রোববার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১০ ১৪৩১   ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

মেহেরাপুর গ্রামের রায়বাড়ির শতাব্দী প্রাচীন দুর্গাপুজো, বন্দুকের

পুষ্পপ্রভাত পত্রিকা

প্রকাশিত : ০৬:৫০ পিএম, ১০ অক্টোবর ২০২০ শনিবার

মালদা জেলার মোথাবাড়ি থানার অন্তর্গত মেহেরাপুর গ্রাম । আর সেই মেহেরাপুর গ্রামের এর রায় পরিবারের  শতাব্দী প্রাচীন দুর্গাপুজো শুরু হয় বন্দুকের সেল ফাটিয়ে। শুরু থেকে চলে আসছে এই নিয়ম। জৌলুস কিছুটা কম হলেও শ্রদ্ধায় এই রায় বাড়ির পূজোর মেন আকর্ষণ। মেহেরাপুর গ্রামের বাসিন্দা মধুসূদন রায় এই পূজার প্রচলন করেন। কিন্তু বর্তমানে মধুসূদন রায় এর তৃতীয় প্রজন্ম এই পুজোর দায়িত্বে। 

কথিত আছে শতাধিক বছর আগে এই এলাকায় জমিদারি রাজত্ব ছিল। মধুসূদন বাবু বনে জঙ্গলে পাখি শিকার করতে খুব ভালোবাসতেন।
একবার মধুসূদন বাবু তার দলবল নিয়ে ওই এলাকার একটি জঙ্গলে গিয়েছিলেন পাখি শিকার করতে, এবং তিনি জঙ্গলে বিপদের মুখে পড়েন। আর সেই জঙ্গলে মা দুর্গার স্বপ্নাদেশে মধুসূদন বাবু শেষ পর্যন্ত বিপদ থেকে উদ্ধার পান। তারপর থেকেই এই  রায় বাড়িতে দুর্গাপুজো শুরু হয়। 

স্বর্গীয় জমিদারবাবু মধুসূদন রাইয়ের সাত পুত্র। স্বর্গীয় আশুতোষ রায়, সুরেশ রায়, কিরণ রায়, বঙ্কিম রায়, রাধিকা প্রসাদ রায়, সন্তোষ চন্দ্র রায় ও প্রবোধ রায়। উনারা সকলেই প্রয়াত। এদের ছেলেদের হাতেই এখন পুজোর দায়িত্ব। ছেলেরা নিজেদের মধ্যে পালা করে পুজো করেন। একটি পরিবারের উপর পুজোর দায়িত্ব থাকলেও তাদের মধ্যে সকলেই পুজোর সময় গ্রামে ছুটে আসেন। তাদের পরিবারের মুখে শোনা যায় মধুসূদন বাবুর জমিদারিত্ব থেকে  প্রায় 25 থেকে 30 বিঘা জমি মা দুর্গার নামে ছিল। আর সেই সম্পত্তি বিক্রি করে সেই পরিবার একটি ট্রাস্ট গঠন করেন। প্রতি বছর পুজোর সময় ট্রাস্ট থেকে প্রাই 45 থেকে 50 হাজার টাকা পান। কিন্তু বর্তমানে জিনিসপত্রের দাম বেশি বলে পুজোতে লক্ষাধিক টাকা খরচা হয়। 

সপ্তমীর দিন তুলসী সহযোগে গঙ্গা থেকে ঘট ভরে নদীবক্ষে বন্দুকের সেল ফাটিয়ে এই পুজোর সূচনা করেন এই রায় পরিবারের সদস্যরা। শতাধিক বছর থেকে এই পুজো হয়ে থাকে শাক্ত মতে। এই পুজোর শুভ আরম্ভ হয় ১৯১৯ সালে জমিদারবাবু মধুসূদন রায়ের আমলে।