উন্নয়নের ধারায় শেখ হাসিনা সরকারের ধারাবাহিকতা চান সৌদি বাদশাহ
অনলাইন ডেস্ক
দৈনিক জাগরণ
প্রকাশিত : ০৮:১৬ এএম, ১৮ অক্টোবর ২০১৮ বৃহস্পতিবার
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকে সৌদি আরবের বাদশাহ সালমান বাংলাদেশের চলমান উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষার ওপর জোর দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র সচিব মো.শহীদুল হক।
সৌদি রাজপ্রাসাদে প্রধানমন্ত্রীর জন্য ১৪ রকম খাবার বাংলাদেশে আরও সৌদি বিনিয়োগ চান প্রধানমন্ত্রী রিয়াদে বাংলাদেশের নতুন দূতাবাস ভবনের উদ্বোধন বুধবার স্থানীয় সময় দুপুরে রিয়াদের রাজপ্রাসাদে শেখ হাসিনার সঙ্গে বাদশাহ সালমানের বৈঠক হয়। পরে তারা মধ্যাহ্ন ভোজে অংশ নেন। পররাষ্ট্র সচিব বৈঠকের বিষয়ে সাংবাদিকদের বলেন, “বাদশাহ বলেছেন উন্নয়েনর ধারাবাহিকতা দরকার। এতে তো বোঝা যায়, তিনি প্রধানমন্ত্রীর ধারাবাহিকতার কথা বলেছেন। এটা হলে বাংলাদেশ ও সৌদি আরবের মধ্যে সম্পর্ক বৃদ্ধি পাবে।”
সৌদি আরবে চলতি বছর এটি প্রধানমন্ত্রীর দ্বিতীয় সফর। গত এপ্রিলে সৌদি আরব, বাংলাদেশসহ ২২ দেশের সামরিক মহড়া ‘গাল্ফ শিল্ড-১’ এর সমাপনী অনুষ্ঠানে যোগ দিতেও সৌদি আরবে গিয়েছিলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।
বাদশাহ প্রধানমন্ত্রীকে বলেছেন, ‘এটি আপনার ঘর এবং আপনাকে সব সময় এখানে স্বাগতম।’ বাদশাহ বলেন, সৌদি আরব ও বাংলাদেশ দু’টি ভ্রাতৃপ্রতিম দেশ এবং ধর্মের পাশাপাশি আমরা বিভিন্ন বিষয়ে একই বন্ধনে বাঁধা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাদশাহর আথিয়েতার জন্য ধন্যবাদ জানালে সালমান বিন আবদুল আজিজ আল সৌদ বলেন, এটা তাঁর দায়িত্ব। তিনি বলেন, দু’দেশের মধ্যকার সম্পর্ক অনেক উন্নত হয়েছে এবং উল্লেখ করেন যে অর্থনীতি, সংস্কৃতি, প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তার ক্ষেত্রে সহযোগিতা আরও জোরদারের সুযোগ রয়েছে।
বাদশাহ বলেন, ‘আমরা যৌথভাবে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়ছি।’ তিনি আশা প্রকাশ করেন যে এটা অব্যাহত থাকবে এবং এটি দুই ভ্রাতৃপ্রতিম দেশের জনগণের অভিন্ন আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন। প্রধানমন্ত্রী প্রতিরক্ষাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা জোরদারের প্রস্তাব করলে বাদশাহ প্রস্তাবগুলো যথাযথ বলে অভিহিত করেন।
বাদশাহ বলেন, ‘আনুষ্ঠানিক পর্যায়ে আলোচনার পর এক্ষেত্রে পদক্ষেপ নেব।’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সৌদি আরবে বিপুলসংখ্যক বাংলাদেশি কাজ করছে উল্লেখ করে এ ক্ষেত্রে তাদের দেখাশোনা করার জন্য সৌদি সরকারকে ধন্যবাদ জানান। সৌদি বাদশাহ সেদেশে বসবাসরত বাংলাদেশিরা সৌদি অর্থনীতিতে বিরাট অবদান রাখছে উল্লেখ করে বলেন, তাদের দেখভাল করা আমার দায়িত্ব।
প্রধানমন্ত্রী সৌদি বাদশাহকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান। পররাষ্ট্রসচিব বলেন, বাদশাহ আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছেন। তিনি বলেন, বাদশাহ ফিলিস্তিনিদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশের ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করে বলেছেন, ‘বাংলাদেশ সব সময় মুসলিম উম্মাহর প্রশ্নে লড়াই করে। বিশেষ করে ফিলিস্তিন ইস্যুতে।’
বাদশাহ বলেন, ‘এ ইস্যুতে বাংলাদেশের অবস্থান সব সময় সম্মানজনক এবং এজন্য আমরা অত্যন্ত কৃতজ্ঞ।’
শহীদুল হক বলেন, সৌদি বাদশাহর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর এবারের বৈঠকও ‘অত্যন্ত সৌহাদ্যপূর্ণ ও উষ্ণ পরিবেশে’ হয়েছে। “সালমান বিন আব্দুল আজিজ আল সৌদ মানবিক গুণাবলী নিয়ে বলেছেন যে, সব মুসলমানের প্রতি তার কর্তব্য রয়েছে। ফিলিস্থিনের প্রতি বাংলাদেশের সমর্থনেরও প্রশংসা করেছেন তিনি।”
পররাষ্ট্র সচিব জানান, বাদশাহ তার প্রাসাদের গাড়ি বারান্দায় এসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে স্বাগত জানিয়ে ভেতরে নিয়ে যান। “তিনি প্রধানমন্ত্রীকে বলেছেন, ‘এটা আপনার বাড়ি, আপনি সব সময় এখানে আমন্ত্রিত’।”
শহীদুল হক বলেন, মধ্যাহ্ন ভোজের সময় বাদশাহ নিজে প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে খাবার ঘরে যান। তিনি সৌদি আরবের বিভিন্ন ঐতিহ্যবাহী খাবার দেখিয়ে সেগুলোর নাম প্রধানমন্ত্রীকে বলেন।
বৈঠকে বাদশাহ সালমান অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক, প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা খাতে দুই দেশের সহযোগিতার সুযোগগুলো আরও কাজে লাগানোর ওপর জোর দেন বলে জানান পররাষ্ট্র সচিব।
পরে রিয়াদে বাংলাদেশ দূতাবাসের নতুন ভবনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নিজেও সৌদি বাদশাহর সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে কথা বলেন।
তিনি বলেন, “সৌদি আরবের সঙ্গে আমাদের চমৎকার সম্পর্ক। খুব ভালো আলোচনা হয়েছে। সৌদি বাদশাহকে সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছি। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশে আসবেন।”