মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের তত্ত্বাবধানে সর্বপ্রথম মুর্শিদাবাদের ফরা
পুষ্পপ্রভাত পত্রিকা
প্রকাশিত : ০৫:৫৪ এএম, ৬ অক্টোবর ২০২০ মঙ্গলবার
*মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের সর্বপ্রথম ফারাক্কায় টোল শুরু*
ফরাক্কা:-অভিজিৎ মন্ডল/- মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের তত্ত্বাবধানে সর্বপ্রথম মুর্শিদাবাদের ফারাক্কার বাহাদুরপুরের শুরু হলো গ্রামীণ রাস্তায় টোল। সরকারিভাবে গ্রামীণ রাস্তায় টোলের কাজ শুরু হওয়ায় বন্ধ হয়ে গেল শাসকদল তৃণমূল নেতাদের তোলাবাজি। টোল চালু হওয়ার আগে অবৈধভাবে বাহাদুরপুর রাস্তায় ৭০০ থেকে ৯০০ টাকা পর্যন্ত তোলা যায় করতো শাষক দল তৃণমূলের এক নেতার সাঁকরেদ গনেশ দাস ও নারায়ন সাহা । সরকারিভাবে টোল চালু হওয়ায় খুশি ট্রাক অ্যাসোসিয়েশনের মালিক থেকে সুরু করে চালকরাও। টোলের মালিক শায়ন বিশ্বাস জানালেন জেলা পরিষদের তত্ত্বাবধানে টেন্ডার এর ভিত্তিতেই বাহাদুরপুর টোলের কাজ পেয়েছি, সরকারি নিয়ম মোতাবেক কাজ চলছে। অবৈধভাবে বেশ কিছু রাজনৈতিক দলের নেতা তোলা আদায় করছিল সেই তোলা বন্ধ করে দেয় প্রশাষন। তোলা আদায় বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে টোলের নামে মিথ্যা গুজব রটিয়ে বেড়াচ্ছে বেশ কয়েক জন তৃনমুল নেতার সাকরেদরা ।সরকারি নিয়োমে চলছে টোলের কাজ। জানা যায় মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের আন্ডারে জেলার ২৮ টি গ্রামীন এলাকায় টোল বসানোর সিদ্ধান্ত নেয় জেলা পরিষদ সেই মতো জেলা পরিষদের তরফে টেন্ডার দেওয়া হয়। সরকারি কোষকার উন্নতির লক্ষে গ্রামীন জনগোষ্ঠীর এলাকায় মালবাহী গাড়িতে জেলা পরিষদ উদ্যোগ নেই বলে জানান এডিএম জেলা পরিষদ। গ্রামীন এলাকায় টোল চালু হতেই শুরু হয়েছে তোলাবাজি রাজ, তাতে নাম জড়ালো শাসক দলের নেতার যদিও টোল চালু হওয়ায় খুশি লরী চালক থেকে লরীর মালিকরা । ঝাড়খন্ড থেকে নিত্যদিন এই পথে প্রায় ৫০০- ৬০০ পাথর বোঝায় লড়ি যাতায়াত করে। টোল চালু হওয়ায় এখন থেকেই গাড়িতে টোল দিতে হবে ফাঁকা গাড়ি ৫০ টাকা, ৩০ টোন পর্যন্ত পন্য বাহী গাড়িকে দিতে হবে ১৪০ টাকা, অতিরিক্ত পন্য পরিবহনের জন্য দিতে হবে ২৪০ টাকা। তা ধার্য্য করা হয়েছে জেলা পরিষদের তরফে। গ্রামীন সড়কে টোল ট্যাক্স চালু হওয়ায় বছরের ৫.৯৪ কোটি টাকা আয় সম্ভব হবে বলে জানায় মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদ। ফরাক্কা লরী অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক ফাইজুল হক জানান টোল চালু হওয়ায় আমরা খুশি, যদিও এই টোল বন্ধের জন্য শাসক দল বিরোধিতায় নেমেছে, এই টোল বন্ধের পক্ষে, যদিও এর আগে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা বিভিন্ন মস্তান বাহিনীদের দিয়ে জোড় পূর্বক বাহাদুরপুরের শ্যামলাপুরে ৭০০ থেকে ৯০০ টাকা তোলা আদায় করতো অবৈধ ভাবে। টোল ট্যাক্স চালু হওয়ায় লরী চালকেরা অবৈধ তোলা দিতে নারাজ। দিন কয়েক আগেই রাস্তায় নেমে অন্দোলন শুরু করে শাসক দলের নাম করে কয়েকজন তারা সকলেই সদ্য সিপিএম ছেড়ে তৃনমুল যোগদান কারি তৃনমুল নেতা অরুনময় দাসের সাকরেদ নারায়ন সাহা ও গনেশ, নারায়ণ ও গনেশ কে দিয়ে তোলা আদায় করতো তৃনমুলে সদ্য যোগ দেওয়া অরুনময় বলে দাবী লরী এসোসিয়েশনের। তারা আরো জানায় তোলা আদায় কারীদের পক্ষে প্রত্যাক্ষ মদত দিতো পুলিশ। লরী চালকদের অভিযোগ টাকা দিতে না চাইলে তোলা বাজরা পুলিশ প্রসাশনকে দিয়ে লরী আটক করে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করতো। টোল ট্যাক্স চালু হওয়ায় তোলা বাজি বন্ধ হয়েছে। গাড়ি চালক সাদিকুল সেখ বলেন সরকারি ভাবে টোল চালু হওয়ায় খুসি আমরা কারন মোটা টাকার তোলা দিতে হয়না।রাজনৈতিক দলের মস্তান বাহীনির তোলাবাজদের কার্ডের মাধ্যমে ৭০০ টাকা নিতো , জেলা পরিষদ টোল বসিয়ে আমাদের খুব ভালো করেছে মোটা টাকার তোলা দিতে হয়না ৩০ টোন পর্ষন্ত টোলে ১৪০ টাকা দিতে হয়। স্থানীয় বাসিন্দারা দের দাবী সিপিএম হিসাবে নাম ডাক ভালো ছিল অরুনময় দাসের তৃনমুলে যোগদান করে তার সাকরেদ লাগিয়ে তোলা বাজি সুরু করে দিয়েছেন বলে অভিযোগ । তৃনমুল পরিচালিত জেলা পরিষদ টোল বসাচ্ছে আর তা রুখতে আবার তারাই পথে বসছে। জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ রাজীব হোসেন বলেন, ‘পূর্ত দফতর যে রাস্তা বানায় তাতে খরচ হয় প্রতি কিলোমিটারে প্রায় ২ কোটি টাকা করে। রাস্তার ভার বহন ক্ষমতা থাকে প্রায় ৭০/৮০ টন পর্যন্ত। আর জেলা পরিষদ যে সব রাস্তা তৈরি করে সেই সব গ্রামীণ রাস্তা গড়তে বরাদ্দ থাকে প্রতি কিলোমিটারে মাত্র ২৫ থেকে ৩০ লক্ষ টাকা। সেই সব দুর্বল গ্রামীণ রাস্তায় ঢুকে পড়ছে পাথর বোঝাই ৭০ টনের ট্রাক। রাস্তা তৈরির পরই দু’দশ দিনেই ভেঙে যাচ্ছে বহু গ্রামীণ রাস্তা। ফলে গ্রামীণ রাস্তা টিকছে না।’’
রাজীব জানান, পঞ্চায়েতের বিধি নিয়মে যেহেতু জেলা পরিষদকে সে ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে তাই আইনি জটিলতাও নেই। জেলা পরিষদের সভাধিপতি মোশারফ হোসেন বলেন, ‘‘গ্রামের মানুষ চান ভাল রাস্তা। ভারি যানের জন্যই গ্রামীণ রাস্তাগুলি খারাপ হচ্ছে। আবার ভারি যান না চলতে দিলেও মাল পত্রের জোগান ব্যাহত হবে। তাই বহু ভেবে চিন্তেই টোল বসানো হচ্ছে মালবাহী গাড়ির চলাচলে। কোনও বাইক, ব্যক্তিগত গাড়িকে সে টোল দিতে হবে না। টোল বসানো হয়নি কোনও সরকারি গাড়ি ও কৃষি পণ্যবাহী গাড়ির উপরও। কাজেই গ্রামের বাসিন্দা ও চাষিদের উপর কোনও চাপ পড়বে না। উল্টে তাঁরা আরও ভাল রাস্তাঘাট পাবেন।’ছরে টোল থেকে প্রায় ৫.৯৪ কোটি টাকা আয় সম্ভব হবে বলে পশ্চিমবঙ্গ গ্রামীণ উন্নয়ন সংস্থা জুনে একটি প্রস্তাব পাঠায় জেলা পরিষদকে। সব ক’টি সড়কই প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনার বরাদ্দ অর্থে নির্মাণ করা হয়েছে আগেই। নিয়ম মতো সড়কগুলি তৈরির পর থেকে ৫ বছর সেটি দেখভালের দায়িত্ব রাস্তার নির্মাণকারী সংস্থার। কিন্তু জেলায় এমন বহু রাস্তা রয়েছে, দীর্ঘ দিন সংস্কার হয়নি। ফলে চূড়ান্ত দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। এই অবস্থা বদলাতে চায় জেলা পরিষদ। আর তা থেকেই পণ্যবাহী যানে টোল বসানোর ভাবনা।
যে ২৮টি রাস্তাকে এই টোল ট্যাক্সের আওতায় আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে সেগুলির মধ্যে আছে নবগ্রামের ও নওদার ৩ টি করে, ফরাক্কা, খরগ্রাম, বড়ঞা, ডোমকল, হরিহরপাড়া ও রানিনগর ১ ব্লকে ২টি করে রাস্তা। ১টি করে রাস্তা টোলের আওতায় আসছে সুতি ২, কান্দি, বেলডাঙা ১ ও ২, রঘুনাথগঞ্জ ১ও ২, সাগরদিঘি, লালগোলা, ভগবানগোলা ১ ও বহরমপুর ব্লকে।