রোববার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১০ ১৪৩১   ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

পঞ্চম দোল উৎসব পালিত মালদা হরিশ্চন্দ্রপুর জুড়ে

হক নাসরিন বানু

পুষ্পপ্রভাত পত্রিকা

প্রকাশিত : ০৬:৫৭ পিএম, ১৪ মার্চ ২০২০ শনিবার

মালদা:

পঞ্চম দোল উৎসব পালিত হল শুক্রবার গভীর রাত্রে মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুরে। বহুদিনের ঐতিহ্যবাহী এই এলাকার পঞ্চমদোল উৎসব। হরিশ্চন্দ্রপুরের শতাব্দীপ্রাচীন রায় জমিদার বাড়ির রামকানাই কে ঘিরে এই দোল উৎসব পালিত হয়ে আসছে দীর্ঘ ১০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে। পাঁচ দিন ধরে চলা দোল উৎসবের সমাপ্তি ঘটলো গত শুক্রবার গভীর রাত্রে। জমিদার বাড়ির সকল সদস্যরাসহ গ্রামের আর পাঁচটা সাধারণ মানুষও দোল খেলায় মেতে উঠল। লাল আবির দিয়ে খেলায় অংশগ্রহণ করলো সব ধর্মের মানুষ। রামকানাইয়ের বিগ্রহ নিয়ে গভীর রাত্রে শোভাযাত্রা বেরোলো। শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করলো হরিশ্চন্দ্রপুর এ জনসাধারণ। বৃষ্টির কারণে এদিন শোভাযাত্রা কিছুটা পথ কমিয়ে দেয়া হয়। তবুও এলাকার মানুষের উন্মাদনা ছিল তুঙ্গে। আজ থেকে প্রায় ১৪৬ বছর আগে জমিদার ভজ মোহন রায় এই জমিদারির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তখন থেকেই দোল দুর্গোৎসব হয়ে আসছে। আর এই দোল উৎসবে জমিদার বাড়ির সদস্যরা ছাড়াও গ্রামের অন্যান্য মানুষরাও এই উৎসবে অংশগ্রহণ করে থাকেন। পাঁচ দিন ধরে চলা এই উৎসবে চলে ভজন কীর্তন তার সাথে জমিদার বাড়ির সামনে বসে বিশাল মেলা। পঞ্চম দোলের দিন থাকে বিশেষ আতশবাজির প্রদর্শনী। দেখতে ভিড় করে এলাকার সাধারণ মানুষ। এই পাঁচদিন জমিদার বিগ্রহ রামকানাই সাধারণ মানুষের সঙ্গে বসেই কীর্তন শোনেন। চলে বিশেষ পুজো। হরিশ্চন্দ্রপুর ছাড়াও পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন এলাকার মানুষেরা ঐতিহ্যবাহী দোল দেখতে এলাকায় ভিড় জমান। রাত পর্যন্ত চলে কীর্তন গান। পঞ্চম দিনের দিন ভগবান রাম কানু কে গ্রামের সব ধর্মের মানুষরা আবির দিয়ে রাঙান। সবশেষে বেরোয় শোভাযাত্রা। ঢোল সানাই বাজিয়ে গোটা গ্রাম পরিক্রমায় বেরন রামকানাই। কীর্তন গাইতে গাইতে পেছনে পেছনে চলে ভক্তবৃন্দ। সাথে চলে আবির খেলা।
জমিদার বাড়ির সদস্য তথা বিখ্যাত গায়ক সৌমিত্র রায় জানালেন তিনি ছোট থেকেই এই পঞ্চম দলে অংশগ্রহণ করেন। তার দাদুর বাবা এই উৎসবের সূচনা করেছিলেন। এই উৎসবে হরিশ্চন্দ্রপুর সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণ করে থাকে। হরিশ্চন্দ্রপুর এরাই জমিদারি দোল উৎসব শুধু তাদের পারিবারিক নয় সার্বজনীন গ্রামীণ উৎসবে পরিণত হয়েছে।গ্রামের সব ধর্মের সব বর্ণের মানুষ এই উৎসবে অংশগ্রহণ করে রামকানাইয়ের কে আবির দেন এভাবেই তারা এই আনন্দে শরিক হন।