শনিবার   ১৬ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ২ ১৪৩১   ১৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

লকডাউন ঘোষণা হতেই ডুয়ার্সে অভূতপূর্ব সারা পাওয়া গেল

দেবজ্যোতি মুখার্জী

পুষ্পপ্রভাত পত্রিকা

প্রকাশিত : ১০:১৪ পিএম, ২৫ মার্চ ২০২০ বুধবার

 লকডাউন ঘোষণা হতেই অভূতপূর্ব সারা পাওয়া গেল ডুয়ার্সের চাবাগান থেকে গ্রামাঞ্চলে। শুনসান হয়ে হয়ে গেল সর্বত্র। এইরকম পরিবেশ ডুয়ার্সের মানুষ এর আগে প্রত্যক্ষ করেনি। 
করোনাভাইরাস সংক্রামণ প্রতিহত করতে গত রবিবার রাজ্যের কয়েকটি জেলা ও বেশকিছু শহর লকডাউন ঘোষণা করা হয়। জলপাইগুড়ি জেলার মালবাজার শহর ও চাবাগানগুলি এই ঘোষণার বাইরে ছিল।সোমবার মাল পৌরসভার ভবনে এক বৈঠকের পর প্রশাসনের পক্ষ থেকে মালবাজার শহরকেও লকডাউনের আওতায় আনা হয়। বিকাল হতেই শহরের দোকানপাঠ হাটবাজার সব বন্ধ হয়ে যায়। মঙ্গলবার সকাল থেকে মালবাজার, ওদলাবাড়ি, মেটেলি সহ বিভিন্ন এলাকা সুনসান হয়ে যায়। কিন্তু, এই পরিবেশে চাবাগান গুলিতে স্বাভাবিক কাজকর্ম হওয়ায় প্রশ্ন ওঠে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন নির্দেশিকা না আসায় চাবাগান কর্তৃপক্ষ গুলি বাগান মঙ্গলবার খোলা রেখেছিল। মঙ্গলবার বিকালে রাজ্যে সরকার গোটা রাজ্যে লকডাউন ঘোষণা করে।রাতে দেশের প্রধানমন্ত্রী ২১ দিনের লকডাউন ঘোষণা করেন। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও দেশের প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রীর ঘোষণার পর দারুণ পরিবেশের  সৃষ্ঠি হয়। অভূতপূর্ব সারা পরে সর্বত্র। শহর ও গ্রামাঞ্চলের হাটবাজার আগে থেকে সুনসান ছিল। বুধবার সকাল হতেই দেখা গেল ডুয়ার্সের চাবাগান গুলির শ্রমিকরা কেউ কাজে যায়নি। মুস্টিমেয় কয়েকটি চাবাগানে কাজ শুরু হলেও পরে বন্ধ হয়ে যায়। বুধবার সকালে সোনগাছি চাবাগানে গিয়ে দেখাগেল কারখানা নিস্তব্ধ। শ্রমিকবস্তিতে দুই একজন বিক্ষিপ্ত এদিক ওদিক দেখা গেলেও বেশিরভাগ শ্রমিক তাদের আবাসনেই কাটিয়েছে। শ্রমিকনেতা বেলা কুজুর জানান, এইরকম এক পরিবেশে কেউ কাজে যেতে ইচ্ছুক ছিলনা। তাই কাজে যায়নি বাড়িতেই আছে। 
চাবাগানের ম্যানেজার রাধেশ্যাম খান্ডেলওয়াল জানান, শ্রমিকরাই কেউ কাজে আসেনি। তাই বন্ধ রাখতে হয়েছে। 
একই দৃশ্য দেখা গেল ইন্ডং, মেটেলি, জুরন্তি সহ বিভিন্ন চাবাগানে। ইন্ডং চাবাগানের ম্যানেজার রজত দেব বলেন, আমাদের চাবাগান সব বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। শ্রমিকদের স্বাস্থ্যকর্মীরা বুঝিয়েছেন এই সময় কি কি করতে হবে। সবাই ঘরের মধ্যে ই আছে। 
ডুয়ার্সের বিশিষ্ট চা গবেষক তথা টি এসোসিয়েশন অফ ইন্ডিয়ার ডুয়ার্স শাখার সচিব রামঅবতার শর্মা বলেন, বর্তমান এই উদ্বেগ জনক পরিস্থিতিতে চাবাগানের শ্রমিক, ম্যানেজার, স্টাফ  ও সাবস্টাফ সবাই মিলে সারা দিয়েছেন। এটা এক ভালো দিক। 
ডুয়ার্সের চাবাগান, শহর, গ্রামাঞ্চল, বনবস্তি সহ বিভিন্ন এলাকায় যে অভূতপূর্ব সারা পাওয়া গেছে তা দেখে মনে হয় " করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে মানুষের জয় অবশ্যই হবে " এমন ধারণা সবার।