বাংলা চতুর্দশপদী কবিতায় একাধিক নতুনত্ব আনলেন কবি ইমদাদুল ইসলাম
নিজস্ব সংবাদাতা
পুষ্পপ্রভাত পত্রিকা
প্রকাশিত : ০২:১৪ পিএম, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ মঙ্গলবার
ঊনবিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকের মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তকেই (২৯/০১/১৮২৪ - ২৯/০৬/১৮৭৩ খ্রী:) আমরা বাংলা সনেট বা চতুর্দশপদী কবিতার জনক বলে জানি। ১৮৬৫ খ্রিষ্টাব্দে ফ্রান্সের ভার্সাই শহরে থাকাকালীন অবস্থাতেই তিনি ইউরোপ মহাদেশের বিশিষ্ট ইতালীয় কবি পেত্রারকের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে প্রথম বাংলা সনেট লেখা শুরু করেন। বঙ্গভাষা তাঁর লেখা প্রথম চতুর্দশপদী কবিতা এবং তিনিই প্রথম অক্ষরবৃত্ত ছন্দ রীতির মাধ্যমে সাজান তাঁর বাংলা চতুর্দশপদী কবিতা গুলো। অক্ষরবৃত্ত ছন্দে আট যুক্ত ছয় মাত্রায় প্রায় একশোটি মতো তাঁর লেখা সনেট আমরা দেখি। বাংলায় অমিত্রাক্ষর ছন্দেরও প্রবর্তক কবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত।
কবির এই রীতি আজকের দিনেও কিন্তু সমান জনপ্রিয়। অনেকেই তাঁকে অনুসরণ করে এখনও লিখেন বাংলা চতুর্দশপদী কবিতা। অনেকেই আবার কবিতার অন্তমিল বা রাইম স্কিম কিছুটা পরিবর্তন করে এনেছেন বাংলা চতুর্দশপদী কবিতায় নতুনত্ব। তেমনই একজন কবি হলেন ভারতের পশ্চিম বঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার দ্বিভাষিক কবি ও সাহিত্যিক ইমদাদুল ইসলাম।
তিনি বাংলা সনেটের মূল ছন্দ ও মাত্রা ঠিক রেখে বিভিন্ন শ্রুতিমধুর অন্তমিল সহযোগে পরিবর্তন করেছেন বাংলা সনেটকে।
এই বাঙালি কবি প্রথম পর্বান্তিক অন্তমিল ও ইংরেজি মনোরাইম অন্তমিলকে দক্ষভাবে কাজে লাগিয়ে ইতিপূর্বেই সৃষ্টি করেছেন দু'টি নতুন রীতির বাংলা সনেট বা চতুর্দশপদী কবিতা।
এছাড়াও কবি কখখক, খগগখ, গঘঘগ, ঙঙ অন্তমিল সহযোগে এক ধরনের নতুন বাংলা সনেটের অন্তমিলের উদ্ধাবন করেছেন যা পাঠক মহলে বেশ সাড়া ফেলেছে। বর্তমানে দু'শোটিরও বেশি বাংলা সনেটের রচয়িতা কবি ইমদাদুল ইসলাম, আর তাঁর নাম অনুসারেই তিনি এই নতুন ধরনের সনেটের নামকরণ করেছেন ইমদাদীয় সনেট বা চতুর্দশপদী। আসুন এবার আমরা উপভোগ করি একাধিক আন্তর্জাতিক অনারারি ডক্টরেট সম্মাননায় সম্মানিত এই ইংরেজি ও বাংলা দ্বিভাষিক কবির লেখা একটি বাংলা ইমদাদীয় সনেট। __
খুঁজে দ্যুতি
ইমদাদুল ইসলাম
চলে পথচলা খণ্ড খণ্ড স্বপ্ন নিয়ে,
জানিনা স্বপ্ন দেখার সমাপ্তি কোথায়।
অচেনা পথে স্বপ্নেরা গন্তব্য হারায়,
আলো আঁধারে তবুও চলে আশ নিয়ে।
পথ মাঝে খুঁজে দ্যুতি স্বস্তির আশায়,
পায় অজ্ঞাত আলোক রশ্মির আশ্বাস,
তবু ভীত, যদি পথে খোয়ায় নিশ্বাস,
গন্তব্যে বাধা অনেক তবু চলে যায়!
স্বপ্নদের আজ যেন অন্তরে বিশ্বাস
গন্তব্য স্থলে পৌঁছাবে খুব খুব শীঘ্র।
আলোরা ডাকে, তারাও বেশ যেন ব্যগ্র,
দেয় দুষ্টের দমনে তাদের আশ্বাস।
তাই স্বপ্নেরা চলুক, চলুক দুর্বার,
পুড়িয়ে গুঁড়িয়ে যত অশুভ বর্বর।