শেখ হাসিনা ও ওবায়দুল কাদেরকে জাতীয় ঐক্যের সংলাপ প্রস্তাবনার চিঠি
এস এম সাব্বির খান, জাগরণ ডেস্ক
দৈনিক জাগরণ
প্রকাশিত : ১১:৩৭ পিএম, ২৮ অক্টোবর ২০১৮ রোববার
ঐক্যফ্রন্টের চিঠি (ছবি সংগৃহীত)
সুষ্ঠ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা এবং দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের কাছে সংলাপ প্রস্তাবনার চিঠি দিয়েছে ডঃ কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। আজ রবিবার (২৮ অক্টোবর) সন্ধ্যায় গণফোরাম সভাপতি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রধান নেতা ড. কামাল হোসেন স্বাক্ষরিত চিঠিটি আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে নিয়ে আসেন গণফোরামের প্রেসিডিয়াম সদস্য এ কে এম জগলুল হায়দার আফ্রিক এবং যুগ্ম সেক্রেটারি আ হ ম শফিকুল্লাহ। আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ দলীয় প্রতিনিধি হিসেবে এ চিঠি গ্রহণ করেন । জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের দাপ্তরিক প্যাডে ড. কামাল স্বাক্ষরিত চিঠিতে ফ্রন্টের পক্ষ থেকে ৭ দফা ও ১১ লক্ষ্য উল্লেখ করে সুষ্ঠ নির্বাচনের স্বার্থে ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলটির সাথে সংলাপ আয়োজনের দাবি প্রস্তাবিত হয়েছে।
চিঠি পাওয়ার পর এর সত্যতা নিশ্চিত করে আব্দুস সোবহান গোলাপ বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা এবং সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বরাবর ঐক্যফ্রন্টের পাঠানো দু'টি চিঠি আমরা পেয়েছি। আগামীকাল চিঠিগুলো খোলা হবে। এরপর এ বিষয়ে দলের পক্ষ থেকে জবাব দেওয়া হবে কিনা তা ঠিক করা হবে। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী গতকাল শনিবার (২৭ অক্টোবর) এ চিঠি পৌঁছে দেওয়ার কথা থাকলেও চট্টগ্রামে ঐক্যফ্রন্টের সমাবেশের কারণে একদিন পিছিয়ে তা আজ রবিবার হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত নেন ঐক্যফ্রন্ট নেতৃবৃন্দ।
এই চিঠি দেওয়াকে কেন্দ্র করেও নাটকীয় পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। চিঠি নিয়ে ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের আসার খবরে কার্যালয় ত্যাগ করেন আওয়ামী লীগ নেতারা। পরে সেখানে এসে পৌঁছান সুজিত, কামাল এবং মিলন। সবশেষে কার্যালয়ে আসেন গোলাপ। এদিকে চিঠি আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে পৌঁছে দেওয়ার জন্য আগে থেকেই কার্যালয়ের উল্টোদিকের কফিশপে অপেক্ষারত থাকলেও সাবেক দুই আওয়ামী লীগ নেতা বর্তমান গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু এবং ঐক্যফ্রন্ট নেতা সুলতান মনসুর আহমেদ আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে যাননি। ঐক্যফ্রন্ট সূত্রে জানা যায়, বিব্রতকর পরিস্থিতি সৃষ্টির আশংকায় সাবেক দুই আওয়ামী নেতা কার্যালয়ে প্রবেশ করেননি।
উল্লেখ্য, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা সুলতান মো. মনসুর র ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের ভিপি নির্বাচিত হয়েছিলেন এবং এক সময় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। কিন্তু ১/১১-এর সময় সংস্কারপন্থী এ নেতা ২০০৮ সালের নির্বাচনে মনোনয়ন প্রাপ্তি এবং ২০০৯ সালের সম্মেলনে দলীয় পদচ্যুত হন। অপর দিকে আরেক সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মোস্তফা মোহসিন মন্টু অভ্যন্তরীণ কোন্দলে ছাত্রলীগের দলীয় সমন্বয় ভাঙার অপরাধে দল থেকে বহিষ্কৃত হন।
চিঠি হস্তান্তর শেষে ঐক্যফ্রন্ট নেতারা চলে গেলে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে দলীয় কার্যালয়ে আসেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক। এরপর দেড় ঘণ্টারও বেশি সময় তিনি দলের অন্য নেতাদের সঙ্গে কার্যালয়ের ভেতর আলোচনায় বসেন।
চিঠি গ্রহণের সময় আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে দলটির ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য আমিরুল আলম মিলন ও এস এম কামাল হোসেন উপস্থিত ছিলেন।