একগুচ্ছ কবিতা
গোলাম রসুল
পুষ্পপ্রভাত পত্রিকা
প্রকাশিত : ০৭:১০ পিএম, ১১ এপ্রিল ২০২৪ বৃহস্পতিবার
আমি আর তুমি ভুল বকবো
গোলাম রসুল
একঘেয়ে আর বিরক্তিকর আকাশ
এ পার থেকে দেখছিলাম নরকের সমতুল্য শহরের ওপরে দুএক জায়গায় মেঘ
অসাড় মেঘ
এক ঝঞ্ঝার মৃত্যু পরবর্তী অবশ কুহেলিকা
মাল বোঝাই আর বিষণ্ণ জাহাজগুলো স্রোতের বিপরীতে বন্দরের কাছাকাছি এসে দাঁড়িয়েছে ঘন দৈর্ঘ্যে
আরও দূরে
যেন চিরকালের মতো গতিপথকে ঘুরিয়ে চলেছে দুটো ডানা
ভোরের যতগুলো কোণ সব ভোঁতা
যাতার মতো ঘুরছে
যেন সেকেন্ডের কাঁটার মধ্যে পিশে পিশে তছনছ হচ্ছে সময়
আর ছিটকে পড়ছে চারধারে
মানুষের গলা পাচ্ছি পাইপের ভেতর দিয়ে
তাদের দুএকটা মুখের আকৃতি গড়ে নিচ্ছি বন্ধুর মতো চিনবো বলে
গোটা একটা দিন হবে
প্রাঙ্গণে বাস্তবতাকে হত্যার মতো
আর এক মামুলি পিনে আটকে থাকবে কাটা মস্তকের মতো আমাদের জীবন
তোমাকে আমার বলার ফাঁকে যখন সন্ধ্যা নামবে
যখন চাঁদ থেকে বেরিয়ে এসে এক দল নৌকা ধাবিত হবে আরও দূরের চালাকির দিকে
যখন আর কিছুই দেখা যাবে না
তখন আমি আর তুমি ভুল বকবো
---------------------------------
ঠিকানা
গোলাম রসুল
আজও সূর্য আবর্তনের মাধ্যমে ইতিহাস তৈরী করছে
অথচ তুমি জানো না কে তোমার বাবা কে তোমার মা ভাই বোন আত্মীয় স্বজন
মিথ তোমার বধূ
এখন কে তোমার উত্তরাধিকারী
তাও তুমি ছিলে মারাত্মক
একটি কালির আঁচড়
তুমি সূচনা এবং বিদায়
মেঘ যেভাবে কথা বলতে বলতে সমুদ্রের ওপর দিয়ে ভেসে চলে যায়
অজানা আলো হয় নিজেই ছায়া
আলোর কাছে রয়েছে ছায়ার ঠিকানা
কষ্ট কল্পিত মানুষ
তুমি সেভাবেই বিশ্রাম নাও যেভাবে বিশ্রাম নেয়
তোমার চোখের আভা
-------------------------
তোমার আর আমার
গোলাম রসুল
এসো গণনা করি তোমার আর আমার দূরত্ব
গুনতে গুনতে পেরেকগুলো ঠেসে দেবো গালে
আর চামড়ার পাটাতন হবে আমাদের যাত্রা
প্রথম আমার মনে হয়েছিল আলপিন দিয়ে ঘষে ফেলতে পারবো সব পর্বতগুলোকে
আমি ভাবতাম আমার অশ্রু দিয়ে শুকিয়ে দিতে পারব সমুদ্র গুলো
কারণ কান্নার একটা জগৎ সংসারময় আকর্ষণ রয়েছে নক্ষত্র পর্যন্ত
নিঃসঙ্গ মানুষ
ড্রপার দিয়ে ফোঁটা ফোঁটা করে তোমার রক্ত গুনতে থাকো
যোগ বিয়োগ গুণ ভাগ করো
নিশ্চয়ই তুমি খুঁজে পাবে তোমার বন্ধু বান্ধব আত্মীয় স্বজন
কেউ না থাকুক তোমার ছায়া লম্বা লম্বা পায়ে হাঁটছে তোমার সাথেই
আর সেই ছায়ার ভেতর দিয়ে মাইলের পর মাইল হেঁটে চলেছে সারি সারি পিঁপড়ে
তারা খুঁজে বেড়াচ্ছে মৃত্যুর গজানো মাংসদলা
তুমি সেই কালো পোশাকটা পরো
যে পোশাকটা তৈরি করেছিল শুনতে পাবে তার অসাড় গান
যেহেতু পৃথিবী থেকে জীবন্ত ফেরেনি কেউই
তাই চলো তুমি আর আমি যাই এক অবশের মধ্য দিয়ে
সূর্যের আলোয় খোদাই করা কুমির গুলোর ধার দিয়ে
আমরা জলকে ঘষে ঘষে এত সূক্ষ্ম করবো যে
সমুদ্রকে দাঁড়ের মতো বিঁধিয়ে দেবো ইথারের গায়ে
তখন এক শিশু পুনরায় ককিয়ে উঠবে
------------------------------------------------------