রোববার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১০ ১৪৩১   ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইজাজ আহামেদ

বেকারত্বের গ্লানি

ইজাজ আহামেদ

পুষ্পপ্রভাত পত্রিকা

প্রকাশিত : ০৮:৫২ এএম, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০ বুধবার

বেকারত্বের গ্লানি
মোঃ ইজাজ আহামেদ

ছোট থেকে দেখেছিলাম কত স্বপ্ন;
বড়ো হয়ে পরিবারের দারিদ্রতা দূর করবো,
চাকরি করে পিতা মাতাকে একটু সুখ দেব।
পড়াশোনা করে স্কুল পাশ করলাম,
কলেজ পাশ করলাম,
করলাম পাশ বিশ্ব বিদ্যালয়।
স্বপ্ন প্রাইমারি এবং এস এস সি দিয়ে 
আমি শিক্ষক হবো;
পরিবারের সদস্যদের মুখে একটু অন্ন তুলে দেবো।
দুবার প্রাইমারি টেট পাশ করলাম,
এস এস সি ও পাশ করলাম
কিন্তু হল না চাকরি;
হৃদয়ে জমে থাকলো শুধু ব্যর্থতার গ্লানি।
এইদিকে আবার বেশ কয়েক বছর ধরে হলো না প্রাইমারি আর এস এস সি;
বয়স তিরিশ হয়ে গেল পারলাম না
পরিবারের মুখে  ফোটাতে হাসি;
পরিবারের কাছে বোঝা হয়ে রইলাম,
বোঝা হলাম সমাজের কাছে,
বেকারত্বের গ্লানি নিয়ে রইলাম।
বেশি পড়াশোনা করে
না পারি রিক্সা -ভ্যান চালাতে,
না পারি রাজমিস্ত্রি খাটতে।
একবার করে ভাবি
পড়াশোনা যারা করে নি
হয়তো তারাই ঠিক করেছে
কেননা তারা বেশ টাকা  রোজগার করছে-
বাড়ি করছে , গাড়ি কিনছে
কিন্তু আমাদের মতো শিক্ষিত বেকারদের
 দু -বেলা অন্ন  জোগাড় করাটাই হয়েছে দায়;
বাড়িতে শুনতে হয় কথা,
সমাজেও তার নিস্তার নাই;
অশিক্ষিতরা বলে 
ডিগ্রি অর্জন করে
কি করেছিস, জোটাতে পরিসনি চাকরি,
ইনকামও করতে পারিস নি,
পড়াশুনা করে পরিবারকে পথে নামিয়েছিস;
পড়াশুনা না করে আমরা ঠিক আছি,
 ভালো ইনকাম করি,পরিবারকে সুখে রেখেছি;
মার্বেল  দিয়ে দোতলা বাড়ি করেছি,
 দামি বাইক কিনেছি,সোনার  গহনাও তৈরি করেছি;
কথা শুনে নিজেকে সমাজের সবচেয়ে বড়ো হতভাগা মনে হয়;
বেকারত্বের গ্লানি নিয়ে মন খারাপ করে আসতে হয়;
হয়তো বেকারত্বের জ্বালা থেকে মুক্তি পেতে 
আমার মতো বেকারদের অনেকে 
এই পৃথিবী ছেড়ে যায় চলে
কিন্তু অসহায় মা বাবা ভাই বোনদের দেখে 
সেটাও পারিনা।
শুধু বেঁচে থাকি বেকারত্বের গ্লানি নিয়ে,
মনে হয় সর্বক্ষণের সাথী 
ব্যর্থতা ও বেকারত্বের গ্লানি।