শনিবার   ১৬ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১ ১৪৩১   ১৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

সাহায্য নিয়ে পাশে দাঁড়াল কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ

পুষ্পপ্রভাত পত্রিকা

প্রকাশিত : ০৯:৩৭ পিএম, ১৯ আগস্ট ২০২০ বুধবার

সোমবার কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের পাশে টোটো স্ট্যান্ডে বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃণমূল ছাত্র পরিষদ পরিচালিত ছাত্র সংসদের বর্তমান-প্রাক্তন-ছাত্র-ছাত্রী-গবেষকদের উদ্যোগে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। করোনা ভাইরাস সংক্রমণের ফলে দেশ জুড়ে লকডাউনের সময়ে বহু মানুষ অসহায় হয়েছেন আর্থিক অনটনের মধ্যে দিয়ে তাদের দিন অতিবাহিত হচ্ছে। কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের মহত্তর উদ্যোগ নিয়ে বিভিন্ন পেশায় যুক্ত মানুষের কল্যাণে সাহায্য নিয়ে পাশে দাঁড়িয়ে বিশেষ বার্তা দিল। আর্থিক সহায়তার সঙ্গে নানান সাহায্য নিয়ে এগিয়ে এলেন নদীয়া জেলা তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সহ-সভাপতি তুহিন ঘোষ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে যে সমস্ত দোকানদার রয়েছেন এবং যাঁরা কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপর নির্ভর করে জীবন নির্বাহ করে থাকেন তাঁদেরকে বিভিন্নভাবে সাহায্য করতে হাত বাড়িয়ে দিলেন কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ উপাচার্য গৌতম পাল। এই সাহায্যের প্রক্রিয়া শুরু করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ অনেক আগে থেকেই।

১৭ আগস্ট ২০২০ আনুষ্ঠানিকভাবে খাদ্য সামগ্রী সহ আর্থিক সাহায্য তুলে দিলেন উদ্যোক্তারা। এই অনুষ্ঠানে বিশিষ্টদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য এবং বিশিষ্ট বিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. গৌতম পাল।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ওয়েবকুপার কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিটের যুগ্ম আহ্বায়ক ড. সুজয় কুমার মন্ডল এবং অধ্যাপক মনোরঞ্জন জানা। 

সহ-উপাচার্য গৌতম পাল তাঁর বক্তব্যে জানান, আজকে যে মহতী উদ্যোগ কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে তা অত্যন্ত প্রশংসার। আসলে আমাকে যে সম্মান এখানে জানানো হয়েছে, তা তাদের‌ই প্রাপ্য।

বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে যে সমস্ত মানুষ ছাত্র-ছাত্রী, গবেষক-গবেষিকা, অধ্যাপক, অধ্যাপিকা, আধিকারিক ও শিক্ষাকর্মীদের সারা বছর ধরে খাবার সরবরাহ করার জন্য দোকান চালাতেন এরকম সকলকেই আর্থিকভাবে সহায়তা দেওয়া হয়েছে।  

৩৩ জন টোটো চালককে খাদ্য সামগ্রী প্রদান করা হয়। মোট ৪৭ জন ব্যক্তিকে কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ উদ্যোগী হয়ে সাধ্যমতো সহায়তা করে। যাদেরকে সহায়তা করা হয় তাঁরা লকডাউনের ফলে কাজ হারিয়েছেন। বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকার ফলে তাঁদের উপার্জন নেই বললেই চলে। অথচ তাঁরা সারা বছর ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্ত স্তরের মানুষকে বিভিন্নভাবে পরিষেবা দিয়ে এসেছেন। অধ্যাপক সুজয়কুমার মন্ডল জানান, করোনা কালীন মুহূর্তে ছাত্র-ছাত্রী ও গবেষকদের এই উদ্যোগ অত্যন্ত মানবিক। এই সমস্ত মানুষকে সাহায্য করার জন্য ওয়েবকুপার পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। বিশেষ করে এই ধরনের সংকটকালে তারা অবশ্যই মহতী উদ্যোগ নিয়েছে। ছাত্র-ছাত্রী ও গবেষকদের এই উদ্যোগের নেতৃত্ব দিয়েছে নদীয়া জেলা তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সহ-সভাপতি তুহিন ঘোষ, কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের প্রাক্তন সহ-সভাপতি ইয়াসিন জামান, গবেষক সমিতির সভাপতি সায়ন দত্ত, তারিক আনোয়ার, আমারুল সেখ, একমারুল হোসেন, রাহুল বিশ্বাস, তানিয়া বৈদ্য, অরোনী ঘোষ চৌধুরী, নবনীতা বর্মন, মামুন আল হাসান, রাজেশ খান, কলেজ ছাত্র দীপন চ্যাটার্জী সহ আরোও অনেকে।

কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের গবেষক ও উদার আকাশ পত্রিকার সম্পাদক ফারুক আহমেদ জানান, আজকের উদ্যোগ ছিল দ্বিতীয় পর্যায়ের, প্রথম পর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে যারা দোকান চালাতেন তাঁদেরকে আগেও আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে। এই প্রচেষ্টা লাগাতার চলবে। 

ইয়াসিন জামান জানান, তাঁদের এই কর্মসূচির নাম "সাহায্যার্থে পাশে দাঁড়ান"। গবেষক সমিতির সভাপতি সায়ন দত্ত জানান, এই বিপদের দিনে গবেষকরাও যে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে পেরেছেন এই ভেবে ভাল লাগছে। ভবিষ্যতেও আমরা তাদের পাশে থাকব।

শিক্ষাকর্মীদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষাবন্ধু কর্মচারী সমিতির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তা সৌমেন্দ্র চন্দ্র মণ্ডল। ছাত্র-ছাত্রী-গবেষকদের মধ্যে অনেকেই উপস্থিত ছিলেন। উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন পেশার সঙ্গে যুক্ত ঘোষপাড়া অঞ্চলের অনেক অধিবাসী, ছাত্র-ছাত্রীদের এই উদ্যোগে অত্যন্ত সাদুবাদ জানিয়েছেন। 

কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ে 'এনএসএস' ইউনিট রয়েছে।  এই ইউনিট বিশ্ববিদ্যালয়ের আশেপাশের দুঃস্থ মানুষগুলোর পাশে দাঁড়াতে পারতো। কিন্তু তা না করায় 'এনএসএস' ইউনিটের দিকে অভিযোগ উঠছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে দুঃস্থ অনেক মানুষ রয়েছেন, তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপর নির্ভর করে জীবিকা নির্বাহ করেন। লকডাউনে সময় বন্ধ থাকায় তাঁরা নিরুপায় হয়ে গিয়েছেন। কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের "এন‌এস‌এস" ইউনিট এদের জন্য কোনো উদ্যোগ নেয়নি।