বুধবার   ১৫ অক্টোবর ২০২৫   আশ্বিন ৩০ ১৪৩২   ২২ রবিউস সানি ১৪৪৭

দেড় ঘণ্টা অপেক্ষা, তবু এল না এম্বুলেন্স! সন্তান জন্ম দিয়েই অকালে নিভে গেল ২৫ বছরের এক গৃহবধূর প্রাণ

পুষ্পপ্রভাত পত্রিকা

প্রকাশিত : ০৯:৫৬ এএম, ১৩ অক্টোবর ২০২৫ সোমবার | আপডেট: ০৯:৫৬ এএম, ১৩ অক্টোবর ২০২৫ সোমবার

সফিকুল ইসলাম ফারাক্কা: দেড় ঘণ্টা ধরে মরিয়া চেষ্টা, ফোনের পর ফোন—তবুও মেলেনি সরকারি এম্বুলেন্স। শেষমেশ নবজাতক সন্তানের জন্ম দিয়েই অকালে প্রাণ হারালেন এক তরুণী মা। হৃদয়বিদারক এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে মুর্শিদাবাদের ফরাক্কা ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত গৃহবধূর নাম জামিলা খাতুন (২৫)। বাড়ি ফরাক্কার ইমামনগর গ্রামে। রবিবার সকালে প্রসব যন্ত্রণায় কাতর অবস্থায় তাঁকে পরিবারের সদস্যরা ফরাক্কা ব্লক হাসপাতালে নিয়ে আসেন। সেখানে চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে তিনি এক পুত্রসন্তানের জন্ম দেন। কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যেই তাঁর শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি ঘটে। চিকিৎসকেরা পরিস্থিতি আশঙ্কাজনক দেখে তাঁকে জঙ্গিপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে রেফার করেন। এখান থেকেই শুরু হয় দুঃসহ অপেক্ষা—টানা দেড় ঘণ্টা ধরে ফোন করা হয় সরকারি ১০২ নম্বর এম্বুলেন্স পরিষেবায়, তবুও কোনও গাড়ি আসে না। অবশেষে দীর্ঘ সময় পেরিয়ে পরিবারের সদস্যরা নিজেদের উদ্যোগে অর্জুনপুর হাসপাতাল থেকে একটি বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করেন। কিন্তু ততক্ষণে সব শেষ। জঙ্গিপুরে নিয়ে যাওয়ার আগেই জামিলা খাতুনের মৃত্যু হয়। নবজাতককে কোলে নিয়েই ভেঙে পড়েন স্বজনরা। এই ঘটনার জেরে হাসপাতাল প্রাঙ্গণে উত্তেজনা ছড়ায়, ক্ষুব্ধ স্থানীয়রা শুরু করেন বিক্ষোভ। তাঁদের অভিযোগ। সরকারি অ্যাম্বুলেন্স যদি সময়মতো না আসে, তাহলে সাধারণ মানুষ যাবে কোথায়? এটা সরাসরি প্রশাসনিক ব্যর্থতা।” খবর পেয়ে ফরাক্কা থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।ফারাক্কা ব্লক হাসপাতালের এক চিকিৎসকও স্বীকার করেছেন, ঘটনার দিন সরকারি এম্বুলেন্স পৌঁছাতে দেরি হয়েছিল।এদিকে, মাত্র কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে এক নবজাতক পৃথিবীর আলো দেখল ঠিকই, কিন্তু চিরতরে হারাল মায়ের স্নেহ। প্রশ্ন উঠছে—একটি ফোনকলের সময়মতো জবাব পেলে কি বাঁচানো যেত না এই তরুণী মাকে? স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, শুধু ফরাক্কা নয়, গোটা জেলাতেই ১০২ নম্বর এম্বুলেন্স পরিষেবায় অনিয়ম ও গাফিলতি ক্রমশ বেড়েই চলেছে।তাঁদের দাবি, “অবিলম্বে বিষয়টি নিয়ে জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন। মানুষের জীবন নিয়ে এমন উদাসীনতা চলতে পারে না।”