শুক্রবার   ১৫ নভেম্বর ২০২৪   কার্তিক ৩০ ১৪৩১   ১৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কাছাড়ে প্রথম কোভিশিল্ড নিলেন চিকিৎসক জুড়ি শর্মা সহ ১০ জন

দিদারুল ইসলাম করিমগঞ্জ আসাম

পুষ্পপ্রভাত পত্রিকা

প্রকাশিত : ০৩:৪৮ পিএম, ১৮ জানুয়ারি ২০২১ সোমবার

সারাদেশের সঙ্গে শনিবার সকালে কাছাড় জেলায়ও শুরু হয়েছে কোভিড ভ্যাকসিন প্রদান প্রক্রিয়া। প্রথম দিন শিলচর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং সিভিল হাসপাতালে ভ্যাকসিন প্রদান করা হয়েছে। জেলার প্রথম ব্যক্তি হিসেবে কোভিশিল্ড ভ্যাকসিন নিয়েছেন সিভিল হাসপাতালের ইএনটি বিভাগের চিকিৎসক ডাঃ জুড়ি শর্মা। তার সঙ্গে হাসপাতালে আরও নয় জন ডাক্তার এবং নার্স ভ্যাকসিন নিয়েছেন। প্রথমে তাদের আধঘন্টা অবজারভেশনে রাখা হয়, এরপর তারা বেরিয়ে আসেন। বরাক বুলেটিনের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে তারা জানান, ভ্যাকসিনে প্রাথমিকভাবে কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি। তবে এদিন কয়েকজন চিকিৎসক ভ্যাকসিন নিতে রাজি হননি, তারা চাইলে সোমবার সেটা নিতে পারেন।

প্রাথমিক পর্যায়ে ডাক্তার-নার্স সহ শুধুমাত্র স্বাস্থ্যকর্মীদের ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে। জেলায় মোট ২৫টি কেন্দ্রে ১১৭১০ জনকে কোভিশিল্ড ভ্যাকসিন দেওয়া হবে। শনিবার আনুষ্ঠানিক সূচনা হওয়ার পর প্রতি সোম, মঙ্গল, বৃহস্পতি এবং শুক্রবারে সকাল ন’টা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত টিকা দেওয়া হবে।প্রতি ব্যাক্তিকে ০.৫ মিলিলিটারের ডোজ দেওয়া হচ্ছে, এক ভায়ালে ৫ মিলিমিটারের ডোজ পাঠানো হয়েছে। একসঙ্গে ১০ জনের একটি স্লট বানানো হয় এবং তাদের একে একে ভেকসিন প্রদান করা হয়। তবে প্রত্যেকের জন্য আলাদা সিরিঞ্জ ব্যবহার করা হচ্ছে। ডাঃ জুড়ি শর্মা সহ ডাঃ অরিজিৎ পাল, ডাঃ অর্পিতা দেব, ডাঃ রোহিত সিংহ, ডাঃ পাওয়েল, ডাঃ দেবশুভ্র কুন্ডু, সমরেশ চক্রবর্তী, নার্সিং স্টাফের মধ্যে সুফলা দাস, মধুমিতা দত্ত, নমিতা দেবী এদিন প্রথম স্লটে ভ্যাকসিন নিয়েছেন। প্রথমে তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর ভ্যাকসিন নেওয়ার জন্য বিশেষ কক্ষে পাঠানো হয়। ভ্যাকসিন প্রদানের পর বিশেষ কক্ষে তাদের বিশ্রামের জন্য পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের যুগ্ম সম্পাদক ডাঃ সুদীপজ্যোতি দাস বলেন, “আমরা প্রত্যেক স্বাস্থ্যকর্মীকে বলেছি তারা যেন ভ্যাকসিন নেন, তবে কাউকে জোর করা হয়নি। প্রথম পর্যায়ে যারা ভ্যাকসিন নিচ্ছেন, ২৮ দিন পর তারা আবার ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ডোজ পাবেন। শনিবার সকালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সারাদেশে ভ্যাকসিন প্রদানের প্রক্রিয়া নিজে শুরু করেন। তারপর কাছাড়ের দুই নির্ধারিত কেন্দ্র শিলচর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং সিভিল হাসপাতালে এই কর্মসূচি শুরু করা হয়। কোভ্যাকসিন এবং কোভিশিল্ড এই দুটোর মধ্যে কাছাড়ে প্রথমত সবাইকে কোভিশিল্ড ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে। তবে ভ্যাকসিন নিলেই একজন ব্যক্তি সঙ্গে সঙ্গে পুরোপুরি করোনা ভাইরাসকে প্রতিরোধ করার ক্ষমতা পেয়ে যাবেন এটা বলা যায় না। তাই ভ্যাকসিন নিচ্ছেন তাদেরও সাবধানতা বজায় রেখে চলতে হবে।”

গতকাল অতিরিক্ত জেলাশাসক সুমিত সত্যওয়ান জানিয়েছিলেন, সরকারি ও বেসরকারি ক্ষেত্রে কর্মরত ১১,৭১০ জন স্বাস্থ্যকর্মীকে প্রাথমিকভাবে কোভিশিল্ড দেওয়া হবে যাতে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আসলেও তাদের পরিষেবা অব্যাহত থাকে। প্রাথমিক শর্ত হচ্ছে ন্যূনতম আঠারো বছর বয়স হওয়া; এছাড়া অন্তঃসত্ত্বা এবং সদ্য মা হওয়া মহিলাদেরকে এখন টিকা দেওয়া হচ্ছেনা।সিভিল হাসপাতালের সুপার জিতেন সিং জানিয়েছেন প্রথমদিন অনেকেই ভ্যাকসিন নেওয়ার সাহস পাননি। তিনি বলেন, “আমরা প্রত্যেক স্বাস্থ্যকর্মীর নাম তালিকাভুক্ত করেছিলাম। তবে শনিবার কেউ কেউ এগিয়ে এসে ভ্যাকসিন নিতে সাহস পাননি। তবে যারা নিয়েছেন, তাদের কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা না দেওয়ায় বাকিরা সাহস পাবেন। তারা চাইলে আগামী সোমবার নিতে পারেন।”