মঙ্গলবার   ১৯ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ৫ ১৪৩১   ১৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রোহিঙ্গা ইস্যুতে আন্তর্জাতিক চাপ বাড়ানোরা আহবান রাষ্ট্রপতির

এস এম সাব্বির খান, জাগরণ ডেস্ক

দৈনিক জাগরণ

প্রকাশিত : ০৪:০১ পিএম, ২৬ অক্টোবর ২০১৮ শুক্রবার

ছবি সংগৃহিত

ছবি সংগৃহিত

নির্যাতিত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর জন্য স্থায়ী শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করে নিজ দেশে ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমারের ওপর চাপ জোরদারে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ সহ সকল আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। বৃহস্পতিবার (২৫ অক্টোবর) সুইজারল্যান্ডের জেনেভার গ্রান্ড হোটেল কেমপিনস্কিতে প্লিনারি হলে ২০তম হোমল্যান্ড অ্যান্ড গ্লোবাল সিকিউরিটি ফোরামের ‘আন্তর্জাতিক সম্পর্ক দৃঢ় করা, শান্তি ও নিরাপত্তায় ঝুঁকি’ শীষর্ক অধিবেশনের উদ্বোধনী দিনে দেয়া বক্তব্য তিনি এ আহ্বান জানান। 

বাংলাদেশে  ১১ লাখ রোহিঙ্গার আশ্রয় নেয়ার ঘটনাকে সাম্প্রতিক বিশ্বের সবচেয়ে আলোচিত ঘটনা উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, আন্তর্জাতিক সমস্যা আন্তর্জাতিকভাবেই সমাধান করতে হবে। তিনি মিয়ানমারে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িতদের শনাক্ত করে সব ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বন্ধ এবং সমস্যা সমাধানে সকল আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান।

রাষ্ট্রপতি বলেন, বাংলাদেশের সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও অসহায় রোহিঙ্গা শরণার্থীদের খাদ্য, বস্ত্র, আশ্রয়, স্বাস্থ্যসেবা, শিশুযত্ন এবং সবকিছুর ঊর্ধ্বে উঠে আমরা আমাদের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবো।  মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের সংকট, কোনো আন্তর্জাতিক সমস্যা সমাধানে বিশ্ব সম্প্রদায়ের জন্য একটি ‘টেস্ট কেস’ এবং শান্তি ও নিরাপত্তা প্রশ্নে ভবিষ্যৎ আন্তর্জাতিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে একটি অনুকরণীয় আদর্শ হতে পারে। এ সময় তিনি আন্তর্জাতিক সংস্থার সহায়তা প্রদানে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ওয়ার্ল্ড ইনভেস্টমেন্ট ফোরামে যোগ দিতে গত সোমবার (২২ অক্টোবর) থেকে পাঁচদিনের সরকারি সফরে জেনেভায় রয়েছেন।


তিনি মিয়ানমারের ঘটনায় জাতিসংঘ প্রতিবেদনের উল্লেখ করে বলেন, সেখানে গণহত্যা এবং মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের ঘটনা ঘটেছে। এছাড়াও তিনি  ধংসাত্মক অস্ত্র বিস্তারের কারণে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ বেড়ে যাওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

আবদুল হামিদ বলেন, স্থানীয় অথবা আঞ্চলিক বিরোধ বিশ্বের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ছে এবং দুঃখজনকভাবে বিরোধিতাকারীদের ওপর চাপ সৃষ্টির পরিবর্তে দেশগুলোকে বিভিন্ন অবস্থান নিতে দেখা যাচ্ছে।

রাষ্ট্রপতি সাইবার হামলা, জলবায়ু পরিবর্তন এবং এর বিরূপ প্রভাব, প্রাকৃতিক বিপর্যয়, পানি সংকট, অসহনীয় সামাজিক বিরোধের মতো নতুন নিরাপত্তা হুমকি মোকাবিলায় সম্মিলিত প্রচেষ্টার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, শান্তি এখন নেই বললেই চলে এবং নিরাপত্তার চিরাচরিত সজ্ঞাও যেন বদলে যাচ্ছে। এখন আন্তর্জাতিক রাজনীতি আরও প্রভাবিত করা হচ্ছে।

রাষ্ট্রপতি বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লব অমাদের উন্নয়নের অনন্য সম্ভাবনা উপহার দিয়েছে। একই সময়ে মানবতা আজ বিপর্যস্ত। ২০৫০ সালের মধ্যে ৯০০ কোটির বেশি জনসংখ্যার জন্য খাদ্য সরবরাহে বিশ্ব এখনও প্রস্তুত নয়।

ক্রান মোনতানা ফোরামের অবৈতনিক চেয়ারম্যান এবং প্রতিষ্ঠাতা জিন পল কার্টেরন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। অ্যামেনিয়া আরমিনের প্রেসিডেন্ট সারকিসিয়ান, মন্টেনিগ্রোর প্রেসিডেন্ট ফিলিপ ভুজানোভিস এবং লেসোথোর প্রধানমন্ত্রী টমাস মোতসোয়া হেতাবানে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন। রাষ্ট্রপতি পরে অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আসা বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপতি ও সরকার প্রধানদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।