রেস্তোরাঁর রান্নাঘর দৃশ্যমান করতে নির্দেশনা
জাগরণ ডেস্ক
পুষ্পপ্রভাত পত্রিকা
প্রকাশিত : ০২:৫২ পিএম, ৮ নভেম্বর ২০১৮ বৃহস্পতিবার
রাজধানীর রেস্তোরাঁগুলোতে নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে রেস্তোরাঁগুলোর রান্নাঘরকে দৃশ্যমান করার নির্দেশনা দিয়েছে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ। নির্দেশনার অংশ হিসেবে রেস্তোরাঁর রান্নাঘরগুলোকে সিসি টিভিতে দৃশ্যমান করতে হবে।তবে সিসি ক্যামেরার বিকল্প হিসেবে অবশ্যই রান্নাঘরগুলোকে কাচ দিয়ে ঘেরাও করতে হবে।
এদিকে রেস্তোরাঁয় নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে অক্টোবর মাসজুড়ে রাজধানীতে চলেছে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান।
এ ব্যাপারে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়,অক্টোবর মাসের পরিচালিত অভিযানের মধ্যে ধানমন্ডির জিনজিয়ান রেস্টুরেন্ট, হান্ডি,ভাগ্যকুল মিষ্টি,ক্যালিফোর্নিয়া ফ্রাইড চিকেন (সিএফসি), মিরপুর ইয়ান তাই রেস্টুরেন্ট, পিজ্জার চেইন শপ পিজা ইন,শ্যামলি লিংক রোডের প্রিন্স রেস্টুরেন্ট,চিলিজ রেস্টুরেন্ট অভিযান উল্লেখযোগ্য।
রেস্তোরাঁগুলোতে অভিযান চালিয়ে পাওয়া গেছে নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর রান্নাঘর।এসব প্রতিষ্ঠানকে মোট ৫৪ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
অভিযান প্রসঙ্গে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তুষার আহমেদ বলেন, ‘এই অভিযান চলতে থাকবে।নভেম্বর মাসেও ১০টি অভিযানের পরিকল্পনা করা আছে। এছাড়া, আগে যেসব প্রতিষ্ঠানে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে, তাদের বর্তমান অবস্থা দেখার জন্যও অভিযান পরিচালনা করা হবে। দ্বিতীয়বার যদি দেখা যায় অবস্থা আগের মতোই তাহলে নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দেওয়া হবে।এরপরও না মানলে প্রতিষ্ঠানগুলো সিলগালা করে দেওয়া হবে।’
জানা গেছে, রেস্তোরাঁয় স্বাস্থ্যকর পরিবেশ নিশ্চিত করতে স্টিকার ব্যবস্থা প্রণয়ণ এবং গ্রিন জোন স্থাপন করতে যাচ্ছে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ। এর অংশ হিসেবে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ আগামী ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে মতিঝিল,দিলকুশা,গুলিস্তান,তোপখানা এবং সচিবালয়ের আশপাশের খাবারের হোটেলগুলোতে সবুজ ,হলুদ এবং লাল স্টিকার লাগানোর কাজ শুরু করতে যাচ্ছে।
সেখানকার সব হোটেলের রান্নাঘর বাইরে থেকে দৃশ্যমান করা হচ্ছে। নতুন এ ব্যবস্থায় সবুজ,হলুদ ও লাল রঙের স্টিকারই নির্ধারণ করে দেবে কোন রেস্তোরাঁ কতটা স্বাস্থ্যসম্মত।ফলে একজন ভোক্তা সহজেই স্বাস্থ্যসম্মত রেস্তোরাঁর সন্ধান পাবেন।‘গ্রিন জোন ব্যবস্থা’র প্রধান শর্ত হবে- রেস্তোরাঁর রান্নাঘরের পরিচ্ছন্নতা। এজন্য রান্নাঘরে স্বচ্ছ কাচ ব্যবহার করতে হবে,যাতে ভোক্তা বাইরে থেকে ভেতরের পরিবেশ দেখতে পারেন।এছাড়া,হাত ধোয়ার জায়গা থেকে বাথরুমের অবস্থান,সাবান ও তরল সাবানের পৃথক ব্যবহার,রেস্তোরাঁ পরিষ্কার রাখার প্রক্রিয়ায় ব্যবহৃত সরঞ্জাম,তোয়ালে বা ন্যাকড়ার পরিবর্তে টিস্যুর ব্যবহার,খাবার পরিবেশনকারী ও প্রস্তুতকারীদের পরিচ্ছন্নতার বিষয়টি অন্যতম। এসব শর্তের সবক’টি পূরণ করতে পারলেই কেবল কোনও রেস্তোরাঁ পাবে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের হলোগ্রামযুক্ত সবুজ স্টিকার।সেটি রেস্তোরাঁর সামনে লাগানো থাকবে।
কোনও শর্ত পূরণে ব্যর্থ হলে নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দেওয়া হবে।সে সময় পর্যন্ত লাগানো থাকবে হলুদ স্টিকার।নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেও শর্ত পূরণে ব্যর্থ হলে রেস্তোরাঁটিকে লাল স্টিকার দিয়ে চিহ্নিত করে দেওয়া হবে।
এ বিষয়ে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সদস্য এবং অতিরিক্ত সচিব মাহবুব কবির বলেন,‘২৪ দিনের মধ্যে সব ঠিক হয়ে যাবে।সবাইকে রান্নাঘর দৃশ্যমান করতে হবে।হয় কাঁচ,অথবা সিসি ক্যামেরা এবং মনিটর।এর কোনও বিকল্প নেই। এরই মধ্যে যেসব হোটেলে মোবাইল কোর্ট বসানো হয়েছে,সবগুলোকে একমাসের সময় দিয়ে নোটিশ দেওয়া হচ্ছে।গ্রিন স্টিকার পাবার যোগ্যতা অর্জন করতে না পারলে স্থায়ী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।কিচেন দৃশ্যমান করা ছাড়া কোনও খাবার দিয়ে হোটেল চালানো যাবে না।সিলগালা করে দিলে কোনও তদ্বিরে কাজ হবে না।আমরা আমাদের কাজ করে যাবো।এটি হবে চলমান প্রক্রিয়া।’
সাইসে/আরএস/সাইসে