বৃহস্পতিবার   ১৪ নভেম্বর ২০২৪   কার্তিক ৩০ ১৪৩১   ১২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাতারাতি সুদিন ফিরলো মহিষাদলের চক্রবর্তী পরিবারে

পুষ্পপ্রভাত পত্রিকা

প্রকাশিত : ১০:০৩ পিএম, ৫ অক্টোবর ২০২০ সোমবার

শ্রীকৃষ্ণ মাইতি, মহিষাদল, পূর্ব মেদিনীপুর: এযেন একেবারে রাতারাতি সুদিন। দুর্গাপুজো নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর ছাড় পাওয়ার পর যেন রাতারাতি সুদিন ফিরে এসেছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার মহিষাদলের চক্রবর্তী পরিবারে। পুজোর সময় কুটির শিল্পের মাধ্যমে যা আয়- ইনকাম হতো তা দিয়েই চলতো সারাবছর। কিন্তু দীর্ঘ কয়েক মাসের লকডাউনের ফলে এবছর দুর্গাপুজোয় একাধিক কাটছাট করেছে পুজো উদ্যোক্তারা। তাই প্রথম থেকে সেভাবে অর্ডার আসেনি শিল্পের কাছে। তবে দুর্গাপুজো নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সবুজ বার্তা পাওয়ার পরই ইতিমধ্যে সারে সারে অর্ডার আসতে শুরু করেছে শিল্পীদের কাছে। যার ফলে কার্যত বলা চলে রাতারাতি একেবারে সুদিন ফিরে এলো পরিবারের শিল্পীদের মধ্যে। 

বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গোৎসব। প্রায় সব বাঙালিই অপেক্ষা করে থাকেন পুজোর এই কয়েকটা দিনের জন্য। প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে ঠাকুর দেখা, জমিয়ে আড্ডা মারা সমস্ত কিছুই পুজোর এক অন্যতম অঙ্গ। কিন্তু চলতি বছরে এই পুজোর সাজসজ্জার পেছনে যে সমস্ত শিল্পীদের এক বিশাল বড় অবদান থেকে যায় তাদের মধ্যে কেমন যেন অন্ধকার নেমে এসেছিল। পুজো দিনের পর দিন এগিয়ে এলেও সেভাবে অর্ডার নেই শিল্পীদের কাছে। দুর্গাপুজোর মন্ডপের বিভিন্ন সাজসজ্জা গ্রাম বাংলার কুটির শিল্পীদের হাত ধরেই উঠে আসে। জুটের তৈরি নানা রকম কারুকার্যে চোখ ধাঁধিয়ে ওঠে মন্ডপের। এছাড়াও জুটের তৈরি নানা ধরনের উপহার সামগ্রী পুজোর সময় বেশ দেদার বিক্রিও বাটা হয়। যার জন্য পুজোর প্রায় পাঁচ- ছয় মাস আগে থেকেই চলে শিল্পীদের প্রস্তুতি। শিল্পী পাড়ায় লেগে যায় কাজের ধুম। নাওয়া-খাওয়া ছেড়ে হাতের নৃপুন কারুকার্য শিল্প তৈরিতে ব্যস্ত থাকতেন শিল্পীরা। কিন্তু সেই জায়গায় চলতি বছর কেমন যেন ভিন্ন চিত্র। মহিষাদলের তেরোপেখ্যা গ্রামের প্রায় আট থেকে দশটি পরিবার কুটির শিল্পের সঙ্গে যুক্ত। পুজোর সময়ে যা ইনকাম তা দিয়ে চলত বারো মাস। তাদের তৈরি শিল্প বিভিন্ন জেলার পাশাপাশি পাড়ি দিত কলকাতার কুমোরটুলিতে। কিন্তু বর্তমানে বছরের সেভাবে অর্ডার না আসায় চিন্তার ভাঁজ পড়ে ছিল কপালে। তবে মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা করার পর থেকেই যেভাবে কাতারে কাতারে অর্ডার আসতে শুরু করেছে তাতে মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাচ্ছেন শিল্পীরা। শিল্পী সমীর চক্রবর্তী বলেন, "প্রথমে সেভাবে পুজোর জন্য অর্ডার আসেনি। ফলে কাজকর্ম ঢিমেতালে চলছিল। সংসার চালাবো কিভাবে সে নিয়েও চিন্তা হচ্ছিল। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হঠাৎ পুজো নিয়ে সবুজ সংকেত দিতেই অর্ডার আসতে শুরু করেছে। মুখ‍্যমন্ত্রীকে আমি ধন্যবাদ জানাই।"

প্রবীণ শিল্পী কৃষ্ণা চক্রবর্তী বলেন, "অন‍্যান‍্য বছর রাতদিন এক করে আমরা কাজ করতাম। বাড়ির সদস‍্যদের পাশাপাশি বাইরের লোকজনও এই কাজ করতো। কিন্তু এবছর সেভাবে অর্ডার না আসায় কাজ প্রায় বন্ধ ছিল। তবে মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার পর আবার আমরা অর্ডার পেয়েছি এবং কাজ শুরু করলাম।"

সবমিলিয়ে মমতার মমতাময়ী ঘোষনাতে সুদিন ফিরছে শিল্পী পাড়ায়। মুখ্যমন্ত্রী মমতাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছেন তারা।