বরাদ এর চাহিদা কমেছে,পেশা বদলাচ্ছে কুমোরেরা
পুষ্পপ্রভাত পত্রিকা
প্রকাশিত : ০২:২৩ পিএম, ৭ ডিসেম্বর ২০২০ সোমবার
অভিজিৎ মন্ডল, ফরাক্কা:-ফরাক্কার নয়নসুখ গ্রামের কুমোররা আজ আর মাটির ভাঁড় বানাতে পারছেন না। একসময় গ্রামের কুমোরদের হাতে তৈরি মাটির থালা বাটি চায়ের ভাঁড় কলসির কদর ছিল দূর-দূরান্তে। কিন্তু বর্তমানে কাগজের থালা বাটি চায়ের কাপ ইত্যাদি নানা চমকদার উপকরণের বাজার ছেয়ে গেছে।এইসব কাগজের সামগ্রিক দাম তুলনামূলক কম।মাটির তৈরি সামগ্রী দাম না মেলায় পেশা বদলাচ্ছে গ্রামের অনেকেই। পেশাকে বাঁচিয়ে রাখতে সরকারি সাহায্যের আবেদন চাইছেন তারা। গ্রামে যাওয়ার পথে চোখে পড়ল নদীর তীর বরাবর বিস্তীর্ণ নীলাকাশ ও ধুধু প্রান্ত। যতদূর চোখ যায় বাল উত্তর যেন রোদের ঝলকানিতে ঝিকমিক করছে। কিছুটা এগোতেই নজরে পড়ল মাটির তৈরি চায়ের ভাঁড় সহ অন্যান্য মাটির সামগ্রী। হাজার হাজার চায়ের ভাঁড় তৈরি করে গ্রামের গঙ্গা লাগোয়া নদীর তীরে রোদের ঝলকানিতে শুকোনোর কাজে ব্যাস্ত কুমোররা । নয়নসুখ গ্রামের কুমোররা একসময় নিজেদের মাটির কাজের জন্য বিখ্যাত ছিলেন ।হাতের তৈরি বিভিন্ন থালা-বাটি চায়ের ভাঁড় কলসি ইত্যাদি তৈরি হতো এখানে। শিল্পীদের হাতে তৈরি মাটির সামগ্রী বিভিন্ন জায়গায় যেত । বর্তমানে গ্রামের ২২ থেকে ২৫ ঘর কুমোর বাবা- ঠাকুরদের পেশাকে বয়ে নিয়ে চলেছেন ।আর এই ভাবেই দিন কাটাচ্ছেন দু'মুঠো খেয়ে।গ্রামের কুমোর শিব শংকর পাল বলেন বাবা শ্যামাপদ পাল মারা যাওয়ার পর থেকে আমি এগুলো তৈরি করেছি। মনে পড়ে এক সময় প্রায় ৪০০ ঘর কোমর ছিল এলাকায়। মালের অনেক অর্ডার হতো ।এখান থেকে অনেক মাটি সামগ্রী বাইরে যেত। কিন্তু এখন প্লাস্টিকের থালা কাগজের কাপ প্লেট ইত্যাদি নানা চমকদার উপকরণে বাজার ছেয়ে গেছে। ফলে কদর কমেছে এই সমস্ত মাটির সামগ্রীর। শিল্পীরা অনেকেই এই কাজ ছেড়ে দিয়েছেন। বাইরে কাজের তাগিদে চলে গেছেন। নয়তো রাজমিস্ত্রি বা কাঠমিস্ত্রির পেশা ধরেছেন। বর্তমানে আমরা ফরাক্কার হাজারপুর ডিলারকে অর্ডার সাপ্লাই দিই। সেখান থেকে ধুলিয়ান,অরঙ্গবাদ,কালিয়াচক এ মাটির সামগ্রীর ইত্যাদি সাপ্লাই হয়।বর্তমানে হাজার ভাঁড়ের ৪০০ টাকার মতো আছে । ৬০ টাকায় বিক্রি হয় একটা চারি। মাটি মেখে রোদে শুকিয়ে ভাটিতে পুড়িয়ে অনেক মেহনত করতে হয়। কিন্তু দাম পাওয়া যায় না সঠিক। যদি সরকার আমাদের দিকে তাকাতো তাহলে হয়তো নয়নসুখ মাটির শিল্পটা অনেকটাই বেঁচে থাকতো।