শনিবার   ১৬ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১ ১৪৩১   ১৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দিল্লিতে এবার হবে জনগণের সরকার নির্বাচনী প্রচারে বললেন মমতা

হক নাসরিন বানু

পুষ্পপ্রভাত পত্রিকা

প্রকাশিত : ০৯:১৭ পিএম, ১৮ এপ্রিল ২০১৯ বৃহস্পতিবার

মালদা


দিল্লিতে এবার হবে জনগণের সরকার, মালদায় নির্বাচনী সভায় এসে বললেন তৃণমূল নেত্রী তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি । তিনি বলেন,  "আর নেই দরকার, বিজেপি সরকার"।  এটা বাংলার নির্বাচন নয়, এইটা দিল্লির নির্বাচন । গোটা দেশে বিজেপি উৎখাতের ডাক উঠেছে । তামিলনাড়ু , অন্ধ্রপ্রদেশ, উড়িষ্যা, কেরলে বিজেপি শূন্য পাবে।  অন্যান্য রাজ্যে বিজেপির অবস্থা খারাপ । মানুষ আর বিজেপিকে চাইছে না। এরাই ধর্মের নামে দেশকে ভাঙতে চাইছে।এদিন মালদায় তিনটি নির্বাচনী সভা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। এদিন দুপুর দেড়টায় প্রথম সভাটি হয় রতুয়া থানার সামসি কলেজ মাঠে।  দ্বিতীয় সভাটি হয় কালিয়াচক থানার সুজাপুর হাতিমারি মাঠে । এবং শেষ সভাটি করেন বামনগোলা থানার পাকুয়াহাট ময়দানে । তিনটি সভাতেই ছিল মানুষের ভিড়।  প্রখর রোদের তাপকে উপেক্ষা করে দলে দলে মানুষ মুখ্যমন্ত্রীর সভায় যোগদান করেন। মহিলাদের উপস্থিতি ছিল সবচাইতে বেশি।এদিন দুপুর দেড়টায় সামসি কলেজ মাঠে নির্বাচনী সভায় যোগ দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি বলেন,  গত বিধানসভায় আপনারা মালদা থেকে তৃণমূলের কাউকে জয়ী করেন নি।  এটা আমার কাছে আক্ষেপ থেকে গিয়েছে। উত্তর মমতার তৃণমূল প্রার্থী মৌসম বেনজির নুর  সাংসদ রয়েছেন। ও দলবদল করার সময় অনেকে অনেক কথাই বলেছে। কিন্তু আমি ওকে বলেছি তুমি সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছো ।একজন লড়াকু নেত্রী এবং লড়াকু দলের সাথে যোগ দিয়েছে মৌসম । আপনারা মৌসমকে জয়ী করুন । যা চাইবেন তাই পাবেন।  কেন্দ্রে মোদি ও তার দলবল আর ক্ষমতায় আসতে পারবে না।  এরা স্বৈরাচারী এবং ফ্যাসিস্ট । মৌসম লড়াকু মেয়ে । আপনারা এর যোগ্য জবাব দিন ভোটের মাধ্যমে । মনে রাখবেন একেকটা ভোট মোদির গালে একটা থাপ্পর। এদিন সামসীর এই জনসভায় জনসমুদ্রে চেহারা নেয়।  মমতা ব্যানার্জি মঞ্চে উঠতেই তাকে দেখার জন্য হুড়োহুড়ি পড়ে যায় মানুষের মধ্যে।
এদিন দুপুরে সামসির সভা শেষ করে মৌসম নূরকে নিয়ে হেলিকপ্টার করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি চলে আসেন কালিয়াচকের সুজাপুর হাতিমারি মাঠে।  সেখানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন,  মালদায় আমরা অনেক উন্নয়ন করেছি । পলিটেকনিক, আইটিআই করেছি । সিল্ক  সেন্টার , আইটি সেন্টার হয়েছে । নতুন এয়ারপোর্ট করে দেওয়া হয়েছে।  এখানে মেডিকেল কলেজের মাধ্যমে ভালো চিকিৎসা ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছে । বিহার , ঝাড়খন্ড সহ অন্যান্য রাজ্যের রোগীরা এসে চিকিৎসার সুযোগ নিচ্ছেন । 
মুখ্যমন্ত্রী বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন, এখানে আর কতদিন আপনারা গনিখানের নাম করে ভোট দিবেন । কংগ্রেস তো এখানে সিপিএমের কাছে বিক্রি হয়ে গিয়েছে । এবার আপনাদের সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে । দক্ষিণ মালদা কেন্দ্রে মোয়াজ্জেম হোসেনের মতোন একজন চিকিৎসক প্রার্থী হয়েছেন । তাকে আপনাদের জয়ী করতে হবে।  কালিয়াচকের মঞ্চে মালদার দুই কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী মোয়াজ্জেম হোসেন এবং মৌসম বেনজির নুরের হাত ধরে ভোট চান মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন,  এই রাজ্যে উন্নয়নের কারিগর হচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেস । আমরা কৃষকদের খাজনা মকুব করে দিয়েছি।  শস্য বীমা টাকাটা কে দেয়।  আমাদের সরকার ১০০ শতাংশ দিচ্ছে।
মুখ্যমন্ত্রী বক্তব্যে বলেন,  এনআরসি (ন্যাশনাল রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট) চালু করতে দিব না।  ওরা এনআরসি করে মানুষদের তাড়ানোর জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে।  দেশ থেকে জনগণ এবার এনবিসি তৈরি করবে।  অর্থাৎ ন্যাশানাল বিদায় সার্টিফিকেট।  মনে রাখবেন বাংলায় কংগ্রেস সাইনবোর্ড হয়ে গিয়েছে । আর মোদিকে কেউ চাইছে না । বাংলা সবাইকে নিয়ে চলে । সমাজের সর্বস্তরের মানুষ সব রকম সুবিধা পাচ্ছে । অথচ পাঁচ বছর ধরে লুটেরাদের নিয়ে দেশ চলছে দিল্লিতে। বাংলায় একটি আসন পাবে না বিজেপি ।বিজেপি ক্ষমতায় থাকবে না। আপনার মালদায় বারবার একটি লোককে ভোট দিয়ে ভোট নষ্ট করবেন না।  সময় হয়েছে বদলে দেওয়ার।
কালিয়াচকের জনসভার পড়ে শেষ সভাটি করেন পাকুয়াহাট এলাকায় । মুখ্যমন্ত্রী বলেন,  আরএসএসের প্রচারকেরা মালদায় পড়ে আছে ।চৌকিদার থাকবে না। চৌকিও থাকবে না।  রাজ্যের উন্নয়নের সুফল পেয়েছে সমাজের সর্বস্তরের মানুষ । সমস্ত ক্ষেত্রে এগিয়ে চলেছে বাংলা।  মোদী জমানায় ১২ হাজার কৃষক আত্মঘাতী হয়েছে।  আদিবাসী কৃষকদের জন্য কাজ করছি আমরা । সব ধর্মই শান্তির কথা বলে।  স্বামীজীর হিন্দু ধর্মকে বিশ্বাস করি।  কিন্তু হিন্দু ধর্মের বদনাম করছে কেউ কেউ।  আমাকে পুরীর মন্দিরে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়েছিল । বিজেপি সারাক্ষণ পিছনে লেগে আছে । কিন্তু আমাকে চমকালে আমি  গর্জাই।