুন ২০২৪ শুক্রবার

Poems

 

 

 

Poem - A Tiny Chrysanthemum That Fell To The Gravel To Gaza"

Poetess - Lou Fu (Taiwan)

Translated by: James Tian (Philippines)

 

Her mood,

Was hidden in the silent night.

Witnessed this turbulent undercurrent,

And everything in this world,

Shot away one by one,

Crawled under her feet without any bloodshed;

The kind people,

Gathered together in the middle of this night,

They escaped from the castle hand in hand to light.

 

Fear and terror,

Instantly filled the details of dull wildfire,

More often than not,

Full of unexpected things,

The Weird Vines look like wraiths,

Surrounding all the beauty so tight.

 

In such a situation,

Frightened people are circled by loneliness and despair,

In this fragmented and empty night,

Those lonely travelers,

Heart broken into a tiles’ sight. 

 

But now,

In a morning, 

When I met the little bird,

Picking the sugar flowers,

Please help me lead it,

To where a tiny chrysanthemum that fell to the gravel,

Let its love fill this quiet city‘s silence again,

That warm love has filled the whole world again.

 

 

Poem - Freedom of Expression

Poetess - Lou Fu (Taiwan)

Translated by: Mridula Menon (lndia)

 

God granted us we humans 

A unique gift  

Freedom of expression

The right to give vent to our emotions

A blessing denied to other living beings

Enabling us to keep intact our distinctiveness 

At every phase in our lives.

 

If in life we human beings   

Are bereft of our feelings

Feelings which are our expressions 

Of our lives in all its sacredness

We then are akin to a bird helpless 

In its plight with its broken wings.

 

Unable to appreciate and relish 

That innate sense of freedom 

Choking desperately in our denial of freedom 

Is like the arrogant eagle 

Flustered yet still trying hard to break free from its bondage

Longing in vain to flutter its wings 

And to soar with all its might in the blue sky

Indeed freedom so precious should never be denied.

 

 

Biography:

      Lou Fu (Hsu, shih-ting) was born in Taiwan. Member of Taiwan Poetry Society, Chinese Poetry Society, International Poetry Research Society. He served as deputy editor of the paper published "China miniature poetry" and the "extra-territorial style" section editor.

 

   Author of "Banxia" poem selection (2017), "Shimmer" poem selection (2019).

 

"WLFPH World Peace and Human Rights Literary Forum" international peace envoy, her poems have been translated into English, Spanish, Italian, Russian, Bengali, Japanese and other languages.

 

 【Participation in the past 1 year】

 

 *India's TV news "AKN NEWS" on May 25, 2021 reported that Taiwanese poet Luo Fu translated his poem "Father" for Indian poet Bhawani Shankar Nial, and introduced Taiwanese poet Lou Fu.

 

 *India's "Pragatibadi Newspaper" on May 27, 2021, a special page introduces the resume of Taiwanese poet Lou Fu.

 

 *2021 International Literary Standards Organization "International Fiction &

 Research Council (IFRC)” (International Fiction Research Council) specially invited Taiwan poet Lou Fu to be its writer member.

 

 *January 2022 "Global Chinese Poetry Concert" (New Zealand Spring Festival Gala special program) specially invited Taiwanese poet Lou Fu

 And recite the poem "Clover".

 

 *2022 Nepalese newspaper "Kapan Baneshwor", introducing Lou Fu's poetic works. And translate Lou Fu's poetry into Nepali.

 

 *In March 2022, Lou Fu was invited to recite new poems with the Spanish Spring Poetry Festival.

 

 *April 2022 "HUMANITY"

 International magazine invites Taiwanese poet Lou Fu.Be on the cover of the current issue of literary magazines. And an in-depth interview with Lou Fu's writing career.

 

 *May 2022 "Centre for Women's Studies" of the National Institute of History and Geography of the National Autonomous University of Mexico (UNAM) Invite Lou Fu to participate in the "3rd International Women's Literature Festival" and issue Lou Fu's certificate to participate in the International Poetry Festival.

 

 *In June 2022, she was awarded the "2021 Outstanding Young Poet Award" by the Taiwan New Poetry Society.

 

*Wins 2022 Naji Naman International Literary Award".

০৭:২৩ এএম, ২১ জুন ২০২৪ শুক্রবার

Poem - Stand Tall

Stand Tall

Ogomegbunam Success Nwoye 

Nigeria

 

 

Looking straight to the dawn,

The man, and his purpose,

Is well defined,

Nothing is hidden,

About his direction,

Iam optimistic,

I stand tall.

 

On A motion,

 Dogged and focused

A general fears not,

Don't be a coward,

You have everything,

In defence of your,

Status and regalia, 

I can't stand defeated,

I remain tall.

 

The general in Me,

The force I uphold,

Nothing is easy,

Without the use force,

Iam in awe of the Divine,

The general in Me,

Stand tall,

Iam Productive

 

The Road to relevance, 

Is competitive,

However, Excellence,

Takes it all,

Most time,

Production brings repulsion,

You dare the impossible, 

And escape victorious.

 

All Rights Reserved

©Ogomegbunam Success Nwoye (Nigeria)

 

Biography:

Dr. Ogomegbunam Success Nwoye is a Triple Honorary Doctorate awardee, from Art Literature International Diamond Academy, Hungary, United Nation Center for Peace-Jordan and American Arts, USA.A Nigerian multi Awards winning writer,a Professional writer, a Co-Author of an Anthology'Let Me Breathe,published in Kenya by Destiny Ink, Publishers, a Peace Ambassador, a Literary Ambassador, one of the Nigeria Top Poets 2024,by The International Poetry.

He holds BSc Biochemistry, HND Microbiology, MSc, Public Health, Post Graduate CRM,

He was a Senior Lecturer, with Peace College of Health, Otada-Otukpo-Benue State, Nigeria. He was Former Head of Department Medical Laboratory Technology, Peace College of Health,Otada-Benue State-Nigeria..

 

He was former External Examiner,West African Examinations Council and National Examination Council, a researcher.

 

He was born on 26th October 1985.

He hail from Enugu State, Nigeria. 

 

০৭:১৩ এএম, ২১ জুন ২০২৪ শুক্রবার

গল্প - জ্যোতি

জ্যোতি

খগেন্দ্রনাথ অধিকারী

 

স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির মিটিং সেরে অবসরপ্রাপ্ত সত্তরোর্দ্ধ শিক্ষক, নৃপেন বাবু, ডঃ নৃপেন্দ্রনাথ রায়, বারাসাত স্টেশানে ২ নং প্লাটফর্ম থেকে ৫ নং প্লাটফর্মে যাবার জন্য ওভার ব্রিজের সিঁড়ি ভাঙছেন অতি ধীরে ধীরে বাঁহাতে সিঁড়ির রেলিং ধরে ধরে। তাঁকে দেখে কালো কুচকুচে হিজাব পরা কুড়ি বাইশ বছরের একটি তরুণী তাঁর পাশে দাঁড়িয়ে জিজ্ঞেস কোরলো-- Uncle! কষ্ট হচ্ছে আপনার? আমার হাত ধরুন। আমি আপনাকে উপরে নিয়ে যাচ্ছি।

--না না মা! কোন অসুবিধা হচ্ছে না আমার। তাড়াহুড়ো না করে, এমনিই ধীরে সুস্থে একপাশ দিয়ে উঠছি মা।

--ঠিক আছে কাকু! সাবধানে আসুন। আমি তাহলে যাই?

--হ্যাঁ মা এসো এসো। ঈশ্বর তোমার মঙ্গল করুন।

মেয়েটি তরতর করে উঠে চলে গেল। ডঃ রায় যেন মন্ত্র মুগ্ধের মত চুপ হয়ে গেলেন। অস্ফুটে নিজের মুখ দিয়ে বেরিয়ে এলো--এ কি মানবী না দেবী!

সর্বাঙ্গ কালো পোশাকে ঢাকা থাকায় তন্বীর গায়ের রং বোঝার উপায় ছিল না। কিন্তু সিঁদূর রাঙা নাক আর পদ্মের কলির মত হাতের আঙ্গুলগুলো দেখে তাঁর মনে হোল এ নিশ্চয়ই হঠাৎ আকাশ থেকে নেমে আসা বেহেস্তের কোন পরী, স্বর্গের কোন দেবকন্যা। গলার ওইটুকু কণ্ঠস্বরে ঝরে পড়েছে যেন অমৃতের সহস্র ধারা।

আস্তে আস্তে ওভার ব্রিজের উপরে উঠে একপাশে সরে গিয়ে রেলিং ধরে দাঁড়িয়ে ভাবতে থাকেন আজকের ম্যানেজিং কমিটির সভায় ছাত্রীদের ড্রেস কোড নিয়ে তিক্ত বিতর্কের কথা আর এই কিশোরীর মধুর ব্যবহারের কথা। হিজাব অর নো হিজাব নিয়ে স্কুলের সভা ছিল আজ সরগরম। প্রায় ৩৫ বছরের কাছাকাছি মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরে তিনি পড়িয়ে এসেছেন। কত সরকার এসেছে গেছে, তিনি ছাত্রজীবন থেকে, পরবর্তীকালে কর্মজীবনে তিনি দেখেছেন। কিন্তু এসব জিনিষ তিনি দেখেননি। ছেলে মেয়েদের খাওয়াই জুটতো না, কোন মতে তারা লজ্জা নিবারণ কোরতো! আর ড্রেস কোড! ওসব ভাববারই কোন অবকাশ ছিল না তখন অধিকাংশ মানুষের, অধিকাংশ স্কুলের।

একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে নিজের মনেই তিনি বলেন, এখনো সেই অবস্থাই আছে; বরং অবস্থা এখন আরো খারাপ। গোটা সমাজ ও রাষ্ট্র ব্যবস্থাটা পচে গেছে। কি রাজ্য সরকার, কি কেন্দ্রীয় সরকার, দুটোই জন্তু জানোয়ারদের জন্য উৎসর্গীত সরকার। মানুষের দারিদ্র্য, বেকারী, ক্ষুধা, এসবের মোচনে কোন লক্ষ্যই কোন সরকারের নেই। শুধু আকণ্ঠ ধাপ্পাবাজি, ও গুণ্ডাবাজি ও দুর্নীতিবাজি দিয়ে রাজ্য ও দেশ চলছে। কেবল "ডোল দেওয়ার" প্রতিযোগীতা চলছে রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের মধ্যে। লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, অমুক ভাণ্ডার, তমুক ভাণ্ডার করে আসলে মালক্ষ্মীকে বাংলা ছাড়া ও ভারতছাড়া করা হচ্ছে। বাঙালী সহ গোটা ভারতবাসীকে একটি ভিক্ষাগ্রহণকারী জনতায় পরিণত করছে। আমাদের ঘরের ছেলে মেয়েদের কর্মসংস্থানের কি হবে, সে সব বিষয় "ভাণ্ডার" নামক সর্ব্বনাশা আফিঙের গুলি খাইয়ে দিয়ে মানুষকে দিকভোলা করে দেওয়া হচ্ছে। 

স্বগত উক্তি করে ডঃ রায় বলে ওঠেন

--এর ওপর রয়েছে ধর্মান্ধদের অসভ্যতা। কেউ রামের নামে, কেউ রহিমের নামে, সর্বত্র মানুষে মানুষে বিচ্ছেদ ঘটাচ্ছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে যা মানুষ তৈরীর প্রতিষ্ঠান, সেখানে সরস্বতী বন্দনার নামে, হিজাব নো হিজাব নিয়ে ড্রেসকোডের নামে পরিবেশ বিষাক্ত হচ্ছে। 

--না না, এসব মানা যায় না। অসহনীয় এসব। আজ তো কমিটির মিটিঙে আলোচনা অসমাপ্ত রইলো। পরের মিটিঙে আমি জোরের সঙ্গেই বোলবো, যার যেমন জুটবে, সে তেমন পোষাক পরে আসবে। ওই তো হিজাব পরা ওই মামনিটি! কি অপূর্ব! কি সুন্দর তার ব্যবহার। পোষাকে কি আসে যায়?

ওভার ব্রীজের ওপর থেকে দেখা যাচ্ছে, নীচে একটু দূরে রেল লাইনের পাশে কৃষ্ণচূড়া গাছ গুলো দাঁড়িয়ে আছে। তাদের কাণ্ডগুলোর গায়ের রং তো সুন্দর নয়। কিন্তু তাদের শাখাগুলো কেমন ভরে আছে রাঙা রাঙা কলিতে, অস্তগামী সূর্যের শেষ রক্তরাগে কি অপূর্ব জ্যোতি বেরিয়ে আসছে তাদের থেকে। ওটাই তো ফুলের আসল, মানুষের বেলাতেও ঠিক তাই। 

ধীরে ধীরে এবার রেলিং ধরে সিঁড়ি বেয়ে পাঁচ নম্বর প্লাটফর্মে নামতে থাকেন বৃদ্ধ শিক্ষক। তিনি স্পষ্ট লক্ষ্য করেন ও শোনেন, আজ দশহারা, কাল ইদুজ্জোহা। তাই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির আহ্বান জানিয়ে বারাসাত স্টেশানের শতাধিক হকার তাদের ব্যানার নিয়ে মিছিল করছে, আর কিছু তরুণ তরুণী তাদের সঙ্গে গাইছে অতুল প্রসাদী গান--

"নানা ভাষা, নানা মত, নানা পরিধান,

বিবিধের মাঝে দেখ মিলন মহান।"

খুশীতে ভরে ওঠেন তিনি। কেউ শুনুক না শুনুক, তিনি বলে ওঠেন, এরাই, এই তথাকথিত অর্ধ্-শিক্ষিত, অশিক্ষিত, আধপেটা মানুষগুলো, এরাই দেশকে বাঁচাবে, রাজ্যকে বাঁচাবে, ভাণ্ডার--হিজাব কিংবা বন্দনার হিসাব নিকাষ সব চুকাবে এরা, ঠিক এরাই।

 

      

লেখক পরিচিতি

অধ্যাপক খগেন্দ্রনাথ অধিকারী রাষ্ট্রীয় বিদ্যাসরস্বতী পুরস্কার ও এশিয়া প্যাসিফিক পুরস্কার সহ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বহু পুরস্কার প্রাপ্ত একজন খ্যাতনামা শিক্ষাবিদ। ইনি কোলকাতার সাউথ সিটি (দিবা) কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ।

ঠিকানা-শরনিয়ার বাগান

পোষ্ট-টাকী, পিন-

৭৪৩৪২৯

পশ্চিমবঙ্গ, ভারত

১১:১৪ এএম, ২০ জুন ২০২৪ বৃহস্পতিবার

Poems

 

Biography:

Nigar Nurulla Khalilova is a poetess, novelist, translator from Azerbaijan, Baku city, currently in Kingdom of Saudi Arabia. She is a member of Azerbaijan Writers Union.

 Nigar N.Khalilova graduated from Azerbaijan Medical university, hold Ph.D degree.

Her writings have been published in the books, literary magazines, anthologies and newspapers in Azerbaijan, Russia, Saudi Arabia, USA over the years. Nigar N.Khalilova participated in poetry festivals and was published in the international poetry festivals anthologies. Conducted data in the capital of Texas, Austin city, Austin International Poetry Festival (AIPF), 2016-2017.

 

 

 

Not Crying Baby

 

Under the rubble, the collapse of the wall,

Sitting three-year not crying kid,

In the screaming hell,

Like a wild beast from the sky,

Among the layers of exploding roofs.

With the stroke of eyelashes

Blood drops in the eye,

Sliding on the check.

Small hand silently rubbing the eyelid,

Palm red spots for the first time.

Stepmother- war mixes with the dust

Mop of chestnut hair tenderness.

Splinters dug into the snow white feet.

My angel, what are your fault7!

Well, at least cry, baby,

I’m no longer able

To look into your innocent eyes.

You are my clean world,

You are more than all!

So you lived

 I have died a hundred times!

               ***

The Girl of Lugansk

 

Barefooted walking girl on the street

In prickly frost of morning hours,

On icy slippery scald- head of the earth,

With broken bloody knees.

Standing up and falling down,

Going alone nowhere,

Teared away from the world and herself.

Becoming more wicked.

Cold touching upon the bones

Of the kept silent victim.

Passers-by not finding any word.

Somebody tightly hiding the neck

Under fox collar,

Feeling sorry deep in the heart,

But not asking her anything.

Another one looks askant at the girl,

Expressing the contempt.

…Oh, Impire Judge!

Sometimes we can hang

The lock of indifference,

Not hear the dumb scream for help.

We are deaf like caterprillas,

No demand from us.

And the conscience becoming blind,

The fire in the eyes is gone.

                    ***

 

I’ll Never Forsake You

 

 

I’ll never forsake you, I promise,

I’ll grow like strong wall for support,

And my prayer for you will be flawless,

It will soften the heart of the Lord.

All the falls, misery, addiction

And the poison of doubts and words,

Concentration of toxic affiction

And the illness that bothers and hurts,-

We just left them behind, we have managed.

And an incredible price has been paid.

We have washed off all sin and all damade,

There is no looking back and no fear,

New inviting alluring plans,

Through all hardships the stars are so near,

Will go firmly forth hand in hand!

I can’t leave you just like you demanded,

Oh, if only the Lord keeps me in,

Some may slander that we are enchanted,

But allegiance to charms is akin.

 

 

 

০৪:৫০ পিএম, ১৬ জুন ২০২৪ রোববার

কবিতা - এক ফোটা জল ও জীবন

এক ফোটা জল ও জীবন

             হরিপদ দাস

 

আকাশে নেই মেঘ নেই বৃষ্টি। 

 

প্রতিদিন বেড়ে চলে উষ্ণতা, 

কখনো ৪০ ডিগ্রী কখনো তার উর্ধ্বে। 

 

হারিয়ে যাবে প্রকৃতি

হারিয়ে যাবে বৃক্ষ, হারিয়ে যাবে পরিবেশ। 

 

হারিয়ে যাবে কত মানব জীবন, 

হারিয়ে যাবে কত পশু পাখির জীবন। 

 

জল নেই ,জল নেই ,পড়ে যাবে হাহাকার, 

জলের অভাবে হারিয়ে যাবে বৃক্ষ, হারিয়ে যাবে জীব। 

 

আমরা সভ্যজগতের থেকেও 

ভুলে গেছি মানবতার কথা। 

 

গ্রীষ্মের গরমে তৃষ্ণা মেটানোর জন্য পথচারীদের জন্য

রাস্তার দু'ধারে জল কল গুলো বসানো রয়েছে। 

 

আমরা প্রতিদিন দেখতে পাই কল থেকে অনবরত জল বয়ে চলেছ, আমরা চোখে দেখেও কলটাকে বন্ধ করি না।। 

 

জল আমরা অপচয় করছি, জলটা আমাদের অমূল্য সম্পদ যা হীরা মানিক জহরত থেকে অনেক মূল্যবান। 

 

এক ফোটা জল একটা জীবন ফিরিয়ে দিতে পারে। 

 

আমরা জানি একজন মানবের দেহে আসি শতাংশ জল থাকে তবুও আমাদের প্রতিদিন চার লিটার জলের প্রয়োজন। 

 

এমনি আমরা বাড়িতে বৃক্ষরোপণ করি তাকেও প্রতিদিন বৃক্ষের গোড়ায় জল দিতে হয়, তাকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য। 

 

জল ছাড়া কোন জীব বাঁচে না জল ছাড়া কোন প্রাণী বাঁচে না। 

 

আজ থেকে আমরা শপথ করি, জল অপচয় করব না। 

 

জল প্রাণ জল জীবন।।

 

পরিচিতি:

হরিপদ দাস, পিতা কার্তিক চন্দ্র দাস ও মাতা ঊষা রানী দাস, জন্ম ১৯৪৬ সালে ২৫শে ডিসেম্বর বরিশাল জেলায়। একমাস বয়সে পিতা মাতার কোলে জলপাইগুড়ি জেলায় ধুপগুড়িতে আসেন। এখানেই শৈশবে বড় হওয়া। ধুপগুড়ি হাই স্কুলের পড়াশুনা করেন। শিক্ষাগত যোগ্যতা মাধ্যমিক পর্যন্ত। ছোটবেলা থেকেই লেখালেখিতে উৎসাহ ছিল। সাংসারিক চাপে লেখালেখি চাপা পড়ে যায়। এরপর ধুপগুড়ি বইমেলা কেন্দ্র করে লেখালেখি পুনর্জন্ম ফিরে পান। তাঁর একক বই 'এক সুতোয় বাঁধা ' ১২ ই নভেম্বর ২০২৩

সালে তাঁর চতুর্থ গ্রন্থটি প্রকাশ পায়।।

 

০৬:৫২ এএম, ১৬ জুন ২০২৪ রোববার

Poem - Peace on Earth

 

PEACE ON EARTH 

Rohini Behera 

 

Let there be peace on earth 

Where there is no noise, trouble 

Where everyone giggles, kisses 

It’s harmony that we desire 

Spreading message of love 

When dreams are answered 

Let peace be within our heart 

Of everything vivid truly bright 

Peace is the quiet in the night 

Love has been our only comfort 

Peace is laughter like a musical bell

Peace is everything being very well . 

 

Copyright@Rohini Behera 15.6.2024 .

 

Biography: 

Rohini Kumar Behera has retired from Government of Odisha , India as Manager in Industries Department . He is a “ FEATURED POET. “ of Inner Child Press International , USA and PENTASI B separately . Motivational Strips has conferred upon him , GOLDEN BADGE , GLOBAL DOVES OF PEACE , GOLDEN LITERATURE AWARD , AMBASSADOR DE LITERATURE , 75th Indian Independence Day Honour and RABINDRANATH TAGORE MEMORIAL Award .He was Dy.Secretary Genera of World Union of Poets , Italy . The World Institute of Peace,Nigeria bestowed upon him”WORLD ICON OF PEACE, EPITOME OF HUMANITY, AMBASSADOR OF PEACE “. He is Awarded “WORLD LAUREATE IN LITERATURE “& WORLD POETIC STAR by WNWU, KAZAKHSTAN. He is Conferred with “WORLD AWARD OF EXCELLENCE “in Culture & Literature by CUSCU,PERU GOVERNMENT. He is Bestowed with WILLIAM SHAKESPEARE AWARD . He is the Recipient of GOLDEN EAGLE AWARD from Hispanomundial de Escritores . He Participated in “INTERNATIONAL CULTURAL FEST”in February,2021 Organised by Academia Mexicana DE Literatura Moderna , Argentina via Zoom and sang an Odia Song . He is the Recipient of INDEPENDENCE DAY GLOBAL LITERARY HONOUR-2022 from Motivational Strips and Gujarat Sahitya Academy .He is Bestowed with Motivational Strips 1st FOUNDER’s AWARD-2022 . He acknowledged BEST POET AWARD from The International Poetry Group of Christna Juanita as Founder. His Poems have been Translated into German, French, Romanian, Albanian, Kazakhstan,Urdu, Malayalam, Nagamese and Malaysian languages .He is the Author of 6 nos of PICTORIAL POETRY BOOKS in English , and 2 nos of Odia language Poetry Books . Thus there are total 8 nos of Poetry Books to his credit . 

 

 

০৯:২৬ পিএম, ১৫ জুন ২০২৪ শনিবার

কবিতা - বিধস্ত জীবনের উপখ্যান

বিধস্ত জীবনের উপখ্যান 

 সোহেল রানা

 

আমার আর কেউ নেই, 

চারিপাশে চোখ খুললে শুধু একটাই চিত্র। 

অশান্ত মন এবং অশান্ত শহরে ব্যস্ত কিছু মানুষ। 

সকালে অফিস -স্কুল-কলেজ সকলেই ব্যস্ত। 

দুটো কথা শোনার লোক নেই, 

শহরের ব্যস্ত কিছু মানুষ জন।

আমার আর কেউ নেই! 

 

যে মানুষটাকে উজার করে ভালোবাসতাম। 

অনেক অভিমান- অভিযোগের উপর চেপে আকাশ ছুয়ে যায়। 

কালবৈশাখীর ঝড় যেন তছনছ করে দেয়, 

আমার এই যুদ্ধ, 

আমার এই আন্দোলন, 

তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের চেয়েও কম নয়। 

রাশিয়া-ইউক্রেনে সামরিক বাহিনীর বার বার জয় করে ফিরে এসেছি। 

কিন্তু তোমার মন জয় করতে পারিনি। 

তুমি ছাড়া আমার আর কেউ নেই। 

আমার আর কেউ নেই… ।

 

কবি পরিচিতি :

   পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার সামশেরগঞ্জ থানার অন্তর্গত ইউসুফপুর নামক প্রত্যন্ত গ্রামের কবি , গল্পকার এবং প্রাবন্ধিক সোহেল রানার জন্ম ১৯৯৮ সালে। এই তরুণ কবি পরিবারের পাঁচ ভাই বোনের মধ্যে বড়ো। পিতা-ফাইজুদ্দিন সেখ, মাতা -সারজিনা বিবি। ৪৭ নম্বর ইউসুফ পুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে হাতে খড়ি। চাচন্ড বি. জে হাই স্কুল থেকে প্রথম বিভাগে মাধ্যমিক পাস( ২০১৪)। তারপর কলা বিভাগ নিয়ে একই স্কুল থেকে চতুর্থ স্থান অধিকার করে প্রথম বিভাগে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করেন (২০১৬)। তারপর দুঃখলাল নিবারণ চন্দ্র কলেজ থেকে বাংলা অনার্স (বঙ্গভাষা ও সাহিত্য বিভাগ) নিয়ে প্রথম বিভাগে স্নাতক পাস করেন (২০১৯) । আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তরে পাশ করেন (২০২১)। আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে বি. এড কোর্সে প্রথম বিভাগে পাশ করেন।ছোট থেকেই পারিবারিক আর্থিক প্রতিকূলতাকে হার মানিয়ে পড়াশুনার পাশাপাশি লেখালেখি চালিয়ে যান । পড়াশোনার পাশাপাশি লেখালেখির সঙ্গে তাঁর যেন আত্মিক সম্পর্ক । কলেজে পড়ার সময় বিভিন্ন ম্যাগাজিনে কবিতা প্রকাশিত হয় ।কবিতা ও গল্পের পাশাপাশি বেশ কয়েকটি গবেষণামূলক প্রবন্ধ আছে। তারমধ্যে উল্ল্যেখযোগ্য হল –“সৈয়দ রেজাউল করিমের ‘মৃত্যুর রহস্য’ উপন্যাসের রহস্য অন্বেষণে “ ,প্রবন্ধটি বই মেলায় প্রকাশিত হবে। বর্তমানে মাসিক পত্রিকা ‘স্বপ্নের ভেলা পত্রিকা’,” সুবর্ণ সাহিত্য পত্রিকা ,” মোলাকাত ডটকম পত্রিকা “এবং দৈনিক পত্রিকা ‘ ‘স্বপ্নসিঁড়ি সাহিত্য, তথ্য পুঞ্জ পত্রিকা,নববেলা সাহিত্য পত্রিকা,পত্রিকা’ র নিয়মিত লেখক। গল্পের মধ্যে বিশেষ করে মুর্শিদাবাদ জেলার সামসেরগঞ্জ ও সুতি থানার অন্তর্গত প্রান্তিক মানুষের জীবনচর্চা। বেশ কিছু কাব্যগ্রন্থ, গল্পগ্ৰন্থ ও প্রবন্ধগ্ৰন্থ প্রকাশের মুখে

 প্রবন্ধ :

১) সৈকত রক্ষিতের নির্বাচিত গল্পে নিম্নবর্গের জীবনচর্চা । (প্রকাশিত)

০৫:৪৮ পিএম, ১৪ জুন ২০২৪ শুক্রবার

কবিতা - কবিতায় ভালোবাসি

 

 

কবিতায় ভালোবাসি

জেরিন সুলতানা 

 

নিরবতার সাথে বন্ধুত্ব গড়েছিলাম আমি

কাউকে জানাতে চাইনি কেমন ছিলাম, কেমন আছি 

পাথরের বুকে বুক মিলিয়ে রাত্রি কাটাতাম ।

আমি বেমালুম ভুলে গিয়েছিলাম 

কতকাল আমি প্রাণ খুলে হাসি না!

কতকাল আমি ভালোবাসি না।

চোখে মোটা ফ্রেমের চশমা

নিজের সাথে লুকোচুরি

হারিয়ে যাওয়া হাসির উচ্ছলতা ।

সব নিয়ম করে চলছিলো ঠিকঠাক

ভেবেছিলাম নিরবতার বাঁধ ভেঙে

একটি কবিতা লিখবো ,

হাসির কবিতা , চঞ্চলতার কবিতা, উচ্ছলতার কবিতা !

এলোমেলো শব্দের অগোছালো কবিতা।

আগুনঝরা ফাগুন আসছে,

 ঝাপসা চোখে তুমি পাশে নেই জেনেও খুঁজছি তোমাকে।

 নীরবতার পাহাড় ডিঙিয়ে তোমাকে নিয়ে একটি কবিতা লেখার নেশায় আমি ছুটে বেড়াচ্ছি পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে ,

কোন এক বৈশাখের তপ্ত রৌদ্দুরের নিঃস্বঙ্গতায়

হারিয়ে ফেলেছিলাম তোমাকে,

কত কিছুই তো ইচ্ছে ছিল 

আমার কবিতা আর তোমাকে নিয়ে একটা সংসার হবে আমার।

কত বর্ষা পেরিয়ে যায়

অঝোর বর্ষনে বিষন্নতার চাদর হয়ে তুমি তো আসতেই পারতে?

আচ্ছা, শরতের স্নিগ্ধ বিকেলে আবার কি হাটবো দুজনে?

সেই গায়ের মেঠো পথ ধরে !

অচেনা পথের ধুলো মাড়িয়ে

আঙ্গুলের ফাঁকে আঙ্গুল জড়িয়ে।

তোমার আমার ভালোবাসার একমাত্র সাক্ষী হবে সোনা রোদ মাখানো পরন্ত গোধূলী বেলা।

ভেবেছিলাম, তোমাকে নিয়ে লিখবো 

গোধুলি মাখা একটি কবিতা, 

তা আর হলো কই বলো ?

শত শত কবিতা লেখার ইচ্ছেরা ঘুরে ঘুরে ক্লান্ত আজ

এলোমেলো শব্দের ছুটোছুটি।

আচ্ছা , তুমি বলতো ?

তুমি কি আমার কবিতা হয়ে ধরা দেবে?

নাকি অলিখিত কবিতা হয়ে আজীবন থেকে যাবে আমার অগোছালো ভাবনায়।

তুমি কি জানতে পারবে না কখনো ?

আমার কবিতার মতোই খুব ভালোবাসি তোমায় !

কবিতায় ভালোবাসি তোমায়।

 

 

 

কবি পরিচিতি: 

কবি জেরিন সুলতানার জন্মস্থান বাংলাদেশের মানিকগঞ্জ জেলায়। তিনি পেশায় একজন শিক্ষিকা। ছোটবেলা থেকে আবৃত্তি করেন। শিক্ষকতার পাশাপাশি ভয়েস আর্টিস্ট হিসেবে কাজ করছেন। লেখালেখির প্রতি ভালোবাসা থেকে নিজেও একটু লেখার চেষ্টা করেন। গান, ফটোগ্রাফি তাঁর ভালো লাগার অংশ । এ পর্যন্ত তাঁর ছয়টি যৌথ কাব্যগ্রন্থ প্রকাশ পেয়েছে। প্রথম কাব্যগ্রন্থ "আহত রক্তজবা" ২০২১ সালে প্রকাশ পেয়েছে। কবিতা ভালোবাসেন। তাই কবিতার মাঝে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখতে চান।

 

 

০২:৩৪ পিএম, ১৪ জুন ২০২৪ শুক্রবার

Story - Violin

Violin

Nosirova Gavhar (Uzbekistan)

 

When I was a child, I only wanted to be a doctor when I grew up and heal people. Today, I was sitting in front of the window in desperation, I needed a doctor myself. My eyes are weak, I could not see the beauty of nature. I had only one dream in my heart - to heal people. At that moment I remembered that my father had a violin in an old chest. A few years ago, he taught me how to play the violin. For some reason I never played it . As soon as I opened the window, the outside world was blowing cool. As I played the violin, the birds stopped chirping, the noise of the street was instantly silenced. My heart seemed to be filled with light. Out of joy, I made it a habit to play the violin every day. The gentle melody that came out of it soothed the wounds of my heart. Every day, my violin lovers would gather in front of my window and listen to music. Then I realized that if we sincerely intend and strive for it, Allah will deliver everything. Doctors can heal people, but God gave me the happiness of healing their hearts. Music heals and comforts the human soul. My father's words: "Weakness should be turned into strength" came to mind today. I turned this weakness into strength and achieved my childhood dream. Now, every day, the audience called me the number one violinist.

০৮:৪৬ পিএম, ১২ জুন ২০২৪ বুধবার

Puspaprovat Patrika