৬ই ডিসেম্বর: ২০২৪-এর ডাক
খগেন্দ্রনাথ অধিকারী
পুষ্পপ্রভাত পত্রিকা
প্রকাশিত : ০১:০৩ পিএম, ৬ ডিসেম্বর ২০২৪ শুক্রবার
৬ই ডিসেম্বর: ২০২৪-এর ডাক
খগেন্দ্রনাথ অধিকারী
৬ই ডিসেম্বর ঐতিহাসিক বাবরি মসজিদ ভাঙ্গার কালো দিন। এই দিনটি শুধু ভারতবর্ষ নয়, শুধু এশিয়া মহাদেশ নয়, সারা পৃথিবীর ধর্মনিরপেক্ষ মানুষদের কাছে পশু শক্তিকে ধিক্কার জানানোর দিন ও সেই সাথে মানবতার পক্ষে, জাতি ধর্ম নির্বিশেষে তথা কথিত সংখ্যাগুরু সংখ্যালঘু নির্বিশেষে, সকল সম্প্রদায়ের মানুষের জীবন স্বাধীনতা, সম্পত্তি ও সংস্কৃতি রক্ষার জন্য শপথ নেবার দিন।
এই মুহূর্তে আমাদের দেশের দুই মহান সন্তান, স্বাধীনতা সংগ্রামী ও প্রশাসনের উচ্চ আসন অধিকারকারীর কথা মনে পড়ে যায়। একজন হলেন ভারতের প্রথম শিক্ষামন্ত্রী, অনন্য সাধারণ শিক্ষাবিদ, যিনি মক্কার জমজম কূয়ার পাড়ে জন্ম নিয়ে আশৈশব যমুনার তীরকে আপন করে তাকে স্বদেশভূমি তথা জন্মভূমি বলে গণ্য করেছিলেন। তিনি হলেন মৌলানা আবুল কালাম আজাদ। আর একজন হলেন দক্ষিণ ভারতে ভূমিষ্ঠ হওয়া ভারতের প্রথম উপরাষ্ট্রপতি তথা পরবর্তীকালের রাষ্ট্রপতি বিরলদৃষ্ট দার্শনিক ডঃ সর্ব্বপল্লী রাধাকৃষ্ণান।
আমাদের জাতীয় মুক্তি আন্দোলনের শেষ পর্বে যখন ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের উচ্ছিষ্ট একই আস্তাকুঁড় থেকে কুড়িয়ে খেয়ে হিন্দু মৌলবাদী ও মুসলিম মৌলবাদীরা দেশভাগের দড়ি টানাটানি করছে, যখন ইকবাল "পাকিস্থান" নাম দিয়ে ভারত ভাগ করে একটি স্বাধীন মুসলিম রাষ্ট্র গঠনের কথা বলছেন, তখন মৌলানা আবুল কালাম আজাদ সীমান্ত গান্ধী খান আব্দুল গফুর খান প্রমুখরা অবিভক্ত ভারতের স্বাধীনতার জন্য লড়ছেন। ঠিক এই লগ্নে মুসলিম লীগের তরফে আজাদকে আহ্বান করা হয় যে একজন বিশিষ্ট মুসলিম বুদ্ধিজীবি হিসাবে তিনি ভারত বিভাজন করে একটি সার্ব্বভৌম স্বাধীন মুসলিম রাষ্ট্র গঠনের আন্দোলনে সামিল হোল। উত্তরে তিনি বলেন, "আগে আমি একজন মানুষ, তারপর একজন ভারতীয়, তারপর একজন মুসলমান। আমি ধর্মনিরপেক্ষ অবিভক্ত ভারত চাই। . . . . ধর্মের ভিত্তিতে ভারত ভাগ করে গঠিত ঐ দেশ আবার ভাঙবে।" সীমান্ত গান্ধী খান আব্দুল গফুর খানের কাছেও একই প্রস্তাব গিয়েছিল। তিনিও অনুরূপ উত্তর দেন। অতি অল্পকালের মধ্যেই তাদের ভবিষ্যদ্বাণী সত্য প্রমাণ হয়। পাকিস্থান ভেঙ্গে শেখ মুজিবের নেতৃত্বে স্বাধীন সার্ব্বভৌম ধর্মনিরপেক্ষ বাংলাদেশের উদ্ভব হয়। এখন যে অবশিষ্ট পাকিস্থান আছে, সেখানে বালুচ জনগণ স্বাধীনতার জন্য লড়ছেন।
এবার আসা যাক ডঃ রাধাকৃষ্ণাণের উক্তি নিয়ে আলোচনায়। ঠিক ঐ একইলগ্নে হিন্দু মহাসভার তরফে তাঁর কাছে প্রস্তাব যায় যে দেশভাগ হলে তো হিন্দুদের ক্ষতি নেই। কারণ মুসলিমদের জন্য পৃথক মুসলিম রাষ্ট্র হলে হিন্দুরা স্বস্তিতে থাকবে। উত্তরে ডঃ রাধাকৃষ্ণান জানান, "আগে আমি মানুষ, তারপর ভারতীয়, তারপর হিন্দু। . . . . আমি ধর্মনিরপেক্ষ অবিভক্ত ভারত চাই। "ভারত বিভাগকে তবুও ঠেকানো যায়নি। মুসলিম লীগ-হিন্দুমহাসভা আর. এস. এস-ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের চক্রান্তে ভারত বিভক্ত হয়। পাকিস্থান সৃষ্টি হয়।
পাকিস্থান সৃষ্টির পরে হিন্দুমহাসভা- আর. এস. এস. দাবী তোলে এদেশের মুসলিম ভাইবোনদেরকে পাকিস্থানে পাঠিয়ে দেবার। এর উত্তরে গণপরিষদের ভিতরে ও বাইরে, উপরাষ্ট্রপতির আসন ও রাষ্ট্রপতির আসন থেকে বারে বারে ডঃ রাধাকৃষ্ণান ষোষণা করেন যে ভারত ভেঙ্গে পাকিস্থান নামক মুসলিম রাষ্ট্র হয়েছে মানেই অবশিষ্ট স্বাধীন ভারত হল একটি "হিন্দু রাষ্ট্র" একথা মনে করার কোন কারণ নেই। "দেশভাগের যন্ত্রণা সয়েই বলছি এবং বোলবো যে ভারত ধর্মনিরপেক্ষ ছিল, ধর্মনিরপেক্ষ আছে, এবং চিরদিন ধর্মনিরপেক্ষ থাকবে।"
বস্তুতপক্ষে, আমাদের দেশের সংবিধানের ২৫নং ধারায় ধর্মনিরপেক্ষতার আদর্শ গণপরিষদ থেকেই স্বীকৃত হয়েছে। পরবর্তীকালে শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধীর প্রধানমন্ত্রীত্বকালে সংবিধানের ৪২তম সংশোধন হয় ও তার মাধ্যমে "Secular" বা ধর্মনিরপেক্ষ শব্দটি প্রস্তাবনায় সংযুক্ত হয়। এক কথায়, হিন্দু মৌলবাদীরা যতই হিন্দী--হিন্দু--হিন্দুস্থান বলে চীৎকার করুক এবং ভারতকে হিন্দুরাষ্ট্র বানানোর চেষ্টা করুক, কিংবা কিছু ধর্মান্ধ মুসলিম মৌলবাদীর পেট্রোডলারের লোভে কিছু দিনের মধ্যেই ভারতকে একটি মুসলিম রাষ্ট্র বানানোর ঘৃন্য অপচেষ্টা চলুক, অশোক--আকবর--দারাশিকো--বিবেকানন্দ--রবীন্দ্রনাথ--নজরুলের দেশে কোন মৌলবাদী শক্তির কোন চক্রান্তই সফল হবে না। বিদ্রোহী কবির কথাই ঠিক হবে--
একই বৃন্তে দুইটি কুসুম
হিন্দু--মুসলমান।
মুসলিম তার নয়নমণি
হিন্দু তাহার প্রাণ।
এদেশের হিন্দু ভাইবোনরা তাঁর লেখা শ্যামাসংগীতে মাকে অর্ঘ্য দেয় ও দেবে। মহাঅষ্টমী তিথিতে কুমারী পূজার সময় হিন্দু ভাইবোনরা স্মরণ করবে যে ভারতমাতার সন্ধানে বেরিয়ে স্বামী বিবেকানন্দ ঝিলাম নদীর এক মুসলিম মাঝির ক্ষুধার্ত শিশু কন্যাকে, যে তার মুখের আধপোড়া রুটিটুকু তার ক্ষুধাকাতর শিশু ভাই-এর গালে তুলে দিচ্ছে, এই দৃশ্য থেকে "জয় ভারত মাতা কি জয়" বলে স্বামীজী তাকে শ্রষ্টাঙ্গে প্রণাম করে তার পূজো করেছিলেন, এবং সেই থেকেই মহাঅষ্টমীতে শারদীয়ায় কুমারী পূজার চল।
তবু বোলবো যে আমাদের এই মহান দেশে ৬ই ডিসেম্বর ঘটেছে। বাবরি মসজিদ ধ্বংস হয়েছে রাম জন্মভূমি উদ্ধারের নামে। উপনিষদে বলা আছে-- "সর্বং খল্বিদং ব্রহ্মঃ।" ব্রহ্ম অর্থাৎ ঈশ্বর সর্বত্র বিদ্যমান। হিরণ্যকশিপু বধের পৌরাণিক উপখ্যানে দেখা যায় যে ভগবান শ্রীহরি সর্বত্রই আছেন। তাই হিরণ্যকশিপু দৈত্য "হরি"র নামে অসহ্য হয়ে তার হরিভক্ত সন্তান প্রহ্লাদকে জিজ্ঞাসা করে যে "তোর হরি কি ওই ঢিপিটার মধ্যেও আছে?" প্রহ্লাদ উত্তর দেয় "হ্যাঁ বাবা আছে।" তখন হিরণ্যকশিপু বলে ওঠে, "দাঁড়া দেখি তোর হরিকে দেখাচ্ছি।" এই বলে সে ঐ ঢিপির মাথায় লাথি মারে। অমনি নৃসিংহমূর্তিতে "শ্রহরি" হিরণ্যকশিপুকে বধ করেন।
এই পৌরাণিক উপাখ্যান কতখানি সত্য বা মিথ্যা তা জানি না। কিন্তু এই উপাখ্যানের যে নির্যাস, তা সর্ব্বদেশের সর্ব্বকালের জাতিধর্ম নির্বিশেষে সকল ধর্ম নিরপেক্ষ মানুষের কাছে শিক্ষনীয়।
আসলে দুনিয়া জুড়ে সব দেশেই উদার দৃষ্টিভঙ্গিতে, "ধর্ম" বা "ঈশ্বর"কে ব্যাখ্যা না করে অত্যন্ত সংকীর্ণ বা বিকৃতভাবে এই শব্দ দুইটিকে ব্যাখ্যা করা হয়। তাই আমরা দেখি যে দেশে দেশে ধর্মের দোহাই পেড়ে মানুষের খুনে নরপিশাচরা হাত রাঙায়। ধর্মীয় সংখ্যালঘু হলে তো কথাই নেই! এমনকি ধর্মীয় সংখ্যাগুরুরাও গণহত্যার শিকার হয়ে থাকেন।
ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় যে ধর্মীয় সংখ্যালঘু হবার কারণে জার্মান আধিপত্যবাদের প্রবক্তা হিটলারের হাতে ইহুদি মেধ যজ্ঞ হয়েছে। আইনস্টাইনের মত বিশ্ববরেণ্য বিজ্ঞানীকেও প্রাণের দায়ে দেশত্যাগ করতে হয়। মায়ানমারে বৌদ্ধ মৌলবাদীদের হাতে মুসলিম হবার অপরাধে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের রক্তে রেঙ্গুনের রাজপথ লালে লাল হয়ে উঠছে। জীবনানন্দ--জসিমুদ্দিনের পদধূলিধন্য ও শেখ মজিবের সংগ্রামের ফসল স্বাধীন ধর্মনিরপেক্ষ বাংলাদেশে আজ ইসলামী মৌলবাদীরা তাণ্ডব করে বেড়াচ্ছে এবং সেখানে হিন্দুসহ বিভিন্ন ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপরে তথা বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি, আওয়ামী লীগ সহ বিভিন্ন বাম ও গণতান্ত্রিক দলের কর্মীদের উপর বর্বর আক্রমণ চলছে ইউনুস সরকারের মদতে, তাদের অনড় ধর্মনিরপেক্ষ মানসিকতার কারণে।
আমাদের দেশ ভারতবর্ষে যেখানে মুসলিমরা সংখ্যাগরিষ্ট, যেমন কাশ্মীরে, সেখানে নির্বিচারে হিন্দু নিধন চলছে। আবার যেখানে মুসলিমরা সংখ্যালঘিষ্ঠ যেমন গুজরাটে বা রাজস্থানে, সেখানে তথাকথিত "গোমাতা রক্ষা"র নামে দানবীয়ভাবে মুসলিম ভাইবোনদের শবে সবরমতীর মত নদীগুলোর জল দুর্গন্ধময় হয়ে উঠছে। গুজরাট দাঙ্গা, উত্তরপ্রদেশে আখলাখ হত্যা, হরিয়ানায় দক্ষিণ ২৪ পরগণার বাসন্তীর পরিযায়ী শ্রমিক সাবিরের হত্যার কথা যেন আমরা মনে রাখি।
সবশেষে, শুধু সংখ্যালঘুরা নয়। সংখ্যাগুরুরাও সাম্রাজ্যবাদীদের মদতে গণহত্যার শিকার হয়। রোডেশিয়ায়, বর্তমানে দক্ষিণ আফ্রিকায়, সংখ্যালঘু শেতাঙ্গরা সরকারী ক্ষমতায় থেকে সংখ্যাগুরু কৃষ্ণঙ্গদের রক্তে মাটি লালে লাল করেছে ব্রিটেন ও আমেরিকার মদতে। ঠিক একইভাবে, ওদের মদতে সংখ্যাগুরু মুসলিমরা প্যালেস্টাইনে ইহুদি মৌলবাদী ইসরায়েলের হাতে খুন হচ্ছেন। আসলে সংখ্যালঘু, সংখ্যাগুরু তত্ত্বটিই হোল আপেক্ষিক। এক দেশে যারা সংখ্যালঘু অন্যদেশে তারাই সংখ্যাগুরু। সংখ্যালঘু নির্যাতন বা সংখ্যাগুরু নির্যাতন নিয়ে যারা গলা ফাটাচ্ছেন তারা কায়ার সঙ্গে না লড়ে ছায়ার সঙ্গেই লড়াই করার কথা বলছেন। বলতে হবে সংখ্যালঘু, সংখ্যাগুরু নির্বিশেষে, বাংলাদেশে হিন্দুদের উপর নির্যাতন থেকে শুরু করে প্যালেস্টাইনে, ভারতে, মায়ানমারে মুসলিমদের উপর নির্যাতন, উত্তর পূর্ব্বভারতে খৃষ্টান আধিপত্যবাদীদের হাতে হিন্দু নিপীড়ন, আবার ওখানে কিছু কিছু পাহাড়ী অঞ্চলে হিন্দু আগ্রাসনবাদীদের হাতে নিরীহ খৃষ্টান মা বোনদের উপর নিপীড়ন, কাশ্মীরে মুসলিম জঙ্গীদের দ্বারা নির্বিচারে হিন্দু নিধন, পাকিস্থানে জনগোষ্ঠীগত সংখ্যালঘু বালুচদের উপরে পাঠানদের নির্যাতন, আফগানিস্থানে কাবুল--কান্দাহার--বামিয়ানে হিন্দু ও বৌদ্ধদের উপর নিপীড়ন এবং হিন্দু ও বৌদ্ধ সংস্কৃতির নিদর্শনগুলিকে ধূলিস্যাৎকরণ, পাকিস্থানে কান্দাহারে ও আফগান সীমান্তে সংখ্যালঘু শিয়াদের উপর সংখ্যাগুরু সুন্নিদের নির্যাতন--সর্বত্রই ধ্বংসের বিরুদ্ধে, পাশবিকতা ও দানবীয়তার বিরুদ্ধে এবং সৃষ্টি, স্থিতি ও সম্প্রীতির পক্ষে আমাদেরকে প্রবল জনমত গড়ে তুলতে হবে। এটাই হবে এই ২০২৪ এর ৬ই ডিসেম্বর বাবরি দিবসে সারা বিশ্বের সকল মানবতাবাদী মানুষের শপথ, লৌহ দৃঢ় অঙ্গীকার। আজকের আওয়াজ হবে পদ্মা--মেঘনা--যমুনা--জর্ডান--তাইগ্রিস--কাবুলের তটে--
হিন্দু না মুসলিম ওই জিজ্ঞাসে কোন জন?
কাণ্ডারী বলো ডুবিছে মানুষ
সন্তান মোর মার।
কপোতাক্ষ--মেঘনার তীরে হিন্দুরা মরছে না, মরছে মানুষ, জর্ডানের বা যমুনার কূলে মুসলিমরা মরছে না, মরছে মানুষ, কাবুলের স্বচ্ছতোয়ায় হিন্দু বা বৌদ্ধদের লাশ ভাসছে না, ভাসছে মানুষের লাশ, গাজার প্রান্তরে পচছে না মোমিনের মড়া, পচছে মানুষের মরদেহ। সর্বত্রই বিপন্ন হোল মানুষ, বিভিন্ন নামে, বিভিন্ন বিশেষণে। এসবের বিরুদ্ধে সারা দুনিয়ার শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষকে শিল্পী অমর পালের সুরে সমস্বরে গেয়ে উঠতে হবে--
"আকাশ আমার ঘরের ছাউনি,
পৃথিবী আমার ঘর,
এই দুনিয়ার সকল মানুষ
কেহ নহে মোর পর,
কেহ নহে মোর পর।"
--এটাই সময়ের দাবী।
লেখক পরিচিতি
অধ্যাপক খগেন্দ্রনাথ অধিকারী রাষ্ট্রীয় বিদ্যাসরস্বতী পুরস্কার ও এশিয়া প্যাসিফিক পুরস্কার সহ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বহু পুরস্কার প্রাপ্ত একজন খ্যাতনামা শিক্ষাবিদ। ইনি কোলকাতার সাউথ সিটি (দিবা) কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ।
ঠিকানা-শরনিয়ার বাগান
পোষ্ট-টাকী, পিন-৭৪৩৪২৯
পশ্চিমবঙ্গ, ভারত