মেলবোর্ন থেকে সিলেট, ১৪১ বছরের পথচলা
স্পোর্টস ডেস্ক
দৈনিক জাগরণ
প্রকাশিত : ০৬:০৩ পিএম, ১ নভেম্বর ২০১৮ বৃহস্পতিবার
আগামী শনিবার (৩ নভেম্বর) থেকে বাংলাদেশ ও জিম্বাবুয়ের মধ্যকার টেস্ট সিরিজের মধ্যদিয়ে প্রথমবারের মতো টেস্ট আঙ্গিনায় প্রবেশ করতে চলেছে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম। এটি টেস্ট ইতিহাসের ১১৬তম এবং বাংলাদেশের সপ্তম টেস্ট ভেন্যু হতে চলেছে।
ভেন্যু হিসেবে ২০১৪ সালে টি-২০ অভিষেক হলেও এবার সিলেটে হতে চলেছে টেস্ট অভিষেক। ইতিহাসের প্রথম টেস্ট ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছিল ১৮৭৭ সালের ১৫ মার্চ মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে। ওই ম্যাচে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়ার প্রতিপক্ষ ছিল ক্রিকেটের জনক ইংল্যান্ড।
টেস্ট ভেন্যুর অভিষেক উপলক্ষে গোটা সিলেটে এখন রীতিমতো উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। টিকেটের জন্য চলছে কাড়াকাড়ি। দর্শক হিসেবে ইতিহাসের অংশ হতে পারার বিরল সুযোগ কেউ হাতছাড়া করতে চাইছেন না।
সিলেটের মাঠের একটি বিশেষত্ব হচ্ছে- মাঠের একদিকে টিলা, আরেক দিকে চা বাগান। টিলা আর চা বাগানের ঠিক মাঝখানে সবুজের সমাহারে নিমজ্জিত স্টেডিয়ামটি।
স্থানীয় দর্শকরা যে শুধু নিজ দেশের খেলাই মাঠে বসে দেখবেন তা কিন্তু নয়, তরুণ পেস বোলার আবু জায়েদ রাহী লোকাল বয় হওয়ার কারণে সিলেটে বাড়তি উন্মাদনার সৃষ্টি হয়েছে। দলের সকল খেলোয়াড়ের সাফল্য ক্রিকেটপ্রেমী সিলেটীরা প্রত্যাশা করলেও রাহীর প্রতি তাদের বাড়তি প্রত্যাশা যে আরও বেশি, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
ক্রিকেটের মক্কা হিসেবে খ্যাত লর্ডস এবং কলকাতার ইডেন গার্ডেনে রেওয়াজ অনুযায়ী টেস্ট ম্যাচ শুরুর আগে বাজানো হয় ঘণ্টা। সিলেটেও সেই রেওয়াজ শুরু হতে যাচ্ছে, যা সবার মধ্যে বাড়তি কৌতূহলের জন্ম দিয়েছে।
তবে লর্ডস আর ইডেনের সাথে সিলেটের ঘণ্টা বাজানোর ব্যাপারে একটি ঐতিহাসিক পার্থক্য রয়েছে। সিলেটই ক্রিকেট ইতিহাসের প্রথম ভেন্যু হিসেবে অভিষেক টেস্টেই ঘণ্টা বাজানোর রেওয়াজ চালু করতে চলেছে।
লর্ডসে টেস্ট শুরুর আগে ঘণ্টা বাজানোর ঐতিহ্য শুরু হয় ২০০৭ সাল থেকে। খেলা শুরুর ৫ মিনিট আগে তা বাজানো হয়। বিশ্বের খ্যাতিমান ক্রিকেটাররা ঘন্টা বাজানোর সম্মান পেয়ে থাকেন।
ক্রিকেট অ্যাসোশিয়েশন অব বেঙ্গলের প্রধান এবং সাবেক ভারতীয় ক্রিকেটার সৌরভ গাঙ্গুলী ২০১৬ সাল থেকে ইডেনে ঘণ্টা বাজানোর রেওয়াজ চালু করেন।
তবে সিলেটে অবশ্য কোনো ক্রিকেটার নয়, ইলেক্ট্রনিক সিস্টেমের এই ঘণ্টা বাজাবেন ম্যাচ রেফারি নিজেই।
সিলেটে টেস্ট অভিষেকের বিশেষ মুহূর্তকে স্মরণীয় রাখার জন্য আরও নানা আয়োজন রাখা হয়েছে। খেলা শুরুর আগে দুই দলের অধিনায়ক সিলেট টেস্ট উপলক্ষে বানানো বিশেষ মুদ্রা দিয়ে টস করবেন।
সিলেট বিভাগ থেকে বাংলাদেশের হয়ে খেলা সাবেক টেস্ট ক্রিকেটারদের এই ম্যাচ উপভোগ করার জন্য ইতোমধ্যে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তাদের হাতে বিশেষ সম্মাননা তুলে দেয়ারও ব্যবস্থা করা হয়েছে। স্মারক উপহার পাবেন ম্যাচ কাভার করতে আসা সাংবাদিকরাও।
নতুন টেস্ট ভেন্যু হিসেবে সিলেটের অভিষেক উপলক্ষে ‘গ্লিম্পস অব সিলেট’ নামে একটি প্রকাশনা বের করা হবে। খেলা শুরুর দিন সকালে এই প্রকাশনার মোড়ক উন্মোচন করবেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন।
ম্যাচটির টিকিটের নকশাও করা হয়েছে ‘স্মারক’এর আদলে। সিলেটবাসীর মধ্যে টেস্ট অভিষেকের আনন্দ আর উত্তেজনা ছড়িয়ে দিতে সিলেটের ক্রীড়া সংস্থা একটি শোভাযাত্রা বের করারও আয়োজন করে ফেলেছে।