ম্যান্স ল্যান্ডের ৭০০র বেশি বাসিন্দা? প্রশ্ন করিমগঞ্জের বিধায়ক
পুষ্পপ্রভাত পত্রিকা
প্রকাশিত : ০৬:১৭ পিএম, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২০ শুক্রবার
একটানা পাঁচটা মাস থেকে গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছে ভারত বাংলা সীমান্ত এলাকার নো ম্যান্স ল্যান্ডের বাসিন্দাদের। করোণা কালে গোটা দেশজুড়ে যখন লকডাউন ঘোষণা করা হয় তখন ১০ এপ্রিল থেকে কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশে গোটা দেশের সীমান্ত সিল। যার কারণে কাটা তারের ওপারে থাকা মানুষেরা চব্বিশ ঘন্টা গৃহবন্দি। এরপর থেকে অনেক দফায় লকডাউন এবং আনলক কেটে গেলে সীমান্ত সিল থাকার ক্ষেত্রে কোন ধরনের শিথিলতা আনা হয়নি সরকারের পক্ষ থেকে।
একটানা পাঁচটা মাস থেকে গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছে ভারত বাংলা সীমান্ত এলাকার নো ম্যান্স ল্যান্ডের বাসিন্দাদের। করোণা কালে গোটা দেশজুড়ে যখন লকডাউন ঘোষণা করা হয় তখন ১০ এপ্রিল থেকে কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশে গোটা দেশের সীমান্ত সিল। যার কারণে কাটা তারের ওপারে থাকা মানুষেরা চব্বিশ ঘন্টা গৃহবন্দি। এরপর থেকে অনেক দফায় লকডাউন এবং আনলক কেটে গেলে সীমান্ত সিল থাকার ক্ষেত্রে কোন ধরনের শিথিলতা আনা হয়নি সরকারের পক্ষ থেকে।
মঙ্গলবার ভারত বাংলাদেশ সীমান্ত এলাকা পরিদর্শন করতে গিয়ে প্রশ্ন তোলেন উত্তর করিমগঞ্জের বিধায়ক কমলাক্ষ দে পুরকায়স্থ। বর্তমান সরকারের আমলে বিভিন্ন সময় বিপরীত স্থিতি নেওয়া সহ আসাম বিধানসভায় বরাকের সমস্যা নিয়ে একা লড়ে যাওয়া বিধায়ক কমলাক্ষের প্রশ্ন কোন অর্থে বন্দি করে রাখা হয়েছে নো ম্যান্স ল্যান্ডের বাসিন্দাদের? টানা ছয়মাস থেকে ঘরবন্ধী উত্তর করিমগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রের প্রায় ৭০০র বেশি মানুষ। সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উজাড় করে বিধায়কের প্রশ্ন গোটা দেশে যখন আনলক ঘোষণা করা হয় তখন কেনই সীমান্তের ক্ষেত্রে আলাদা নিয়ম?
এমুহূর্তে কোন উত্তর নেই সরকারের কাছে বা সীমান্ত সুরক্ষা বাহিনীর কাছে। সমালোচনা করতে গিয়ে তিনি বলেন যে, গৃহবন্দি মানুষের করুন আর্তনাদ সরকারের কাছে পৌঁছে না। নিজে জনপ্রতিনিধি হিসাবে একাধিকবার গৃহ বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন এরপরও কোন সদুত্তর মিলছে না। তিনি বলেন যে, বর্তমানে অরাজকতার সরকার। কথায় এবং কাজের মধ্যে বিস্তর ফারাক। সাধারণ মানুষের ভোটে সরকার গঠন হলেও সাধারণ মানুষের দুর্বিসহ জনজীবনের কথাগুলো গুরুত্ব দেওয়া হয়না এই সরকারের আমলে। বলেন, অপরিকল্পিতভাবে লকডাউনে কোনও লাভ হয়নি, বরাক সহ গোটা রাজ্যজুড়ে সংক্রমণ রোধ করা যায়নি। উল্টো হতদরিদ্র পরিবারদের বন্দি করে রাখা হয়েছে। স্বাধীনতার স্বাদ পেয়েছি আমরা সত্তর বছর আগে।কিন্তু স্বাধীনতা যে কি জিনিস এরা কিন্তু জানতে পারেন নি আজ অবধি। বাংলাদেশে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ ছড়াচ্ছে যার কারণে নো ম্যান্স ল্যান্ডে থাকা ভারতীয়রা তাদের দেশে আসলে করোনা সংক্রমণ ছড়াতে পারে নিজের দেশে। বাংলাদেশে গত ঈদের পর বাতিল করা হয়েছে লকডাউন। সামাজিক দূরত্ব মেনে স্বাভাবিক হচ্ছে সেখানের জনজীবন। কিন্তু বাংলাদেশের করোনা সংক্রমণের প্রভাব ভারতের সীমান্তবর্তী এলাকায় পড়বে এই কারণেই সীমান্ত সিল করা হয়েছিল কেন্দ্রীয় গৃহ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে। এই যে পাঁচ মাসের বেশি সময় অতিবাহিত এতদিনে এরা কি জীবিত রয়েছেন না মৃত এর খবর রয়েছে ভারত সরকার তথা রাজ্য সরকারের কাছে?
গণ মাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে নিজের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে বিধায়ক জানান যে সীমান্তের দায়িত্বে রয়েছে ০৭ নং বিএসএফ। কাছাড় মিজোরাম ফ্রন্টিয়ার ডিআইজি এস কে শ্রীবাস্তবের সঙ্গে তিনি এ বিষয়ে আলোচনা করেছেন। তবে সরকার পক্ষ থেকে কোন বার্তা না আসা অবধি পরিস্থিতি স্বাভাবিক হচ্ছে না বলে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে বিএসএফের শীর্ষ অধিকরাকিদের পক্ষ থেকে। ক্ষোভের সুরে তিনি বলেন যে রাজ্য সরকারের গৃহ বিভাগের দায়িত্ব যখন মুখ্যমন্ত্রীর হাতে রয়েছে তখন ভোগান্তির শিকার রাজ্যের মানুষ। এর চেয়ে লজ্জাজনক বিষয় আর কিছু হতে পারে না। খুব শীঘ্রই তিনি এব্যাপারে শেষবারের মতো কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারের কাছে আবেদন রাখবেন। যদি বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে সরকার বিবেচনা না করে তাহলে আর বসে থাকা চলবে না। সাধারণ মানুষের ভোটে গড়া গণতান্ত্রিক দেশে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে সরকারের বিরুদ্ধে গণ আন্দোলনে নামবেন তিনি নিজে।