পায়ে জখম নিয়েই মোটর সাইকেল চালাচ্ছেন সাইদুর!
রিকু আমির
দৈনিক জাগরণ
প্রকাশিত : ০৫:৫৫ পিএম, ২ নভেম্বর ২০১৮ শুক্রবার
মোটর সাইকেল দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত ডান পা সেরে ওঠার আগেই আবার মোটর সাইকেল চালাচ্ছেন ২৮ বছর বয়সী সাইদুর রহমান।
এখনও তাকে ক্রাচে ভর করে হাঁটতে হচ্ছে। মোটর সাইকেল চালানোর সময় এই স্ক্র্যাচ পিঠে বেঁধে রাখেন। এ অবস্থাতেই গত ৩১ অক্টোবর রাতে মিরপুর ২ নম্বর ৬০ ফিট সড়কের মোল্লাপাড়ায় তার দেখা পায় জাগরণ প্রতিবেদক।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরের সাঈদুর জাগরণের প্রশ্নে জানান, ১০ অক্টোবর অফিসে যাওয়ার সময় মিরপুর ১০ নম্বর গোল চক্করের কাছাকাছি একটি বেপরোয়া বাস তাকে আঘাত করে। রাস্তার একদম বাঁ পাশে থাকা সত্বেও রক্ষা পাননি তিনি। একটি রিকশাও এ দুর্ঘটনার জন্য দায়ী বলে মন্তব্য তার।
সেদিন দেড়শ সিসি সেগমেন্টের কেপিআর ১৫০আর মোটর সাইকেল চালাচ্ছিলেন সাঈদুর। এর ওজন ১৫০ কেজিরও বেশি। বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত সাঈদুর জানান, ঘটনাস্থল থেকে এলাকার ছোটোভাই নাঈম তাকে উদ্ধার করে প্রথমে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতাল ও পরে শ্যামলির ট্রমা সেন্টারে নিয়ে যান।
দুর্ঘটনায় সাঈদুরের ডান পায়ের হাড় ফেটে গেছে। চিকিৎসকদের পরামর্শ ছিল-মাসখানেক বিশ্রাম নেয়ার। কিন্তু অফিস থেকে মাত্র ১৫ দিনের ছুটি থাকায় সেই পরামর্শ প্রতিপালন করতে পারেননি তিনি।
কিন্তু মোটর সাইকেলেই কেন?- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ঢাকার প্রচুর যানজট, বাসে তো যাওয়া একদম সম্ভব না, সিএনজি অটোরিকশায় বসে থাকা সম্ভব না। উবার-পাঠাওয়ের বাইকে চড়তে স্বচ্ছন্দবোধ করি না। এজন্য নিজের বাইক নিজেই চালিয়ে অফিস করার ইচ্ছা করলাম। আসলে মোটর সাইকেল চালিয়ে অভ্যাস, এটার স্বাদ অন্য পরিবহনে পাওয়া যায় না।
শরীরের এ অবস্থা থাকা সত্বেও ঢাকার কাজীপাড়ায় ছোট ভাইবোন নিয়ে বাস করেন সাঈদুর। আগামী ৮ নভেম্বর বন্ধুদের সাথে মোটর বাইক ট্যুরে কাপ্তাই যাওয়ার পরিকল্পনা করেছেন। তিনি বলেন, এমনিতে খুব একটা সমস্যা হয় না। ডান পায়ের সমস্যার জন্য পায়ের ব্রেক ব্যবহার করতে পারছি না। মাঝেমাঝে পা ফুলে ওঠে, ঝিমঝিম করে। কিছুক্ষণ পা-টা উঁচু করে বসার পর এটা ঠিক হয়।
তিনি বলেন, চিকিৎসকদের কথা শুনলে দ্রুত সেরে উঠতে পারতাম। কিন্তু সেটা সম্ভব হচ্ছে না। অফিস থেকে এতদিনের ছুটি দেবে না।