চাঁচল মহকুমায় আধার কার্ড সংশোধন করতে গিয়ে নাম বিভ্রাট
উমর ফারুক
পুষ্পপ্রভাত পত্রিকা
প্রকাশিত : ১০:৫১ এএম, ১০ মার্চ ২০২০ মঙ্গলবার
মালদহের চাঁচল মহকুমায় আধার কার্ড সংশোধন করতে গিয়ে নাম বিভ্রাটের জন্য চরম বিপাকে পড়েছেন সাধারণ মানুষ।বিশেষ করে এলাকার মুসলিম মহিলাদের ' মোসাম্মৎ ' নামটি আধার কার্ড সংশোধনের পরে আসছে না।এমনকি ওই মহিলাদের আধার কার্ড সংশোধন প্রক্রিয়াটি বাতিল হয়ে যাচ্ছে বলে ভুক্তভোগী মহিলারা অভিযোগ করেন।জানা যায় বহু মুসলিম মহিলাদের নামের শুরুতে 'মোসাম্মৎ ' শব্দ থাকে। যার ইংরেজি বানান সংক্ষেপে এম এস টি (mst.) লেখা হয়।কিন্তু সমস্যা দেখা দিয়েছে এই 'মোসাম্মৎ ' শব্দ নিয়ে।শিক্ষাগত যোগ্যতার প্রমাণ পত্র,ভোটার কার্ড,রেশন কার্ড সহ অন্যান্য সরকারি নথিপত্রে 'মোসাম্মৎ ' শব্দ থাকলেও নতুন করে আধার কার্ড সংশোধন প্রক্রিয়াতে সেই শব্দটি নিচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে।এন আর সি আতঙ্কে এমনিতেই সাধারণ মানুষের মধ্যে নথিপত্র ঠিক করার হিড়িক পড়েছে।
সমস্ত সরকারি নথিতে নামের বানান একই করার জন্য বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে সাধারণ মানুষ ছুটে বেড়াচ্ছেন।রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক,ডাকঘরে আধার কার্ড সংশোধন করতে লম্বা লাইন পড়তে দেখা যাচ্ছে।অনেক স্থানে মহিলাদের ভিড় বেশি লক্ষ্য করা যাচ্ছে।।শিক্ষাগত যোগ্যতার প্রমাণ পত্র,ভোটার কার্ড,রেশন কার্ড সহ অন্যান্য সরকারি নথিপত্রে 'মোসাম্মৎ ' শব্দ থাকলেও আধার কার্ডে না থাকায় আতঙ্কিত মহিলারা।ভুক্তভোগী মহিলারা জানান,সমস্ত সরকারি নথি পত্র অনুযায়ী নামের শুরুতে 'মোসাম্মৎ ' শব্দ আধার কার্ডে করার জন্য ফর্ম পূরণ করা হয়।সেই সময় 'মোসাম্মৎ' শব্দ দিয়েই সংশোধন করা হয়।কিন্তু কিছুদিন পর 'মোসাম্মৎ' শব্দ নেওয়া যাবে না বলে পুরো সংশোধন প্রক্রিয়া বাতিল হয়ে গেছে।এই বিষয়ে জনৈক মহিলা বলেন,তিন বার এই নাম সংশোধনের জন্য ব্যাঙ্কে দীর্ঘ লাইন দিয়ে ফর্ম পূরণ করা হয়।কিন্তু একই কারণে তিনবারই সংশোধন প্রক্রিয়া বাতিল হয়ে গেছে।বার ঘুরে কোন কাজ হয়নি।এই বিষয়ে আধার কার্ড সংশোধন কর্মীরা জানান,নতুন সংশোধন সিস্টেমে ওই নাম নিচ্ছে না।আমাদের কিছু করার নেই।সাধারণ মানুষরা জানান,এর আগে ২০১৪ সালে যে সব আধার কার্ড তৈরি হয় সেই সময় 'মোসাম্মৎ' শব্দ আধার কার্ডে ছিল।কিন্তু নতুন সংশোধন সিস্টেমে তা নিচ্ছে না।এই ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে সাধারণ মানুষ কে।
এই প্রসঙ্গে জেলা পরিষদের শিশু,নারী উন্নয়ন ও ত্রাণ কর্মাধ্যক্ষ মর্জিনা খাতুন বলেন, আধার কার্ড সংশোধনে এলাকার মুসলিম মহিলাদের ' মোসাম্মৎ ' নামটি আসছে না।ভুক্তভুগী বহু মহিলা এই বিষয়ে আমাকে অভিযোগ করেছেন।বহু মুসলিম মহিলাদের নামে ' মোসাম্মৎ ' শব্দ টি ব্যবহার করা হয়।তাই এলাকার বৃহৎ অংশের মহিলা এই সমস্যায় ভুগছেন।মানুষের নামের বানান সিস্টেমে নেবে না এটা কি করে সম্ভব।এই সমস্যার অবশ্যই সমাধান করা দরকার।এই বিষয়টি আমি জেলা শাসকের নজরে আনব।
জেলা কংগ্রেস সভাপতি তথা হরিশ্চন্দ্রপুরের বিধায়ক মোস্তাক আলম বলেন,নথিপত্র ঠিক করতে মানুষের গলদঘর্ম অবস্থা।' মোসাম্মৎ ' নামে সমাজে বহু মুসলিম মহিলা রয়েছে।আধার কার্ড সংশোধনে সেই নাম আসছে না বলে শুনেছি।এর অবশ্যই সমাধান দরকার।সরকারি সিস্টেমের জন্য সাধারণ মানুষ কেন হয়রানীর শিকার হবেন।এর আগে ২০১৪ সালে আধার কার্ডে যদি 'মোসাম্মৎ' শব্দ থাকে তবে নতুন সংশোধন প্রক্রিয়াতে ও থাকা উচিৎ।যান্ত্রিক ত্রুটি থাকলে সেটা ঠিক করতে হবে কিন্তু সাধারণ মানুষ কে দুর্ভোগে ফেলা যায় না।এই বিষয়ে প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করা হবে।
এই প্রসঙ্গে চাঁচল মহকুমা শাসক সব্যসাচী রায় বলেন, আধার সংশোধন করতে নাম বিভ্রাট কেন হচ্ছে তা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলা হবে।