সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১০ ১৪৩১   ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ডিমাসা নয়,উগ্র অসমিয়াদের ভয়েই ভাষাশহিদ স্টেশন আটকে গেল”

আবুল সাহিদ , শিলচর আসাম

পুষ্পপ্রভাত পত্রিকা

প্রকাশিত : ১০:২৮ পিএম, ২ সেপ্টেম্বর ২০২০ বুধবার

২০০৯ সালে রাজ্য সরকার কেন্দ্রকে চিঠি লিখে জানিয়ে দিয়েছিল, শিলচর রেলস্টেশনের নাম বদলে ভাষাশহিদ স্টেশন করা হলে তাদের আপত্তি নেই। এর পাঁচ বছর পর কাছাড়ের তৎকালীন জেলাশাসক গোকুলমোহন হাজরিকা রিপোর্ট করলেন, ১৯৬১-র ভাষাসংগ্রাম ছাড়া এই স্টেশনের সঙ্গে আর কোনও ঐতিহাসিক ঘটনা জড়িয়ে নেই। ২০১৬-র ৭ নভেম্বর কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক নাম পরিবর্তনের ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়। এরই প্রেক্ষিতে রাজ্য সরকারকে ভাষাশহিদ স্টেশন  নামের বানান সঠিকভাবে লিখে গেজেট বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে বলে।
”ডিমাসা নয়, উগ্র অসমিয়াদের ভয়েই ভাষাশহিদ স্টেশন আটকে গেল”এই সব তথ্য জানিয়ে ভাষাশহিদ স্টেশন শহিদ স্মরণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক ডা. রাজীব কর বলেন, এনওসি বা রিপোর্টের ব্যাপার ছিল না এ বার। কারণ ২০০৯ সালেই রাজ্য সরকার এনওসি দিয়ে দিয়েছে, ২০১৪ সালে জেলাশাসকও ইতিবাচক রিপোর্ট দিয়েছেন। এর পরও ২০১৭ সালে রাজ্য সরকার ফের তদন্তের নির্দেশ দেয়। সে বার পুলিশ সুপার লিখেন, ভাষাশহিদ স্টেশন নামের প্রতি প্রতিটি মানুষের সমর্থন রয়েছে। এটি গৃহীত হলে কোনও দিক থেকে আইনশৃঙ্খলাজনিত সমস্যার আশঙ্কা নেই।
তাহলে কেন ২০২০ সালে রাজ্য সরকার শিলচর রেলস্টেশনের নামবদলের প্রস্তাব স্থগিত রাখল? ডিমাসারাই কি এর পেছনে কলকাঠি নাড়ছেন? না,  সমিতির কার্যবাহী সভাপতি নিলয় পাল, সহ সম্পাদক অমিতাভ দে সহ স্বপন দাশগুপ্ত, ভোলা চক্রবর্তী, সমীর দেব, সুমন দেব-রা ডিমাসাদের ঘাড়ে দোষ চাপাতে চাইছেন না। তাঁদের কথায়, ডিমাসাদের একটি সংগঠন স্মারকপত্র দিয়ে শিলচর রেলস্টেশনের নাম বীর শম্ভুধন ফংলো করার দাবি জানিয়েছে, এটা ঠিক। তাঁরা তা জানাতেই পারেন। এর পরও দেবজিত থাওসেন, নন্দিতা গারলোসার মত ডিমাসা নেতৃত্ব গত বছর উনিশের মে-র অনুষ্ঠানে এসে ভাষাশহিদ স্টেশন নামকরণের দাবির প্রতি সমর্থন করে গিয়েছেন।
ভাষাশহিদ স্টেশন শহিদ স্মরণ সমিতির কর্মকর্তাদের সোজাসাপ্টা বক্তব্য, আসাম সরকার ডিমাসাদের দাবিকে সামনে রাখলেও আসলে ভয় পাচ্ছে, ব্রহ্মপুত্র উপত্যকার উগ্র অসমিয়াদের। ভাষাশহিদদের বিশেষ সম্মান জানানো হলে এরা যদি ক্ষেপে ওঠে! এর পরই সমিতির কর্মকর্তারা স্থানীয় বিধায়কদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। বিস্ময় প্রকাশ করেন, একা কমলাক্ষ দে পুরকায়স্থ কথা বললেন, অথচ বিধানসভায় উপস্থিত থেকেও এই অঞ্চলের অন্য কোনও বিধায়ক টু শব্দটি করলেন না!
সাধারণ সম্পাদক রাজীববাবু জোর গলায় দাবি করেন, ভাষাশহিদ স্টেশন হবেই। ২০০৮ সালে একবার খারিজ হয়ে যাওয়ার ঘটনার উল্লেখ করে তিনি বলেন, সে দিন তৎকালীন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি চিদাম্বরম ‘লোকাল পেট্রটিজম’ বলে এই দাবি মানতে রাজি হননি। সেখান থেকে তাঁরা যখন কেন্দ্রের সম্মতি আদায়ে সমর্থ হয়েছেন, তখন রাজ্য সরকারও এই দাবি মানতে বাধ্য হবে। কীভাবে, এর ব্যাখ্যায় না গিয়ে তিনি শুধু বলেন, গণদাবি সরকারকে মানতেই হয়। সঙ্গে যোগ করেন, আমরা আইনি পরামর্শদাতাদের সঙ্গেও নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি।
”ডিমাসা নয়, উগ্র অসমিয়াদের ভয়েই ভাষাশহিদ স্টেশন আটকে গেল”
সাধারণ সম্পাদক রাজীববাবু জোর গলায় দাবি করেন, ভাষাশহিদ স্টেশন হবেই। ২০০৮ সালে একবার খারিজ হয়ে যাওয়ার ঘটনার উল্লেখ করে তিনি বলেন, সে দিন তৎকালীন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি চিদাম্বরম ‘লোকাল পেট্রটিজম’ বলে এই দাবি মানতে রাজি হননি। সেখান থেকে তাঁরা যখন কেন্দ্রের সম্মতি আদায়ে সমর্থ হয়েছেন, তখন রাজ্য সরকারও এই দাবি মানতে বাধ্য হবে। কীভাবে, এর ব্যাখ্যায় না গিয়ে তিনি শুধু বলেন, গণদাবি সরকারকে মানতেই হয়। সঙ্গে যোগ করেন, আমরা আইনি পরামর্শদাতাদের সঙ্গেও নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি।
এই অঞ্চলে ডিমাসাদের সঙ্গে সমিতির বিরোধ নেই বলে দাবি করে রাজীববাবু বলেন, শম্ভুধন ফংলোর প্রতি শ্রদ্ধা এই অঞ্চলের প্রতিটি মানুষের রয়েছে। ডিমাসা সংগঠনটি প্রকৃতই কোনও রেলস্টেশন বীর শম্ভুধনের নামে করতে চাইলে নিউ হাফলং স্টেশনের নামবদলের দাবি জানাতে পরামর্শ দেন। সেক্ষেত্রে ভাষাশহিদ স্টেশন শহিদ স্মরণ সমিতি তাঁদের দাবির প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানাবে এবং সক্রিয় সহয়োগিতাও করবে বলে বুধবার সাংবাদিক সম্মেলনে জানান।