শুক্রবার   ১৫ নভেম্বর ২০২৪   কার্তিক ৩০ ১৪৩১   ১৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কাছাড় পেপার মিল পুনরায় চালু ও কর্মচারীদের বকেয়া বেতন প্রতিবাদ

আবুল সাহিদ , শিলচর আসাম

পুষ্পপ্রভাত পত্রিকা

প্রকাশিত : ১০:৫৮ পিএম, ৯ জানুয়ারি ২০২১ শনিবার

আগামী বিধানসভা নির্বাচনের আগে কাছার পেপার মিল পুনরায় চালু করে কর্মচারীদের বেতন পরিশোধ দাবিতে পাচগ্ৰামে কর্মচারীদের প্রতিবাদ। দীর্ঘ বিরতির পর শনিবার তারা আবার আন্দোলনের রূপরেখা তৈরী করতে বাধ্য হন। কেন্দ্র রাজ্য সরকার বারবার ভূয়া প্রতিশ্রুতি দিয়ে আজও পালন করে নি। এর মধ্যে অনাহারে অর্ধাহারে ৭৯ কর্মচারী মৃত্যু হয়েছে। তারপর ও শাসক দলের নেতা মন্ত্ৰীদের গা লড়েনি। এবার আসন্ন নির্বাচন এর প্রতিফলন ঘটবে। আগামী ১৬ ও ১৮ জানুয়ারি তারিখে কাগজ কলের মেইন গেইটের সন্মুখে বিক্ষোভ প্রদর্শন করবে । তবে কর্মচারীরা বেতন হীন ভাবে, অভুক্ত অবস্থায় বিনা চিকিৎসায়, দিন যাপন করছেন। অসমে কোটি কোটি টাকা ব্যয় করে বিশ্ব বিনিয়োগ সন্মেলন অনুষ্ঠিত হল। কিন্তু নিজ রাজ্যের এক মাত্র বৃহৎ পেপার উদ্যোগ খোলার ব্যাবস্থা করছে না সরকার। প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে জড়িত প্রায় ২ লাখ মানুষের জীবনে অন্ধকার নেমে এসেছে।শিলচরের বিজেপি সাংসদ ড. রাজদীপ রায় লোকসভায় পেপার মিল দুটির কর্মহীন শ্রমিকদের দুরবস্থার কথা তুলে ধরেন অবিলম্বে মিল দুটি খোলার জোরাল দাবি জানিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের মন গলেনি। এহেন পরিস্থিতিতে রাজ্য এবং কেন্দ্রের বিজেপি সরকার শ্রমিকদের সঙ্গে বিশ্বাস ঘাতকতা করেছে বলে সরাসরি অভিযোগ করল পেপার মিল দুটির সংগঠন জয়েন্ট একশন কমিটি অফ রেকগনাইজ ইউনিয়নের নেতারা। ক্যাজুয়াল কর্মী রয়েছে আরও সহস্রাধিক। তাদের উপার্জন বন্ধ ৩৮ মাস। অথচ কিছুদিন আগেই কোটি কোটি টাকা উড়িয়ে সম্পন্ন হয়েছে নমামি বরাক নদী উৎসব। সেটি কীভাবে সম্পন্ন হলো? এর আগে হয়েছে নমামি ব্রহ্মপুত্র। সেখানেও কোটি কোটি টাকা উড়েছে।এইচপিসির জনৈক কর্মী অশ্রুসিক্ত নয়নে জানান বিজেপি সরকার কেন্দ্রে ও রাজ্যে ক্ষমতা দখলের প্রাকলগ্নে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল কাছাড় পেপার মিল আবার চালু করবে । দেওয়া হবে ওদের বকেয়া পাওনা কিন্তু আশ্চর্যজনক ভাবে অসমের মুখ্যমন্ত্রী ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী সব জেনেশুনেও আজ এইচপিসি চালু করা তো দূরের কথা ওদের বকেয়া পাওনা দিতে চায়নি ।আজ রাজ্যের শাসক দলের নেতামন্ত্রীরা নিজেদের নিয়ে ব্যস্ত কিন্তু একবারও কি ভেবেছেন এইসব পরিবারের কথা। তারা অভিযোগ করেন অসমকে আর্থিকভাবে, কর্মসংস্থান, শিল্প বিনিয়োগে এগিয়ে নিয়ে যাবার জন্যে ‘নাগরিকত্ব আইন’ বিরোধী আন্দোলনকারীদের প্রতি আহ্বান জানান। প্রেস ক্লাবে এদিন ‘নাগরিকত্ব আইন’ বিরোধী আন্দোলনে নিহতদের স্মৃতিতে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন ইউনিয়নের নেতারা।এদিকে অধিকাংশ কর্মী ও তাদের পরিবার পরিজনকে অনাহার,অর্ধাহারে দিন কাটাতে হচ্ছে। ছেলে-মেয়ের পড়াশোনার খরচ পর্যন্ত চালাতে পারছেন না কর্মীরা। কাগজ কলের কর্মীরা ছেলে-মেয়ের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্ৰচণ্ড দুশ্চিন্তায়। কাগজ কল দুটোর বিভিন্ন কর্মী সংস্থা বলেছে,চরম অর্থাভাবের মুখে পড়েই বিশ্বজিৎ দাস আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে বাধ্য হয়েছিলেন ।ইউনিয়ন নেতা মানবেন্দ্র চক্রবর্তী বলেন, এইচপিসি-র অধীন কেরালার কুট্টাযাম এ এক বন্ধ পেপার মিল কেরালা সরকার আগাম ২৫ কোটি টাকা দিয়ে অধিগ্রহণ করেছে, বাকি টাকা এইচপিসি দিতে রাজি হয়েছে, গত ২৫ নভেম্বর অধিগ্রহণ এর কথা জানিয়েছে। অথচ অসমের দুটি পেপার মিলের প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি জলের দামে বিক্রি করে দিতে চাইছে সরকার।কাগজকলের কর্মীরা মাত্র কুড়ি কোটি টাকা ধার চেয়েছিল বিজেপি সরকারের কাছে, কয়েকমাসের মাইনের জন্য। বেঁচে থাকতে হবে তো। কিন্তু সরকারের মন গলেনি।