বৃহস্পতিবার   ১৪ নভেম্বর ২০২৪   কার্তিক ৩০ ১৪৩১   ১২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কাছাড় ডাক বিভাগে পদ বিলুপ্তি ইস্যু , তলব অরুণ সরকারকে

দিদারুল ইসলাম, করিমগঞ্জ আসাম

পুষ্পপ্রভাত পত্রিকা

প্রকাশিত : ০৮:৩২ পিএম, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২০ সোমবার

লকডাউনে প্রায় ৩০ হাজার মানুষ জেলায় ফিরেছেন । মূলত তাদের জন্যই এরা বাইরে ছিলেন এবং চাকরি হারিয়ে বাড়ি ফিরেছেন । এদিকে , রাজ্য সরকারের বিভিন্ন বিভাগে হাজার হাজার নিয়ােগ হচ্ছে এবং উপেক্ষিত থাকছেন কাছাড়ের যুবক - যুবতীরা । এমন একটা সময়ে জেলার ডাক বিভাগের ২৫৪ টি পদ বিলুপ্ত হয়েছে , এর নির্দেশ দিয়েছেন অধীক্ষক অরুণ সরকার । খবরটি প্রকাশ্যে আসায় অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন । এবার বিভাগের রাজ্য আধিকারিকরা অধীক্ষক অরুণ সরকারকে গুয়াহাটি পাঠিয়েছেন । কেন এতগুলাে পদ বিলুপ্ত করা হয়েছে । এব্যাপারে সরাসরি তলব করা হয়েছে । সম্প্রতি এক আরটিআইর জবাবে বিভাগের পক্ষ থেকে জানানাে হয়েছে , পিএ , পােস্টম্যান এবং মাল্টিটাস্কিং স্টাফ সহ মােট ২৫৪ টি পদ বিলুপ্ত করা হয়েছে । এতে সরাসরি ৫২ টি পদ বিলুপ্ত করেছেন অধীক্ষক অরুণ সরকার । বাকি বিলুপ্তির আধিকারিকদের সঙ্গে আলােচনা বিভাগের প্রাক্তনরা বলেছিলেন অধীক্ষক চাইলে পদগুলাে আটকানাে যেত । তবে কেন তিনি এমনটা করলেন ? এই প্রশ্ন উঠেছে । যদিও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা সরাসরি এ ব্যাপারে কোনও কথা বলেননি , তবে বিভাগের আধিকারিকদের নজরে ব্যাপারটি এসেছে । এতে কিছুটা হলেও আশার আলাে দেখা যাচ্ছে । ভারতীয় ডাক বিশ্বের অন্যতম সফল ডাক বিভাগ । এই ইন্টারনেটের যুগে দাঁড়িয়ে এখনও অনেক গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে রয়েছে এই পরিষেবা ।বিভাগকে প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়েছেন অধীক্ষক অরুণ সরকার । জানা গেছে , বিভিন্ন পদে থাকা কর্মচারীরা যখন কাছাড় থেকে বদলি হয়ে অন্য কোথাও গেছেন সেখানে নতুন কাউকে আনা হয়নি । যেগুলাে পদ খালি হয়েছে সেখানে নতুন নিযুক্তি হয়নি । উল্টো খুব সাবধানে পদগুলােকে বিলুপ্তির পথে এগিয়ে নেওয়া হয়েছে । এবছর জুন মাসের ২৬ তারিখ অরুণ সরকার একটি চিঠি পাঠিয়ে পিএ ক্যাডারের ২৬ টি পােস্ট বাতিলের নির্দেশ দেন । জুলাই মাসের ২৪ তারিখ আরও একটি চিঠিতে পিএ ক্যাডারের ১৬ টি , পােস্টম্যান ক্যাডারের ৩৮ টি এবং ১ টি মাল্টিটাস্কিং কর্মী পােস্ট বাতিলের নির্দেশ জারি করেন । তাকে এই চিঠিগুলাে দেখিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন , সিদ্ধান্ত গুয়াহাটির পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে । সেখানে অসম সার্কলের অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর কে শিবা শঙ্কর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন , তাকেই এর ব্যাপারে প্রশ্ন করা উচিত । এরপর তিনি আর আমাদের ফোনকলের বা মেসেজের উত্তর দেননি । এবার গুয়াহাটির পক্ষ থেকেই তাকে প্রশ্ন করা হয়েছে , তিনি কেন এ ধরনের সিদ্ধান্ত নিলেন । অরুণ সরকারের নির্দেশনায় বলা হয়েছে সিদ্ধান্ত নেওয়ার পেছনে অতীতে নেওয়া সিদ্ধান্তকে উদাহরণ হিসেবে গ্রাহ্য করা হয়েছে । তবে অরুণ সরকারের আগে যারা এখানে কাজ করেছেন তারা বলছেন , ‘ আমরাও এই ধরনের প্রস্তাব পেয়েছি এবং সেগুলাের উত্তর দিয়েছি । প্রত্যেকবার পদগুলাে বিলুপ্তির হাত থেকে বাঁচানাে হয়েছে । কিছু কিছু পােস্ট দীর্ঘদিন ধরে খালি রয়েছে , বিভাগ চাইলেই সেগুলােতে কন্ট্রাকচুয়াল পদ্ধতিতে নিযুক্তি দিতে পারত । এতে অনেক পরিবারের কর্মসংস্থানের সম্ভাবনা ছিল । যখন রাজ্য সরকারের বিভিন্ন বিভাগের চাকরির ক্ষেত্রে একের পর এক বঞ্চনার শিকার হচ্ছেন বরাক উপত্যকার যুবকরা । এই সময়ে কেন্দ্র সরকারের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিভাগের এধরনের সিদ্ধান্ত আরেকবার এলাকার যুব প্রজন্মকে প্রতারণা করল বলা চলে । এবার বিভাগের রাজ্য স্তরের আধিকারিকরা যখন অরুণ সরকারকে ডেকে পাঠিয়েছেন এবং সরাসরি জানতে চেয়েছেন কেন পদগুলাে বিলুপ্তির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে , এতে একটা আশার আলাে অবশ্যই দেখা যাচ্ছে ।