নিমতৌড়ী হোমের আবাসিকারা আদা চাষে সাফল্য আনল
পুষ্পপ্রভাত পত্রিকা
প্রকাশিত : ০১:০৪ পিএম, ৬ নভেম্বর ২০২০ শুক্রবার
ওরা মানসিক প্রতিবন্ধী, এ রাজ্যের শুধু নয় ভিন রাজ্যের অনেকে আছে। ওরা যখন হোমে আসে তখন ওরা একেবারেই মানসিক ভাবে অসুস্থ ছিল। হোমে আসার পর কাউন্সিলিং, চিকিৎসা, প্রতিদিন যোগ অভ্যাস ও যতেœর মধ্যদিয়ে ওরা অনেকটাই স্বাভাবিক হয়। যাদের বাড়ীর ঠিকানা পাওয়া যায়নি তারা হোমে থেকে যায়। লকডাউনের ফলে দীর্ঘ সময় বাড়ী যাওয়ার প্রক্রিয়া বন্ধ। স্বাস্থ্য বিধি মেনে হোম ক্যাম্পাসের মধ্যে ওরা এবছর ৩৫০ প্যাকেটে আদা চাষ করে বিরাট সাফল্য আনতে পেরেছে। অভাবনীয় সাফল্য এই ৩৫০ প্যাকেট থেকে প্রায় ২০০ কে.জি. আদা উৎপাদন আশা করছে হোম কর্তৃপক্ষ। বাজার মূল্য প্রায় ৪০ হাজার টাকা, খরচ যা হয়েছে তা বাদে বাকী টাকা হোম আবাসিকদের হাতে তুলে দেওয়া হবে।
নিমতৌড়ী তমলুক উন্নয়ন সমিতি হোমের সাধারন সম্পাদক যোগেশ সামন্ত জানান আবাসিকদের সুস্থ করার পর ওদের কাজের ক্ষমতা দেখে কাউকে কৃষি ক্ষেত্রে, কাউকে বাগান পরিচর্যা, কাউকে রান্নাবান্না, কাউকে খাওয়ার পরিবেশন, কাউকে টেলারিং শেখানো ও কাউকে জুটের কাজে যুক্ত করা হয়। সেই ব্যবস্থাপনায় প্রায় ১০-১২ জন সবুজ বাহিনীর মাধ্যমে কৃষি ও বাগান পরিচর্যায় যুক্ত, তাদের হাতের ছোঁয়ায় এই আদা চাষে সাফল্য।
আদা চাষের জন্য মাটি তৈরী, বীজ দেওয়া জল দেওয়া সবক্ষেত্রে ওদের সাথে হোমের পক্ষ থেকে মধুমিতা বেরা ও ভারতি মাইতি তত্ত্বাবধানে থাকেন। এর মধ্যদিয়ে মানসিক সুস্থতা শ্রমের উপযুক্ত ব্যবহার ও দক্ষতা বৃদ্ধি করার সাথে সাথে ওদের আয় বাড়ানোই আমাদের একমাত্র লক্ষ উদ্দেশ্য যা কিনা ওরা বাড়ী ফিরে যাওয়ার সময় নিয়ে যেতে পারবে। কান্তি, প্রভাবতি, সরস্বতী, কাকলীরা এইভাবে হোমের প্রায় সব মেয়েদের কোন না কোন কাজে যুক্ত করার প্রয়াসে আদা চাষে সাফল্য। আগামী দিনে ১০০০ প্যাকেট আদা চাষ এবং লক্ষমাত্র ধার্য্য করা হয়েছে প্রায় ৫ কুইন্টাল।
শুধুমাত্র কৃষিক্ষেত্রে নয়, শহীদ মাতঙ্গিনী শিশু উদ্যানে মাশরুম চাষ, টেলারিং এ পোশাক তৈরী, রান্না বান্না, পরিবেশনের কাজেও আজ ওরা অনেক এগিয়ে, এগিয়ে চলছে ওরা সমাজ জীবনে সুযোগ পেলে অনেক ক্ষেত্রে এগিয়ে যেতে পারে মানসিক দিব্যাঙ্গরা।