মালদা
স্ট্রং রুম থেকে বেআইনিভাবে বাক্স সরানোর অভিযোগ
হক নাসরিন বানু
পুষ্পপ্রভাত পত্রিকা
প্রকাশিত : ১০:৫৫ পিএম, ১১ মে ২০১৯ শনিবার
মালদা
স্ট্রং রুম থেকে বেআইনিভাবে বাক্স সরানোর অভিযোগ জেলা প্রশাসনের বিরুদ্ধে করলেন মালদা জেলা কংগ্রেস সভাপতি মুস্তাক আলম৷শনিবার দুপুর ১টায় জেলা কংগ্রেস কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সামনে অভিযোগের প্রমাণও পেশ করেন তিনি৷ তবে এনিয়ে জেলা নির্বাচন আধিকারিকের
কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি৷ দক্ষিণ মালদা কেন্দ্রের কংগ্রেস প্রার্থীর ইলেকশন এজেন্ট মহম্মদঃ মহাফিজ আলম জানান, "দক্ষিণ মালদা কেন্দ্রের স্ট্রংরুম তৈরি করা হয়েছে মালদা পলিটেকনিকে৷ শনিবার সকালে সেখানে উপস্থিত আমাদের প্রতিনিধির ফোন মারফত জানতে পারি, স্ট্রংরুমের সিল ভেঙে ইলেকশনে ব্যবহৃত সামগ্রী ট্রাঙ্ক সমেত লরিতে তোলা হচ্ছে৷ বিষয়টি আমি দলের বিভিন্ন প্রতিনিধিদের বিষয়টি জানিয়ে স্ট্রংরুমে যেতে বলার সঙ্গে নিজেও মালদা পলিটেকনিকে যাই৷ ঘটনাস্থলে আমরা পৌঁছতেই সেই ট্রাঙ্কগুলিকে পুনরায় স্ট্রংরুমে রেখে দেওয়া হয়৷ স্ট্রংরুমে উপস্থিত আমাদের প্রতিনিধি ঘটনার বেশ কিছু অংশ ভিডিয়ো করে রাখতে পেরেছে৷ স্ট্রংরুমে ঢোকার রাস্তা সিসি ক্যামেরায় দেখা যাচ্ছে না৷ আমি ঘটনাস্থলে উপস্থিত কেন্দ্রীয়বাহিনীকে সিসি ক্যামেরা সংক্রান্ত বিষয় জানাই৷ কেন্দ্রীয়বাহিনীর দাবি, সিসিক্যামেরা কোথায় আছে, কোথায় থাকবে সেসব বিষয় তাদের অধীনে নেই৷ স্ট্রংরুমের প্রবেশপথে সিসি ক্যামেরা না থাকায় বিষয়টি থেকে ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে৷ এসডিও পার্থ চক্রবর্তীকে সিসি ক্যামেরার বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে, তিনি সাফ জানিয়ে দেন, আদেশ অনুযায়ী তাঁরা কাজ করেছেন৷ তার বেশি তাঁরা কিছু বলতে পারবেন না৷ যে সমস্ত লেবার স্ট্রংরুমে ঢুকে ট্রাঙ্কগুলি বাইরে লরিতে তুলছিল, রেজিস্ট্রারে তাদেরও নাম নথিভূক্ত করা হয়নি৷ সমস্ত ঘটনা জানিয়ে আমরা নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হচ্ছি৷"
জেলা কংগ্রেস সভাপতি মোস্তাক আলম জানান, "প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রার্থীকে ৮ মে চিঠি মারফত জানানো হয়, আগামী ১২ মে রবিবার দুপুর ১২টায় সিল করা ট্রাঙ্কগুলিকে পুনরায় সিল করা হবে৷ সেখানে প্রার্থী অথবা তার ইলেকশন এজেন্ট যেন উপস্থিত থাকেন৷ অথচ আজ সকাল সাড়ে ৯টায় স্ট্রংরুমের সিল ভেঙে ট্রাঙ্ক ভরতি ইভিএম লরিতে তোলা হচ্ছিল৷ মালদা পলিটেকনিকে উপস্থিত আমাদের প্রতিনিধি সমস্ত ঘটনা আমাদের জানান৷ সমস্ত ঘটনা আমরা এসডিও জানাই৷ জেলা নির্বাচন আধিকারিক তথা জেলাশাসককে এবিষয়ে জানানোর চেষ্টা করা হলেও তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি৷ তিনি আমাদের ফোন ধরেন না৷ নিজের চাকরি বাঁচাবেন, না দুর্নীতির কবল থেকে নিজেকে বাঁচাবেন, তা নিয়েই তিনি লড়াই করছেন৷ গত পরশুদিন গোপনসূত্রে আমরা জানতে পারি, শাসকদল জেলাশাসককে নির্দেশ দিয়েছে, যেভাবেই হোক মালদার দুটো লোকসভা কেন্দ্রের ইভিএম পালটে ফেলতে হবে৷ যদিও এবিষয়ে আমাদের হাতে প্রমাণ নেই৷ সমস্ত বিষয় জানিয়ে আমরা নির্বাচন কমিশনের কাছে অভিযোগ জানাচ্ছি৷ নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে জেলাশাসক সই করে এক তারিখ জানাচ্ছেন, কিন্তু তার আগেই ইভিএম সরিয়ে চোরের ভূমিকা পালন করছে প্রশাসন৷ জেলা প্রশাসন নির্বাচনের হয়ে কাজ করছে না, শাসকদলের হয়ে কাজ করছে৷"
এবিষয়ে জেলা নির্বাচন আধিকারিক তথা জেলাশাসকের প্রতিক্রিয়া পেতে তাঁকে ফোন করা হলে বরাবরের মতো তিনি আজও ফোন ধরেননি৷অপরদিকে দক্ষিণ মালদার বিজেপি প্রার্থী শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরী সংবাদমাধ্যমকে জানানআমরা জানতে পেরেছি আজ শনিবার মালদা জেলা শাসক তার টিম ও চার পাঁচ জন অফিসার কে নিয়ে বিশাল আকারের একটি ট্রাক ও ২০ জন লেবার দের নিয়ে স্ট্রং রুম থেকে বেআইনিভাবে বাক্স ও কিছু জিনিসপত্র ট্রাকে তোলার পর কেন্দ্রীয় বাহিনীদের অবজেকশন করায় বচসা বাধে তারপর প্রশাসনের পক্ষ থেকে স্ট্রং রুমে আবার বাক্স ও কিছু পুটলি রাখা হয়। প্রশাসনের এই কাজের জন্য মালদা জেলাশাসকে অপসারণ করতে হবে। যদি মালদা জেলা শাসককে অপসারণ না করা হয় তাহলে আমরা বৃহত্তর আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবো। এই ব্যাপারে আমরা ইসির কাছে কমপ্লেন করতে চলেছি।