বীরভূমে অপুষ্ট শিশুদের সজনে পাতার বিষ্কুট খাওয়াচ্ছেন রাখী
খান আরশাদ, বীরভূম
পুষ্পপ্রভাত পত্রিকা
প্রকাশিত : ০৭:২০ এএম, ১৭ জুলাই ২০১৯ বুধবার
সজনে পাতার বিস্কুটের প্যাকেট হাতে এলাকার দূস্থ শিশুরা। (ইনসেটে) - রাখী ব্যানার্জী।
বীরভূমের প্রান্তিক অঞ্চল রাজনগরে অপুষ্ট শিশুদের সজনে পাতার অভিনব বিস্কুট খাওয়াচ্ছেন এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার ডিরেক্টর রাখী ব্যানার্জী। জেলায় অপুষ্ট শিশুদের সরকারী উদ্যোগে সজনে পাতা খাওয়ানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিলো বছর তিনেক আগে এবং সেই পরিপ্রেক্ষিতে রাজনগর ব্লকের হরিপুরে সরকারীভাবে সজনে চাষও শুরু হয়েছে। সে সময় তৎকালীন বীরভূম জেলাশাসক পি মোহন গান্ধী এব্যাপারে বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন। তিনি সে সময় এই প্রতিবেদককে জানিয়েছিলেন সজনে পাতায় রয়েছে অফুরন্ত পুষ্টিগুণ। এই সজনে পাতা প্রসেসিং করে তা শিশুদের মিড ডে মিলের খাবারে দেওয়া হবে।
এবার সেই সজনে পাতাকে পুষ্টি জোগানোর কাজে লাগাতে উদ্যোগী হলেন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার রাখী ব্যানার্জী। রাজনগর রিওয়ার্ড ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশন নামে এই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাটি ইটালির নামে অপর একটি সংস্থার সহায়তায় সজনে পাতার বিস্কুট তৈরি করে তা দুস্থঃ মা ও শিশুদের মধ্যে বিতরণ করছেন। সাথে সজনে পাতার পাউডার দৈনন্দিন খাবারের মধ্যে দিচ্ছেন। সংস্থার ডিরেক্টর রাখী ব্যানার্জী জানান এর ফলে ওই সব দুর্বল অপুষ্ট শিশু ও মায়েদের পুষ্টির ঘাটতি দূর হবে। কারণ সজনে পাতায় রয়েছে অফুরন্ত পুষ্টিগুণ। এলাকায় বহু গরীব মানুষ রয়েছেন যাঁরা দুবেলা ভাতের সাথে মাছ মাংস ডিম খেতে পারেননা। স্বাভাবতঃই ওইসব মানুষদের শরীরে অপুষ্টি দেখা দেয়। শরীরে বাঁধে নানান রোগের বাসা। ওই সব মানুষদের চিহ্নিত করে তাদের নিয়মিত ভাবে সর্বপুষ্টিগুণ সম্পন্ন এই সজনে পাতার পাউডার এবং তা দিয়ে তৈরি বিস্কুট খাওয়ার ব্যাবস্থা করেছেন। রাখী ব্যানার্জীকে এই কাজে সাহায্য করছেন এই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার প্রেসিডেন্ট রাজু রায় ও সংস্থার সদস্যা ইংল্যান্ডবাসী আন্না অড্রিয়েন। আন্না সুদুর লন্ডন থেকে থেকে এখানে এসে এই কাজে হাত লাগিয়েছেন। বিশিষ্ট সমাজসেবী হিসেবে পরিচিত রাখী ব্যানার্জী রাজনগর ব্লকের মুরাদগঞ্জ, গুড়কাটা, মাচানতলি, নতুনগ্রাম প্রভৃতি দরিদ্র অধ্যুষিত জায়গায় নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তাঁদের একটাই লক্ষ্য অপুষ্টিতে ভোগা এইসব মানুষদের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের সুস্থ জীবন যাপনের একটি উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করা। প্রকৃত সুস্থ বাংলা গড়ার কারিগর রাখী ব্যানার্জীর এই অভিনব উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন এলাকার সর্ব্বস্তরের মানুষ।