রোববার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১০ ১৪৩১   ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিজেপি সাংসদের কনভয় আটকে কালো পতাকা তৃণমূলের

দেবাশীষ পাল, মালদা

পুষ্পপ্রভাত পত্রিকা

প্রকাশিত : ১০:৩৫ পিএম, ২৮ ডিসেম্বর ২০২২ বুধবার

মালদাঃ- --চার বছর ধরে কোন কাজ করেননি। এখন এলাকায় দাঙ্গা লাগাতে এসেছেন। এই অভিযোগ তুলে বিজেপি সাংসদের কনভয় আটকে কালো পতাকা দেখিয়ে গো ব্যাক স্লোগান তৃণমূলের। সাংসদের কনভয়ের সামনে বসে পড়েন তৃণমূল কর্মী সমর্থকরা। পাল্টা বিজেপি কর্মী সমর্থকরা এসে জয় শ্রীরাম স্লোগান দিলে পরিস্থিতি রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে। সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে দুই দলের কর্মী সমর্থক। পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে আসে বিশাল পুলিশ বাহিনী। সরিয়ে দেওয়া হয় বিক্ষোভরত তৃণমূল কর্মী সমর্থকদের। তারপরেই গন্তব্যের উদ্দেশ্যে যান বিজেপি সাংসদ। সমগ্র ঘটনা নিয়ে তুঙ্গে রাজনৈতিক তরজা। বুধবার হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লকে ডেপুটেশন কর্মসূচিতে যাচ্ছিলেন উত্তর মালদার বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু। সঙ্গে ছিলেন উত্তর মালদা সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সভাপতি উজ্জ্বল দত্ত। সাংসদের কনভয় হরিশ্চন্দ্রপুরে প্রবেশ করতেই গোপাল কেডিয়া মোড়ের কাছে কনভয় আটকে কালো পতাকা দেখিয়ে গো ব্যাক শ্লোগান শুরু করেন তৃণমূল কর্মী সমর্থকরা। তৃণমূলের অভিযোগ হরিশ্চন্দ্রপুরের জন্য কোন উন্নয়নমূলক কাজ করেননি বিজেপি সাংসদ। মানুষের সুবিধা অসুবিধায় কখনো দেখা যায়নি বিজেপির সাংসদকে। কিন্তু এখন ডেপুটেশন কর্মসূচির নাম করে এলাকাতে দাঙ্গা লাগাতে এসেছেন। তাই তারা সাংসদকে ঢুকতে দেবেন না। বিক্ষোভের ফলে দীর্ঘক্ষণ গাড়িতেই আটকে থাকতে হয় সাংসদ খগেন মুর্মু কে। বিজেপি কর্মী সমর্থকরা ঘটনাস্থলে এসে জয় শ্রীরাম স্লোগান দিতে শুরু করলে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। বাঁশ, লাঠি দিয়ে বিজেপি সমর্থকদের আক্রমণের অভিযোগ উঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। দুই দলের সংঘর্ষে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায় এলাকায়। পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে আসে হরিশ্চন্দ্রপুর থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী। পুলিশের তৎপরতায় নিয়ন্ত্রণে আসে পরিস্থিতি। তৃণমূল কর্মী সমর্থকদের সরিয়ে দেওয়া হলে ব্লক অফিসে ডেপুটেশনের উদ্দেশ্যে চলে যান সাংসদ খগেন মুর্মু। তারপরে সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে ক্ষোভ উগড়ে দেন তিনি। তীব্র আক্রমণ করেন রাজ্য সরকারকে। আবাস যোজনায় দুর্নীতি নিয়ে তৃণমূলকে এক হাত নেন তিনি। খগেন মুর্মুর দাবি নিজেদের দুর্নীতি ঢাকতে তৃণমূল কালো পতাকা দেখাচ্ছে। সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে মেজাজ হারাতেও দেখা যায় সাংসদকে। এদিকে বিজেপি সমর্থকদের আক্রমণের ঘটনা অস্বীকার তৃণমূলের। তৃণমূলের পাল্টা দাবি সমাজ বিরোধীদের ঘটনাস্থলে পাঠিয়ে পরিস্থিতি উত্তপ্ত করতে চেয়েছিল বিজেপি। হরিশ্চন্দ্রপুরের সাধারণ মানুষ সেটা রুখে দিয়েছে। পঞ্চায়েত ভোটের প্রাক্কালে সমগ্র ঘটনা নিয়ে তুঙ্গে উঠেছে রাজনৈতিক চাপানোতোর।

উত্তর মালদার বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু বলেন, কেন্দ্র সরকার সাধারণ গরিব মানুষের জন্য টাকা দিচ্ছে সেই টাকা চুরি করছে তৃণমূল। নিজেদের দুর্নীতি ঢাকতে আমাকে কালো পতাকা দেখিয়েছে। আমাদের সমর্থকদের মারধর করেছে। গরিব মানুষের জন্য যা কাজ করার কেন্দ্র সরকার করছে রাজ্য কিছু করেনি। তৃণমূলের সকলে চোর।

পাল্টা হরিশ্চন্দ্রপুর তৃণমূল কংগ্রেসের চেয়ারম্যান সঞ্জীব গুপ্তা বলেন,সাংসদ খগেন মুর্মু প্রমাণ করে দিক চার বছরে একটা কাজ করেছে এলাকার জন্য। সাংসদ তহবিলের টাকা নিয়ে দুর্নীতি হয়েছে। এখন এলাকাতে এসেছেন দাঙ্গা লাগানোর জন্য। সমাজ বিরোধীদের পাঠিয়ে পরিস্থিতি উত্তপ্ত করছে বিজেপি।

প্রসঙ্গত ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে উত্তর মালদা লোকসভা কেন্দ্র থেকে বিজেপির টিকিটে জয়লাভ করেন সিপিআইএম থেকে বিজেপিতে সদ্য যোগদান করা খগেন মুর্মু। বিরোধীরা বিশেষ করে তৃণমূল তার বিরুদ্ধে বারবার অভিযোগ করেছে তিনি কোনো কাজ করেন না। পরিযায়ী সাংসদ। এর আগেও হরিশ্চন্দ্রপুর এলাকায় সাংসদকে ঘিরে বিক্ষোভের চিত্র দেখা গেছে। তবে এই দিনের বিক্ষোভ পঞ্চায়েত ভোটের প্রাক্কালে এলাকার রাজনীতির উত্তাপ বাড়িয়ে দিল।