ব্রেকিং:
আরজি কর মেডিকেলে ২০০ কোটির দুরনীতি, একাধিক প্রভাবশালীর জোগ থাকার সম্ভাবনা নলপুরে বেলাইন সেকান্দ্রাবাদ-শালিমার এক্সপ্রেস চলতি মাসেই ২০ ডিগ্রির নীচে তাপমাত্রা, রয়েছে নিম্নচাপের সম্ভাবনাও আগ্রা- লখনউ এক্সপ্রেসওয়েতে দুর্ঘটনায় ৫ জনের মৃত্যু রায়গঞ্জের কুলিকে শিশুর প্রাণ বাচিয়ে ডুবে মৃত্যু তরুণের গাজোলে মাটি খুড়তে গিয়ে উদ্ধার ১৬টি রুপার মুদ্রা

শনিবার   ১৬ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ২ ১৪৩১   ১৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

সর্বশেষ:
মুর্শিদাবাদের সুতিতে শুট আউট। CSK-তে যাচ্ছেন ঋষভ? সামনে এল বড় খবর

নতুনদের আহ্বান জানিয়েছেন স্বেচ্ছায় শতবার রক্তদাতা মাসুদ 

রিকু আমির

প্রকাশিত: ৩ নভেম্বর ২০১৮ ১৭ ০৫ ২৭  

দৃশ্যমান প্রমাণসহ ১০৬ বারের স্বেচ্ছায় রক্তদাতা হয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির নিয়মিত রক্তদাতা মাসুদ ইকবাল। স্বেচ্ছায় রক্তদানে যুক্তদের সাথে কথা বলে জানা যায়- ৪৮ বছর বয়স্ক মাসুদ ইকবালই বাংলাদেশে প্রথম ব্যক্তি, যিনি প্রমাণসহ ১০০ বারের স্বেচ্ছায় রক্তদাতা।

রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির রক্ত বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ও চিকিৎসক তারেক মেহেদী জাগরণকে বলেন, মাসুদ ইকবালের এই অর্জন নিয়ে আমরা খুবই গর্বিত, আনন্দিত। আমরা চাই, তার মতন অন্যরাও রক্তদানে এগিয়ে আসুক।

২০১৭ সালের অক্টোবর মাসের ১৩ তারিখে তিনি রেডক্রিসেন্টে টানা ১০০ বার রক্তদান সমাপ্ত করেন। এরপর গত কোরবানি ঈদের পর টানা দুইবার রক্তদান করেন।

মাসুদ ইকবালের হিসাবে তিনি রক্তদান করেছেন- ১০৬ বার। এর মধ্যে ১০২ বার রেডক্রিসেন্টে, দুইবার সন্ধানীতে এবং দুইবার পরিচিতজনদের ডাকে সাড়া দিয়ে দান করেন।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপদ রক্ত পরিসঞ্চালন বিভাগের চেয়াম্যান অধ্যাপক আসাদুল ইসলাম জাগরণকে বলেন, মাসুদ ইকবালের রক্তদান সম্পর্কে যেহেতু দৃশ্যমান প্রমাণ আছে, সেহেতু এটি মেনে নেয়া যায়। আমার জানা মতে- মাসুদ ইকবাল ব্যাতীত প্রমাণসহ বাংলাদেশে ১০০ বারের স্বেচ্ছায় রক্তদাতা নেই।

সন্ধানী জাতীয় চক্ষুদান সমিতির প্রাক্তন সভাপতি (দু’বার) ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক আলী আসগড় মোড়লও জাগরণকে একই কথা বলেন।

কর্মসূত্রে চট্টগ্রামে অবস্থানরত মাসুদ মোবাইল ফোনে জাগরণের প্রশ্নে বলেন, ১০০ বার পূরণ করা আমার লক্ষ্য ছিল। এমনিতে শরীরে কোনো সমস্যা হয়নি।

রক্তদানে অনুপ্রেরণার উৎস জানতে চাইলে মাসুদ ইকবাল ফিরে যান যুবক বয়সের স্মৃতিতে। তিনি বলেন, জীবনে প্রথম রক্ত দেবার পর সুঁচ ফোটানোর স্থানে তুলা জড়ানো অবস্থায় বাসায় আসি। বাবা দেখে জানাতে চান হাতে তুলা কেন। আমি নির্দ্বিধায় বলি রক্ত দানের কথা। বাবা ও মা কেউই আমাকে এ বিষয় নিয়ে আপত্তি তো করেইনি। বরং উৎসাহ যুগিয়েছেন।

২০১৫ সালের মাঝামাঝি সময়ে এ প্রতিবেদকের সঙ্গে মাসুদ ইকবালের পরিচয়। তখন তিনি ৯৩বারের দাতা ছিলেন।তার রক্তের গ্রুপ ‘এ-পজেটিভ’।

হতাশা প্রকাশ করে সোমবার তিনি বলেন, মিডিয়া আমাদের নিয়ে কেন লেখে না? নিজেকে বড় করার জন্য বলছি না। আমাদের নিয়ে লিখলে মানুষ জানবে, নতুন দাতা সৃষ্টি হবে। এটা খুব দরকার। শুধুমাত্র বিশ্ব রক্ত দাতা দিবস এলেই রক্তদান নিয়ে লেখালেখি করা হয়। সারাবছর থাকে নীরব। কিন্তু রক্ত তো সারাবছরই দরকার। সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য সাংবাদিকদেরও সারাবছরই কাজ করা উচিত। নিয়মিত রক্ত দান করলে যে কোনো ক্ষতি নেই, বরং উপকার, তা যদি মানুষকে বারবার অবহিত না করা হয় তাহলে মানুষ কীভাবে উদ্বুদ্ধ হবে?
পুলিশ কর্মকর্তা মরহুম মাহবুবুর রহমান ও ফারুক হোসেন দম্পতির মেজো সন্তান মাসুদ ইকবালের গ্রামের বাড়ি ফরিদপুর শহরে। বড় হয়েছেন ঢাকায়। ১৯৮৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। বর্তমানে তিনি চট্টগ্রামের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করছেন।

প্রথম ১০-১২ বছর তিনি বছরে চারবার রক্ত দিতেন। পরে দেশে বছরে তিনবার রক্তদানের নিয়ম প্রবর্তন হওয়ায়- তিনিও বছরে তিনবার করে রক্ত দিতে শুরু করেন। কারও তাগিদ লাগে না, সময় হলে স্বেচ্ছায় চলে যান রাজধানীর রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির রক্তদান কেন্দ্রে। কর্মসূত্রে তিনি চট্টগ্রামে থাকলেও রক্তদানের সময় হলে ছুটে আসেন ঢাকায়। তার ভাইবোনেরা থাকেন ঢাকার মোহাম্মদপুরে।

Puspaprovat Patrika
এই বিভাগের আরো খবর