শনিবার   ১৬ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ২ ১৪৩১   ১৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

`যোগ্য নেতাকে মনোনয়ন ভাগাভাগিতে নয়`

জাগরণ প্রতিবেদক

দৈনিক জাগরণ

প্রকাশিত : ০৮:২১ পিএম, ৫ নভেম্বর ২০১৮ সোমবার

আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের সঙ্গে ৪ নভেম্বর রোববার সংলাপ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সংলাপে ১৪ দলের শরিক দলগুলোকে কয়টি আসন দেওয়া হবে এনিয়ে আলোচনা হয়েছে। এ সময় ১৪ দলের নেতারা জোট নেত্রীর কাছে আসন ভাগাভাগির বিষয়ে জানতে চান। জবাবে জোট নেত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘যোগ্য নেতাকে মনোনয়ন, ভাগাভাগিতে নয়।’ সংলাপে উপস্থিত একাধিক নেতা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

রোববার রাতে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে ১৪ দলীয় জোটের সঙ্গে সংলাপে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা জোট নেতাদের বলেন, ‘নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার মতো প্রার্থী থাকলে তালিকা দিন, মনোনয়ন দেব। নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার মতো নয়, এমন প্রার্থী দেবেন না। যোগ্যপ্রার্থী থাকলে সেই তালিকা দিন। কিন্তু সিট ভাগাভাগির জন্য প্রার্থী তালিকা দিলে হবে না।’ এ সময় ১৯৯১ সালের নির্বাচনের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ওই নির্বাচনে জোটকে আসন দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কিছু কিছু আসনে জামানত বাজেয়াপ্তও হয়েছিল।’

জানা গেছে, আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মহাজোট গঠন করা হলে সেই জোটে কারা থাকবেন তা নিয়ে সরাসরি কিছু না বললেও মহাজোট করে নির্বাচনে অংশ নেয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন ১৪ দলের নেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। 
জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু জানতে চান ‘আগামী নির্বাচন জোটগতভাবে হবে কি না’। জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা জোটগতভাবেই নির্বাচন করবো। ১৪ দলীয় জোট আদর্শিক, এ জোট থাকবে। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির বিজয় অর্জন করতে হবে উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষার জন্য।’ 

আওয়ামী লীগের প্রার্থীর সঙ্গে জোটের প্রার্থীর নাম ঘোষণা করার দাবি জানান জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী কোনো জাবাব দেননি। 

সংলাপ শেষে ১৪ দলের মুখপাত্র মোহাম্মদ নাসিম সাংবাদিকদের বলেন, ‘১৪ দল নেতৃবৃন্দ প্রধানমন্ত্রীকে বলেছেন, আগামী নির্বাচন সংবিধান অনুযায়ী হবে। সংবিধানের বাইরে এক চুলও যাওয়া যাবে না। অনেক রক্তে রঞ্জিত আমাদের সংবিধান। আমরা আজও প্রত্যয়ের সঙ্গে ঘোষণা করেছি, শেখ হাসিনার অধীনেই নির্বাচন হবে। তার প্রতি ১৪ দল অকুণ্ঠ সমর্থন ব্যক্ত করেছে। তাই সংবিধানের বাইরে যাওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। বিন্দুমাত্র ছাড় দেওয়ার প্রশ্ন ওঠে না ।’ ১৪ দলের মাঝে আসন ভাগাভাগি সম্পর্কে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ‘এ ব্যাপারে ১৪ দলের নেতৃবৃন্দ প্রধানমন্ত্রীর ওপর দায়িত্ব ছেড়ে দিয়েছেন। তিনি একটি কথা স্পষ্টভাবে বলেছেন, ‘জোটগতভাবে নির্বাচন করবো।’ আমরা বলেছি, ‘আপনি যেভাবে সিদ্ধান্ত দেবেন, সেইভাবেই সিদ্ধান্ত মেনে নেবো। আমরা বিশ্বাস করি, আগামী নির্বাচন অত্যন্ত সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে হবে এবং অংশগ্রহণমূলক হবে। শেখ হাসিনা যে সংলাপের উদ্যোগ নিয়েছেন, আমরা তাকে স্বাগত জানিয়েছি। আমরা তাকে পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছি।’
সংলাপ শেষে বাংলাদেশের ওর্য়ার্কাস পার্টির সভাপতি রাশদে খান মেনন সাংবাদিকদের বলেন, আমরা ঐক্যবদ্ধ নির্বাচনে যাবো। সংবিধানের ভিত্তিতে একটি গ্রহণযোগ্য সুষ্ঠু নির্বাচন আমাদের দাবি।
সংলাপে উপস্থিত ১৪ দলের এক নেতা বলেন, জোটের শরিক দলগুলোকে কোন কোন আসন দেওয়া হবে, এ বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। তবে চলমান সংলাপ প্রক্রিয়া শেষে এ সংক্রান্ত আলোচনা হতে পারে।
জানা গেছে, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে আলোচনায় সংবিধানের ভেতরে থেকেই সমাধান দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন ১৪ দলীয় নেতারা। নেতাদের এমন বক্তব্যের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ষড়যন্ত্র থেমে নেই, এটা চলবে। সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে আমরা সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা রক্ষা করবো।
১৪ দলীয় জোট নেতাদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু, বাংলাদেশ জাসদের সভাপতি শরীফ নুরুল আম্বিয়া, কার্যকরী সভাপতি মঈনুদ্দিন খান বাদল, ন্যাপের আমিনা আহমেদ, গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেন, তরকিত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারি।