রক্তে লেখা চিঠি পাঠালেন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেতা কর্মীরা
পুষ্পপ্রভাত পত্রিকা
প্রকাশিত : ০৭:৩১ পিএম, ৬ নভেম্বর ২০২০ শুক্রবার
মালদা ৬ নভেম্বর: পুজোর সময় ট্রাফিক আইন ভঙ্গ এবং কর্তব্যরত পুলিশ কর্মীকে নিগ্রহের অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের ব্লক সভাপতি, থানার সামনে গ্রেপ্তারির প্রতিবাদ করতে গিয়ে পুলিশের লাঠির ঘায়ে আহত হয়েছিলেন কর্মীরা, এবার সভাপতি জামিন পেতেই প্রতিবাদ শুরু করে দিলো তৃণমূল ছাত্র পরিষদ, রক্ত দিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখলো তারা কিন্তু এই আন্দোলনকে সমর্থন জানায় নি তৃণমূল ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি, তৃণমূল ছাত্র পরিষদের এই আন্দোলনকে কটাক্ষ করতে ছাড়ে নি বিজেপিও |
মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর-১ ব্লক টিএমসিপি সভাপতি জামিন পেতেই পথে নামলেন সংগঠনের কর্মীরা। বৃহস্পতিবার তৃণমূল পার্টি অফিসের পাশে রক্তে লেখা প্ল্যাকার্ড হাতে বসে পড়েন শতাধিক ছাত্র। প্রত্যেকের হাতে ছিল নিজেদের রক্তে লেখা প্ল্যাকার্ড। তাতে লেখা- প্রতিবাদ করায় সরকারি ক্ষমতার অপব্যবহার ও নির্দোষকে এরেস্ট, অসভ্য আচরণ, আমাদের ছাত্রযুবদের উপরে আমানবিকভাবে লাঠিচার্জের তীব্র প্রতিবাদ ও দোষীদের শাস্তি চাই, মা। মুখ্যমন্ত্রী তাদের অভাভাবক। ফলে তাকে মা সম্মোধন করেই বিচার চেয়ে পথে নেমেছেন তারা বলে জানিয়েছেন টিএমসিপি নেতাকর্মীরা। গত বিজয়া দশমীর রাতে গ্রেফতার হন টিএমসিপি ব্লক সভাপতি বিমান ঝাঁ। জামিন পেয়ে বুধবার তিনি বাড়ি ফিরেছেন। তারপরেই এদিন পথে নামে টিএমসিপি। শুধু পথে বসে প্রতিবাদই নয়। অভিভাবক মুখ্যমন্ত্রীর কাছে তারা বিস্তারিত জানিয়ে, আহত কর্মীদের ছবি, রক্তেলেখা প্ল্যাকার্ড দিয়ে চিঠিও পাঠাচ্ছেন মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর-১ ব্লক টিএমসিপি নেতা-কর্মীরা বলে সংগঠন সূত্রে জানানো হয়েছে।
বিমান ঝাঁ অবশ্য ওই আন্দোলনে যাননি।
দশমীর রাতে চাঁচলে আসছিলেন টিএমসিপি সভাপতি বিমান ঝাঁ। ওই সময় শান্তি মোড়ে নো এন্ট্রি থাকা নিয়ে পুলিশের সঙ্গে বচসা বাধে তার। পুলিশকে হেনস্থার অভিযোগে বিমানকে গ্রেফতার করা হয়। মিথ্যে মামলায় বিমানকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলে পরদিন থানায় বিক্ষোভ দেখানোর সময় টিএমসিপির উপরে পুলিশ লাঠিচার্জ করে। চারজন টিএমসিপি কর্মী জখম হন। জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা করায় বিমানের জেল হেফাজত হয়। বুধবার জামিন পেয়ে বিমান বাড়ি ফিরতেই এদিন টিএমসিপি আন্দোলনে নামে।
টিএমসিপি নেতা নীরু মহালদার, প্রণব দাসরা বলেন, বিমানকে মিথ্যে অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছিল। পরদিন অন্যায়ভাবে আমাদের লাঠিপেটাও করে। মুখ্যমন্ত্রী আমাদের অভিভাবক, মায়ের মতো। তাই উনার কাছে বিচার চেয়ে আবেদন জানিয়েছি।
হরিশ্চন্দ্রপুর তৃণমূল ছাত্রপরিষদের অভিনব এই আন্দোলন সারা ফেলে দিয়েছে রাজনৈতিক মহলে, নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী উনাদের অভিযোগে কি প্রতিক্রিয়া দেন সেটাই এখন দেখার বিষয় |
এই প্রসঙ্গে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের মালদা জেলা সভাপতি প্রসূন রায় বলেন, " পুলিশ অন্যায় ভাবে ছাত্রদের উপর লাঠিচার্জ করেছিল কিন্তু ওরা যেভাবে আবেগের বশবর্তী হয়ে রক্ত দিয়ে চিঠি লিখে প্রতিবাদ করছে তা সমর্থন যোগ্য নয় | "
বিজেপির জেলা সম্পাদক কিষান কেডিয়া কটাক্ষ করে বলেন, " মমতা ব্যানার্জিই তো পুলিশ মন্ত্রী" তাহলে ওরা মমতার বিরুদ্ধে আন্দোলন করছে আর পুলিশকে মারতে ওরাই শিখিয়েছে এখন নিজেরা মার খেয়ে আন্দোলন করছে যেটা হাস্যকর |
চাঁচলের এসডিপিও সজলকান্তি বিশ্বাস এই প্রসঙ্গে বলেন, সেদিন যা ঘটেছিল, তাতে থানায় একটি অভিযোগ দায়ের হয়। পুলিশ বিষয়টি খতিয়ে দেখছে।