খবরের জেরে, দূরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত মেয়ের পাশে প্রশাসন l
পুষ্পপ্রভাত পত্রিকা
প্রকাশিত : ০৫:৫৬ পিএম, ৭ জুন ২০২১ সোমবার
খবরের জেরে, দূরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত মেয়ের পাশে প্রশাসন, আচমকাই হাওয়াই চটি পায়েই অসহায় পরিবারের বাড়িতে হাজির মহকুমা শাসক, করে দিলেন স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের ব্যবস্থা
মালদা;০৭জুন: খবরের জেরে নড়েচড়ে বসল প্রশাসন।জটিল রোগে আক্রান্ত দিনমজুরের মেয়ের পাশে মহকুমা শাসক।করে দিলেন স্বাস্থ্য সাথী কার্ড এর ব্যবস্থা।সাথে দিলেন সবরকম সাহায্যযের আশ্বাস। মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর-২ নং ব্লকের সুলতান নগর গ্রাম পঞ্চায়েতের ছত্রক গ্রামের হতদরিদ্র দিনমজুর নুর সালামের বড় মেয়ে নুর ফাতেমা (৯), এক বছর ধরে জটিল রোগে আক্রান্ত।মেয়ের চিকিৎসা প্রায় এক বছর ধরে চালিয়েছে পরিবার। কিন্তু বর্তমানে লকডাউনে টাকার অভাবে থেমে গেছে চিকিৎসা।চিকিৎসার অভাবে মৃত্যু শয্যায় রয়েছে নুর ফাতেমা।
সেই খবর প্রচারিত হয় বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে।সরকার এবং প্রশাসনের কাছে সাহায্যের আর্জি জানিয়েছিল ওই পরিবার।অবশেষে খবরের জেরে অসহায় ওই পরিবারের পাশে প্রশাসন। সোমবার হঠাৎই হাওয়াই চটি পায়ে নিজের দপ্তর থেকে সোজা নূর সালামের বাড়িতে গিয়ে হাজির হয় চাঁচল মহাকুমার মহকুমা শাসক সঞ্জয় পাল। সঙ্গে ছিলেন হরিশ্চন্দ্রপুর ২ নং ব্লকের বিডিও পার্থ দাস, চাঁচল সুপার স্পেশালিস্ট হাসপাতালের সুপার জয়ন্ত বিশ্বাস। পরিবারের লোকের সঙ্গে কথা বলেন। স্বাস্থ্য সাথী কার্ড এর ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। অসুস্থ মেয়েটিকে দেখেন। সব রকম ভাবে ওই পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন। এদিকে প্রশাসনিক কর্তাদের পাশে পেয়ে আশ্বস্ত হয়েছে পরিবারের লোকজন।
নুর ফাতেমার বাবা নূর সালাম বলেন,"আজ বিডিও, এসডিও এবং সুপার এসেছিলেন।স্বাস্থ্য সাথী কার্ড এর ব্যবস্থা করে দিয়েছেন।আমাদের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন।উনাদের পাশে পেয়ে আমরা খুশি।"
চাঁচল মহকুমা শাসক সঞ্জয় পাল বলেন,"হরিশ্চন্দ্রপুর ২ নং ব্লকের ছত্রক গ্রামের অসুস্থ এই বাচ্চাটির কথা জানতে পেরেছিলাম। আজ এসে তাদের সঙ্গে দেখা করলাম। চাঁচল সুপার স্পেশালিস্ট সুপার এবং বিডিও ছিলেন।তাদের স্বাস্থ্য সাথী কার্ড এর ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে । আজ যাওয়ার কথা ছিল পরিবারের যেতে পারে নি। কাল যাবে। মালদা যাওয়ার ব্যবস্থাও করে দিয়েছি।"
হরিশ্চন্দ্রপুর ২ নং ব্লকের বিডিও পার্থ দাস বলেন," আমার ব্লকের অধীনে ছত্রক গ্রামে অসুস্থ এই বাচ্চাটির কথা শুনেছিলাম। আজ এসডিও এবং সুপার সাহেবের সঙ্গে আমিও আসি। আমরা সব রকম ভাবে এই পরিবারের পাশে আছি। কাল এই পরিবার স্বাস্থ্য সাথী কার্ড আনতে মালদা যাবে। সঙ্গে আমাদের একজন প্রশাসনিক কর্তাও থাকবে।"
চাঁচল মহাকুমা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের সুপার, জয়ন্ত বিশ্বাস বলেন অসুস্থ বাচ্চা মেয়েটির শারীরিক পর্যবেক্ষণ করেন। তিনি বলেন," ওর নিউরোলজিক্যাল প্রবলেম রয়েছে। আরেকবার সিটিস্ক্যান এবং ইসিজি করতে হবে। সঠিক ভাবে পরীক্ষা করে পরীক্ষার রিপোর্ট অনুযায়ী চিকিৎসা করতে হবে। আমি আমাদের ডাক্তারদের সঙ্গে আলোচনা করবো। ওদের কার্ডের ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে।"
প্রশাসনিক কর্তাদের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছে এলাকাবাসী। নূর সালাম একজন হতদরিদ্র দিনমজুর। তার ক্ষমতা ছিল না মেয়ের বাইরে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করার। তাই তারা প্রশাসনের কাছে আর্জি জানিয়েছেল। প্রশাসনিক কর্তাদের পাশে পেয়ে হাসি ফুটেছে তাদের মুখে।