শুক্রবার   ১৫ নভেম্বর ২০২৪   কার্তিক ৩০ ১৪৩১   ১৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

মোবাইলের চাহিদা মেটাতে না পেরে পারিবারিক অশান্তিতে আত্মঘাতী বাবা

দিদারুল ইসলাম, করিমগঞ্জ আসাম

পুষ্পপ্রভাত পত্রিকা

প্রকাশিত : ০৯:০১ এএম, ২ জুলাই ২০২০ বৃহস্পতিবার


অনলাইনে ক্লাস , দশম শ্রেণীর ছাত্রীর মোবাইলের চাহিদা মেটাতে না পেরে পারিবারিক অশান্তিতে আত্মঘাতী বাবা।লকডাওনে স্কুল কলেজ বন্ধ। বাড়িতে বসে মোবাইলের মাধ্যমে অনলাইনে ক্লাস। দশম শ্রেণীতে পড়ে মেয়ে। সুতরাং অনলাইনে ক্লাস করার জন্য মোবাইলের প্রয়োজন। কিন্তু নিত্য অভাবের সংসার। দুই মেয়ে এক ছেলে ও স্ত্রীকে নিয়ে দিনমজুরের কাজ করে কোনোরকমে সংসার চালিয়ে যাচ্ছিলেন সুকুমার ভৌমিক।বয়স ৪৫।বাড়ি ত্রিপুরা রাজ্যের বিশালগড় মহকুমার মধুপুর থানাধীন পুরাতন রাজনগর কলোনি এলাকায়। পরিবারের সবচেয়ে বড় মেয়ে দশম শ্রেণীতে পড়ে। অনেক দিন ধরে বাবার উপর প্রচন্ড চাপ দিচ্ছে দশম শ্রেণীর ছাত্রী। অনলাইনে ক্লাস করার জন্য অতিসত্বর এণ্ড্রয়েড মোবাইল চাই। নিত্য অভাবের সংসারে লকডাওনের ফলে দিনমজুর বাবার সংসার চালাতে হিমসিম খাচ্ছেন। তার উপর আবার মেয়ের এণ্ড্রয়েড মোবাইলের চাহিদা। অনেক কষ্ট করে কোনোরকমে দিনমজুর বাবায় একটা সাধারণ মানের মোবাইল কিনে দিয়েছেন মেয়েকে। এতে মেয়ের রাগ ।আর তাতে রাত মেয়ে ও মা মিলে বাবার সঙ্গে শুরু হয় ঝগড়া। বাবা কিনে আনা মোবাইল ফোনটি সবার সামনে আঁচাড় দিয়ে ভেঙে ফেলেন। মোবাইল ফোনটি ভেঙে ফেলার পর থেকে বাবার সাথে কোনো কথা বার্তা বলেন নি। পরিবারের লোকজন ও কথা বলেন নি। গতকাল রাতের বেলায় নিজের বসত ঘরে না ঘুমিয়ে একা একা অন্য একটি ভাঙ্গা ঘরে শুয়ে পড়েন। পারিবারিক অশান্তি চলছিল কিন্তু ইচ্ছা থাকলেও উপায় নেই। দিনমজুর বাবা কোথায় থেকে কিনে আনবে এণ্ড্রয়েড ফোন। অবশেষে পারিবারিক অশান্তি ছেড়ে আত্মঘাতী হয়ে চিরতরে নেয়ে হতভাগা বাবা। বুধবার সকাল ৬ টার দিকে মধুপুর থানায় ফোন করে জানানো হয় এই দিনমজুরের আত্মঘাতের খবর। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে দেখেন বাড়িতে একটি ভাঙ্গাচুড়া ঘরে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে রয়েছেন হতভাগা বাবা। সেখান থেকে মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়ে দেওয়া হয় হাসপাতালে। হতভাগা বাবার অস্বাভাবিক মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে আসে সমগ্র এলাকা জুড়ে।