বৃহস্পতিবার   ১৪ নভেম্বর ২০২৪   কার্তিক ৩০ ১৪৩১   ১২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কড়িয়ালি বনকে ডিয়ার পার্ক,পাখিরালয়, মিনি জু গড়ার প্রস্তাব

উমার ফারুক

পুষ্পপ্রভাত পত্রিকা

প্রকাশিত : ০৩:০০ পিএম, ১৬ মার্চ ২০২০ সোমবার

 মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর-২ব্লকে অবস্থিত জেলা বন বিভাগের ভালুকা রোড  রেঞ্জের কড়িয়ালি বন কে ডিয়ার পার্ক,পাখিরালয় ও ক্রমে মিনি জু হিসেবে গড়ে তোলার প্রস্তাব উঠেছে বিভিন্ন মহল থেকে।সুন্দর ভৌগলিক অবস্থান ও উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা সহ অনুকূল প্রাকৃতিক পরিবেশ রয়েছে এই বনের।উন্নত মানের ডিয়ার পার্ক করা যেতেই পারে।কিন্তু শুধুমাত্র সরকারি উদাসীনতার কারণে এই বন টি তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য ও জৌলুস হারাচ্ছে দিন দিন।সরকারি অর্থানুকুল্যে একটি ভালো মানের মিনি জু করার দাবি জোরালো হচ্ছে।দীর্ঘদিন ধরে সঠিক রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে বনের সৌন্দর্য নষ্ট হচ্ছে। এলাকার বাসিন্দারা জানান, সরকারিভাবে পরিকল্পনা করে বনকে ঢেলে সাজালে একটি ভালো ডিয়ার পার্ক  থেকে ক্রমে উন্নতমানের মিনি জু করা যেতে পারে। এর ফলে বনটি যেমন তার প্রকৃত সৌন্দর্য ফিরে পাবে তেমন এলাকার অর্থনৈতিক মান উন্নয়ন ঘটবে। বিভিন্ন এলাকা থেকে পর্যটকদের ভিড় বাড়বে। বন দপ্তর সূত্রে জানা যায় জেলার আদিনা ছাড়া কোথাও বন্যপ্রাণীদের রাখার ভালো  ব্যবস্থা নেই।আদিনা ছাড়া এইরকম বিশাল আয়তনের বন  নেই জেলায়।এই বন এলাকাটিকে সীমানা প্রাচীর দিয়ে ঘিরে দিয়ে বন্যপ্রাণীদের  রাখার ব্যবস্থা করা যায়। হরিণ ,নীল গাই,চিতা ইত্যাদি বন্যপ্রাণী রাখা যেতে পারে। সেই সঙ্গে বনের মধ্যে জলাশয় তৈরি করে  পাখিরালয় তৈরি করারও এটি একটি উপযুক্ত স্থান। দেশ বিদেশ থেকে পক্ষিকুল আশ্রয় নিতে পারবে এখানে।

এই বনকে মিনি জু হিসেবে গড়ে তোলার নানা অনুকূল পরিবেশ রয়েছে বলে জানা যায়।ভৌগলিক অবস্থান গত দিক থেকে বিচার করলে খুব ভালো অবস্থানে রয়েছে এই বন।হরিশ্চন্দ্রপুর থেকে ভালুকা বাজারে গামী রাজ্য সরকারের গা ঘেঁষে অবস্থিত এই বন।সড়ক পথে জেলা শহর থেকে রতুয়া হয়ে আসা যায়।প্রতিবেশী রাজ্য বিহার সীমান্ত এলাকা ও কাছাকাছি অবস্থানে রয়েছে।রেলপথে ও যোগাযোগ ব্যবস্থা খুবই ভালো।বন থেকে প্রায় এক কিমি দূরে ভালুকা রোড রেল স্টেশন।এই স্টেশনে মালদহ কাটিহার ও নিউ জলপাইগুড়ি গামী একাধিক প্যাসেঞ্জার ও মেইল ট্রেনের স্টপেজ আছে।ফলে রেল ও সড়ক উভয় পথেই যোগাযোগ ব্যবস্থা খুবই উন্নত।জেলা বন বিভাগের অধীনেই আছে এই বন।তাই বন বিভাগ উদ্যোগ গ্রহণ করলে মিনি জু হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি।এই বিষয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করার অনুরোধ করেন তাঁরা।স্থানীয় বাসিন্দা মতিউর রহমান,গোলাম মুর্তজা  প্রমুখ বলেন,এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে স্থানীয় প্রশাসনকে ইতি পূর্বে একাধিক বার এই বন কে ডিয়ার পার্ক করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।নতুন করে বনকে ঢেলে সাজান খুবই দরকার।বিশাল বড় এই বন সঠিক নজরদারির অভাবে তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও জৌলুস  হারাতে বসেছে। পরিকল্পনামাফিক বন কে ডিয়ার পার্ক থেকে মিনি জু তে উন্নীত করা যেতে পারে। এর ফলে এলাকার অর্থনৈতিক অবস্থার ও উন্নতি হবে।আমরা চাই প্রশাসন এই বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করুক।
স্থানীয় ও বন বিভাগ সূত্রে জানা যায়,বিশাল আয়তনের এই বনের কোন সীমানা প্রাচীর নেই।তাই সীমানা প্রাচীর দিয়ে ঘিরে সংরক্ষিত বনাঞ্চল হিসেবে গড়ে তোলার দাবি উঠছে ।

জেলা বনবিভাগের ভালুকা রোড ফরেস্ট রেঞ্জ অফিসার সুদর্শন সরকার বলেন,কড়িয়ালি বন কে ডিয়ার পার্ক,পাখিরালয় ও ক্রমে মিনি জু হিসেবে গড়ে তোলার অনুকূল রয়েছে।প্রায় ১৩২.৪০৪ হেক্টর এলাকা জুড়ে এই বনের পরিধি।যোগাযোগ ব্যবস্থা ও উন্নত।আদিনা বনের পরে এটি সুন্দর ও আয়তনে বড় বন।
জেলা পরিষদের বন ও ভূমি সংস্কার কর্মাধ্যক্ষ পিংকি সরকার বলেন,জেলায় একটি মিনি জু তৈরি হলে খুবই ভালো হবে।কড়িয়ালি বন কে  মিনি জু হিসেবে গড়ে তোলা যেতেই পারে।এই বিষয়ে জেলা পরিষদের পরবর্তী সভায় প্রস্তাব দেওয়া হবে।পাশাপাশি জেলা বন বিভাগের সঙ্গে ও আলোচনা করা হবে।
এ প্রসঙ্গে হরিশ্চন্দ্রপুর-২ ব্লকের বিডিও প্রীতম সাহা বলেন,এই বিষয়ে  ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে জেলা বন বিভাগের সঙ্গে কথা বলা হবে।