বৃহস্পতিবার   ১৪ নভেম্বর ২০২৪   কার্তিক ৩০ ১৪৩১   ১২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

হাফলং-শিলচর মহাসড়ক নিয়ে ঘুম ভাঙছে না সর্বানন্দ সোনোয়াল সরকারের

আবুল সাহিদ , শিলচর আসাম

পুষ্পপ্রভাত পত্রিকা

প্রকাশিত : ০৫:৩৫ পিএম, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২০ শনিবার

২০১৬ সালে রাজ্যে ক্ষমতায় আসে বিজেপি মিত্র জোটের সরকার। পরিবর্তনের দোহাই দিয়ে ক্ষমতা দখলকারী সরকারের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল প্রথম দিন থেকেই তাঁর ভাষণে 'বরাক-ব্রহ্মপুত্র -পাহাড়-সমতল' এর উন্নয়নের স্লোগান দিয়ে আসছেন।

কিন্তু বাস্তবে মুখ্যমন্ত্রী সোনোয়াল বরাক-ব্রহ্মপুত্র ভায়া পাহাড়ের মধ্যে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী প্রয়াত অটলবিহারী বাজপেয়ীর স্বপ্নের ইষ্ট ওয়েষ্ট করিডোর এনএইচ-২৭ মহাসড়ক নির্মাণের খবর রেখেছেন বলে মনে হয় না। অন্যথায় তিনি বার বার ভাষনে বরাক-ব্রহ্মপুত্র -পাহাড়- সমতল'এর গান গেয়ে বেড়াতেন না।। 

কারণ সোনোয়ালের সরকার ক্ষমতায় আসার পর হাফলং-শিলচর সড়কের অবনতির সূচনা হয়। এভাবে যতই দিন গড়িয়েছে ততই সড়ক নিশ্চিহ্ন হয়েছে। গত সাড়ে বছরে সড়কের কাজ শেষ হওয়া দূরের কথা কিঞ্চিৎ উন্নতিও পরিলক্ষিত হয়নি। 

শুধু ডিপিআর আর টেণ্ডারের গন শুনিয়েই জাতীয় সড়ক প্রাধিকরণ কর্তৃপক্ষ নিজেদের হাত গুটিয়ে রেখেছেন। আর তাই জলে কাদায় একাকার হাফলং- শিলচর তথাকথিত মহাসড়ক। 

রাজ্য সরকার বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়ে অভিযোগ করে করে পাহাড় ও বরাকের জনগণ অনেকটা ক্লান্ত। এক্ষেত্রে কংগ্রেস এবং বিজেপি যেন মুদ্রার এপিঠ ওপিঠ। কারণ কেন্দ্রে আগের কংগ্রেস সরকার ক্ষমতায় থাকার সময় যেমন ছিল এবার মোদীর নেতৃত্বের বিজেপি সরকার আসার পরও সেই একই দশা।। 

ভোটের লক্ষ্যে ব্রডগেজ নিয়ে বিজেপি সরকার যতটা তোড়জোড় করে কাজ শেষ করেছে, মহাসড়ক নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটে বসে রয়েছে। 

এখন হাফলং-শিলচর সড়কপথে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করা ছোট বড় যানবাহনগুলিকে জলে কাদায় একাকার পথে প্রায় তিন ঘন্টা আবদ্ধ থাকতে হচ্ছে। কারণ হারাঙ্গাজাও থেকে কাছাড় জেলার বালাচড়া পর্যন্ত একত্রিশ কিলোমিটার অংশের কাজ তত্ত্বাবধানের দায়িত্বে রয়েছে ন্যাশনাল হাইওয়ে ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন লিমিটেড অর্থাৎ (এনএইচআইডিসিএল)। কাজ করছে সুশি ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড এবং জেএসসিপি (জয়েন্ট ভেঞ্চার)। 

কিন্তু গত দুই বছর সুশি-জেএসসিপি গোষ্ঠী নির্মাণ কাজ এগিয়ে নিতে সক্ষম হয় নি। বরং অবৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে পাহাড় কেটে তছনছ করেছে। যার কুফল ভোগ করতে হচ্ছে সাধারণ জনতাকে।

এদিক জাটিঙ্গা থেকে হারাঙ্গাজাও পঁচিশ কিলোমিটার অংশের দায়িত্বে রয়েছে NHAI। কিন্তু NHAI সামান্য পঁচিশ কিলোমিটার রাস্তা সচল রাখতে গিয়েই বার বার ব্যর্থ হচ্ছে। 

শুক্রবার হাফলঙের জনৈক সচেতন নাগরিক বলেন, রাজ্যে নির্বাচিত সরকার রয়েছে ভাবতেই অবাক লাগে। আসলে এই সড়কপথ NHAI এবং ঠিকাদারী গোষ্ঠীর সোনার খনিতে পরিণত হয়েছে। 

হারাঙ্গাজাওয়ের জনৈক যুবক বলেন, ২০১৯ সালে হিমন্তবিশ্ব শর্মার ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী পীযুষ হাজারিকা হারাঙ্গাজাওয়ে এক নির্বাচনী জনসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেছিলেন যে, দুই মাসের মধ্যে এই সড়ক সচলে সরকার ব্যবস্থা নেবে। 

কিন্তু বলা বাহুল্য আজ অবধি পথ নির্মাণ তো দূর অস্ত। সড়ক সচল করতেই সক্ষম হয় নি কোনও পক্ষ। 

তবে বিধান সভা নির্বাচন আসছে। তাই প্রতিবারের মতো এবারেও মহাসড়ক নিয়ে মায়াকান্নার সময় এসে গিয়েছে।