শুক্রবার   ১৫ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১ ১৪৩১   ১৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

টানা ১৭ দিন লড়াইয়ের পর করোনা মুক্ত হলেন রুদ্র নারায়ণ গুপ্ত

আবুল সাহিদ , শিলচর আসাম

পুষ্পপ্রভাত পত্রিকা

প্রকাশিত : ১১:০৫ পিএম, ২২ জুলাই ২০২০ বুধবার

চিকিৎসক ওরিনা রাহার সংস্পর্শে এসে ৬ জুলাই পজিটিভ হয়েছিলেন শিলচরের বেসরকারি গ্রিন হিলস হাসপাতালের ডিরেক্টর রুদ্র নারায়ণ গুপ্ত। টানা ১৭দিন শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর বুধবার সন্ধ্যায় তার রিপোর্ট নেগেটিভ হয়েছে। হাসপাতাল থেকে নিজেই ফোন করে জানিয়েছেন, “দীর্ঘ লড়াইয়ের পর জয়ী হয়েছি, এবার মনে হচ্ছে এতটা ঘাবড়ে যাওয়ার কিছু ছিল না।” সম্ভবত বৃহস্পতিবার তাকে হাসপাতাল থেকে মুক্তি দেওয়া হবে।
চিকিৎসক ওরিনা রাহার সংস্পর্শে এসে ৬ জুলাই পজিটিভ হয়েছিলেন গ্রিন হিলস হাসপাতালের ডিরেক্টর রুদ্র নারায়ণ গুপ্ত। টানা ১৭দিন শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর বুধবার সন্ধ্যায় তার রিপোর্ট নেগেটিভ হয়েছে।  
তার সঙ্গেই আক্রান্ত হয়েছিলেন চিকিৎসক মনিকা দেব এবং দুদিন পর একই সূত্রে পজিটিভ হন শিলচরের প্রাক্তন সংসদ সুস্মিতা দেব। তারা দুজনেই সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন এবং জেলাশাসকের পরামর্শে হোম কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন। রুদ্র নারায়ণ গুপ্তের পরিবারের কেউ পরবর্তীতে পজিটিভ হননি, তবে গ্রিন হিলস হাসপাতালে বেশ কয়েকজন কর্মী পজিটিভ হয়েছিলেন। এব্যাপারে তিনি বলেছেন, “আমার হাসপাতালে স্বাস্থ্যকর্মীরা প্রত্যেকে সোয়াব স্যাম্পল পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে। কারও পজিটিভ হয়েছে আবার কেউ কেউ নেগেটিভ হয়েছেন। তবে এদের প্রতি সমাজের একাংশের মনোভাব আমাদের আশ্চর্য করেছে।
অনেকেই ভাড়া বাড়িতে থেকে চাকরি করেন, তারা পজিটিভ হওয়ার পর কোনও কোনও বাড়ির মালিক দুর্ব্যবহার করেছেন। অবশ্যই এর পেছনে কারণ হচ্ছে করোনা ভাইরাসকে নিয়ে তাদের মনে থাকা আতঙ্ক। তবে আমি একটা কথা বলতে পারি, ভবিষ্যতে হয়তো আমরা কেউই এই ভাইরাস থেকে দূরে থাকতে পারবো না, তাই অযথা আতঙ্কিত হয়ে অন্যদের খাটো করার থেকে বিরত থাকুন। এখন সমাজের প্রয়োজন হচ্ছে প্রত্যেক ব্যক্তির আক্ষরিক অর্থেই সচেতন থাকা। আমরা আমাদের কর্মচারিদের দায়িত্ব নিয়েছি, তাদের সুরক্ষিত রাখা আমাদের কাছে সব থেকে বড় প্রায়োরিটি।”
গ্রিন হিলস হাসপাতালের ডিরেক্টর হওয়ার পাশাপাশি রুদ্র নারায়ণ গুপ্ত রামানুজ গুপ্ত জুনিয়র কলেজ এবং রামানুজ বিদ্যাপীঠেরও কর্ণধার। তিনি পজিটিভ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই গত দুই মাসে তার সংস্পর্শে যারা এসেছেন প্রত্যেকের তালিকা তৈরি করে স্বাস্থ্যবিভাগের হাতে তুলে দিয়েছিলেন। কার সঙ্গে কিভাবে এবং কোথায় দেখা হয়েছিল এটা স্পষ্ট করে।
এব্যাপারে তিনি বলেন, “একজন দায়িত্ববান নাগরিক হিসেবে আমাদের প্রত্যেকের এইটুকু কাজ করা উচিত। আমি ছাড়াও আমার হাসপাতালে কয়েকজন কর্মী পজিটিভ হয়েছেন। আমরা প্রত্যেকেই সুস্থ হয়ে ফিরব এবং কিভাবে ভাইরাসের সংক্রমণ আটকানো যায় এনিয়ে প্রশাসনকে পুরোপুরি ভাবে সাহায্য করবো। এই দুঃসময়ে আমরা চিকিৎসা পরিষেবা বন্ধ করিনি, বিপদ রয়েছে জেনেও আমরা সব ধরনের সাবধানতা বজায় রেখে ঘর থেকে বেরিয়েছি। জানিনা কার সংস্পর্শে আমাদের হাসপাতালে সংক্রমণ হয়েছে, তবে হাসপাতালের সঙ্গে যুক্ত প্রত্যেক ব্যক্তির পরীক্ষা করানো হয়েছে। কোনওভাবেই কেউ যেন বাকি না থাকে সেদিকে আমাদের নজর ছিল। এবার বাড়ি ফিরে এই প্রক্রিয়া বজায় রাখবো।”