রাজশাহী মহানগর-জেলা যুবলীগের সম্মেলন: বিতর্কিতরা পদ পেতে তদবিরে ঢাকায়
পুষ্পপ্রভাত পত্রিকা
প্রকাশিত : ১০:২০ পিএম, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৩ শুক্রবার
নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহী মহানগর-জেলা যুবলীগের সম্মেলন: বিতর্কিতরা পদ পেতে তদবিরে ঢাকায় রাজশাহী মহানগর ও জেলা যুবলীগের সম্মেলনের আগামী ২৬ ও ২৭ সেপ্টেম্বর। সম্মেলনে গুরুত্বপূর্ণ পদ
পদ পেতে বিতর্কিত নেতারা এখন রাজধানীতে এসে তদবিরে ব্যস্ত সময় অতিবাহিত করছেন। মহানগরের শীর্ষ দুই পদ পেতে দুই জন বিতর্কিত নেতা ১১ কোটি টাকার লেনদেন করতেও প্রস্তুত রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
দৈনিক সংবাদ প্রকাশিত সংবাদ তথ্যের ভিত্তিতে ২০০৪ সালের ১৮ এপ্রিল মহানগর যুবলীগের সম্মেলনেও তাদের এ দুটি পদে রাখা হয়। এর ফলে প্রায় দুই যুগ ধরে রাজশাহী মহানগর যুবলীগে নেতৃত্বের পরিবর্তন হয়নি। এবার নেতৃত্বে পরিবর্তন আসছে বলে জানা গেছে। সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক পদে ২৮টি জীবনবৃত্তান্ত জমা পড়ে। এর মধ্যে সভাপতি পদে ১০টি, সাধারণ সম্পাদক পদে মোট ১৮টি আবেদন আছে। এছাড়া রাজশাহী জেলা যুবলীগের সর্বশেষ সম্মেলন হয়েছিল ২০১৬ সালের ১৫ মার্চ। সে সময় দ্বিতীয়বারের মতো আবু সালেহকে সভাপতি ও খালিদ ওয়াসিকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়। তবে পরে খালিদ ওয়াসি মারা গেলে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হন আলী আজম। আবু সালেহ ২০০৪ সালে প্রথম জেলা যুবলীগের সভাপতি হন। এরপর সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ হলেও তা পেছানো হয়।
জানা গেছে, রাজশাহী মহানগর যুবলীগের পদে সভাপতি পদ পেতে জোর তদবির করে যাচ্ছেন তৌরিদ আল মাসুদ রনি। রাজশাহীতে কৌশলি হয়ে ভিন্ন নামে কার্যক্রম পরিচালনা করছে জামায়াত ও হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। ক্ষমতাসীন দলের ছত্রছয়ায় দলটি নতুনভাবে সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ইতিমধ্যে হেফাজত ইসলামের নেতারা মহানগর যুবলীগের এক নেতার সঙ্গে সখ্য গড়ে হেফাজত পরিচালিত হাফেজিয়া মাদ্রাসা কমিটিতে নাম রেখেছেন এবং বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ওই যুবলীগ নেতাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। সেখানে অতিথি হিসেবে উপস্থিতও হয়েছেন ওই যুবলীগ নেতা।
সূত্র জানায়, বিতর্কিত সংগঠন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ দীর্ঘদিন ধরে গোপনে ‘ইত্তেফাকুল ওয়ায়েজীন বাংলাদেশ’ নামে কার্যক্রম চালায়। ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে ওই নামও পরিবর্তন করে ‘রাবেতাতুল ওয়ায়েজিন বাংলাদেশ’ নামে আত্মপ্রকাশ করে। সেসময় রাজধানীতে একটি বৈঠকে মাওলানা আব্দুল বাসেত খান সিরাজীকে সভাপতি ও মাওলানা হাসান জামিলকে সেক্রেটারি করে নতুন কমিটি গঠন করা হয়। যেখানে কমিটির উপদেষ্টা ছিলেন আলোচিত হেফাজত নেতা মাওলানা মামুনুল হক।
নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, নতুন কমিটি গঠনের পর উত্তরবঙ্গকে গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট চিহ্নিত করে কার্যক্রম জোরদার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ফলে ২০২০ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর অনুমোদন দেওয়া হয় উত্তরের গুরুত্বপূর্ণ জেলাগুলোর কমিটি। যেখানে ২১ সদস্য বিশিষ্ট রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও নাটোর জেলা কমিটি গঠনের পর অনুমোদন দেন সংগঠনটির নেতারা। ওইদিন গঠিত রাজশাহী জেলা কমিটির সভাপতি হন মুফতি মুহাম্মদ ওমর ফারুক এবং সাধারণ সম্পাদকের পদ পান মুফতি মো. হাবিবুর রহমান কাসেমী।
এছাড়া মুফতি আব্দুস সবুর সিরাজীকে সাংগঠনিক সম্পাদক করা হয়। মূলত এ নেতার সঙ্গেই রাজশাহী মহানগরীর যুবলীগ নেতা তৌহিদ আল মাসুদ রনির সখ্য রয়েছে। যুবলীগের গত কাউন্সিল যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদ বাগিয়ে নেয় রনি। সিটি কর্পোরেশেন বিএনপির নেতা বুলবুল মেয়র থাকাকালীন থেকে রনি সিটি কর্পোরেশনের টেন্ডার কাজ এককভাবে নিয়ন্ত্রণ করছেন। এখনো তা অব্যাহত রেখেছেন।
এদিকে রাজশাহী জেলায় সভাপতি পদের জন্য জীবনবৃত্তান্ত জমা দিয়েছেন সাবেক ছাত্র নেতা মো. আব্দুল মমিন, বর্তমান কমিটির সহসভাপতি মাহমুদ হাসান ফয়সাল সজল, মোজাহিদ হোসেন মানিক, আলমগীর মুর্শেদ রঞ্জু, আনোয়ার হোসেন, তাসিকুল ইসলাম, আরিফুল ইসলাম রাজা, ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক আলী আযম সেন্টু, মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সম্পাদক জোবায়ের হোসেন রুবন, পবা যুবলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি এমদাদুল হক, রেজাউন নবী আল মামুন। আর সাধারণ সম্পাদক পদে জীবনবৃত্তান্ত দিয়েছেন জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সম্পাদক মেরাজুল ইসলাম মেরাজ, জেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোবারক হোসেন মিলন, সামাউন ইসলাম, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি হাবিবুর রহমান, জেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সেজানুর রহমান, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু প্রমুখ