রোববার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১০ ১৪৩১   ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দাঁতনের ইতিহাসের আলোকে ঐতিহ্যের স্কুল বাড়ি : এক ঐতিহাসিক অনুসন্ধ

পুষ্পপ্রভাত পত্রিকা

প্রকাশিত : ০৮:৪৪ পিএম, ১৭ অক্টোবর ২০২০ শনিবার

দাঁতন থেকে প্রকাশিত 'দণ্ডভুক্তি ' পত্রিকার সম্পাদক  তথা  আঞ্চলিক ইতিহাসের গবেষক শ্রী সন্তু জানা  দীর্ঘ দিন ধরে নিরলস পরিশ্রমে অনুসন্ধান করে , গবেষণা করে  তিনি সম্প্রতি রচনা করেছেন ' দাঁতনের ইতিহাসের আলোকে ঐতিহ্যের স্কুল বাড়ি : এক ঐতিহাসিক অনুসন্ধান ' নামক এক মহার্ঘ্য গবেষণা গ্রন্থ । উদঘাটন করেছেন ব্রিটিশ আমলে নির্মিত ঐতিহ্যশালী দাঁতন হাই স্কুলের  চিরকালীন জন্ম রহস্য । এটি যেনো একটি প্রান্তিক বিদ্যালয়ের কক্ষপথ ধরে সমগ্র দক্ষিণ - পশ্চিম সীমানা বাংলার ব্রিটিশ যুগের অনালোকিত ইতিহাস পরিক্রমণ। বিশেষজ্ঞদের অভিমত মেদিনীপুর জেলার আঞ্চলিক ইতিহাস চর্চার ক্ষেত্রে এটি একটি আকর গ্রন্থ । 
দাঁতন হাইস্কুলের প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত দণ্ডভুক্তি বৈঠকে  গ্রন্থটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন অনুষ্ঠানে  উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও প্রাক্তনী বিজন বান্ধব শাঁড়েশ্বরি ,  কটকের রেভেন্সা বিশ্ববিদ্যালয়ের  প্রাক্তন অধ্যাপিকা  ড. রুমা সরকার সহ  মন্মথ নাথ গোরায়, সূর্য কান্তি নন্দ , অরবিন্দ দাস , অতনু নন্দন মাইতি, সূর্য নন্দী , শিব শংকর সেনাপতি , অখিল বন্ধু মহাপাত্র  প্রমুখ সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব । ভার্চুয়াল মাধ্যমে কলকাতা থেকে বইটি উদ্বোধন করেন নদিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের  প্রাক্তন বিভাগীয় প্রধান ও দাঁতন হাইস্কুলের প্রাক্তনী প্রায় ৯০ বছর বয়স্ক ড. নিমাই কুমার রায় মহাশয় এবং ব্যারাকপুরের গোপাল চন্দ্র মেমোরিয়াল কলেজের অধ্যাপক ড . যুথিকা রায় ।

ওইদিন অনুষ্ঠানে একটি প্রস্তর ফলক প্রদর্শন করেন গবেষক সন্তু জানা । ঘটনাচক্রে , ভারতের স্বাধীনতা লাভের প্রায় ১২ বছর আগে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের তৎকালীন অধিপতি রাজা ষষ্ঠ জর্জের অনুপ্রেরণায় রাজত্বের সুবর্ণ জয়ন্তী বর্ষে মেদিনীপুর জেলার এক দোর্দন্ডপ্রতাপ ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেট মিস্টার এম. ও কার্টার সাহেব ওড়িশা সীমানায় অবস্থিত দক্ষিণ - পশ্চিম বাংলার দাঁতনের হাই - ইংলিশ স্কুলের ' সিলভার জুবিলী হোস্টেল ' নির্মাণের লক্ষ্যে তৎকালীন সময়ের হিসেবে বিপুল পরিমাণ  অর্থ প্রায় ১৫০০ টাকা অনুদান দিয়েছিলেন সানন্দে । 

      এবং শুধু তাই নয় ,  ৫/ ৪/ ১৯৩৬ তারিখে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার ঘেরাটোপে দাঁতনে এসে সসৈন্য সপারিষদ জেলাশাসক সাহেব ঘটা করে প্রস্তর ফলক উন্মোচন করে একটি  সুবৃহৎ এলাকার শিক্ষার্থীদের অগ্রগতির উদ্দেশ্যে নির্মিত ছাত্রাবাসটির দ্বারোদ্ঘটন করেছিলেন । দেশের শিক্ষাবিস্তারের ক্ষেত্রে ইংরেজদের অবদান অনস্বীকার্য। কিন্তু বাংলার একেবারে প্রান্তিক বিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে আজ থেকে ৮৫ বছর আগে এমন ঘটনা ঘটে গেছে কে জানতো । ইতিহাসে তো এই কথা কোথাও লেখা নেই।  দাঁতন হাইস্কুলের ইতিহাসেও অনুচ্চারিত থেকে গিয়েছিল বহু বছর পূর্বে হারিয়ে যাওয়া এই ঐতিহাসিক নিদর্শনের কথা । 
 অবশেষে ৮৫ বছর পরে সেই হারিয়ে যাওয়া প্রস্তর ফলকটি উদ্ধার করে  নতুন ইতিহাস তৈরী করলেন শ্রী জানা ।