শনিবার   ১৬ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১ ১৪৩১   ১৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

উড়ান এডুকেশনের উদ্যোগে ছিলটি ভাষার অনলাইন আন্তর্জাতিক সম্মেলন

রাহাতুল আক্তার বড়ভুইয়া

পুষ্পপ্রভাত পত্রিকা

প্রকাশিত : ১০:৩২ পিএম, ২১ জুন ২০২০ রোববার

উড়ান এডুকেশনের উদ্যোগে ছিলটি ভাষার অনলাইন আন্তর্জাতিক সম্মেলন


প্রতিটি মানুষের অধিকার রয়েছে তার মাতৃভাষায় কথা বলার। আর যখন কেউ তার এই মাতৃভাষাকে অবহেলা করে এবং এই অবহেলার জন্য এই ধীরে ধীরে এই ভাষা বিলীন হওয়ার পথ ধরে নেয় তখন আবার কিছু মানুষ এগিয়ে আসে এই ভাষাকে আবার পুনরুজ্জীবিত করতে। ঠিক একই ভাবে একটি ভাষাকে পুনরুজ্জীবিত করতে বা সংরক্ষণ করতে একটি উদ্যোগ নেওয়া হয়ে ছিলো উড়ান এডুকেশন এন্ড রিসার্চ ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে। গত ২০ জুন রাত্রি ৭ তার সময় উড়ান এডুকেশন এন্ড রিসার্চ ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে "ছিলটি ভাষার অতীত এবং বর্তমান" শীর্ষক একটি আন্তর্জাতিক অনলাইন সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সম্মেলনটি জুম মিটিং অ্যাপের মাধ্যমে করা হয়। সম্মেলনে অংশ নেন গোটা বিশ্ব থেকে ছিলটি প্রেমিকরা। উক্ত সম্মেলনের মূল আকর্ষক ছিলেন বক্তব্য দিতে লন্ডন থেকে যোগ দেওয়া বিশিষ্ট দুই ব্রিটিশ অধ্যাপক জেমস লয়েড উইলিয়ামস ও মারি থাউট। জেমস লয়েড সম্পূর্ণ ছিলটি ভাষায় কথা বলেন এবং গত ৩০ বৎসর থেকে ছিলটি ভাষার উপর বিভিন্ন গবেষণা সহ ছিলটি ভাষার উন্নয়নের জন্য ছিলেটি ট্রান্সলেশন এন্ড রিসার্চ নামক একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেন যেখান থেকে ছিলটি নাগরী লিপিতে লেখা পবিত্র কোরআন ও বাইবেল, ছিলটি অভিধান, ব্যাকরণ সহ অনেক খানি বই তিনি প্রকাশিত করেন। তাঁর জন্যই ২০০৫ সালে ছিলটি ভাষার নাগরী লিপি আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছে যাকে ইউনিকোড বলা হয়, যা পাওয়ার জন্য অসমীয়া ভাষাকে আজ অব্দি অন্তর্ভুক্ত করতে সক্ষম হয় নি। অপরদিকে ছিলেন লন্ডন থেকে যোগ দেওয়া আরেক অতিথি মেরি থাউট, তিনি লন্ডন বিশ্বিদ্যালয়ের ছিলটি বিভাগের প্রধান। তাঁর জন্য লন্ডন বিশ্বিদ্যালয়ের অনেক ছাত্ররা ছিলটি ভাষা শিখতে পেরেছে। তিনি ছিলটি ভাষার ধ্বনিবিজ্ঞান নিয়ে গবেষণা ও করছেন। তিনি ছিলটি নাগরি লিপিতে অনেক খানি বই ও প্রকাশিত করেছেন। তিনি ইতি মধ্যে ছিলটি ব্যাকরণ বইটি প্রকাশিত করার পর ছিলটি অনুবাদের একটি বই শীগ্রই প্রকাশ করতে যাচ্ছেন। উক্ত সম্মেলনে ছিলটি ভাষা ও লিপির উৎপত্তি থেকে শুরু করে বর্তমান অবস্থান পর্যন্ত সবকটি বিষয়ের উপর আলোচনা করা হয়। সম্মেলনের উদ্বোধনী ভাষণে সম্মেলনের আহবায়ক মিনহাজুদ্দিন আবুল খয়ের  মজুমদার এই সম্মেলনের গুরুত্ব ও প্রয়জনীয়তা নিয়ে জানান আমরা যত আধুনিক হচ্ছি তত আমাদের ভাষা, সংস্কৃতি কে ভুলে যেতে শুরু করেছি। আমরা আমাদের অতীতকে ভুলে যাচ্ছি। ছিলটি ভাষা একসময় আমাদের প্রধান ভাষা ছিলো। কিন্তু কালের পরিবর্তনে তা আজ বিলীন হতে যাচ্ছে। এমনকি আমরা আমাদেরকে ছিলটি ভাষাভাষী মানুষ বলতে লজ্জা বোধ করি। আমরা ছিলটি ভাষাকে কাঁচা বাংলা, বাংলার উপভাষা বা গ্রামীণ ভাষা বলে থাকি, তা কখনো গ্রহণযোগ্য নয়। এরকম করা মনে নিজে নিজেকে অবহেলা করা। তাই আমাদেরকে আমাদের ভাষা সম্মন্ধে আরও বেশি করে জানার প্রয়োজন আছে যাহাতে আমরা আমাদের ভাষার জন্য গর্ববোধ করতে পারি। এই মহৎ উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে এই সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে। তাছাড়া তিনি উড়ান এডুকেশন এন্ড রিসার্চ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম চৌধুরী কে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন যে তিনি এরকম একটি অনুষ্ঠানের উদ্যোগ নেওয়ার জন্য এবং গোটা বিশ্ব থেকে সবাইকে উপস্থিত থাকার জন্য ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। গোটা অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন মুহাম্মদ আবদুল্লাহ বড়ভূইয়া। আলোচনার শেষ প্রান্তে সমাপ্তি ভাষণ দেন আলীগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছিলটি গবেষক এ এস মঞ্জুর আহমেদ। তিনি উড়ান পরিবার, আমন্ত্রিত অতিথি সহ সকল অংশগ্রহনকারীকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে সম্মেলনের সমাপ্তি ঘোষণা দেন।