রোববার   ১৭ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ২ ১৪৩১   ১৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

হাইলাকান্দিতে মোওলানা আবুল কালাম আজাদের বার্ষিকী পালিত

রাহাতুল আক্তার বড়ভূইয়া

পুষ্পপ্রভাত পত্রিকা

প্রকাশিত : ০৩:১৬ পিএম, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ শনিবার

বক্তব্য রাচ্ছেন এনসি কলেজের অধ্যক্ষ মোর্তজা হুসেন

বক্তব্য রাচ্ছেন এনসি কলেজের অধ্যক্ষ মোর্তজা হুসেন

সর্বাঙ্গীন মানব কল্যাণ সংঘ এর ব্যবস্থাপনায় একতা ও নাগরিক সচেতনতা সভার মাধ্যমে যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করা হয়েছে ভারতের সর্বপ্রথম শিক্ষামন্ত্রী,তথা ভারত রত্ন, মৌলানা আবুল কালাম আজাদ এর মৃত্যু বার্ষিকী। শুক্রবার লক্ষীরবন্দ বাইপাসে খোলা মাঠে অনুষ্ঠিত হয় এই অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন আব্দুল হক চৌধুরী। দুপুর একটা থেকে আরম্ভ হয়, এই অধিবেশনে ছিলেন, ভারত রত্ন মৌলানা আবুল কালাম আজাদ এর জীবন আদর্শ, এবং জাতি ধর্ম নির্বিশেষে নিজ অধিকার সম্পর্কে সচেতনতা মূলক বক্তব্য কর্মসূচি । মূখ্য আর্কষন হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখলেন বদরপুর এনসি কলেজের বর্তমান অধ্যক্ষ, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, ডঃ মোর্তজা হুসেন সাহেব তিনি বক্তব্যে ভারতের প্রথম শিক্ষামন্ত্রী ভারত রত্ন মৌলানা আবুল কালাম আজাদ সম্পর্কে বলতে গিয়ে বলেন, মৌলানা আজাদ ছিলেন একজন আদর্শ ব্যক্তি, ভারত স্বাধীনে ছিল উনার বিরাট অবদান। নিজের জ্ঞানকে সঠিক কাজে লাগিয়ে চালিয়ে গেছেন ইংরেজদের বিরুদ্ধে সংগ্রামে, কারাগারে বন্দী হয়েও কলম চালিয়েছে দেশের জন্য । তিনি যেমন ছিলেন একজন প্রকৃত ধার্মিক , তেমনি ছিলেন একজন দেশপ্রেমিক। ছিল না উনার কাছে কোন জাতের  ভেদাভেদ। তাইতো তিনি আজ সমস্ত বিশ্বের মধ্যে একজন আদর্শ ব্যক্তি ।তিনি আরও বলেন “তরুণ বয়স থেকে মৌলানা আজাদ উর্দু ভাষায় কবিতা এবং ধর্ম ও দর্শন-সংক্রান্ত নিবন্ধ রচনা করতে শুরু করেন। তিনি সাংবাদিকতার পেশা গ্রহণ করে ব্রিটিশ শাসনের সমালোচনা করেন এবং ভারতীয় জাতীয়তাবাদকে সমর্থন জানান। পরে আজাদ খিলাফৎ আন্দোলনের নেতৃত্ব দান করেন। সেই সময় তিনি মহাত্মা গান্ধীর সংস্পর্শে আসেন। আজাদ ১৯১৯ সালের রাওলাট আইনের বিরুদ্ধে গান্ধীজির অহিংস অসহযোগের ধারণায় অণুপ্রেরিত হয়ে অসহযোগ আন্দোলন সংগঠনে সক্রিয় হয়ে ওঠেন। ১৯২৩ সালে তিনি ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের সভাপতি নির্বাচিত হন। তিনিই ছিলেন কংগ্রেসের সর্বকনিষ্ঠ সভাপতি। মোর্তজা আরও বলেন ১৯৩১ সালে মৌলানা আজাদ ধারাসন সত্যাগ্রহ শুরু করেন। এই সময় তিনি দেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক নেতা হয়ে ওঠেন। তিনি ভারতে ধর্মনিরপেক্ষতা ও সমাজতান্ত্রিক ধ্যানধারণা এবং হিন্দু-মুসলমান সম্প্রীতির কথা প্রচার করেন । ভারত ছাড়ো আন্দোলনের সময় পাঁচ বছর  তিনি ভারতীয় জাতীয়রকংগ্রেস দলের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। এই সময় তিন বছর তিনি কারারুদ্ধ ছিলেন। যে সকল ভারতীয় মুসলমান মুসলমানদের জন্য পৃথক পাকিস্তান রাষ্ট্রের দাবির বিরোধিতা করেছিলেন, তাঁদের মধ্যে সবচেয়ে উজ্জ্বল ব্যক্তিত্ব ছিলেন মৌলানা আজাদ। তিনি ভারতের অন্তর্বর্তী সরকারেও মন্ত্রীত্ব করেন। দেশভাগের অব্যবহিত আগে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার সময় তিনি হিন্দু-মুসলমান সম্প্রীতির প্রচেষ্টা চালান। স্বাধীন ভারতের শিক্ষামন্ত্রী হিসেবে তিনি বিনামূল্যে প্রাথমিক শিক্ষা ও উচ্চশিক্ষার জন্য আধুনিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলি চালু করেন। তিনিই ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন স্থাপন করেন। এদিন  সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখবেন , বোয়ালিপার সিনিয়র মাদ্রাসার বর্তমান অধ্যক্ষ, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ এবং ইসলামিক চিন্তাবিদ মাওলানা ইসমাইল আলী লস্কর সাহেব ,তিনি বলেন মৌলানা আবুল কালাম আজাদ একজন বিশিষ্ট ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামী ও স্বাধীন ভারতের সর্বপ্রথম শিক্ষামন্ত্রী ছিলেন । তিনি মৌলানা আবুল কালাম আজাদ (তাঁর ছদ্মনাম ছিল আজাদ) নামেই অধিক পরিচিত। মৌলানা আজাদ ইসলামি ধর্মশাস্ত্রে সুপণ্ডিত ছিলেন। তরুণ বয়সে তিনি ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হন। তিনি হিন্দু-মুসলিম  সম্প্রীতির প্রবক্তা ছিলেন এবং দ্বিজাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে ভারত বিভাগের বিরোধিতা করেছিলেন। এমনকি নবগঠিত পাকিস্তান রাষ্ট্রে সামরিক শাসন ও পাকিস্তান ভাগ সম্পর্কেও তিনি ভবিষ্যবাণী করে গিয়েছিলেন। তিনি আরও বলেন ১৯৯২ সালে তাঁকে ভারতের সর্বোচ্চ সম্মান ভারতরত্ন (মরণোত্তর) ভূষিত করা হয়।  স্বাধীন ভারতে শিক্ষাবিস্তারে তাঁর উজ্জ্বল ভূমিকার কথা স্মরণে রেখে তাঁর জন্মদিনটি সারা দেশে "জাতীয় শিক্ষা দিবস" হিসেবে পালন করা হয়। এদিকে উপস্থিত হয়ে বক্তব্য রাখেন জামিরা টাইটেল মাদ্রাসার বিশিষ্ট শিক্ষক মোওলানা জলাল উদ্দিন চৌধুরী সাহেব , সর্বাঙ্গীণ মানব কল্যাণ সংঘ এর কেন্দ্রীয় সভাপতি জনাব শুক্কুর আলী বড়ভূইয়া ,সহ উপস্থিত ছিলেন, মূখ্য আয়োজক বদরুল হক চৌধুরী, বিএসওয়াইএফ এর সম্পাদক মেহবুব আহমেদ লস্কর, আমিনুল হক লস্কর, ফখরুল ইসলাম সহ অন্যান্যরা।