Malda
তদন্তের ভয়ে তৃণমূলের প্রধান পঞ্চায়েতের গুরুত্বপূর্ণ নথি লোপাট
দেবাশীষ পাল, মালদা
পুষ্পপ্রভাত পত্রিকা
প্রকাশিত : ১০:২৪ পিএম, ২৮ ডিসেম্বর ২০২২ বুধবার
মালদাঃ- কাক ভোরে তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েত দপ্তর থেকে বেরিয়ে এলো নথি ভর্তি ভ্যান।এত সকালে পঞ্চায়েতে ভ্যান দেখে সন্দেহ হয় বাসিন্দাদের।পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষকে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই শুরু হয় তুলকালাম।ভ্যান আটকে দেয় গ্রামবাসীরা।বুধবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে মালদহের চাঁচল-২ নং ব্লকের তৃণমূল পরিচালিত ভাকরি গ্রাম পঞ্চায়েতে।বিরোধীদের অভিযোগ,তদন্তের ভয়ে তৃণমূলের প্রধান পঞ্চায়েতের গুরুত্বপূর্ণ নথি লোপাট করছে।এরা কেউ বাঁচবে না।একশো দিনের কাজে দুর্নীতি ও আবাস যোজনায় স্বজনপোষণে জর্জরিত তৃণমূল। কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি রাজ্য জুড়ে তদন্ত প্রক্রিয়া শুরু করেছে।যদিও বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছে তৃণমূল নেতৃত্ব।
খবর সংগ্রহ করতে গেলে তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যরা তেড়ে আসে সংবাদমাধ্যমের কর্মীদের উপর।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে,বুধবার সকালে পঞ্চায়েত দপ্তরের সামনে দাড়িয়ে রয়েছে ভ্যান।পঞ্চায়েত কর্মীর মদতে সেই ভ্যানে তোলা হচ্ছিল বস্তা ভর্তি নথিপত্র ও ফাইল।সেখানে বস্তা দেখা যায়,জবকার্ড আবেদনকারীর নথি,আবাস যোজনা প্রকল্পের নথি ও একাধিক টেন্ডারের নথি দেখতে পাওয়া যায়।সেগুলি বস্তায় ভর্তি করে পাচার করা হচ্ছিল বলে বাসিন্দাদের অনুমান।সন্দেহ হতেই তক্ষনাৎ বাসিন্দাদের একাংশ ভ্যানটিকে আটকে রাখেন।যদিও পঞ্চায়েত কর্মী সুবোধ ঘোষের দাবি,সেই সব নথিপত্র নষ্ট হয়েছে।পঞ্চায়েতকে আবর্জনা মুক্ত করতেই সেগুলি ফেলার উদ্দেশ্যে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল।
স্থানীয় বাসিন্দা গোলাম রসুলের দাবি,সরকারি কাগজপত্র পচে গেলেও বিক্রি বা ফেলার নিয়ম নেই।কিন্তু পঞ্চায়েত প্রধান সেগুলি বাইরে পাচারের চেষ্টা চালাচ্ছিল।
আরেক বাসিন্দা সালিমু্দ্দিন বলেন,আবাস যোজনার নথি থেকে শুরু করে জবকার্ডের নথি সবকিছু অন্যত্র সরানো হচ্ছিল।আমরা সেগুলি আটকেছি।
যদিও ভাকরি গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান সুমিত দাস দাবি করে বলেন,সেগুলি নষ্ট হয়ে যাওয়া কাগজপত্র।পঞ্চায়েতের জঞ্জাল সাফাই করার জন্যই সেগুলি বের করা হচ্ছিল।
আর এই ঘটনার খবর চাউর হতেই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর।
মালদা জেলা বিজেপি কমিটির সদস্য সুভাষ কৃষ্ণ গোস্বামী কটাক্ষ করে বলেন,গত চারবছরে তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েতগুলি একশো দিনের প্রকল্পে ডাকাতি করেছে।হর্টিকালচারে কলাগাছ না লাগিয়ে টাকা আত্মসাৎ থেকে শুরু করে পুকুর খনন না করেই টাকা আত্মসাৎ করেছে।দুর্নীতিতে জর্জরিত হয়ে পড়েছে এরা।ইতিমধ্যে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী বিভাগ সব জায়গায় হানা দিচ্ছে।নিজেদের বাঁচাতে প্রধানরা তদন্তের ভয়ে নথি সরাতে ব্যস্ত।মানুষ তা মেনে নিবেনা।ভাকরিতে সাধারণ মানুষের কাছে ধরা পড়েছে তৃণমূলের প্রধান।
যদিও মালদা জেলা পরিষদের সভাধিপতি তথা তৃণমূল নেতা এটিএম রফিকুল হোসেনের দাবি,পঞ্চায়েত স্বচ্ছভাবেই চলছে।বিজেপির কোনো অস্তিত্ব নেই চাঁচলে।কোন নথি বের করা হচ্ছিল,পঞ্চায়েতে খোঁজ নিচ্ছি।তবে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে দুর্ব্যবহার কাম্য নয়।