তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রীর লাশ স্কুলের বাগানে, শিক্ষক পলাতক
জাগরণ ডেস্ক
দৈনিক জাগরণ
প্রকাশিত : ০৮:৫৫ পিএম, ৬ নভেম্বর ২০১৮ মঙ্গলবার
সোমবার গভীর রাতে সাপানিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী অথৈ এর ছবি চেয়ে তার বাবার কাছে ফোন দিয়েছিলেন একই বিদ্যালয় শিক্ষক মো. মনির হোসেন । মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে মেয়েকে এক কপি ছবিসহ স্কুলে পৌঁছে দিয়ে অফিসে চলে যান বাবা গোলাম মোস্তফা।
অথচ নিয়তির কি নির্মম পরিহাস, ঘণ্টাখানেক পরই স্কুলের বাগানে মেয়ের রক্তাক্ত লাশ পড়ে থাকার খবর জানানো হয় তাকে।বেলা সাড়ে ১১টার দিকে গোলাম মোস্তফার কাছে খবর গেল স্কুল সংলগ্ন বাগানে পড়ে আছে মেয়ে অথৈ এর রক্তাক্ত মরদেহ ।
বরিশাল সদর উপজেলার চড়বাড়িয়া ইউনিয়নের সাপনিয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে । নিহত সাবিয়া আক্তার অথৈ (১১) সাপানিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী এবং সাপানিয়া গ্রামের বাসিন্দা কাজী গোলাম মোস্তফার একমাত্র মেয়ে । ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছে অথৈ এর ছবি চেয়ে তাকে স্কুলে ডেকে নেয়া শিক্ষক মো. মনির হোসেন।
পরিবারের ধারণা- অথৈকে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। ঘটনার পর থেকে স্কুলশিক্ষক মো. মনির হোসেন পলাতক থাকায় তিনি এ ঘটনায় জড়িত বলে ধারণা করা হচ্ছে।
অথৈ এর স্বজনরা জানান, সাপানিয়া স্কুলের শিক্ষক মনির হোসেন সোমবার গভীর রাতে অথৈর বাবাকে ফোন দিয়ে বলে একটি ছবি প্রয়োজন অথৈ এর । সকালে আবারও ফোন দিয়ে ছবি চান শিক্ষক মনির । বিদ্যালয় মঙ্গলবার ছুটি থাকার পরও সকাল ৯টার দিকে এক কপি ছবিসহ অথৈকে স্কুলে পৌঁছে দিয়ে অফিসে চলে যান অথৈ এর বাবা গোলাম মোস্তফা।
এদিকে স্কুল থেকে দুই ঘণ্টা পরও বাড়ি না ফেরায় বেলা সাড়ে ১১টার দিকে অথৈর মা স্কুলে যান । স্কুলে না পেয়ে আশপাশে মেয়েকে খুঁজতে থাকেন তিনি। কিছুক্ষণ পর স্কুল সংলগ্ন লেবু বাগানের মধ্যে অথৈর নিথর দেহ পড়ে থাকতে দেখে চিৎকার দেয় তার মা।
এ সময় আশপাশের লোকজন ছুটে এসে অথৈকে উদ্ধার করে শের-ই-বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয়ের (শেবাচিম) জরুরি বিভাগে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান অনেক আগেই তার মৃত্যু হয়েছে।
শেবাচিম হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মেডিকেল অফিসার মাহবুবুর রহমান দৈনিক জাগরণ বলেন, হাসপাতালে নিয়ে আসার আগেই অথৈর মৃত্যু হয়েছে। শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে তাকে। তবে ধর্ষণ করা হয়েছে কিনা পরীক্ষা করলে বোঝা যাবে।
অথৈ এর বাবা কাজী গোলাম মোস্তফা কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, শিক্ষক মনির আমার এত বড় সর্বনাশ করবে আমি বুঝতে পারিনি। আমি মেয়েটিকে তার শিক্ষকের কাছে দিয়ে এলাম । অথচ সে আমার মেয়ের সর্বনাশ করল। সারাজীবন আমাকে এই কষ্ট বুকে নিয়ে কাঁদতে হবে। ।
কাউনিয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, অথৈকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। তার গলায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। অথৈকে স্কুলে ডেকে নেয়া শিক্ষক মো. মনির হোসেন পলাতক রয়েছেন । তাকে খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে।
আরকে/আরআই/এমটিআই